Table of Contents
ভূমিকা
একটি সমাজ তখনই মহৎ হয়ে ওঠে যখন বৃদ্ধরা এমন গাছের চারা রোপণ করে যার ছায়ায় তারা কখনও বসবে না। – প্রাচীন গ্রিসের একটি প্রবাদ যা আমাদের আধুনিক অর্থনীতির সমস্যা বা অর্থনীতি বিষয়ক জানাশোনার অনেক আগের সময়ের, আজও ততটাই সত্য যতটা হাজার বছর আগে ছিল। কিন্তু আমরা কি সত্যিই এই ধারণা অনুসারে চলি? শিল্প বিপ্লবের পর এই প্রথম কোনো প্রজন্মের উত্তরসূরি তাদের পিতামাতার চেয়ে বেশি ধনী হচ্ছে না। যদিও এই ধারায় কিছু বিপর্যয় এবং ঐতিহাসিক ব্যতিক্রম অবশ্যই ঘটেছে, উন্নত অর্থনীতির অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রে সমষ্টিগতভাবে এই ব্যাপারটা সত্যই থেকে গেছে। দীর্ঘকাল ধরে এটা প্রত্যাশিত ছিল যে মানুষের সন্তানরা তাদের প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে তাদের চেয়ে ভালো জীবনযাপন করবে, কিন্তু আজ সেই প্রত্যাশা আর নেই। প্রকৃতপক্ষে, বেশিরভাগ তরুণ পেশাদাররা কেবল তাদের পিতামাতার জীবনযাত্রার আকাঙ্ক্ষাটাই রাখতে পারে, তার চেয়ে বেশি কিছু চাইতে পারেনা। তরুণ প্রজন্ম নির্ভরযোগ্য চাকরি পাওয়া, আরামদায়ক বাড়ির খরচ বহন করা, পরিবার শুরু করা এবং অবসর জীবনের জন্য সঞ্চয় করা ক্রমশ কঠিন বলে মনে করছে। অথচ বাস্তবতা হলো বিংশ শতাব্দীতে যখন বেবি বুমাররা তাদের অদম্য ভাগ্য গড়ছিলেন, তার চেয়ে আজকের বিশ্ব অনেক বেশি ধনী।
তাহলে এখানে কী ঘটছে? সামগ্রিকভাবে ধনী – এমন একটি বিশ্বেও এমন প্রজন্ম কেন তৈরি হচ্ছে যারা তাদের পূর্বসূরীদের চেয়ে বেশি দরিদ্র? এর কোনো অন্তর্নিহিত কারণ আছে কি? যদি থাকে, তবে তা পালটে দেবার কোনো উপায় আছে কি? আর যদি না থাকে, তার মানে কি আমরা আশা করতে পারি যে এখন থেকে প্রতিটি প্রজন্ম তাদের পূর্ববর্তী প্রজন্মের চেয়ে দরিদ্র হবে? আর আমার মনে হয় সম্ভবত এটাও জিজ্ঞাসা করার মতো বিষয় যে, এতে কি কিছু যায় আসে, যেহেতু সবাই তো শেষ পর্যন্ত মারা যাবে এবং তাদের সম্পদ হস্তান্তর করবেই?
