Table of Contents
ভূমিকা
পাকিস্তান গত কয়েক বছর ধরে কঠিন সময় পার করছে, বিশেষত ২০২১ সালে তালেবান (Taliban) আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করার পর থেকে। যদিও মার্কিন আগ্রাসনের (American invasion) সময় পাকিস্তান তুলনামূলক তালেবান-বান্ধব অবস্থান বজায় রেখেছিল, যা ওয়াশিংটনকে (Washington) বিরক্ত করেছিল। তালেবান কাবুল পুনর্দখল করা মাত্রই এই সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তার মূল কারণ, তালেবান পাকিস্তানি তালেবান (Pakistani Taliban) বা সংক্ষেপে টিটিপি (TTP) নামের ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে (Islamist terror group) উচ্ছেদ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এই টিটিপি পাকিস্তানি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রক্তক্ষয়ী ও ব্যয়বহুল বিদ্রোহ (Insurgency) চালিয়ে আসছে।
২০২১ সাল থেকে পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনী (Pakistani security forces) ও তালেবান (অথবা টিটিপি) আফগান-পাকিস্তান সীমান্তজুড়ে (Pakistan-Afghanistan border) নিয়মিত ছোট-বড় সংঘর্ষ (Skirmishes) ঘটিয়েছে। তবে ২০২৪ সালের শেষ দিকে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী এক হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান আফগানিস্তানের ভেতরে কিছু বিমান হামলা (Airstrikes) চালায়। ২০২৫ সালের জানুয়ারির গোড়ার দিকে তালেবানও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে সীমান্ত অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সৈন্য (Troops) মোতায়েন করে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shahbaz Sharif) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে পাকিস্তান “তালেবানকে চূর্ণ (Crushing the Taliban) না করে” এগিয়ে যেতে পারবে না। এই নিবন্ধে আমরা দেখব ২০২১ সালের পর থেকে কীভাবে পাকিস্তান ও তালেবানের সম্পর্ক খারাপের দিকে গেছে, কেন সংঘাত আবার উসকে উঠেছে, এবং সামনে কী ঘটতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষাপট: তালেবান ও পাকিস্তানের ‘বন্ধুত্ব’: মুজাহিদিন যুগ ও পাকিস্তানের ভূমিকা
আধুনিক কালের বেশিরভাগ সময় তালেবান ও পাকিস্তানের সম্পর্কে ঐতিহাসিকভাবে একটা মিত্রভাব দেখা গেছে। তালেবান আসলে ছিল আফগান মুজাহিদিন (Afghan Mujahideen)-এরই একটি অংশ, যারা ১৯৮০’র দশকে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছিল। সে সময় যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান উভয়েই মুজাহিদিনদের সমর্থন দিয়েছিল।
১৯৯৪ সালে তালেবান সংগঠিত আকারে আত্মপ্রকাশের পর পাকিস্তান তাদের প্রতি সমর্থন বজায় রাখে। অনেক তালেবান যোদ্ধাই মূলত পাকিস্তানের মাদ্রাসাগুলোতে আশ্রয় নেওয়া আফগান শরণার্থীদের (Afghan refugees) মধ্য থেকে আসত। ১৯৯৬ সালে তালেবান কাবুল দখল করে “ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তান” (Islamic Emirate of Afghanistan) প্রতিষ্ঠা করলে, বিশ্বের মাত্র তিনটি দেশ—সৌদি আরব (Saudi Arabia), সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) ও পাকিস্তান—একে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়।
এরপর ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করলেও পাকিস্তান তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করেনি। এই অবস্থান ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের (Islamabad) মধ্যে বিরোধের উৎস হয়ে ওঠে।
কেন পাকিস্তান তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেনি?
