গবেষণায় দেখাচ্ছে ঘোড়া মানুষের সাথে যোগাযোগ করা শিখতে পারে

বানরদের শুধু ভাষাই নেই, তাদের স্বতন্ত্র স্থানীয় উপভাষা আছে, এটা হতো আপনারা আগেই জেনেছেন। ঘোড় শাওয়ারেরা ঘোড়াকে নিজদের মতো করে ঘোড়াকে দৌড়াতে পারে। এটাও নতুন কিছু নয়। কিন্তু ঘোড়া যোগাযোগ করতে পারে এটা হয়তো আমাদের কাছে নতুন। অবশ্য আগে শেখানোর পরই তারা ঘোড়া দেখাশুনা করা লোকেদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।

নরওয়েজিয়ান কয়েকটি ঘোড়া তাদের দেখাশুনা করা লোকেদের সাথে তাদের নতুন অর্জিত টকেটিভনেস ব্যবহার করে ‘হর্স কোর্ড’ দিয়ে যোগাযোগ করা শিখেছে । ব্লাঙ্কেট পরা ও খুলে ফেলার বিষয়টি তারা দুই সপ্তাহের মধ্যে শিখে ফেলে।

আন্ত-প্রজাতির মধ্যে সম্পর্ক এপ্লাইড এনিম্যাল বিহেবিয়ার সাইন্স জার্নালের প্রতিবেদনে সর্বশেষ যুগান্তকারী ঘটনা, এখানে গবেষকরা বলেছেন এতে ২৩টি ঘোড়া অন্তভূক্ত ছিল। ঘোড়াগুলো দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে প্রশিক্ষণকারীর সাথে যোগাযোগের কৌশল গুলো বুঝতে সক্ষম হয়।

আপনারা এটা ভাববেন না যে এই ঘোড়া গুলো মানুষের সাথে গভীর দশর্নগত আলাপ-আলোচনা বুঝতে সক্ষম। তারা শুধু কিছু নির্দেশ বুঝতে পারে যেমন ব্লাঙ্কেট পরে নেওয়া অথবা খুলে ফেলা। অবশ্য এটা নির্ভর করে আবহাওয়ার অনুভবের উপর। এসব অর্জন করতে ঘোড়াগুলোকে তাদের নাক ব্যবহার করে আলাদা আলাদা তিনটি চিহ্ন দেখিয়ে বুঝাতে হয়। একটি আনুভূমিক রেখা, এটা দিয়ে বুঝানো হয় তাদের ব্লাঙ্কেট পরা, উলম্ভ রেখা দিয়ে বুঝানো হয় ব্লাঙ্কেট খুলে ফেলা এবং ব্লাঙ্ক বা সাদা বোর্ড মানে তারা বেশ হ্যাপি এবং তারা সেগুলো পরিবর্তন করতে চায় না।

এপ্লাইড এনিম্যাল বিহেভিয়ার সাইট থেকে নেওয়া।
এপ্লাইড এনিম্যাল বিহেভিয়ার সাইট থেকে নেওয়া।

ঘোড়া গুলোকে প্রশিক্ষণ দিতে গবেষকেরা গরম আবহাওয়ায় ব্লাঙ্কেট পরা অথবা ঠান্ডা আবহাওয়ায় ব্লাঙ্কেট ছাড়াই উপস্থান করে, এবং এর পুরুষ্কার হিসেবে তাদের গাজর খেতে দেওয়া হতো যখন তারা সঠিকভাবে বোর্ডটিতে তাদের জন্য যা দরকার তা দেখিয়ে দিতে পারতো। এই ক্ষেত্রে ঘোড়া গুলো ঘাম ঝড়াতো যখন তারা ব্লাঙ্কেটটি সড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করতো এমন কিছু নির্দেশ দিত, খালি ঘোড়া গুলো ঠান্ডায় কাঁপতো যখন গাজর দেওয়া হতো, এতে বুঝাতে যে ব্লাঙ্কেট পরতে হবে তাদের।

যখন ঘোড়া গুলো ভুল করতো, যেমন ব্লাঙ্কেটহীন ঘোড়া গুলো ব্লাঙ্কেট খুলতে নির্দেশ দিত, তারা তখন কিছুই পেত না(মানে গাজর খেতে দেওয়া হতো না)। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট দুই সপ্তাহ ধরে এই প্রাণী গুলো এই পদ্ধতিতে যোগাযোগ শিখে যায় এবং শতভাগ সাফল্যের সাথে।

অবিশ্বাস্য, যখন ঘোড়া গুলো বুঝতে পারতো তারা তাদের মানুষের সাথে কথা বলতো, তারা কোন কিছু করার আগ্রহ প্রকাশ করতো এবং তারা প্রায় তাদের অনুভূতি প্রকাশের জন্য মনোযোগী হতো, এমনকি যখন তাদের প্রশিক্ষণ থাকতো না তখনো। উদাহরণস্বরুপ, গরম জায়গায় ঘোড়াগুলো নিয়মিত বোর্ডটির উলম্ব রেখা স্পর্শ করতো তাদের ব্লাঙ্কেটটি খুলে ফেলতে যখন গবেষকরা তাদের পাশ দিয়ে হাঁটতো। আসলে এই সময় ঘোড়া গুলো গাজরের জন্য এমন করতো তা না, এতে এটাই নির্দেশ করে যে তাদের আসলেই ব্লাঙ্কেটটি খুলা প্রয়োজন এবং সেই প্রতীকটি ভালভাবেই বুঝতে বা বুঝাতে পারে।

পরবর্তী কয়েক মাস গবেষকেরা পর্যবেক্ষণ করে ঘোড়ার মালিকদের সাথে এই নতুন পদ্ধতিতে কথা বলতে যখনই তাদের গরম বা ঠান্ডা লাগে।

 

তথ্যসূত্র:

  1. http://www.appliedanimalbehaviour.com/article/S0168-1591(16)30219-2/fulltext

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.