জেনারেশনের ক্ষমতা-সম্পর্ক
আপনাদের সকলের জন্য একটি প্রশ্ন – কোন অবস্থায় জন্ম নেয়াটা ব্যক্তির জন্য ভাল হবে? যেখানে তার মতো অনেকেই জন্মাচ্ছে, মানে তার বয়সের অনেক লোকজন আছে বা তার একই বয়সী অনেক লোকজনের একটি বৃহৎ গোষ্ঠী রয়েছে এরকম একটি জায়গায় তার জন্ম নেওয়া ভালো হবে, নাকি তার বয়সের খুব একটা লোক নেই, মানে নতুন কেউ তেমন জন্মাচ্ছে না, বা বাচ্চারা আসছে না বা চলে যাচ্ছে, এরকম একটা জায়গায় জন্মানো ভাল হবে? প্রশ্নটা হয়তো ভালভাবে করতে পারিনি। আবার নতুনভাবে করছি – যেখানে বাচ্চাদের সংখ্যা বেশি সেখানে বাচ্চা জন্মালে ভালো, নাকি যেখানে বাচ্চাদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম সেখানে বাচ্চা জন্মালে ভাল? ঐতিহ্যবাহী অর্থনৈতিক তত্ত্বগুলো অনুসারে, বাচ্চাদের সংখ্যা কম, মানে বাচ্চার বড় হবার পর তার সমবয়সীদের পরিমাণ কম থাকবে এরকম একটা স্থানই বেশি পছন্দনীয় হবে। কেননা এর অর্থ এই হবে যে, চাকরি, আবাসন, সামাজিক কর্মসূচি (social programs), ভালো স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে কম প্রতিযোগিতা এবং সামষ্টিক অর্থনীতিতে (macro level) প্রাকৃতিক সম্পদের মতো মৌলিক জিনিসের জন্যও কম প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনি বেবি বুমারদের কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? এরা তো জনসংখ্যার সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণের অংশ হওয়া সত্ত্বেও সমষ্টিগতভাবে খুব ধনী।
লর্ড ডেভিড উইলেটস (Lord David Willets) একজন ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ (British politician), জনমিতিবিদ (demographer) এবং লেখক। তিনি মনে করেন যে এর বিপরীতটাও সত্য হতে পারে। তার মতে, একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একটি বৃহত্তর গোষ্ঠীর অংশ হওয়া আসলে বেশি পছন্দনীয় বা বেশি ভাল। কারণ এটি সেই গোষ্ঠীকে প্রজন্মগত দ্বন্দ্বগুলোর ক্ষেত্রে বেশি ভোট দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করে এবং বাজারের ওপরও তারা বেশি প্রভাব ফেলে। যখন বুমাররা তরুণ ছিলেন, তখন তারা এমন নীতিগুলির জন্য ভোট দিয়েছিলেন যা তাদের উপকৃত করেছিল। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কম খরচে বা বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা, পারিবারিক সহায়তা ব্যবস্থা (family support systems) এবং শক্তিশালী সামাজিক কল্যাণ। মানে এই জেনারেশন তরুণ অবস্থায় উপকৃত হয়। আবার এই জেনারেশন যখন তাদের কর্মজীবনের শীর্ষে পৌঁছালো তখনও তারা উপকৃত হলো তাদের বৃহত্তর সংখ্যার জন্যই। তখন তারা তাদের নিজেদের স্বার্থে তাদের রাজনৈতিক অভিমুখিতা পরিবর্তন করে নেয়। এবারে তারা তাদের বৃহৎ ভোটারগোষ্ঠীকে