ক্যাপ্টাগন: একটি শক্তিশালী টেরোরিস্ট ড্রাগ

Captagon pills are displayed along with a cup of cocaine at an office of the Lebanese Internal Security Forces (ISF), Anti-Narcotics Division in Beirut on June 11, 2010. (Credit: JOSEPH EID/AFP/Getty Images)

২০১৫ সালের জুনে সাইফেদ্দিন রেজগুই নামে একজন টেরোরিস্ট তিউনিশিয়ার সুস বিচে ৩৯ জনকে হত্যা করে। এরপর পুলিশের গুলিতে সে নিহত হয়। ময়নাতদন্ত বা অটোপসির মাধ্যমে তার শরীরে ক্যাপ্টাগন ড্রাগের উপস্থিতি ধরা পরে। এটা একটা সিন্থেটিক ড্রাগ (ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা ড্রাগ) যা গালফ কান্ট্রিগুলোতে ব্যবহার করা হয়। সৌদি আরব, লেবানন, সিরিয়া এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে এই ড্রাগটি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। আর এই ড্রাগ উৎপাদনের প্রধান ফ্যাক্টরিটি যেই অঞ্চলে পাওয়া গেছে সেটা আজ ISIL এর দখলে।

ক্যাপ্টাগন জেহাদিদের পারফরমেন্স এর উন্নতি ঘটায়, তাদেরকে কোন রকম অবসাদ ও ভয় থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। আর কোন রকম এমপ্যাথি বা আবেগকেও এটা সম্পূর্ণ নির্মূল করে দেয়। (এমপ্যাথি না থাকলে যে কেউ ঠাণ্ডা মাথায় খুন করতে পারে। সাইকোপ্যাথদের এমপ্যাথি একেবারেই থাকে না বা অনেক কম থাকে)। অন্যভাবে বললে, মানুষকে দিয়ে অমানুষিক কাজ করানোর জন্য এই ড্রাগ হল একটি “আদর্শ” দাওয়াই।

২০১৪ সালে, আই এস গ্রুপ আলেপ্পোর ক্যাপ্টাগন প্রস্তুতকারক ফারমাসিউটিকল প্লান্ট দখল করে নেয় যার ফলে এখন তারা সমস্ত মিডল ইস্টেই এই ড্রাগ বিক্রি করছে। এরফলে তারা অনেক অর্থ তো পাচ্ছেই সেই সাথে অনেক আই এস জঙ্গি এবং সিরিয়ান সিভিল ওয়ারের ফাইটাররা এই ড্রাগ ব্যবহার করার সুযোগ পেয়েছে। বিভিন্ন রিপোর্টে উঠে এসেছে যে তারা ক্যাপ্টাগন ব্যবহার করছে। গত নভেম্বর মাসে ১৯ বছর বয়সী একজন আই এস মিলিট্যান্ট ফাইটার সিএনএনকে জানায়- “তারা আমাদেরকে ড্রাগ ও হেলুসিনেটিং পিল দিয়েছিল। এগুলো যদি আপনি খান তাহলে জীবন মরণের কথা না ভেবেই আপনি যুদ্ধে চলে যাবেন”।

এই জেহাদিস্টদের ড্রাগ সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য জানতে এবং কল্পিত কাহিনী থেকে বাস্তব বের অরে আনার জন্য কনবিনি নামক একটি ডিজিটাল মিডিয়া কোম্পানি ফ্রেঞ্চ ক্যাপটাগন স্পেশালিস্ট জিন পল টাসিন এর সাথে আলোচনা করেছে। জিন পল টাসিন একজন নিউরোবায়োলজিস্ট এবং ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন অব হেলথ এন্ড মেডিকেল রিসার্চ (ইনসারম) এর এমেরিটাস ডিরেক্টর অব রিসার্চ। তার কাজগুলোর মধ্যে একটি হল বিভিন্ন অবৈধ ড্রাগ যেমন সাইকো-স্টিমুল্যান্ট, এমফেটামিন, কোকেইন, হেরোইন বা মরফিনের মত ওপিয়েট, এক্সট্যাসি এবং বৈধ পদার্থ যেমন টোবাকো, এলকোহল ইত্যাদির খারাপ প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা করা। কনবিনি ক্যাপটাগন বিষয়ে তার একটি সাক্ষাতকার নিয়েছে। নিচে সেটা দেয়া হল:

 

কিভাবে ক্যাপটাগন ISIL এর সাথে সম্পর্কিত?

