Table of Contents
ভূমিকা
প্রত্যেক প্রজন্মের মানুষেরই একটি স্বাভাবিক ও গভীর আকাঙ্ক্ষা থাকে যে তাদের সন্তান এবং নাতি-নাতনি তাদের চেয়ে উন্নত, ধনী এবং সমৃদ্ধ জীবন যাপন করবে। এই মৌলিক মানবিক প্রত্যাশা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে মানুষ তাদের সন্তানদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভবিষ্যৎ সুরক্ষা এবং আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। তারা জীবন বীমা (life insurance) এবং উত্তরাধিকারের (estate inheritance) মতো দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক পরিকল্পনা করে, মূল্যবান সময় ও শ্রম বিনিয়োগ করে। সন্তানদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য তারা তাদের বর্তমানের অনেক আরাম আয়েশ ত্যাগ করতেও প্রস্তুত থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, বিশ্বজুড়ে একটি ক্রমবর্ধমান সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে এই আন্তরিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, তাদের সেই লালিত স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না।
সহনশীল প্রজন্মের সদস্য মিলেনিয়ালরা জেন জি-রা যারা ১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সালের পর জন্মগ্রহণ করেছে, তারা এখন অর্থনৈতিকভাবে একটি কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন। আর্থিক বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন গবেষণা এবং বিশ্লেষণের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, মিলেনিয়ালরা তাদের পূর্বসূরী বেবি বুমার (baby boomer) (যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জন্মগ্রহণকারী প্রজন্ম) এবং জেনারেশন এক্স (Gen X) (যারা ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে ১৯৮০-এর দশকের শুরু পর্যন্ত জন্মগ্রহণকারী প্রজন্ম) – উভয়ের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে দরিদ্র হতে চলেছে। এই অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি কেবল মিলেনিয়ালদের ব্যক্তিগত জীবনের জন্যই উদ্বেগের কারণ নয়, বরং এটি সামগ্রিকভাবে সমাজের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ভবিষ্যতের প্রবৃদ্ধির উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অর্থনৈতিক সংকট এবং মিলেনিয়ালদের উপর এর প্রভাব
২০০৮ সালের মর্টগেজ সংকটের (mortgage crisis) চরম পতনের সময় যখন মিলেনিয়ালরা সবেমাত্র কর্মজীবনে প্রবেশ করতে শুরু করেছিল, তখন থেকেই তাদের অর্থনৈতিক যাত্রা শুরু হয় এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে। এই আর্থিক বিপর্যয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারী এবং এর ফলস্বরূপ অর্থনৈতিক মন্দা মিলেনিয়ালদের জীবনে আরও একটি বড় আঘাত হানে। এই ধারাবাহিক অর্থনৈতিক ধাক্কাগুলোর কারণে বর্তমানে মিলেনিয়ালদের কাছে সম্মিলিতভাবে জাতীয় সম্পদের (national wealth) মাত্র ৩%-ই রয়েছে। অন্যদিকে, বেবি বুমাররা যখন তাদের জীবনের একই পর্যায়ে ছিলেন, তখন তারা জাতীয় সম্পদের ২৭% এর মালিক ছিলেন। এই বিশাল ব্যবধান স্পষ্টভাবে মিলেনিয়ালদের অর্থনৈতিক দুর্বলতাকে তুলে ধরে।
বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে সম্পদের অসম বন্টন (Wealth Inequality): এই হতাশাজনক চিত্র শুধুমাত্র কতিপয় লাটে পান করা মিলেনিয়ালদের জন্য একটি করুণ কাহিনী নয়। একটি বৃহত্তর পরিসরে দেখলে বোঝা যায়, ৪০ বছরের কম বয়সী মানুষের মালিকানাধীন সম্পদের সামগ্রিক অংশেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। গত তিন দশকে এই অংশের পরিমাণ ১৩% থেকে কমে ৭% এর নিচে নেমে এসেছে। এই পরিসংখ্যান সমাজের গভীরে প্রোথিত সম্পদের ক্রমবর্ধমান বৈষম্যকেই নির্দেশ করে। যদি আমরা তরুণ পরিবারগুলোর সামাজিক সমস্যাগুলোকে উপেক্ষা করি, যারা তাদের পিতামাতার তুলনায় অর্ধেকেরও কম সম্পদ নিয়ে জীবন ধারণ করতে বাধ্য হচ্ছে, তাহলেও এর সুদূরপ্রসারী এবং গুরুতর অর্থনৈতিক প্রভাব (economic implications) থাকতে পারে।
ভোক্তা বাজারের উপর প্রভাব (Impact on the Consumer Market): তরুণ পরিবারগুলো যখন তাদের জীবন শুরু করে, তখন তারা স্বাভাবিকভাবেই ভোক্তা ব্যয়ের (consumer spending) একটি বিশাল অংশ তৈরি করে। ঐতিহ্যগতভাবে, ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সের মানুষগুলোকে অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সক্রিয় ভোক্তা বাজার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই বয়সের মানুষদের সাধারণত পূর্ণকালীন স্থিতিশীল চাকরি থাকে এবং তাদের হাতে কিছু অতিরিক্ত আয়ও থাকে, যা তারা বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবার উপর খরচ করতে সক্ষম। অন্যদিকে, তরুণ ক্রেতাদের অনেকেরই হয়তো ততটা আর্থিক সক্ষমতা থাকে না, আবার বয়স্ক ভোক্তাদের মধ্যে নতুন কিছু কেনার আগ্রহ তুলনামূলকভাবে কম দেখা যায়। তাই, যদি এই নেতিবাচক প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে বিশ্বজুড়ে ব্যবসাগুলো তাদের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ ভোক্তা ব্যয়ের সোনালী অঞ্চল (Goldilocks zone) হারাতে শুরু করতে পারে। এর ফলস্বরূপ সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেতে পারে।
যে কারণে অর্থনৈতিক মন্দা ও কোভিড-১৯ মহামারীর মত আর্থিক বিপর্যয় প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধানের গুরুত্বপূর্ণ কারণ নয়
শিরোনামের পরিসংখ্যানের দিকে খুব মনোযোগ না দিলেও, সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা অনেকেই হয়তো এটা অনুভব করতে পারি যে নতুন প্রজন্ম আর্থিকভাবে তাদের পূর্বসূরীদের তুলনায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। তবে, এই পরিস্থিতির পেছনের সুনির্দিষ্ট কারণগুলো হয়তো অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়। নিঃসন্দেহে, দুটি বড় আর্থিক বিপর্যয় – ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকট এবং সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ মহামারী – এই অবস্থার জন্য দায়ী। কিন্তু যদি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে এই অর্থনৈতিক মন্দাগুলোর সবচেয়ে বেশি ক্ষতি তো প্রতিষ্ঠিত সম্পদ এবং বয়স্ক প্রজন্মের উপর হওয়ার কথা ছিল, যাদের হারানোর মতো অনেক বেশি সম্পদ ছিল। তরুণ প্রজন্মের, যাদের কর্মজীবনে পুনরুদ্ধারের জন্য এখনো অনেক সময় বাকি, তাদের উপর ক্ষতির প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার কথা। তত্ত্বগতভাবে, অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব বয়স্ক প্রজন্মের উপর বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা ঘটেনি। তাহলে কোন অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা (economic headwinds) তরুণ প্রজন্মকে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে দিচ্ছে? কী কারণে তারা তাদের পূর্বসূরীদের মতো সম্পদ তৈরি করতে পারছে না?