পাকিস্তান অন্তত তিনটি প্রধান কারণে তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছিল:
- সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সংযোগ: তালেবান মূলত পশতু সম্প্রদায়ের (Pashtuns) মধ্যে সীমাবদ্ধ, এবং পশতুরা শুধু আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে নয়, উত্তর পাকিস্তানের অনেক অঞ্চলেও বাস করে। ব্রিটিশ আমলে যে ডিউরান্ড লাইন (Durand Line) টানা হয়েছিল, সেটি পশতু অধ্যুষিত এলাকাকে বিভক্ত করেছে। ফলে এই সীমান্তকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা বরাবরই কঠিন হয়েছে।
- ভারতবিরোধী কৌশল: পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা তালেবানকে আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষার (Regional counterbalance) একটি উপায় হিসেবে দেখে—বিশেষ করে ভারতের বিরুদ্ধে। এছাড়া পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সরকার থেকে স্বাধীনভাবে পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করে থাকে বলে মনে করা হয়; সরকার তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও সেনাবাহিনী সেটি নাও মানতে পারে।
- স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা: এমনকি তালেবান ক্ষমতার বাইরে থাকলেও, দক্ষিণ আফগানিস্তানে তাদের প্রভাব ছিল। পাকিস্তানকে তালেবানের সঙ্গে একটা ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্ক রাখতে হতো, যাতে আফগানিস্তান থেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো, বিশেষ করে টিটিপি (TTP), পাকিস্তানে ঢুকে তৎপরতা চালাতে না পারে। টিটিপি ২০০৭ সাল থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ত্যাগ করলে দ্রুতগতিতে যখন তালেবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়, তখন পাকিস্তানের এই দীর্ঘমেয়াদি সমর্থনকে অনেকেই কার্যকর কৌশল বলে অভিহিত করেন।
আশা ও বাস্তবতা: তালেবান কেন টিটিপিকে দমানোর প্রতিশ্রুতি রাখেনি
তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় এলে পাকিস্তানের ধারণা ছিল, তারা অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠন—বিশেষ করে টিটিপি—চাপের মুখে রাখবে বা উৎখাত করবে, কারণ পাকিস্তান তালেবানকে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন দিয়ে এসেছে। কিন্তু বাস্তবে উল্টোটা ঘটে। তালেবান পাকিস্তান ও টিটিপির মধ্যে মধ্যস্থতায় উদ্যোগী হয়, যা ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত একটি যুদ্ধবিরতি (Ceasefire) এনেছিল। কিন্তু সেই যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পরই টিটিপি পাকিস্তানের ভেতরে পুনরায় আক্রমণ শুরু করে, এবং সেই আক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
২০২২ ও ২০২৩ জুড়ে পাকিস্তান-তালেবান সম্পর্ক ক্রমাগত খারাপের দিকে যায়। মাঝেমধ্যে সীমান্তে ছোটখাটো সংঘর্ষ লেগেই ছিল। পাকিস্তানি রাজনীতিক ও কর্মকর্তারা তালেবানকে প্রকাশ্যে অভিযুক্ত করে বলেন যে, তারা টিটিপিকে (TTP) নিরাপদ আশ্রয় (Safe haven) দিচ্ছে, এমনকি তাদের প্রত্যক্ষ সহায়তাও করছে।
অপরদিকে তালেবান অভিযোগ তোলে যে, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রকে পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী খোঁজে হামলা চালাতে ড্রোন হামলার (Drone strikes) সুযোগ দিচ্ছে। বিশেষ করে ২০২২ সালের জুলাইয়ে কাবুলে আল-কায়েদার (Al Qaeda) নেতা নিহত হওয়ার সেই ড্রোন হামলাকে তালেবান যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান আঁতাতের উদাহরণ বলে তুলে ধরে।
