বিজ্ঞানীরা যা ভেবেছিলেন, মহাবিশ্বের প্রান্ত তারও কাছে

আমাদের দেখা মহাবিশ্বের একটি লগারিদমিক ইলাস্ট্রেশন

১৩ বছর পূর্বে পদার্থবিদদের তৈরি একটি বিখ্যাত ক্যালকুলেশন আপডেট করা হয়েছে। জানা গেছে যে  দৃশ্যমান মহাবিশ্বের ব্যাপ্তি সবদিক থেকেই ৩২০ আলোকবর্ষ কমে এসেছে।

যদি আপনি গোটা মহাজগতের আয়তন হিসাব করার চেষ্টা করেন তাহলে এক্ষেত্রে আলোর গতি  (যা যেকোন গতির তুলনায়ই সর্বোচ্চ) নিয়ে কাজ করাটাই সবচেয়ে ভাল উপায়। আপনি কারণ হিসাবে দেখাতে পারেন যেহেতু বিগ ব্যাং ঘটেছিল প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে, এখানে ১৩.৮ বিলিয়ন আলোক বর্ষের ব্যাসার্ধের দৃশ্যমান বিশ্বের প্রান্ত চিহ্নিত করে দিচ্ছে।

ঠিক তা নয় যদিও। গত শতাব্দীজুড়ে পদার্থবিদেরা বারবার আমাদের দেখিয়ে এসেছেন যে কিভাবে মহাবিশ্ব দ্রুত থেকে দ্রুততর গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে। এমনকি একটি তীব্র উজ্জ্বল আলোও দেখা গেছে যা বিগ ব্যাং এর ৩৭৮,০০০ বছর পর সুস্পষ্ট হয়েছে- এ ঘটনাকে Recombination বা পুণর্সমন্বয় বলে (যখন কণাগুলো অবশেষে সর্বপ্রথম পরমাণু গঠনের জন্য যথেষ্ট ঠাণ্ডা হয়)।

যদি আপনি সম্প্রসারণ, পুনর্সমন্বয় এবং এরকম আরো ভ্যারিয়েবলগুলো বিবেচনা করেন, যেমনটা ২০০৩ সালে করেছিলেন পদার্থবিদ J. Richard Got III এবং তাঁর কিছু সহকর্মী, আপনি ৪৫.৬৬ বিলিয়ন আলোকবর্ষের ব্যাসার্ধের অথবা ৯১.৩২ বিলিয়ন আলোকবর্ষের ব্যাপ্তি সমৃদ্ধ একটি দৃশ্যমান মহাবিশ্ব বা অবজার্ভেবল ইউনিভার্স পেয়ে যাবেন।

যাহোক, Medium.com এর একটি পোস্টে ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্সের পদার্থবিদ Paul Halpern এবং Nick Tomasello  যেভাবে ব্যাখ্যা করেন, ক্যালকুলেশনটি করা হয় WMAP স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে, যা বিগ ব্যাং এর আফটারগ্লোকে ম্যাপ করেছিল- এবং এই তথ্যগুলো এখন আর প্রাপ্তদের মধ্যে সেরা তথ্য নয়।

এখন বরং নতুন, আরো সূক্ষ্ণ ডাটাগুলোর দিকে তাকানো যাক যা পাওয়া যায় ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির Planck স্যাটেলাইট থেকে। Halpern এবং Tomasello  হিসাব করেন যে দৃশ্যমান মহাজগতের সীমানা প্রকৃতপক্ষে ০.৭% ছোট, আগের হিসাবের তুলনায়, অথবা ৪৫.৩৪ বিলিয়ন আলোকবর্ষ পরিমাণ ব্যাসের।

এই নতুন হিসাব নিয়ে তাঁদের পেপারটি Advances in Astrophysics এর পরবর্তী এডিশনে প্রকাশিত হবে।

“৩২০ মিলিয়ন আলোকবর্ষের ব্যবধান হয়তো কসমিক স্কেলে খুবই নগণ্য, কিন্তু এটা আসলেই আমাদের উপগম্য মহাবিশ্বকে কিছুটা আরামদায়ক করে,” Tomasello  তাঁর পোস্টে বলেন।

কিছু ব্যাপার অবশ্য এই দৃশ্যগমনের সীমানা ৪৬.৩১ বিলিয়ন আলোকবর্ষ পর্যন্ত বাড়াতে পারে- যেমন নিউট্রিনোর মত ক্ষীণ কণিকা।

নিউট্রিনো সাধারণ পদার্থকে এমনভাবে ভেদ করে যায় যেন সেটির কোন অস্তিত্বই নেই, সুতরাং এরা হয়তো পুনর্সমন্বয়ের আলোচ্ছটাকে ভেদ করে যেতে পারে এবং এটাই হয়তো আমাদের সুযোগ করে দিতে পারে মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরনো দৃশ্য দেখার। কিন্তু ঠিক একই কারণে তাদের চিহ্নিত করাও ভয়াবহ কঠিন হয়ে যেতে পারে, যেকোন আন্ডারগ্রাউন্ড নিউট্রিনো-চিহ্নিতকরণ ল্যাবরেটরির পদার্থবিদ একই মত প্রকাশ করবেন।

Gott এর মতামত জানার জন্য বিজনেস ইনসাইডার তাঁকে এই গবেষণার একটি পূর্ব-প্রকাশিত সংস্করণ পাঠিয়েছে, এখনো আমরা তাঁর উত্তরের অপেক্ষায় আছি।

 

তথ্যসূত্র:

  1. http://www.businessinsider.com/sean-carroll-common-misconception-about-expansion-universe-2016-8
  2. https://medium.com/@phalpern/the-observable-universe-just-got-a-bit-smaller-78a2a1f91080#.ezwm2lg5w
  3. http://www.isaacpub.org/AboutThisJournal.aspx?ids=4
  4. http://arxiv.org/abs/astro-ph/0310571

 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.