সম্পদ তৈরির অন্যতম মৌলিক ভিত্তি হলো অর্থ সঞ্চয় করতে সক্ষম হওয়া। যদিও মাঝে মাঝে ব্যতিক্রম দেখা যায়, যেমন লটারি বিজয়ী বা অপ্রত্যাশিত উত্তরাধিকার সূত্রে ধনী হওয়া, তবে বেশিরভাগ মিলিয়নিয়ারই কঠোর পরিশ্রম, ভালো আয়, সাশ্রয়ী জীবনযাপন এবং নিয়মিত সঞ্চয়ের মাধ্যমে সম্পদ তৈরি করেছেন। একটি আদর্শ পরিস্থিতিতে (যেখানে অন্যান্য সবকিছু সমান থাকে) এই প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিকভাবেই তরুণ বিনিয়োগকারীদের (investors) জন্য উপকারী হওয়ার কথা।
বিষয়টি আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য দুইজন সহকর্মীর একটি কাল্পনিক উদাহরণ বিবেচনা করা যাক। ধরা যাক, একজন বেবি বুমার যিনি খুব শীঘ্রই অবসর গ্রহণ করবেন এবং একজন মিলেনিয়াল যিনি সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়েছেন – উভয়েরই বার্ষিক $১৫০,০০০ ভালো আয় আছে এবং তারা বীমা বিষয়ক হিসাবরক্ষক (insurance actuaries) হিসেবে কর্মরত। উভয়েই তাদের আয় সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন এবং ট্যাক্স ও জীবনযাত্রার অন্যান্য খরচ পরিশোধ করার পর বার্ষিক $৫০,০০০ সঞ্চয় করেন।
বয়সের পার্থক্যের কারণে, মিলেনিয়াল কর্মী সবেমাত্র কিছু সম্পদ তৈরি করতে শুরু করেছেন এবং বিভিন্ন স্টক (stocks) -এ বিনিয়োগ করে একটি ডাইভার্স পোর্টফোলিওতে (diverse portfolio) প্রায় $১০০,০০০ সঞ্চয় করেছেন। অন্যদিকে, বুমার কয়েক দশক ধরে ধরে একই কাজ করছেন এবং একটি অনুরূপ পোর্টফোলিওতে ২০ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করেছেন। এছাড়াও তার একটি সম্পূর্ণ পরিশোধিত বা সব টাকা পরিশোধ করে দেয়া হয়েছে এমন পারিবারিক বাড়ি রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য $৫০০,০০০।
এখন ধরা যাক, একটি বড় অর্থনৈতিক মন্দা (economic downturn) দেখা দিল এবং এর ফলে আর্থিক সম্পদ ও রিয়েল এস্টেটের (real estate) দাম ৩০% কমে গেল। এই পরিস্থিতিতে মিলেনিয়াল কর্মী তাদের পোর্টফোলিও থেকে $৩০,০০০ হারাবেন। কিন্তু সেই একই সময়ে, বেবি বুমার তাদের পোর্টফোলিও থেকে $৬০০,০০০ হারাবেন এবং তাদের বাড়ির দামও $১৫০,০০০ কমে যাবে। এই কাল্পনিক উদাহরণে দেখা যাচ্ছে যে, বুমার তাদের মিলেনিয়াল সহকর্মীর চেয়ে ২৫ গুণ বেশি আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
এই উদাহরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ক্ষতির তাৎপর্য এবং তা পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় সময়। অনেকেই হয়তো বলবেন যে, যতক্ষণ না উভয় পক্ষ তাদের সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই ক্ষতি আসলে অনুভূত হবে না। এবং নিঃসন্দেহে বুমার এখনও মিলেনিয়ালের চেয়ে অনেক বেশি ধনী। তবে পরিস্থিতিটি বিবেচনা করুন: যদি বাজার দ্রুত পুনরুদ্ধার না হয়, তাহলে মিলেনিয়াল তাদের নিয়মিত বার্ষিক $৫০,০০০ সঞ্চয়ের মাধ্যমে এই ক্ষতি এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে পুনরুদ্ধার করতে পারবেন। অন্যদিকে, বুমারের এই আর্থিক ক্ষতি পূরণ করতে ১৫ বছর লেগে যেতে পারে, যা তার আসন্ন অবসর জীবনকে বিবেচনায় নিলে একটি কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের রিটার্নের (investment returns) সময়কাল খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ না হলেও, স্বল্প মেয়াদে এটি একটি বড় পার্থক্য তৈরি করতে পারে। তাত্ত্বিকভাবে, যাদের হাতে বেশি সম্পদ রয়েছে, অর্থনৈতিক মন্দা থেকে পুনরুদ্ধার করতে তাদের বেশি সময় লাগে, যা আমরা এই কাল্পনিক উদাহরণের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছি।