ক্যাপ্টাগন আসলে একটি মেডিসিন যার একটি অংশ হল এমফেটামিন আর একটি অংশ হল থিওফিলিন। বিংশ শতকের শুরু থেকেই এমফেটামিনকে ল্যাবে তৈরি করা হচ্ছে। এমফেটামিন অবসাদের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং একই সাথে এটা একটি এনারকোটিক, এন্টিডিপ্রেসর এবং এন্টি নারকোলেপ্টিক।

ক্যাপটাগনকে প্রথম তৈরি করা হয় ১৯৬১ সালে এই ভেবে যে এখানে একই সাথে এমফেটামিন ও থিওফিলিন এর বৈশিষ্ট্য মিলে রোগীর মাঝে একটি ব্রংকোডিলেটর এফেক্ট তৈরি করবে (ব্রংকোডিলেটর একধরণের ড্রাগ যা ব্রংকাইকে প্রশস্ত করে। এই ড্রাগগুলো তাই এজমা দূরীকরণে কাজ করে)। এটা তৈরি করার পর দেখা যায় ক্যাপ্টাগন স্টিমুল্যান্ট হিসেবেও একটি মজাদার বৈশিষ্ট্য দেখাচ্ছে। এটা একটি ইনটেলেকচুয়াল স্টিমুলেন্ট হিসেবে কাজ করছে যা ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষার আগে ব্যবহার করলে ভাল ফল পেতে পারে, আবার ফিজিকাল স্টিমুলেন্ট হিসেবেও কাজ করছে যা খেলাধুলায় অংশগ্রহণকারীরা ব্যবহার করলে ভাল সাফল্য পেতে পারে।

এটা ফ্রান্সে ৭০ এর দশকে এবং ইংল্যান্ডে ৮০ এর দশকে নিষিদ্ধ হয়ে যায়। আর এই নিষিদ্ধ হবার কারণ ছিল এর অনেকগুলো সেকেন্ডারি এফেক্ট যেমন হার্ট এটাকের সম্ভাবনা, ডিপ্রেশন এবং ড্রাগ এডিকশন। কিন্তু এখনও এটা ইউরোপ এবং মিডল ইস্টের অনেক অবৈধ ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা হয়।

যেহেতু অবৈধ প্রোডাক্ট এর সারভেইল্যান্স ইউরোপের থেকে মিডল ইস্টে অনেক কম তাই মিডল ইস্টে সহজেই ক্যাপ্টাগন ছড়িয়ে পড়ে। ভুলে যাবেন না যে গবেষণায় পাওয়া ক্যাপ্টাগনের বেশ কিছু এফেক্টের মধ্যে কয়েকটি হল সেনসেশন অব প্লেজার বা আনন্দের অনুভূতি, ইউফোরিয়া বা চঞ্চল অবস্থা অন্যতম। ধীরে ধীরে ডোজ বাড়ানোর সাথে ব্যবহারকারী এর সাইকোলজিকাল এবং ফিজিকাল এফেক্ট বুঝতে থাকে।

এখন আমরা এই ড্রাগটির সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জেনেছি, বিশেষ করে এটা যে, এই ড্রাগটি ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তাদের ভিক্টিমদের প্রতি সবধরণের এমপ্যাথি বা সহানুভূতি কেড়ে নেয়। এটা অনেকগুলো এফেক্টের মধ্যে একটি তবে এটা এর বেসিক মেকানিজম এর একটি ফলাফল মাত্র। এর বেসিক মেকানিজমটি হল সব ধরণের হোমিওস্ট্যাসিসকে হারিয়ে ফেলা। এটার অর্থ হচ্ছে, মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সিস্টেম যা আমাদেরকে সবরকমের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতন করে রাখে তা পূর্ণ হয়ে যাওয়া। এই সারকিটটা (রিওয়ার্ড সিস্টেম) আমাদের ব্রেইনকে বলে যে সবকিছু ঠিক আছে, কোন রিস্ক বা ঝুঁকি নেই, আমরা তৃষ্ণার্ত নই, আমরা ক্লান্ত নই। যদি চারপাশের সব অবস্থাই খুব খারাপ থাকে তারপরও ক্যাপ্টাগন গ্রহণকারীর এরকমটাই মনে হবে।

