আপনি একটা হ্যাম-বার্গার খাচ্ছেন আর ভাবুন এখানে যে মাংশের টুকরাটি আছে সেটা কোন প্রাণীকে হত্যা করে আসেনি। এমনটা হলে আশা করি প্রাণী ও পরিবেশ এক্টিভিস্টরা বেশ খুশিই হবেন।
প্রাণীহত্যা, কার্বন ফুটপ্রিন্ট, মাংশ, শিল্প ইত্যাদি বিশ্ব উঞ্চায়নে অবদান রাখছে যা নিয়ে আপনি যথেষ্ট সচেতন, আবার বার্গার আর কাবাবের মত খাবারও আপনার অনেক প্রিয়। তো এটা কি আপনার মধ্যে একটি তীব্র মানষিক দ্বন্দ্ব তৈরি করছে? তাহলে আপনার জন্য একটি খুশির সংবাদ রয়েছে। একটি ইসরায়েলি স্টার্টাপ কোম্পানি দাবী করছে যে তারা শুন্য শতাংশ পশুকে কষ্ট না দিয়েই ১০০ ভাগ মাংশ উৎপাদন করতে সক্ষম। ঠিক যেমনটা আপনি চাচ্ছিলেন।
আর নয় ভাবনা, বিজ্ঞানীরা মাংশভোজীদের সমস্যা সমাধানের রাস্তা খুঁজে পেয়েছেন। তারা প্রাণী হত্যা না করে আপনাকে মাংশ সরবরাহ করার রাস্তা পেয়েছেন। বেশ অবাক হচ্ছেন! অবাক হওয়ার কিছু নেই, পরিবেশবিদরা আপনাদের মতো মাংশভোজীদের নিয়ে বেশ চিন্তা করেন, কারন আপনাদের জন্য এই পৃথিবীটা হয়তো দ্রুত মানবজাতির জন্য অন্ধকার হয়ে যাবে।
সুপারমিট একটি সাম্প্রতিক বায়োটেক কোম্পানি যাদের লক্ষ্যই হচ্ছে ল্যাব-নির্ভর প্রচুর মাংশ উৎপাদন করা, এটা শুধু পরিবেশ বান্ধবই হবে না, সাধারণ মাংসের চেয়ে এর ক্ষেত্রে ৯৯ শতাংশ ভূমি কম লাগবে, ৯৬ শতাংশ কম জল খরচ হবে, এবং ৯৬ শতাংশ কম গ্রীন-হাউজ গ্যাস নির্গত হবে। কিন্তু এটা হবে স্বাস্থ্যকর, সস্তা, এবং মানুষের জন্য নবায়নযোগ্য খাদ্যের উৎস।
জেরুজালেমের হিব্রু ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এবং বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারং বিষয়ে এওয়ার্ড পাওয়া ইয়াকুব নাহমিয়াস এই সুপারমিট কোম্পানির সাথে কাজ করেছেন। তার সাথে কাজ করে সুপারমিট একটি পদ্ধতি তৈরি করেছে যেখানে একটি ছোট বায়োপসি থেকে একটি কোষ নিয়ে সেটাকে একটি পরিবেশে এনে ইনকিউবেট করা হয় যেখানে একটি অনন্য বা ইউনিক পরিবেশে সেই পশুর ফিজিওলজি নকল করা হয়। স্কাফোল্ডস এবং অন্যান্য প্রযুক্তির সাহায্যে সেটায় পেশী ও চর্বি (সব মাংশের উপাদানে যা থাকে) বৃদ্ধি করে প্রানীর মাংশের মত করেই এটার জৈবিক মাংশ তৈরি করা হয়।
তারা বলছে, তাদের মাংশে কোন প্রানীর উপাদান না থাকায় এটা নিরামিষভোজীদের জন্য উপযুক্ত হবে। তাই যদি আপনার বিবেক মাংশ খাওয়া হতে বিরত রাখতে চায়, এটা হতে পারে আপনার বিকল্প টেকশই পছন্দ। উপরন্তু, এটা হবে GMO মুক্ত এবং অর্গানিক।
কোম্পানিটি এই কাজের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে ইনডিয়েগোগো ক্যাম্পেইন নামে একটি ক্যামপেইন শুরু করেছে। ইতিমধ্যে তারা এক লক্ষ ডলার পেয়ে গেছে, তাদের লক্ষ্য এখন ৫ লক্ষ ডলারের দিকে। দিয়ে ইতোমধ্যে এটা ১ লাখ ডলার টার্গে ছাপিয়ে গেছে এবং এখন এটার লক্ষ্য ৫ লাখ ডলার প্রটোটাইপ মাংশ মেশিনের তহবিল হিসেবে। ফেসবুকে ক্যাম্পেইন সংশ্লিষ্ট একটি ভিডিও সাড়ে তিন মিলিয়ন ভিউজ পেয়েছে।
সুপারমিট কোম্পানির সিইও এবং কো-ফাউন্ডার কবি বারাক আশা করেন যে, এই তহবিল দিয়ে তারা ৫ বছরের জন্য মাংশ জমাতে পারবেন। তিনি বলেন, “আমরা সুপারমিট প্রতিষ্ঠা করেছি খাদ্যশিল্পে বিপ্লব আনতে, ক্ষুধার্ত পৃথিবীতে প্রাণীদের প্রতি সদয় হতে এবং পরিবেশের ক্ষতি না করতে উৎসাহ দান করতে যা আমাদের শিশুদের ভবিষৎ উজ্জ্বল করবে”।
তথ্যসূত্র:
- http://www.independent.co.uk/news/science/how-the-world-can-eat-meat-without-killing-animals-a7174606.html
- http://www.iflscience.com/health-and-medicine/lab-grown-meat-could-be-shelves-five-years-according-startup/
- http://supermeat.com/meat.html
- https://www.indiegogo.com/projects/supermeat-real-meat-without-harming-animals-food-technology#/
- http://www.independent.co.uk/news/science/how-the-world-can-eat-meat-without-killing-animals-a7174606.html
- http://www.digitaltrends.com/cool-tech/supermeat-lab-grown-chicken/
Leave a Reply