এত কিছু বলার মূল উদ্দেশ্য হলো, শুধু একথা বলা যথেষ্ট নয় যে মিলেনিয়ালরা তাদের কর্মজীবনের শুরুতে ২০০৮ সালের মর্টগেজ সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল এবং এটিকে ক্রমবর্ধমান প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধানের একমাত্র কারণ হিসেবে ধরে নেওয়া যায় না।
প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধানের কারণ অনুসন্ধান
অবশ্যই আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। তাহলে, এমন কী কারণ রয়েছে যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সম্পদের এই নিম্নমুখী চাপের সৃষ্টি করেছে? কেন নতুন প্রজন্ম তাদের পূর্বসূরীদের মতো আর্থিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারছে না? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার পাশাপাশি, আমাদের এটাও বিবেচনা করতে হবে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (USA) মতো দেশগুলোর ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য এই পরিস্থিতির অর্থ কী? এবং এই প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধান কি কেবল সময়ের অপেক্ষা, যেখানে সম্পদ বয়স্ক প্রজন্ম থেকে তরুণ প্রজন্মের হাতে ধীরে ধীরে হস্তান্তরিত হবে?
আয়, সঞ্চয় এবং জীবনযাত্রার ব্যয় (Income, Savings, and Cost of Living): এই কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো একটু আগে আর্থিক বিপর্যয়ের উদাহরণটা টানার সময় আমাদের পূর্বে করা কিছু সরলীকরণ। সেখানে আমরা ধরে নিয়েছিলাম যে বিভিন্ন প্রজন্মের এই দুজন সহকর্মী সমান আয় করছেন, সমান পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করছেন এবং শুধুমাত্র তাদের নিয়মিত আয় ব্যবহার করে তাদের সঞ্চয়ে অবদান রাখছেন। কিন্তু বাস্তবে চিত্রটি ভিন্ন। বেবি বুমাররা সাধারণত তাদের কর্মজীবনে মিলেনিয়ালদের চেয়ে বেশি অভিজ্ঞ এবং সেই কারণে তাদের বেতনও বেশি হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, তাদের কর্মজীবনের একই পর্যায়েও বেবি বুমাররা মিলেনিয়ালদের তুলনায় প্রায় ২০% বেশি প্রকৃত টেক-হোম আয় (real take-home income) করতেন।
শিক্ষার খরচ এবং ঋণের বোঝা (Education Costs and the Burden of Debt): আয়ের পার্থক্যের পাশাপাশি, শিক্ষাখাতে ব্যয় এবং ঋণের বোঝাও মিলেনিয়ালদের আর্থিক অবস্থার উপর একটি বড় প্রভাব ফেলেছে। বেবি বুমারদের তুলনায় মিলেনিয়ালদের শিক্ষার জন্য অনেক বেশি খরচ করতে হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৮০ সালে একজন বীমা বিষয়ক হিসাবরক্ষক হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় গণিত বা পরিসংখ্যানের (mathematics or statistics) একটি ডিগ্রির খরচ ছিল প্রায় $১২,০০০। আজ সেই একই ডিগ্রির জন্য একজন শিক্ষার্থীকে প্রায় $৮০,০০০ খরচ করতে হয়, যার বেশিরভাগটাই শিক্ষা ঋণ বা স্টুডেন্ট লোনের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। এমনকি আমাদের পূর্বে উল্লেখিত উচ্চ আয়ের উপার্জনকারীর উদাহরণেও দেখা যাচ্ছে যে, শিক্ষার ব্যয়ের কারণে একজন মিলেনিয়াল তাদের বুমার সহকর্মীর চেয়ে অর্থ সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২ বছর পিছিয়ে আছেন। অন্যদিকে, গড় আয়ের মানুষের জন্য এই পার্থক্য কয়েক দশকেও পূরণ করা সম্ভব নাও হতে পারে।