ব্যবহার করে কম আয়কর, কম ব্যবসায়িক বিধি-নিষেধ (business regulation), আউটসোর্সিং (outsourcing) এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা এড়াতে আরও দেশীয় শিল্প সুরক্ষার (domestic industry protections) পক্ষে চলে গেল। তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে ও নিজেদের সংখ্যাগত প্রাধান্যের কারণেই ছোট পরিসরে জোনিং আইনের (zoning laws) মতো আইন তৈরি হয় যা তাদের বাড়ির মূল্য রক্ষা করে, অর্থাৎ বাড়ির দাম যাতে না বেড়ে যায় সেজন্য চেষ্টা করে। এর সুফলও এরা পায়। বাধ্যতামূলক একক-পরিবার ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা সহ শহরতলির দিকে চাপ দেওয়ার অর্থ হলো বাড়িগুলি বড় হতে শুরু করলো এবং ভালো স্থানগুলি আরও আকাঙ্ক্ষিত হয়ে উঠলো কারণ সেখানে সীমিত সংখ্যক পারিবারিক বাড়ি তৈরি করা যেতে পারত। ১৯৫০-এর দশকে বাড়িগুলি মূলত একটি পণ্য ছিল, ব্যয়ের বেশিরভাগ অংশ বাড়ির কাঠামোটা তৈরিতে যেত এবং পারিবারিক গাড়ির দাম পারিবারিক বাড়ির চেয়ে বেশি হওয়াটা অযৌক্তিক ছিল না। এদিকে পঞ্চাশ বছর পর এখন বাড়িগুলি বসবাসের জায়গার পাশাপাশি বিনিয়োগ হিসেবেও কাজ করেছে, কারণ এগুলোর দাম অনেক বেড়ে গেছে।
যাই হোক। বার্ধক্যেও এই বুমাররা এখন তাদের স্বার্থ রক্ষা করেই ভোট দেয়, এবং এদের সংখ্যাই বেশি হবার কারণে গণতান্ত্রিক সিস্টেমে তাদের পক্ষেই আইন, পলিসি তৈরি হয়। এবারে বৃদ্ধ বুমারদের স্বার্থ হচ্ছে অবসরকালীন সুবিধা, পেনশন প্রকল্প (pension schemes), চিকিৎসা অবকাঠামো (medical infrastructure) এবং সম্পদ কর (wealth taxes) অপসারণ। তারা এসবের পক্ষেই এখন ভোট দিতে শুরু করেছে, এমনকি যৌবনে এদের যে স্বার্থগুলো ছিল সেগুলো যদি কম্প্রোমাইজড হয় তবুও তারা এগুলোতেই ভোট দেয়। বুঝতেই পারছেন এখানে আদর্শ নয়, ম্যাটার করছে নিজেদের স্বার্থ, আর সঙ্গতকারণেই তা হয়ে উঠছে তাদের বয়সগত স্বার্থ।
তো আশা করি ডেভিড উইলেটস আসলে কী বলতে চাচ্ছেন। যদি কোন বাচ্চা এমন পরিবেশে জন্ম নেয় যেখানে তার জন্মের আশপাশের সময়ে অন্যান্য জেনারেশনের তুলনায় প্রচুর বাচ্চার জন্ম হয়েছে বা হচ্ছে, এবং সেখানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ কাজ করে, তাহলে সেটা তার জন্য ভাল ফল বয়ে আনবে। এখন ডেভিড উইলেটস তার এই বিশ্লেষণ করেছিলেন বিশেষভাবে যুক্তরাজ্যের (UK) উপর চোখ রেখেই, এবং অবশ্যই এমন বহু লোক আছে যারা নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থের বদলে বৃহত্তর মঙ্গলের জন্যই ভোট দেয়, কিন্তু তবুও গড়পড়তায় সব উন্নত অর্থনীতির দেশেই দেখা যায় যে, মানুষ এরকম ব্যক্তিস্বার্থের ভিত্তিতেই ভোট দিচ্ছে, আর এই উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতে যেহেতু জন্মহার কমছে, বুমার বা বর্তমানে বৃদ্ধ জনসংখ্যার পরিমাণই বেশি, তাই রাষ্ট্রের আইন, নীতিমালা ও অর্থনৈতিক ট্রেন্ডগুলোও এমন হচ্ছে যেগুলো এই বৃদ্ধদের পক্ষেই যাচ্ছে, মানে এই বৃদ্ধদের জেনারেশনটা তরুণ হোক, যুবক হোক বা বৃদ্ধ হোক, বৃহত্তর মঙ্গলের কথা তেমন চিন্তা না করে নিজেদের স্বার্থ অনুযায়ীই ভোট দিয়ে এসেছে।
