দুর্নীতি, অপুষ্টি, স্যানিটেশনের অভাব, এবং ব্যাপক অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্যতা নিয়েই ইথিওপিয়া সমস্যায় জর্জরিত বলতে গেলে। তারপরও নতুন একটা গবেষণা প্রকাশ করেছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সবচেয়ে অসাম্ভাব্য উৎস হতে ভাল কিছু পেতে যাচ্ছে।
ভার্জিনিয়া টেক এর একটি দল ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’ জার্নালে বলেন ইথিওপিয়ান ব্লু নীল বেইসিন (বিএনবি) এর দিকে ধাবিত জলের স্রোত টি বৃদ্ধি পাচ্ছে পৃথিবী ব্যাপি উঞ্চতা ক্রমবর্ধমানের কারনে। এর ফলে বছর ধরে প্রায় প্রতি ঋতুতেই ফসল উৎপাদন করতে পারবে, দুর্বল কৃষিখাতকে উদ্ধার হবে। “জলবায়ু পরিবর্তনের সকল সর্বনাশা প্রভাবের মধ্যে কোথাও আশার আলো দেখা দিচ্ছে” বলেন সমন্বয়কারী গবেষক Zach Easton, ভার্জিনিয়া টেক এর বায়োলজিক্যাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং এর এসোসিয়েট প্রফেসর।
দলের অত্যাধুনিক হাইড্রোলজিক্যাল মডেল IPCC (International Panel on Climate Change) এর ডেভেলপড করা ক্যালকুলেশনের উপর নির্ভর করে অনুমান করা হচ্ছে যে আরো দ্রুত পৃথিবী উষ্ণ হতে থাকবে। যেহেতু বেশ কয়েকটি গবেষনায় এধরণের মন্তব্য করা হয় এই গ্রহটি ২১০০ সালের আগেই প্যারিস এগ্রিমেন্ট এর ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস (৩.৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট) ভেঙ্গে ফেলবে, সম্ভবত ২০৫০ সালের আগেই ঘটে যেতে পারে।
যদিও জলবায়ু পরিবর্তন এই গ্রহের অনেক কিছুইকেই ধ্বংস করে দিবে, বিশেষ করে আর্কটিক, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা, পৃথিবীর কিছু অংশ কিছুটা প্রান্তিক সুবিধা পাবে। উদাহরণস্বরুপ, কানাডার কিছু অংশ এবং উত্তর ইউরোপে শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
ব্লু নীল বেইসিন প্রসঙ্গে বলতে গেলে, এখানের অঞ্চলটাই পরিবর্তন হবে যেমন প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং বর্ষা মৌসুম ৪ সপ্তাহ থেকে বেড়ে ৬ সপ্তাহ হবে শতাব্দীর শেষে।
অবশ্যই বিষয়টা অন্য কোথাও এমন নয় যে এর মতো এতই সাধারণ। যদিও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ইতিবাচক কিছু ঘটে থাকবে—বিশেষ করে যদি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে হিলারি ক্লিনটন নির্বাচনে বিজয়ী হয় এবং প্যারিস চুক্তি উভয়েই বহাল এবং জোরদার হয়— অবশ্য এ বিষয়ে ইতোমধ্যে অনেকে হতাশা দেখা দিয়েছে।
একটি উদ্যেগজনক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখানো হয় যে সহিংস অপরাধ এবং দ্বন্দ্ব বৃদ্ধি পাবে ফলে তাপমাত্রা চাপ, অর্থনৈতিক বিপর্যয়, এবং সম্পদ হ্রাস, বিশেষ করে সাব-সাহারা আফ্রিকায় বৃদ্ধি পাবে। ২০৩০ সাল আসতে আসতেই এই অঞ্চলে গৃহযুদ্ধের মতো ঘটনা ৫৪ শতাংশ বাড়বে।
গ্রহের সার্বিক ধ্বংস থেকে ইথিওপিয়া শেষমেশ উপকৃত হতে পারে, কিন্তু মোটাদাগে বলতে গেলে এটা স্ববিরোধী হয়ে যায়। যদিও আমেরিকা, চায়না, ইউরোপীয় ইনিয়ন, এবং অন্যান্য অনেক উন্নত ব্লক গুলো প্রাথমিকভাবে ভয়াবহ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী, বস্তুত আফ্রিকা মহাদেশের দেশ গুলো প্রথম এবং সর্বাগ্রে দুর্ভোগ পোহাবে। এখানে ইথিওপিয়া অদ্ভূতভাবে বের হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারে।
যাই ঘটুক, নতুন গবেষণার মডেল নির্দেশ করে যে জলের প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে এবং এর সাথে অনেক পলি নিয়ে আসবে, যার ফলে নালা বা চ্যানেল গুলো বাঁধাপ্রাপ্ত হবে এবং জলাধার এবং বাঁধে জলধারণ ক্ষমতা কমে যাবে, যেমনটা গ্রান্ড রেইনেসাঁস বাঁধে ভবিষ্যতে ঘটবে।
তথ্যসূত্রঃ
- http://www.iflscience.com/environment/ethiopia-paradoxically-benefit-climate-change/
- http://link.springer.com/article/10.1007%2Fs10584-016-1785-z
- https://www.theguardian.com/commentisfree/2016/oct/12/ethiopia-state-of-emergency-protests-corruption
- https://vtnews.vt.edu/articles/2016/10/cals-ehtiopiawater.html
- http://www.iflscience.com/environment/we-are-going-to-breach-the-2c-warming-limit-by-2050-warn-worlds-leading-climate-scientists/all/
- http://www.agr.gc.ca/eng/science-and-innovation/agricultural-practices/agriculture-and-climate/future-outlook/impact-of-climate-change-on-canadian-agriculture/?id=1329321987305
- http://www.iflscience.com/environment/the-paris-agreement-will-come-into-force-on-november-4/all/http://www.iflscience.com/environment/the-paris-agreement-will-come-into-force-on-november-4/all/
- http://www.iflscience.com/environment/no-turning-back-as-earth-permanently-passes-co2-threshold/all/
- http://www.hydroworld.com/articles/2016/09/contract-awarded-for-studies-of-6-000-mw-grand-renaissance-dam-in-ethiopia.html
Leave a Reply