সঞ্চয়ের সুযোগ এবং জীবনযাত্রার পার্থক্য (Savings Opportunities and Differences in Lifestyle Costs): সঞ্চয়ের সুযোগের ক্ষেত্রেও দুই প্রজন্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। যদি আমরা একই পদে থাকা এবং একই বেতন উপার্জনকারী একজন বুমার এবং একজন মিলেনিয়ালের উদাহরণ বিবেচনা করি, তাহলে সেই বুমারের জন্য বার্ষিক $৫০,০০০ সঞ্চয় করা মিলেনিয়ালের তুলনায় অনেক বেশি সহজ হবে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো বুমারের সম্ভবত একটি সম্পূর্ণ পরিশোধিত পারিবারিক বাড়ি রয়েছে। এর ফলে তিনি একদিকে যেমন রিয়েল এস্টেটের দাম বৃদ্ধি থেকে লাভবান হচ্ছেন, তেমনি অন্যদিকে তাকে আর কোনো ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে না। অন্যদিকে, মিলেনিয়ালদের বড় শহরগুলোতে যেখানে হিসাবরক্ষকদের প্রধান কার্যালয়গুলো অবস্থিত, সেখানে প্রতি মাসে কম করে হলেও $১,৫০০ ভাড়া গুনতে হয়। এর অর্থ হলো বুমার হয় একই পরিমাণ সঞ্চয় করার পাশাপাশি আরও উন্নত জীবনযাপন করতে পারেন, অথবা তিনি বছরে অতিরিক্ত $১৯,০০০ করমুক্ত (tax-free) সঞ্চয় করতে পারেন।
বাড়ির মালিকানা এবং সম্পদের সম্পর্ক (Homeownership and the Relationship with Wealth): সম্পদ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাড়ির মালিকানা (home-ownership) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ির মালিকদের গড় নেট সম্পদ (net worth) প্রায় $২৩১,৪০০, যেখানে ভাড়াটিয়াদের গড় নেট সম্পদ $৫,০২০ এরও কম। তবে এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট করা প্রয়োজন যে, ধনী ব্যক্তিরাই সাধারণত বাড়ির মালিক হতে সক্ষম হন, কারণ তাদের একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ জমা (deposit) দেওয়ার সামর্থ্য থাকে এবং তারা সহজেই গৃহ ঋণের (home loan) জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন। তাই এই সম্পর্কটি সম্পূর্ণরূপে কার্যকারণ (causation) না হলেও, যারা একবার বাড়ির মালিকানা লাভ করেন, তারা আর্থিকভাবে উল্লেখযোগ্যভাবে উপকৃত হন। এবং এই বিষয়টিই প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধানের একটি অন্যতম কারণ।
বৃহত্তর সম্পদের বৈষম্য: একটি জটিল চিত্র (The Larger Picture of Wealth Inequality): বেবি বুমারদের জন্য নিঃসন্দেহে কিছু সুবিধা ছিল এবং মিলেনিয়ালদের জন্য কিছু প্রতিকূলতা ছিল। তবে এই প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধান আসলে একটি বৃহত্তর আকারের সমস্যার লক্ষণ – একটি নিয়মিত সম্পদের ব্যবধান। বাস্তবতা হলো, এই উভয় দলের কাছেই তেমন কিছুই নেই। কিন্তু যখন আমরা সম্পদের উপরের স্তরের দিকে তাকাই, তখন পার্থক্যটা চোখে পড়ার মতো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৮০ মিলিয়ন মিলেনিয়ালের সম্মিলিত নেট সম্পদ ৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই বিপুল পরিমাণ অর্থের মধ্যে যেমন একজন সদ্য পাশ করা মেডিকেল গ্র্যাজুয়েটের সামান্য সঞ্চয় এবং বিশাল স্টুডেন্ট লোনের ঋণ (student loan debt) অন্তর্ভুক্ত, তেমনি মার্ক জুকারবার্গের (Mark Zuckerberg) ব্যক্তিগত সম্পদও এর একটি অংশ, যিনি একাই এই সম্মিলিত সম্পদের প্রায় ১.