অস্ট্রেলিয়ার কথাই ধরুন, ২০১৯ সালের ফেডারেল নির্বাচনের ফল নির্ধারিত হয়েছিল মূলত একটি নীতিগত সিদ্ধান্তের দ্বারা যা অস্ট্রেলিয়ান অবসরকালীন অ্যাকাউন্টগুলির (Australian retirement accounts) কর কার্যকারিতা হ্রাস করবে। যে দল বুমার বা বৃদ্ধদের অনুকূল কর কাঠামো বজায় রাখার পক্ষে ছিল, বয়স্ক অস্ট্রেলিয়ান ভোটারদের প্রধান সমর্থনের কারণে শেষ পর্যন্ত তারাই জয়ী হয়। যে দল বৃদ্ধ পক্ষে এই অবসরকালীন অ্যাকাউন্ট ট্যাক্সের পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ছিল তারা হেরে গিয়ে বিরোধী দল হয়। এরপর অস্ট্রেলিয়ার আরেকটা নির্বাচনে দেখা যায়, যেই সেই বিরোধী দল অবসরকালীন অ্যাকাউন্টের ট্যাক্স নিয়ে তাদের অবস্থান থেকে সরে আসে সেই তারা আবার খুব স্পষ্টভাবে জয়ী হয়। মানে এই বৃদ্ধরাই নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে বিশাল ভূমিকা রাখছে। ২০১৭ সালের একটি ব্রিটিশ নির্বাচন সমীক্ষায় (British election study) দেখা গেছে যে সময়ের সাথে সাথে রক্ষণশীল দলগুলির (conservative parties) ভোট ধনী ও শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে বিভক্ত হওয়ার পরিবর্তে তরুণ ও বয়স্কদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে গেছে।
এতক্ষণ যা যা আলোচনা করলাম তার বেশিরভাগই সরাসরি উইলেটসের লেখা ‘দ্য পিঞ্চ’ (The Pinch) বইটি এবং রয়্যাল ইনস্টিটিউশনে (The Royal Institution) দেওয়া তার একটি বক্তৃতা থেকে নেওয়া। বইটার পুরো নাম হচ্ছে ” The Pinch: How the Baby Boomers Took Their Children’s Future – and Why They Should Give It Back David Willetts 已下载 The Pinch: How the Baby Boomers Took Their Children’s Future – and Why They Should Give It Back” (পড়তে চাইলে আমাকে জানাবেন, পিডিএফ আছে)। আর লেকচারটার জন্য ইউটিউবে সার্চ করুন “Have the Boomers Pinched Their Children’s Futures? – with Lord David Willetts” লিখে। এই জনসংখ্যাতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াগুলিতে (demographic processes) আগ্রহ থাকলে এগুলো অবশ্যই আপনার ভাল লাগবে। যাই হোক, এটাই বলতে চাচ্ছি যে, অনুকূল সরকারি নীতির একটি জীবনকালের বা জেনারেশনের জন্য সম্পদ তৈরিতে বিশাল উপকারী হতে পারে। একবার ভাবুন তো গড়পড়তা মিলেনিয়ালরা (millennials) যদি বিনামূল্যে কলেজ বা মাধ্যমিক শিক্ষা পেতেন তবে তাদের কত সুবিধা হতো। এমনকি অন্য সবকিছু একই থাকলেও কেবল এই সুবিধাটার জন্যই উন্নত দেশগুলোতে মিলেনিয়ালদের হাতে অনেক অর্থ এসে যেত, যার জমিয়ে তারা বাড়ি কিনতে পারতো। আর এবারে আমরা সেটাই আলোচনা করতে যাচ্ছি।