আর এরফলে যখন এই ড্রাগটি কাজ করে, এর সাইকোলজিকাল কনসিকুয়েন্সের ফলে কারও মৃত্যুই (তা নিজের হোক আর অন্যের) ব্যবহারকারীর কাছে বিপজ্জনক বা বাঁধা বলে মনে হয় না। মানুষের মাঝে যে মৌলিক নিষেধাজ্ঞাগুলো সবসময় কাজ করে, এই ড্রাগের ব্যবহারের ফলে সেটা সম্পুর্ণ উধাও হয়ে যায়। এটা একই সাথে তাদেরকে প্রচুর সাহস দেয় যেকারনে তারা যেকোন কাজই করে ফেলতে পারে।

যেহেতু মৃত্যুর কোন ভয় থাকে না, তাই তারা নিজেদেরকে অপরাজেও বলে মনে করে। আর তারা এমনভাবে কাজটা করতে পারে যেন তারা এরজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছে। যাই হোক, সব ক্যাপ্টাগন গ্রহণকারীই যে খুনি হয়ে যা এমনটা নয়। অনেকে কেবল পরীক্ষায় ভাল করার জন্যেও এই ড্রাগ নিয়ে থাকে।

 

এটা ব্যাথা নাশক হিসেবেও কাজ করে। এর দ্বারা কি কোন নন-ফাটাল এরিয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়েছে এমন জঙ্গি সমস্যামুক্ত হতে পারে?

অবশ্যই। আর যদি বুলেট কোন ফাটাল এরিয়াতেও প্রবেশ করে তাহলে জঙ্গি মারা গেলেও তেমন বেদনা অনুভব করবে না।

 

এই ড্রাগ নিলে কি ব্যবহারকারী তার কৃতকার্যের ফলাফল এবং কাজ কতটা খারাপ এই বিষয়ে সচেতনতাও হারিয়ে ফেলে?

হ্যাঁ। তবে এটা কোন এক্সকিউজ বা অজুহাত হতে পারে না। এই পর্যন্ত এরকম অনেক ঘটনাই দেখা গেছে যেখানে ড্রাগ নেয়া হয় নি কিন্তু এটাক এর পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

 

ফ্রি উইল বা স্বাধীন ইচ্ছার ব্যাপারে কি বলবেন? অনেক জায়গা থেকেই বলা হয়েছে যে টেরোরিস্টরা রোবটের মত আচরণ করেছে। এই ড্রাগ কি যে কোন অনুভূতি যেমন দর্শন, ঘ্রাণ, শ্রবণ, স্পর্শ সব পালটে দেয়?

যেই সময়ে তারা ক্যাপটাগন গ্রহণ করে তখন তারা তাদের ফ্রি উইল বা স্বাধীন ইচ্ছা ড্রাগের এফেক্ট এর কারণে হারিয়ে ফেলবে। কিন্তু এর ফলে তার অনুভূতি পালটে যাবে না, পালটে যাবে কেবল তাদের জাজমেন্ট বা বিচারবুদ্ধি।

 

সবাই দেখছে যে, টেরোরিস্টরা এই ড্রাগের কার্যকারিতা দেখে আকৃষ্ট হচ্ছে। কিন্তু ড্রাগের এমন কি কোন এফেক্ট আছে যা টেরোরিস্টদের পক্ষে যায় না?

না, এটাকের সময় টেরোরিস্টদের মূলত ছোটাছুটি আর নির্ভয়ে ক্লোজ রেঞ্জে গোলাগুলির মধ্যে থাকতে হয়। এসব কাজে ড্রাগে কোন সমস্যা নেই। তবে যদি টেরোরিস্টকে দূর থেকে কোন লক্ষ্য স্থির করে গুলি করতে হয় বা কোন ফাইটার প্লেন ওড়াতে হয় তখন অবশ্যই এই ড্রাগ গ্রহণে সমস্যা হবে।

 

কেন এই ব্রেইনওয়াশড, ফ্যানাটিসাইজড, ডিটারমিনড এবং ট্রেইনড জিহাদিস্টদের তাদের এই হত্যাযজ্ঞ চালানোর জন্য এই ড্রাগের প্রয়োজন হবে?