৫% এর মালিক। অন্যদিকে, মাত্র ৩,০০০ জন ধনী বেবি বুমারের সম্মিলিত সম্পদ এই ৬ ট্রিলিয়ন ডলারের চেয়েও বেশি। এই ৩,০০০ জন বিলিয়নিয়ার (billionaires) -দের বিশাল সম্পদ স্টুডেন্ট লোনের ঋণ, আবাসনের অভাব, চাকরির দুষ্প্রাপ্যতা এবং আর্থিক অস্থিতিশীলতার মতো বিষয়গুলোকে প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধানের কারণ হিসেবে আলোচনার ক্ষেত্রে প্রায় অপ্রাসঙ্গিক করে তোলে। এসব কারণ অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলে ঠিকই, কিন্তু যখন আমরা একটি প্রজন্মের হাতে এত বিপুল পরিমাণ সম্পদ কেন্দ্রীভূত হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করি, তখন দেখা যায় যে এর মূল কারণ হলো সেই প্রজন্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অতি ধনী বিলিয়নিয়ারের উপস্থিতি। অন্যান্য বিষয়গুলো পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফলাফলে খুব বেশি পরিবর্তন আসে না। অতিরিক্ত ধনী ব্যক্তিরা সমাজে নতুন কিছু নয়, তবে ইতিহাসে আগে কখনো তারা এত বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক ছিলেন না। যেহেতু বেবি বুমাররা এমন একটি বয়সে পৌঁছেছেন যেখানে তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠিত বড় কোম্পানি রয়েছে অথবা তাদের পিতামাতার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে সেই কোম্পানিগুলোর মালিকানা পেয়েছেন, তাই স্বাভাবিকভাবেই তারা এই ব্যতিক্রমী সম্পদশালী ব্যক্তিদের একটি বড় অংশ।
অর্থনীতির বৃহত্তম প্রবৃদ্ধির কাল বহু আগেই পার হয়ে গেছে: এই আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধান একটি জটিল অর্থনৈতিক সমস্যা। ধরুন আপনি ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ারক্রাফ্টের (World of Warcraft) মতো একটি অনলাইন গেম খেলা শুরু করলেন। যদি আপনি ২০০৪ সালে গেমটি প্রথম প্রকাশের সময় খেলা শুরু করতেন, তাহলে আপনার অগ্রগতি বেশ ভালো হতো। তাত্ত্বিকভাবে, আপনি যদি গেমের প্রথম শূকরটিকেও মারতেন, তাহলে আপনি সেই মুহূর্তের জন্য হলেও গেমের খেলোয়াড়দের মোট সম্পদের ১০০% এর মালিক হতেন। কিন্তু যদি আপনি গেমটি তার প্রকাশের এক দিন পর খেলা শুরু করতেন এবং সেই একই শূকরটিকে মারতেন, তাহলে আপনার অর্জিত সম্পদ গেমের সামগ্রিক অর্থনীতির তুলনায় খুবই সামান্য হতো, কারণ ইতোমধ্যে হাজার হাজার খেলোয়াড় ২৪ ঘণ্টা ধরে গেম খেলে তাদের ক্যারেক্টারকে শক্তিশালী করেছে এবং সম্পদ বৃদ্ধি করেছে। একইভাবে, আপনি যদি এখন এই গেমটি খেলা শুরু করেন, তাহলে আপনি এমন একটি সার্ভারে প্রবেশ করবেন যেখানে বহু খেলোয়াড় ১৬ বছর ধরে খেলছে। সেখানে যদি আপনি সেই একই শূকরটিকে মারেন, তাহলে আপনার অর্জিত সম্পদ গেমের বিশাল অর্থনীতির তুলনায় অগণিত ক্ষুদ্র একটি ভগ্নাংশ হবে। কারণ এই ভার্চুয়াল অর্থনীতি আগের তুলনায় লক্ষ লক্ষ গুণ বেশি ধনী। মিলেনিয়ালদের অবস্থাও অনেকটা তেমনই। তারা জীবনের খেলা শুরু করেছে এবং এমন এক সময়ে নিজেদের উন্নতির চেষ্টা করছে, যখন অর্থনীতির বৃহত্তম প্রবৃদ্ধির কাল বহু আগেই পার হয়ে গেছে।
পূর্ববর্তী প্রজন্মের চিত্র: বুমারদের উত্থান
কিন্তু একটি প্রশ্ন থেকেই যায় – বুমাররা যখন তাদের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন, তখন কি পরিস্থিতি এমন ছিল না? তা সত্ত্বেও, একই গড় বয়সে তাদের প্রজন্ম জাতীয় সম্পদের ২৭% এর মালিক ছিল, যেখানে মিলেনিয়ালদের মালিকানা মাত্র ৩%। এর প্রধানত তিনটি কারণ রয়েছে:
