সোলার অথবা উইন্ড পাওয়ারে ব্যবহার করে হাইব্রিড উপায়ে এমোনিয়া উৎপাদন বিশ্বে খাদ্য সরবরাহের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করতে পারে, তাও জলবায়ুকে বিপন্ন না করে।
সূর্যালোক, জল এর সাথে নাইট্রোজেন এবং ফসফরাস উদ্ভিদের বিকাশের জন্য অতীব প্রয়োজনীয় উপাদান। আবহাওয়া মণ্ডলে প্রচুর পরিমানে নাইট্রোজেন আছে কিন্তু সেটা উদ্ভিদ সরাসরি ব্যবহার করতে পারে না। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে কিছু উদ্ভিদ নাইট্রোজেন পেয়েছে, তবে সেটা ব্যাক্টেরিয়া অথবা আর্কিয়ার সাথে মিথোজীবী সম্পর্ক এর ফলে, এবং এর মাধ্যমে নাইট্রোজেন উদ্ভিদের জন্য ব্যবহার উপযোগী হয়। বাকি স্থলজীবী জীবমন্ডল বরাবরই এইসব মিথোজীবী হতে নাইট্রোজেনের পূনব্যবহার করে যতক্ষণ না মোলেকুলার বা আণবিক নাইট্রোজেনে পরিণত হচ্ছে।
শিল্পের জন্য প্রাকৃতিক উৎপাদন পর্যাপ্ত নয় এবং আগেও ছিল না, তাই Haber-Bosch১ প্রক্রিয়া আবিষ্কার করতে হয়েছে। এই হাবের-বোস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নাট্রোজেনকে সার ও শিল্পে ব্যবহারের জন্য এমোনিয়ার রুপান্তরিত করা হয়। ফলে কৃষি উৎপাদনের এক চতুর্থাংশ বিশ্বকে খাদ্য সরবরাহ বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করেছে। দুর্ভাগ্যবশত, দ্যা হেবার-বশ প্রক্রিয়া প্রাকৃতি গ্যাস উপর নির্ভর করে এবং প্রচুর পরিমাণে কার্বনডাই অক্সাইড নির্গম করে। বিশ্বের গ্রীন-হাউস গ্যাস নির্গমের ১ শতাংশেরও উপর এই প্রক্রিয়া দায়ী।
হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড্যানিয়েল নোসেরা ও পামেলা সিলভার মনে করেন তাদের কাছে বিকল্প আছে, এই বিকল্প কিছু কয়েক দশক ধরে চাওয়া হচ্ছে।
নোসেরা ও সিলভা বিদ্যুতের সাহায্যে জলকে বিভক্ত করে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উৎপাদন করেন। এটি এখন বেশ ভাল প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া। তারপর তারা Xanthobacter autotrophicus-এ হাইড্রোজেন নিরীক্ষণ করেন যা বায়ুমন্ডলীয় নাইট্রোজেনের সাথে যুক্ত থাকতো এমোনিয়া তৈরিতে, নাইট্রোজেন ফিক্সিং ব্যাক্টেরিয়া মূলত একটি জার্মান জলশয়ের কাঁদার মধ্যে পাওয়া যায় । “একটা রাসায়নিক যুক্ত করে নির্দিষ্ট অণুর গঠন রোধ হয়, ফলে তারা বায়োমেসে এমোনিয়া রোধে সক্ষম হয়েছিল।” প্রসিডিংস অফ দ্যা ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে লেখক এমনটাই বলেন। এজন্য এটা মুক্ত অবস্থায় থাকতো ও যেখানে প্রয়োজন হতো তা সংগ্রহ করে নিতে পারতো।
বিদ্যুৎ জলকে ভাঙ্গে যে কোন উৎস থেকে আসুক, হতে পারে সেটা সোলার বা উইন্ড পাওয়ার হতে, ফলাফল পরিবেশের জন্য কয়েকটি নেতিবাচক পরিণতি সহ এমোনিয়ার একটি টেকশই উৎস।
Xanthobacter autotrophicus হতে পারে একটি শক্তিশালী সার যখন সরাসরি উদ্ভিদের শিকড়ের সংস্পর্শে আসে। লেখকগণ বৈদ্যুতিক উপায়ে হাইড্রোজেন, কার্বনডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন ব্যবহার করে ব্যাক্টেরিয়ার চাষ করেন এবং তখন তারা গ্রীনহাউসে মুলা উৎপাদনে এর শিকড়ে ব্যবহার করেন। তারা সাধারণত সারহীন নিয়ন্ত্রণের তুলনায় ১৩০ শতাংশ খাওয়ার যোগ্য মুলা বেশী অর্জন করতে সক্ষম হন এবং এতে উদ্ভিদের আকার ১০০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
নোসেরা ও সিলভারা সম্মিলিত হওয়ার আগে রাসায়নিক বিক্রিয়ার সুপারচার্জ যে গ্রহটাই শক্তি। ২০১৫ সালে তারা ঘোষণা করেন একটি “বায়োনিক লিফ” বা বায়োনিক পাতা২ যেটা সূর্যালোক ও বাতাসকে আইসোপ্রোপেনলে রুপান্তর করতে পারে, একটি দ্রাবক ও পরিবহনের জ্বালানি। এক্ষেত্রে ব্যাক্টেরিয়ার সাথে অজৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া মিলিত হওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, যদিও প্রজাতিগুলো অন্য উপায়ে ব্যবহার করতো।
১। হেবার প্রক্রিয়া, যাকে হেবার-বশ প্রক্রিয়া এটি একটি কৃত্রিম নাইট্রোজেন ফিক্সিং প্রক্রিয়া এবং এখন এটি আমোনিয়ায় উৎপাদনে প্রধান শিল্প পদ্ধতি। এর উদ্ভাবক জার্মান রসায়নবিদ ফ্রেৎস হেবার এবং কার্ল বশ এর নামে নামকরণ করা হয়। ২০ শতকের প্রথমার্ধে এটি তৈরি হয়।
২।কৃত্রিম শরীরের অংশ, যেমন গাছে পাতা, বিশেষত বৈদ্যুতিকচালিত কিছু একটা।
তথ্যসূত্রঃ
https://ammoniaindustry.com/ammonia-production-causes-1-percent-of-total-global-ghg-emissions/
https://chemistry.harvard.edu/people/daniel-g-nocera
https://wyss.harvard.edu/team/core-faculty/pamela-silver/
http://www.pnas.org/content/114/25/6450.full
http://www.iflscience.com/technology/bionic-leaf-turns-carbon-dioxide-fuel/
Leave a Reply