আবাসন খাতে সেকাল ও একাল
ডেভিড উইলেটস এই বুমারদের একটা বিশেষ সুবিধার বিষয়ে তেমন উল্লেখ করেনি, যেটা করলে আরও ভাল করতেন। সেটা হচ্ছে ওদের কম প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবার বিষয়টা। ওরা সস্তায় বাড়ি কিনতে পারতো – এটার চেয়েও তাদের বড় সুবিধা ছিল এটাই যে, তারা এখনকার তুলনায় অনেক কম প্রতিযোগিতা ফিল করতো। ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ এর দশকে বিশ্ব জনসংখ্যা আজকের তুলনায় প্রায় এক তৃতীয়াংশ ছিল এবং সেই সময় উন্নত বিশ্বে শ্বেতাঙ্গ পুরুষদের প্রতিযোগিতা এখনকার তুলনায় অনেক কম তীব্র ছিল। বর্তমানে চাকরির নিয়োগকর্তারা যেমন এখন অনেক বড় জনসংখ্যা থেকে ইচ্ছামত ছোট অংশকে বাছাই করার সুযোগ পায়, তখন সেরকম পেত না। সেরকম লেবল পুল কম ছিল, মানে শ্রমিক ও কর্মীদের অনেক সুবিধা ছিল, তাদের চাকরি পাওয়াও সহজ ছিল। সেই সাথে তখন নারীদের শ্রমশক্তির অংশগ্রহণও (labour force participation) খুব কম ছিল, যা শ্রমিকদের সরবরাহকে আরও কমিয়ে দিয়েছিল। আর এর ফলস্বরূপ নারী শ্রমিকদের দর কষাকষির ক্ষমতা বা বারগেইনিং পাওয়ার কম ছিল। ফলে নারীদেরকে গৃহস্থালির কাজকর্মের দিকে বেশি ঝুঁকতে হতো। এদিকে পুরুষদের হাতে বেশি অর্থ থাকায় তারাও গৃহস্থালি ক্ষেত্রে বেশি খরচ করতে চাইতো না। মানে হচ্ছে তারা শিশু যত্ন, খাদ্য এবং সাধারণ রক্ষণাবেক্ষণের মতো জিনিসগুলিতে পারিবারিক ব্যয় কমিয়ে দিত। এই উচ্চতর আপেক্ষিক আয় কম ব্যয়ের সাথে মিলিত হওয়ার অর্থ হলো প্রায় এক বছরের আয় দিয়েই প্রায়শই বাড়ির দাম পরিশোধ করা যেত।
হ্যাঁ, তাদের বিশেষ করে ৭০ ও ৮০-এর দশকে উচ্চ সুদের হার সহ্য করতে হয়েছিল, যে সময়টায় তারা সবচেয়ে বেশি বাড়ি কিনেছিল। ১৯৮৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (USA) একটি মাঝারি মানের বাড়ির দাম ছিল ৮২,০০০ ডলার। এটি মাঝারি মানের দাম, তাই ৫০% বাড়ির দাম ছিল এর চেয়ে সস্তা, মানে প্রথমবার যারা বাড়ি কিনছেন তারা এই দামের চেয়েও সস্তায় বাড়ি কিনতে পারতেন। তবে হিসাবটা সহজ করার জন্য ৮২,০০০ ডলারই ধরে নেই। মাঝারি পরিবারের আয়ের জন্য সামঞ্জস্য করলে সেই ৮২,০০০ ডলার ১,০৩,০০০ ডলারে পরিণত হয়। এই সময়ের আশেপাশে গড় বন্ধকের হার বা মর্টগেজ রেইট (mortgage rate) ছিল ১৫% বা বছরে প্রায় ১৫,০০০ ডলার দিতে হয়। কিছু বছরে এটি বেশি ছিল তবে বেশিরভাগ ঋণগ্রহীতা মোটামুটি ১৫% এর সর্বোচ্চ হারেই স্থির ছিলেন তাই এটাকেই সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বলা