১. সম্পদের কেন্দ্রীকরণ: ৪০ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের হাতে সম্পদ কেন্দ্রীভূত হওয়ার প্রবণতা গত ১০০ বছরে আর্থিক বাজারের ক্রমাগত উন্নতির ফলে অভূতপূর্ব পর্যায়ে পৌঁছেছে।
২. সুবিধাজনক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি: এটা অনস্বীকার্য যে বেবি বুমাররা তাদের কর্মজীবনে ভালো আয় এবং জীবনযাত্রার কম খরচের সুবিধা পেয়েছেন।
৩. জনসংখ্যার আধিক্য: তবে সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো বেবি বুমারদের সংখ্যা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (World War 2) পরে জন্ম নেওয়া শিশুদের ব্যাপক বৃদ্ধির কারণে এই প্রজন্ম কর্মজীবনে প্রবেশ করার সময় মোট জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশ ছিল। এর মানে হলো, ব্যক্তিগতভাবে তাদের প্রত্যেকের সম্পদ কম থাকলেও, সম্মিলিতভাবে তারা জাতীয় সম্পদের একটি বড় অংশের মালিকানা লাভ করেছিলেন।
সম্পদের ভবিষ্যৎ এবং আন্তঃপ্রজন্ম স্থানান্তর (The Future of Wealth and Intergenerational Transfer)
এই পরিস্থিতিতে সম্পদের ভবিষ্যৎ এবং এর আন্তঃপ্রজন্ম স্থানান্তর নিয়ে আলোচনা করা অপরিহার্য। অনেকেই হয়তো এই ভেবে সান্ত্বনা পেতে পারেন যে, বয়স্ক প্রজন্ম, বিশেষ করে বেবি বুমাররা যখন মারা যাবেন, তখন তাদের বিপুল পরিমাণ সম্পদ স্বাভাবিকভাবেই তাদের উত্তরাধিকারীদের কাছে হস্তান্তরিত হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, বিষয়টি এত সহজে সমাধান হওয়ার নয়। প্রথমত, এই সম্পদের একটি বড় অংশ বেসরকারি কোম্পানির (private companies) আকারে রয়েছে, যেগুলোর মূল্য তাদের বর্তমান মালিকদের দক্ষতা এবং তত্ত্বাবধানের উপর নির্ভরশীল। উত্তরাধিকারীদের হাতে যাওয়ার পর সেই কোম্পানিগুলোর মূল্য একই থাকবে কিনা, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। এমনকি যদি ধরে নেওয়া হয় যে এই সম্পদ হস্তান্তর প্রক্রিয়া কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই সম্পন্ন হবে, তবুও এটি সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান নয়। কারণ, অর্থনীতিতে নতুন সম্পদ ক্রমাগত তৈরি হতে থাকে এবং বেশিরভাগ মানুষ তাদের অর্জিত সম্পদ তাদের সন্তানদের কাছে হস্তান্তর করেন, যাদের বয়স সাধারণত ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে থাকে। এর ফলে, সম্ভবত জেনারেশন এক্স (Gen X) হবে ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী প্রজন্ম, এরপর জেনারেশন ওয়াই (Gen Y) এবং এই ধারা অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে, যারা একেবারে তরুণ প্রজন্ম, যারা হয় শূন্য থেকে শুরু করছে অথবা স্টুডেন্ট লোনের বোঝা নিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করছে, তারা অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান আকারের তুলনায় সম্পদের একটি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশের মালিক হতে থাকবে।
বিস্তারিত জানতে এখানে যান – বেবি বুমারদের সম্পদের উত্তরাধিকারসূত্রে স্থানান্তর হবে ইতিহাসের বৃহত্তম সম্পদ স্থানান্তর: এর প্রভাব ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ
এই পরিস্থিতি কি আসলেই একটি সমস্যা?