কারণ এতকিছু সত্ত্বেও তারা আমাদের সবার মতই। তাদেরকে তাদের বছরের পর বছর জুড়ে অর্জিত শিক্ষার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়। একজন বাস ড্রাইভার যিনি এই টেরোরিস্টদের সাথে ১৫ মাস কাজ করেছেন, তিনি বলেন, তিনি এই পৃথিবীর সব থেকে ভাল মানুষ ছিলেন। এই টেরোরিস্টদের প্রতিবেশীদেরকে যখন তাদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সবাই বলেছেন যে এরা সবাই ব্যতিক্রমধর্মী মানুষ ছিলেন যারা বিনয়ের সাথে “হেলো” বলতেন, অনেক ভাল ব্যবহার করতেন ইত্যাদি, ইত্যাদি।

 

এই ড্রাগ ব্যবহার করে কি টেরোরিস্টদেরকে এই ড্রাগের উপর নির্ভর করে তুলে তারপর তাদের নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব? এর দ্বারা ISIL কি টেরোরিস্টদের উপর সহজে কর্তৃত্ব ফলাতে সক্ষম হবে?

আসলে এই ড্রাগ ব্যবহার করে কেউ এর উপর নির্ভরশীল হয়ে গেছে এরকম উদাহরণ খুব কম। মাত্র ১২ শতাংশ ড্রাগ ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রেই এরকম নির্ভরশীলতা দেখা গেছে। তবে এই প্রোডাক্টটি আনন্দ দেয় আর যেহেতু তারা কষ্ট না করে বিনামূল্যেই এই ড্রাগ পাচ্ছে তাই মনে হয় তারা সাপলাইয়ারদের উপর নির্ভরশীল হয়ে যায়।

নেপোলিয়নও তার সৈন্যদেরকে তাদের মিলিটার সারভিসের সময় গলইসেস (সিগারেট) দেবার পরিকল্পনা করেছিলেন কিন্তু পার্থক্য হল তিনি তাদের ক্রয়কে আরও সুবিধাজনক করেছিলেন যাতে তাদের সারভিসের পর ট্যাক্স রিকভার করা যায়। কোনভাবেই এমফেটামিন যথেষ্ট পরিমাণে ডিপেন্ডেন্সি বা নির্ভরশীলতা তৈরি করে না যাতে কেউ এরকম জাংকি টেরোরিস্ট হয়ে যাবে।

 

ক্যাপ্টাগন কি ISIL এর অর্থনীতির ক্ষেত্রেও সুবিধাজনক হতে পারে? আমরা জানি যে এই পিল ৫ থেকে ২০ ডলারের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে, আর যে ফ্যাক্টরি এটা তৈরি করছে তা আসলে সিরিয়াতেই পাওয়া গেছে।

অবশ্যই। একটা পিল তৈরি করতে প্রায় ২০ সেন্ট খরচ হয় আর সেখানে তারা এটা ৫ থেকে ২০ ডলারে বিক্রি করতে পারছে। এটায় মাল্টিপ্লিকেশন ফ্যাক্টর হল ৫০। যদি আপনি এই ফ্যাক্টরকে ১১ টন দিয়ে গুণ দেন যা প্রতি বছর গ্রহণ করা হয় (মনে রাখবেন এই পিলগুলোর ভর গ্রামে মাপা হয়), তাহলে আপনি একটা “এস্ট্রোনমিকাল সাম” এর অর্থ পাবেন যার জন্য খুব সামান্য পরিমাণ ইনভেস্ট করলেই কাজ হয়ে যায়। এগুলো তৈরি করা একেবারেই সহজ কারণ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রির খুব সস্তা উপকরণ দিয়েই এগুলো তৈরি করা যায়। ইউরোপে এই প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো কনট্রোলে থাকে।

 

আপনাকে যদি আমাদের এলিট ফোর্স ও কমান্ডোদেরকে টেরোরিস্টদের বিরুদ্ধে আমাদের রক্ষার জন্য তাদের মিলিটারি এফেক্টিভনেস বৃদ্ধির করতে এরকম কোনকিছু ব্যবহার করার পরামর্শ দিতে বলা হয় তাহলে আপনি এরকম কোন সাবস্টেন্সকে সাজেস্ট করবেন?