যায়। অন্যদিকে বর্তমানে মাঝারি মানের একটি বাড়ির দাম ৪,৩০,০০০ ডলার এবং গড় সুদের হার ৫%-এর সামান্য বেশি বা শুধুমাত্র সুদ পরিশোধ বাবদ বছরে ২১,৫০০ ডলার তাদের দিতে হয়। আবারও এটি সেই সময়ের মাঝারি আয়ের জন্য সামঞ্জস্য করা হয়েছে তাই দেখে মনে হচ্ছে এগুলো বেশ তুলনীয় বা একই রকম, এবং তার ভিত্তিতে বলা হয় তরুণ প্রজন্মের আসলে এত সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন নিয়ে অভিযোগ করা উচিত নয়।
অনেকে আবার এই তুলনাকে এই বলে উড়িয়ে দেন যে সেই সময়ে মুদ্রাস্ফীতি (inflation) অত্যন্ত বেশি ছিল তাই এই উচ্চতর সুদ পরিশোধের কোনো মানে ছিল না। তবে এটি আসলে সত্য নয়। ১৯৮৫ সালে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৩.৫% এবং ১৯৮০ সালে এটি ১৩.৫% পর্যন্ত বেশি ছিল, এটি ভোক্তা মূল্য সূচক মুদ্রাস্ফীতি (consumer price index inflation), আবাসন মুদ্রাস্ফীতি নয়। এই দশকগুলিতে বাড়ির দাম আসলে তুলনামূলকভাবে কম হারে বেড়েছে, বাকি সবকিছুই ব্যয়বহুল হয়ে উঠছিল। এটি আজকের প্রত্যাশার বিপরীত যেখানে বাড়ির দামের বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতিকে ছাড়িয়ে যায় তবে ৭০ ও ৮০-এর দশকে এমনটা ছিল না। তাই হ্যাঁ, মুদ্রাস্ফীতির যুক্তিটি পুরোপুরি ন্যায্য নয়, তাহলে বেবি বুমারদের জন্য বাড়ি কেনা কতটা সহজ ছিল তা নিয়ে অভিযোগ করা কি ন্যায্য? ওয়েল না, তাদের আরও দুটি বড় কারণে সুবিধা ছিল। এই উচ্চ সুদের হারই আসলে তাদের কিছুটা সাহায্য করেছিল। একটি অ্যাকাউন্টে জমার জন্য অর্থ সঞ্চয় করা (যা বছরে ১০% সুদ দেয়) সত্যিই সঞ্চয়ের লক্ষ্যে দ্রুত পৌঁছাতে সাহায্য করে। উচ্চ সুদের হার এটাও নিশ্চিত করেছে যে বাড়ির দাম খুব বেশি বাড়বে না, কারণ পরিশোধ করাটাই তখন সাধ্যের বাইরে চলে যেত। আগের উদাহরণে আমরা শুধুমাত্র দুটি সময়ের ঋণের উপর প্রদত্ত সুদ দেখেছি, তবে বন্ধকের বিষয় হলো আপনাকে আসলও পরিশোধ করতে হবে। একটি স্ট্যান্ডার্ড ত্রিশ বছরের ঋণ মেয়াদে ৪,৩০,০০০ ডলারের বন্ধকের আসল পরিশোধ করতে বছরে অতিরিক্ত ১৪,৩০০ ডলার খরচ হবে, যা মোট বার্ষিক পরিশোধের পরিমাণ প্রায় ৩৬,০০০ ডলারে নিয়ে আসবে। ১৯৮৫ সালের বাড়ির আসল পরিশোধ বাবদ বছরে প্রায় ৩,০০০ ডলার খরচ হতো, যা মোট পরিশোধের পরিমাণ ১৮,০০০ ডলারের একটু বেশিতে নিয়ে আসে। এর মানে হচ্ছে সেই সময়ে সুদের হার বর্তমান সময়ের সুদের হারের তিন গুণ হলেও, তাদেরকে বর্তমান সময়ের বাড়ির জন্য যতটা অর্থ পরিশোধ করতে হয়, তাদেরকে করতে হতো তার অর্ধেক। অন্যভাবে বললে, যদি পরিশোধের পরিমাণ সমান রাখা হতো, তবে ১৯৮৫ সালে যিনি বাড়ি কিনছিলেন তিনি ৩০ বছরের পরিবর্তে ৫ বছরেই এটির দাম পরিশোধ করতে পারতেন। তাহলে আমি কেন আবাসনের উপর এত বেশি মনোযোগ দিচ্ছি? ওয়েল, জীবনের একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়া সত্ত্বেও বাড়িগুলি বিশেষভাবে অনুৎপাদনশীল হচ্ছে।
