এই প্রথমবারের মতো বন্য পরিবেশে শিম্পাঞ্জি সন্তানদের প্রতি তাদের মায়ের যন্ত্রকৌশল ব্যবহার করে শিক্ষা দেওয়া ভিডিওতে ধারণ করা হলো। মায়েরা তাদের নিজেদের শিকার ধরার পরে তারা তাদের সন্তানদের কিভাবে কাঠি ব্যবহার করে উইপোকা ধরতে হয় তা শেখাচ্ছে।
বন্য শিম্পাঞ্জিরা ব্যতিক্রমি টুল ব্যবহারকারী, কিন্তু মানুষের সংস্পর্শে তাদের আজ পর্যন্ত সামান্য সাক্ষ্য প্রমাণ রয়েছে যে প্রাপ্তবয়স্ক শিম্পাঞ্জিরা অল্প বয়স্কদের টুলের দক্ষতা সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছে” বলেন Stepane Musgrave একজন গ্রাজুয়েট স্টুডেন্ট সেন্ট লুইসের ওয়াশিংনটন বিশ্ববিদ্যালয়ের।
যদিও পূর্বের একটা গবেষণায় গবেষকরা প্রমাণ করেছে মানুষের সন্তানেরা স্বপ্রনোদিত হয়ে টুল (যন্ত্রপাতি) ব্যবহার করা শেখে, অন্য কারও দ্বারা শেখানো ছাড়াই, যা শেখার জন্য প্রায় অপরিহার্য। একইভাবে ডলফিনরা শিকারের জন্য স্পঞ্জ ব্যবহার করে বলে মনে করা হতো, মায়েরা এটা তাদের সন্তানদের দিকে ছুড়ে দিচ্ছে, যদিও কিছু বুদ্ধিমান ডলফিনের অবশ্যই এটা ব্যবহার করার ধারণা নিজে নিজে লাভ করে।
গতবছর একটা গবেষণায় দেখা গেছে তরুন শিম্পাঞ্জিরা স্বেচ্ছায় টুলস তুলে নিচ্ছে, আর তারা তাদের কাছাকাছি আত্মীয় বনবোদের দেখে তারাও সেই টুলস নিয়ে খেলছে। বনবোরা সে সময় তাদের নিজেদের সামাজিক কর্যকলাপে ব্যস্ত থাকে। তদুপরি সাইন্টিফিক প্রতিবেদনে, মুসগ্রেইব দেখিয়েছেন তার গাছে বেধে রাখা ক্যামেরায় যে প্রাপ্তবয়স্ক শিম্পাঞ্জিরা টুলস তরুনদের দিকে দিচ্ছে এবং এরা তখন উইঢিবিতে ঢুকিয়ে ব্যবহার করছে। মুগ্রেইব তা পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন শিম্পাঞ্জিদের কর্মকান্ড দেখার যেমন শিক্ষা দেওয়া, প্রথমিকভাবে টুলস ব্যবহার, এটাই বা কম কিসের। যখন একজনের শিক্ষা আরেকজন দেখে দেখে শিখতেছে, কিন্তু আরো অভিজ্ঞ জন্তুদের দ্বারা কোন বলিদান হচ্ছে না, প্রাণী আচরণবিদদের দ্বারা কোন শিক্ষার প্রতিনিধিত্ব করা হচ্ছে না, এটাই এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
উইয়ের বাসায় কাঠি ঢুকানো হতে পারে একটা স্যাম্পল, কিন্তু রিপাবলিক অফ কংগোর গৌলাগো ট্রাংগলের শিম্পাঞ্জিরা আরো আধুনিক। তারা উইপোকার বাসায় ঢোকানোর যাবে এমন একটি কাঠি নিয়ে খোঁচা দিতে চেষ্টা করে, এবং এরপর কাঠিটি ব্রাশের মতো করে বাঁকিয়ে নিয়ে উইপোকাদের টেনে এনে শিকার করে।
মুসগ্রাবের ফ্লিমে ৯৬ টা উদাহরনের প্রতিটায় একটি করে অল্পবয়স্ক শিম্পাঞ্জিরা তাদের মা বা বড় বোনের কাছে আবদার করে। কিছু ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ই সন্তানদের আবদার বুঝতে পারে, এবং তারা তাদের উইপোকার বাসার কাছে নিয়ে আসে হাতে ধরে শিখিয়ে দেয়।
অন্যান্য ক্ষেত্রে, যারা নাছোড় বান্দার মতো বিরক্ত করে তাদের উই ধরার টুল দিয়ে ছেড়ে দেয়, কখনো কখনো মায়েরা কাঠিটা দূরে গিয়ে ফেলে দেয় যাতে তারা নিজেরাই এনে তা ব্যবহার করতে পারে। তাদের পদ্ধতি যাই হোক, শিক্ষকেরা ৩০ সেকেন্ডে সামান্য উইপোকা ধরা দেখিয়ে তাদের সরঞ্জাম এবং জ্ঞানের চেয়ে হাতে কলমে যা তারা করেছে তা প্রদর্শন করানোই বাস্তবে তা উৎসর্গ, এটাই বা কম কিসের।
সাধারনভাবে একটা টুল দিয়ে হঠৎ করে তরুন শিম্পাঞ্জিদের জন্য নিজেরাই শিখতে পারা পর্যাপ্ত ছিল না। ৯৬ টা ফিল্মে ধারণকৃত ১৩ জন শিক্ষক এবং একই সংখ্যাক শিক্ষার্থীর মধ্যে অদলবদল করা হয়েছিল, এবং শিম্পাঞ্জিদের জীবনকাল অজানা। কো-অথর Dr Crickette Sanz বলেন, “আমাদের গবেষণায় দেখানোয় হয় এই আচরণের বিবর্তনীয় উৎস সম্ভবত এর মূলে, যেখানে বিশেষ দক্ষতার কাজগুলো কারও নিজের পক্ষে চিন্তা করে বের করা খুবই কঠিন।”
মুসগ্রেইব মন্তব্য করেন, আমাদের মানুষে বিবর্তিত হবার শুরুর দিকে আমরা কিভাবে টুল ব্যবহার করা শিখেছি, তা বুঝতে শিম্পাঞ্জিদের টুল ব্যবহার করা নিয়ে এই পর্যবেক্ষণগুলো আমাদের সাহায্য করেছে।
এবার বোনাস হিসেবে জেন গোডালের এই ভিডিওটি দেখতে পারেন। জেন গোডাল ১৯৬০ সাল হতে শিম্পাঞ্জি নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং বহু আগেই উনি শিম্পাঞ্জিদের টুলস ব্যবহারের কথা বলেছেন।
সোর্সঃ http://www.nature.com/articles/srep34783
Leave a Reply