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই পরিস্থিতি কি আসলেই একটি সমস্যা? অনেক ক্ষেত্রে হয়তো সন্তানদের ধনী হওয়ার স্বপ্ন সত্যি হয়, তবে সেই জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয় যতক্ষণ না তারা তাদের ষাট বছর বয়সে পৌঁছায় এবং উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পদ লাভ করে। তবে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে দেখলে, বিষয়টি উদ্বেগের কারণ হতে পারে। যদি অধিকাংশ সম্পদ বয়স্ক প্রজন্মের হাতে জমা হতে থাকে, তাহলে এর ফলে তরুণ প্রজন্মের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেতে পারে। ২৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সীরাই সাধারণত নতুন বাড়ি কেনা, সন্তানদের কলেজে পাঠানো, নতুন গাড়ি কেনা এবং ভ্রমণে যাওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। যদি এই বয়সের মানুষের হাতে পর্যাপ্ত সম্পদ না থাকে এবং অধিকাংশ সম্পদ বয়স্ক প্রজন্মের হাতে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পড়ে থাকে, যাদের খরচ করার প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কম, তাহলে এর ফলে অর্থনীতিতে অর্থের প্রবাহ কমে যেতে পারে এবং তরুণ প্রজন্মের সম্পদ অর্জনের সুযোগ সীমিত হয়ে যেতে পারে।
চূড়ান্ত ভাবনা
প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধান একটি বাস্তব সমস্যা এবং এর কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে। তবে সম্ভবত এই সমস্যাটিকে যতটা বড় করে দেখানো হচ্ছে, ততটা নাও হতে পারে। বিষয়টিকে এভাবে ভাবা যেতে পারে – আমি উইশ ডটকমের (wish.com) ৩০% মালিক হওয়ার চেয়ে অ্যামাজনের (amazon) ৩% মালিক হতে বেশি পছন্দ করব। একইভাবে, বর্তমান প্রজন্মের তরুণরা ১৯৭০-এর দশকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩০% সম্পদের মালিক হওয়ার চেয়ে আধুনিক আমেরিকার ৩% সম্পদের মালিক হওয়ায় বেশি সুখী হতে পারে। তবে সবকিছু বিবেচনা করার পর এটাই প্রতীয়মান হয় যে, এই পরিসংখ্যানগুলো হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে থাকা বৃহত্তর সম্পদের বৈষম্যের (wealth inequality) একটি ভীতিকর চিত্র মাত্র। এই বৈষম্য নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘ এবং বিভাজনমূলক, কিন্তু বিতর্কের উভয় পক্ষকেই এটা অনুধাবন করতে হবে যে, এই প্রজন্মগত সম্পদের সংকট বৃহত্তর অর্থনৈতিক বৈষম্যের একটি ফলাফল মাত্র। স্টুডেন্ট লোনের মওকুফ (student loan forgiveness), ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি (increased minimum wages) এবং সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন নীতির (affordable housing policies) মতো পদক্ষেপগুলো কি এই পরিস্থিতি কমাতে সাহায্য করবে? অবশ্যই, এই পদক্ষেপগুলো সমস্যার কিছু উপসর্গ কমাতে সহায়ক হতে পারে। তবে অর্থনীতির মৌলিক কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা ছাড়া প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধানের এই ক্রমবর্ধমান ধারাকে সম্পূর্ণরূপে থামানো হয়তো সম্ভব নয়।
Leave a Reply