যদি সিভিলিয়ান বা সাধারণ মানুষ ও হস্টেজ বা জিম্মিদের কথা না ভেবে টেরোরিস্টদের টারগেট করার কথা বলা হয় তাহলে ক্যাপ্টাগন ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু এটাই কমান্ডোদের কাজকে কঠিন করে তুলবে কেননা তাদেরকে কেবল টেরোরিস্টদেরকেই টারগেট করতে হয়।

বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান, খুবই উন্নত মানের ফিজিকাল ও সাইকোলজিকাল সিলেকশন এবং অবিরত ট্রেইনিং- এসবই একজনকে কমান্ডো হিসেবে গড়ে তোলে।

 

শেষ প্রশ্ন করছি। ক্যাপ্টাগন কি টেরোরিস্টদের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচ্য হবে, নাকি দীর্ঘ সময়ের কথা ভাবলে শেষ পর্যন্ত এটা তাদের জন্য একটি ক্ষতিকারক ড্রাগ হিসেবেই পরিগণিত হবে?

এটা খুবই পরিষ্কার যে, তারা যে উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে, তার জন্য ক্যাপটাগন নিঃসন্দেহেই টেরোরিস্টদের কাছে একটা মূল্যবান সম্পদ। এটা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

 

আরও কিছু কথা:

ক্যাপ্টাগন সম্পুর্ণ সিন্থেটিক তবে নেচারাল নিউরোট্রান্সমিটার যেমন ডোপামিন এবং এড্রেনালিনে এর প্রভাব আছে। কেউ ক্যাপটাগন গ্রহণ করলে সেখানে যাই থাকে তা মেটাবলিজমের দ্বারা এমফেটামিন ও থিওফিলিনে পরিণত হয়। পারফরমেন্স বুস্টিং সহ যে প্রভাবগুলো পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলোর সব এই এমফিটামিনের প্রভাব। তাই একে এমফিটামিন ড্রাগও বলে। টেরোরিস্টরা একে কাজে লাগায় বলে একে টেরোরিস্ট ড্রাগ বলে। পূর্বে একবার ফেইক ক্যাপ্টাগন উদ্ধার করা হয়েছিল, সেটাতে ক্যাপ্টাগনের মূল উপাদান ফেনেথিলিন হাইড্রোক্লোরাইড এর বদলে কেবল এমফিটামিন ও ক্যাফেইন পাওয়া গিয়েছিল। এখানেও যেহেতু এমফেটামিন আছে তাই বলে যায় জঙ্গিদের ক্ষেত্রে এটাও আসল ক্যাপ্টাগন এর মতই কাজ করবে।

টেরোরিস্টরা যে সবসময়ই এটাকের সময় ক্যাপ্টাগন ব্যবহার করে তেমনটা বলা যাবে না। প্যারিস এটাকের ক্ষেত্রে ধারণা করা হলেও এটাকারদের রক্তে এরকম কিছু পাওয়া যায় নি। তাদের রক্তে কিছু পরিমাণ এলকোহল, ক্যাফেইন, কোকেইন পাওয়া গেলেও বলা হয় এগুলো আক্রমণের দিন ১৩ নভেম্বর নেয়া হয় নি। ফরেনসিক এনালাইসিস করে নির্ধারণ করা যায় যে আক্রমণকারী ড্রাগ নিয়েছিল নাকি নেয় নি বা কোন ড্রাগটি নিয়েছিল। বেশ কিছু ক্ষেত্রে আক্রমণকারীর রক্তে এটা সনাক্ত করা গেলেও প্যারিস হামলায় এটা ধরা পরে নি বলে বলা যায় সব এটাকে টেরোরিস্টরা এই ড্রাগ ব্যবহার করে না। আর এটাও বলতে হয়, এই ড্রাগের এফেক্ট পারমানেন্ট না। এফেক্টের জন্য কাউকে এই ড্রাগ এটাকের দিনে গ্রহণ করতে হবে।

 

তথ্যসূত্র:

  1. http://www.konbini.com/en/lifestyle/effects-of-captagon-terrorists-drug/ 
  2. http://www.vox.com/world/2015/11/20/9769264/captagon-isis-drug
  3. http://www.forbes.com/sites/carmendrahl/2015/11/21/what-you-need-to-know-about-captagon-the-drug-of-choice-in-war-torn-syria/#44fd36511697
  4. http://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/15978343
  5. http://www.abc.net.au/news/2015-11-24/captagon-the-drug-that-kept-the-paris-attackers-calm/6970464
  6. http://www.france24.com/en/20160105-paris-attackers-not-drugs-toxicology-report-finds-captagon-terrorism-france

3 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.