University of Hawaii এর গবেষকরা পৃথিবীর পানির অরিজিন খুঁজে পেয়েছেন বলে দাবী করছেন। অনেক দিন ধরেই বিজ্ঞানীগণ পৃথিবীতে পানি পৃথিবীর ফরমেশনের সময় থেকে ছিল নাকি কোন ধূমকেতু বা এস্টারয়েড পরে এই গ্রহে পানিকে নিয়ে এসেছে এ বিষয়ে অনিশ্চিত ছিলেন।
ক্যানাডার Baffin Island এর পাথর এনালাইসিস করে গবেষকগণ কিছু বিশ্বাসযোগ্য এভিডেন্স প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছেন যা নেটিভ ওয়াটার হাইপোথিসিজ এর সপক্ষে যায়। পাথরগুলো সরাসরি ম্যান্টল (ক্রাস্টের নিচের ও আউটার কোরের উপরের অংশ) থেকে এসেছে। আর তারা ক্রাস্টের (পৃথিবীর আউটার লেয়ার, ম্যান্টেলের উপরে অবস্থিত) কোন মেটারিয়াল দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয় নি। এই পাথরগুলোতে গবেষকগণ পানির ছোট ড্রপলেটে ট্র্যাপড থাকা গ্লাস ক্রিস্টাল খুঁজে পেয়েছেন। আর এই পানির কম্পোজিশন পৃথিবীতে আজকের পানির কম্পোজিশন একই।
পানি অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন নিয়ে গঠিত। হাইড্রোজেনকে ৩টি ফর্মে পাওয়া যায় যাদের আইসোটোপ বলে। এগুলো হল নরমাল হাইড্রোজেন, ডিউটেরিয়াম ও ট্রিটিয়াম। পানি অক্সিজেন ও ডিউটেরিয়াম দিয়ে তৈরি হলে একে ভারি পানি বা হেভি ওয়াটার বলে।
সোলার সিস্টেমের বিভিন্ন বস্তুর কম্পোজিশন নিয়ে স্টাডি করে রিসার্চাররা আবিষ্কার করেন সেই বস্তুগুলোর প্রত্যেকেরই স্বতন্ত্র নরমাল ওয়াটার- হেভি ওয়াটার রেশিও আছে। ধুমকেতুতে হেভি ওয়াটার-নরমাল ওয়াটার রেশিও অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে বেশি।
রিসার্চাররা কমেট বা এস্টারয়েড থিওরি একেবারে বাতিল করে দিচ্ছে না। কিন্তু তারা বলছেন, কিভাবে আমরা আমাদের ওশিন পেলাম এটা ব্যাখ্যা করতে সেই থিওরিগুলো প্রয়োজনীয় না।
গবেষণাটির লিড অথর Dr. Lydia Hallis বলেছেন, “আমরা পৃথিবীর ফরমেশনের পর কোন কমেট বা এস্টারয়েড দ্বারা পৃথিবীরে পানি আসার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছি না কিন্তু আমাদের ডেটাগুলো সাজেস্ট করে যে, পৃথিবীর ফরমেশনের একেবারে শুরু থেকেই এতে পানি ছিল। তাই পরবর্তীতে ওশিন বা মহাসাগর তৈরির জন্য বাইরে থেকে অনেক বেশি পরিমাণে পানির কোন প্রয়োজন নেই। আমরা বলতে পারি, আমরা ডিপ ম্যান্টল থেকে যে পানি মেজার করেছি তার কমেট বা এস্টারয়েড দ্বারা পৃথিবীতে আসা প্রায়ই অসম্ভব কারণ কারণ ধুমকেতু বা এস্টারয়েড এত শক্তিশালী হতে পারবে না যে তারা পৃথিবীতে এত দূরত্ব ভেদ করে ডিপ ম্যান্টল অব্দি পৌঁছে যায়। আর পূর্বের রিপোর্ট করা ডেটা বলে যে, সেই পাথরগুলো প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর ধরে কোন কিছু দ্বারা ডিস্টার্বড হয় নি।”
Science এ পাবলিশড হওয়া এই গবেষণাটি আমাদের সোলার সিস্টেম বা সৌরজগতের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা পানির অস্তিত্ব সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ক্লু দেয়। Dr. Hallis বলেন, “আমাদের গবেষণা সাজেস্ট করে যে পাথুরে বস্তুগুলো পানি নিয়ে গঠিত হয়। আর তাই এরকম অনেক বস্তুই ওয়াটার রিচ হবে বলে আমরা আশা করতে পারি (যেমন আমরা মঙ্গল, চাঁদ ও এস্টারয়েডগুলোতে এটার জন্য নতুন ইমেজ ও ডেটা খুঁজছি।) এই গবেষণাটি দেখায় যে এস্টারয়েড ও কমেটের গুরুত্বপূর্ণ স্যাম্পল রিটার্ন মিশনগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ এ থেকে আমরা তাদের কেমিস্ট্রি স্টাডি করতে পারব ও তারা কখন গঠিত হয়েছে নির্ণয় করতে পারব।”
http://www.sciencemag.org/lookup/doi/10.1126/science.aac4834
Leave a Reply