ডিউরান্ড লাইন এবং সীমান্ত বিরোধ
দুই দেশের মধ্যে বড় এক দীর্ঘমেয়াদি বিরোধ হলো ডিউরান্ড লাইন (Durand Line)। ১৯শতকের শেষ দিকে ব্রিটিশরা এই সীমান্ত চিহ্নিত করে, যা আসলে পশতু সম্প্রদায়কে দুইভাগে ভাগ করে দেয়। তালেবান এই সীমান্তকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ, কারণ এটি আনুষ্ঠানিকভাবে পশতু এলাকাকে দ্বিখণ্ডিত করছে। তাই কার্যত সীমান্ত সুরক্ষা বা প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ বাস্তবায়ন বরাবরই কঠিন হয়ে উঠেছে।
আফগান অভিবাসীদের বহিষ্কার ও নতুন সংকট
২০২৪ সালের শেষ নাগাদ পাকিস্তান ঘোষণা করে, প্রায় ২০ লাখ অনথিভুক্ত (Undocumented) আফগান অভিবাসীকে নভেম্বর মাসের মধ্যে দেশ ছাড়তে হবে, অন্যথায় তাদেরকে জোর করে বহিষ্কার (Deportation) করা হবে। তালেবান এটিকে “অগ্রহণযোগ্য” বলে আখ্যা দিলেও পাকিস্তান সিদ্ধান্ত কার্যকর করে। এখন পর্যন্ত আনুমানিক ৫ লাখের বেশি আফগান নাগরিককে পাকিস্তান থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
একই সময়ে পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকাগুলোতে বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর (Baloch separatist groups), যেমন বেলুচিস্তান লিবারেশন ফ্রন্টের (Balochistan Liberation Front) তৎপরতা বেড়ে যায়। ২০২৪ সালটা পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য অত্যন্ত রক্তক্ষয়ী বছর হিসাবে চিহ্নিত হয়। পাকিস্তানের সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (Center for Research and Security Studies) অনুযায়ী নিরাপত্তা বাহিনীর বহু সদস্য সন্ত্রাসবাদবিরোধী (Counterterrorism) অভিযানে বা সন্ত্রাসী আক্রমণে নিহত হয়।
২০২৪-এর শেষের লড়াই এবং টিটিপির উত্থান
ডিসেম্বরে (২০২৪) দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের (South Waziristan) একটি পাকিস্তানি পোস্টে টিটিপির হামলায় অন্তত ১৬ জন সৈন্যের মৃত্যু হয়। এরই প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান আফগানিস্তানের বাহমাউ (Bahmau) জেলায় বিমান হামলা চালায়। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর এটি ছিল পাকিস্তানের তৃতীয়বারের মতো আফগান অভ্যন্তরে সরাসরি হামলা।
পাকিস্তানের দাবী, তারা অন্তত ২০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছে। তবে তালেবান বলছে, নিহতের সংখ্যা অনেক বেশি, এবং এর মধ্যে কয়েকজন নারীও আছে। পরবর্তী কয়েক দিনে সীমান্তজুড়ে তালেবান ও পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে লাগাতার সংঘর্ষ চলে।
ডিসেম্বরের ৩০ তারিখে তালেবান প্রায় ১৫,০০০ সৈন্য ওই অঞ্চলটিতে মোতায়েন করে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানা গেছে যে, তালেবান ও টিটিপি মিলে পাকিস্তানের বেশ কিছু সীমান্ত পোস্ট (Border posts) দখল করতে পেরেছে। ২০২৫ সালের গোড়ায় এই উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
জানুয়ারি ২ তারিখে পাকিস্তান দাবি করে, তালেবান টিটিপিকে ফিরিয়ে নিতে বা টিটিপির অবস্থান প্রত্যাহার করতে “১০ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি” দাবি করছে। পরের দিনই প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ঘোষণা করেন, “তালেবানকে চূর্ণ না করে পাকিস্তান এগোতে পারবে না।”
সামনে কী হতে পারে?
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দফা উত্তেজনা বেড়েছে, তবে এখনো পর্যন্ত পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ (Full-scale war) হয়নি। তবুও, সাম্প্রতিক সহিংসতা অব্যাহত থাকলে এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরে টিটিপির হামলার হার আগের মতো বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে।
বর্তমান পরিস্থিতি যে টেকসই নয়, তা বেশ স্পষ্ট। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ যদি টিটিপিকে ঠেকাতে না পারে, আর তালেবান যদি তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও গড়িমসি করে, তাহলে সংঘাত তীব্রতর হয়ে উঠতে পারে।
অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রভাব
তালেবানের জনপ্রিয়তা ও অপারগতা: তালেবান সরকার বিদেশি স্বীকৃতি পায়নি বললেই চলে, তাদের প্রতি দেশীয় সমর্থনও খুব একটা শক্ত নয়। অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত এক দেশকে পরিচালনা করা তাদের জন্য সহজ নয়।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট: অন্যদিকে, পাকিস্তান সরকারও অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে অস্থির। একাধিকবার আইএমএফ (IMF) থেকে বেইলআউট (Bailout) নিতে হয়েছে, আর ঘরোয়া রাজনীতিতে প্রধান বিরোধী নেতা ইমরান খানকে কারাবন্দি করে সরকার স্বস্তি পেতে চায়। কিন্তু এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে অস্থিরতা বেড়েছে।
দুই পক্ষেরই অভ্যন্তরীণ চাপ এত বেশি যে, তারা দেশকে ঐক্যবদ্ধ ও জনগণের মনোযোগ ঘরোয়া সংকট থেকে সরাতে একটি যুদ্ধ বা সঙ্ঘাতমূলক পরিস্থিতিকে ব্যবহার করতে পারে – এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
উপসংহার
পাকিস্তান ও তালেবানের মধ্যে সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে। মার্কিন আগ্রাসনের সময় তালেবানকে সমর্থন দিয়ে পাকিস্তান কূটনৈতিকভাবে বেশ চাপে পড়েছিল, কিন্তু তারা বিশ্বাস করেছিল দীর্ঘমেয়াদে তালেবানকে পক্ষে রাখা তাদের নিজেদের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক স্বার্থ রক্ষার জন্য জরুরি। তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর পাকিস্তানের আশা ছিল তালেবান টিটিপির মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে দমনে সহায়তা করবে। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টোটা ঘটায় দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক দ্রুত খারাপের দিকে গেছে।
- টিটিপির ক্রমবর্ধমান হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য বড় হুমকি।
- সীমান্ত বিরোধ ও অভিবাসী বিতাড়ন বিষয়গুলো আরো অস্থিরতা বাড়িয়েছে।
- বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদ নিয়ে পাকিস্তানের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ জটিলতা আছে।
- তালেবানের ক্ষমতায় টিকে থাকার সংগ্রাম আর পাকিস্তানের অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক সংকট—এ দুটি বিষয় দুই দেশকেই আপাতদৃষ্টিতে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে প্রলুব্ধ করতে পারে, যাতে তারা জনগণের মনোযোগ স্থানান্তরিত করতে পারে।
এই মুহূর্তে বড় মাপের যুদ্ধ শুরু না হলেও, আগের তুলনায় পরিস্থিতি অনেক বেশি অস্থিতিশীল। ২০২৪ সালের শেষ দিকের ঘটনাগুলো দেখায় যে, উভয় পক্ষের মধ্যেই সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে টিটিপির হামলা বেড়ে গেলে পাকিস্তান হয়তো আরও কঠোরভাবে তালেবানের ওপর চড়াও হবে, এবং তালেবানও হয়তো তাদের সীমান্তে আরো সৈন্য মোতায়েন করে পাল্টা জবাব দেবে।
সবমিলিয়ে, পাকিস্তান-তালেবান সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা মোটেই টেকসই নয়। সংঘাত এড়াতে হলে দুই পক্ষকেই হয় পারস্পরিক সমঝোতা করতে হবে, নয়তো অন্য কোনো বৃহত্তর শক্তির মধ্যস্থতায় (Mediation) একটা অন্তর্বর্তী সমাধানে আসতে হবে। অন্যথায়, আঞ্চলিক অস্থিরতা আরো বেড়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
তথ্যসূত্র
1 – https://www.india.com/news/world/without-crushing-taliban-pakistan-pm-shehbaz-sharif-speaks-on-violent-incidents-along-afghan-pak-border-7511749/
2 – https://www.cfr.org/backgrounder/taliban-afghanistan#chapter-title-0-6
3 – https://en.wikipedia.org/wiki/Afghanistan%E2%80%93Pakistan_relations
4 – https://en.wikipedia.org/wiki/Pashtunistan
5 – https://www.reuters.com/world/asia-pacific/taliban-accuses-pakistan-allowing-us-drones-use-its-airspace-2022-08-28/
6 – https://www.9dashline.com/article/what-does-the-forced-deportation-of-afghan-refugees-hold-for-pakistan
7 – https://crss.pk/2024-marks-deadliest-year-for-pakistans-security-forces-record-high-fatalities-in-a-decade/
8 – https://www.voanews.com/amp/voa-afghan-taliban-deny-pakistan-s-allegation-they-sought-money-to-remove-pakistani-taliban-from-border-areas/7922571.html
Leave a Reply