বাড়িগুলোর অনুৎপাদনশীলতা
রিয়েল এস্টেট (real estate) একটি সম্পদ হিসাবে কিছুটা অনন্য। কারণ এটি মূল্যবান কিছু উৎপাদন করে না। জমির উপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাড়ির মূল্য বাড়তে পারে এবং এটি তার মালিকদের বাসস্থান বা কোনো বিনিয়োগকারীর জন্য ভাড়ার আয়ের উৎস সরবরাহ করতে পারে। তবে এখান থেকে কিছুই তৈরি হয় না। অবশ্যই ক্রিপ্টোকারেন্সির (crypto currencies) মতো “বিনিয়োগ” আজ বিদ্যমান যা মূল্যবান কিছু উৎপাদন করে না, তবে বিশ্বজুড়ে রিয়েল এস্টেটের বাজারের তুলনায় ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার খুবই ছোট। খুবই ছোট এবং অপ্রাসঙ্গিকও। যদি বিটকয়েনের (bitcoin) দাম দশ লক্ষ ডলারে চলে যায়, তবে এটি সেই লোকেদের জন্য দারুণ যারা এতে বিনিয়োগ করে, আর এর কিছু ছোটখাটো প্রভাব অন্যান্য বাজারেও পড়বে যখন লোকেরা ক্রিপ্টো বিলিয়নেয়াররা (crypto millionaires) যা কেনে তা কেনার জন্য টাকা তুলবে। তবে এতে কেউ রাস্তায় বসবে না। কিন্তু আবাসন সংকটের কারণে মানুষ আসলেই রাস্তায় বসতে পারে এবং এটি পুরো অর্থনীতির অগ্রগতিও ধীর করতে পারে।
বিশ্বের প্রতিটি অর্থনীতি ভালো হোক বা খারাপ, এখনও অর্থনৈতিক কার্যকলাপের বৃহৎ কেন্দ্রগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে থাকে। অর্থনৈতিক কার্যকলাপের বৃহৎ কেন্দ্রগুলি “শহর” বা সিটি নামে পরিচিত। যদি এই শহরগুলির রিয়েল এস্টেট খুব ব্যয়বহুল হয়ে যায় তবে শ্রমিকদের সেখানে চাকরি ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে, কারণ সেক্ষেত্রে তাদের আয়ের বেশিরভাগ অংশ কেবল ভাড়া পরিশোধেই চলে যাবে। স্বল্প মেয়াদে এটি উচ্চতর মজুরি দিয়ে পূরণ করা যেতে পারে তবে এই কেন্দ্রগুলি আসলে সেই বাড়িওয়ালাদের উপকারের জন্য পরিচালিত হচ্ছে যারা সেখানে সম্পত্তির মালিক হওয়ার মতো ভাগ্যবান। বাড়িওয়ালারা তাদের সম্পত্তি থেকে যে অর্থ উপার্জন করেন তা কোম্পানির বৃদ্ধিতে পুনরায় বিনিয়োগ করা বা নিয়মিত ভোক্তা ভোগের (consumer consumption) জন্য ব্যয় করার সম্ভাবনা কম যা সেই ব্যবসাগুলিকে টিকিয়ে রাখে, বরং সেই অর্থ আরও বেশি করে সেরকম সম্পত্তিতে ব্যয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যেগুলো এই সম্পত্তিগুলোর বাজারের মূল্য আরও বাড়িয়ে তোলে এবং উৎপাদনশীল কেন্দ্রগুলি থেকে আরও বেশি অর্থ অনুৎপাদনশীল সম্পত্তিতে চলে যায়।
উচ্চতর আবাসন মূল্য সামাজিক ও ভৌগলিক গতিশীলতাও হ্রাস করে। ২০২০ সালের পিউ রিসার্চের (pew research) একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সী ৫২% তরুণ আমেরিকান প্রাপ্তবয়স্ক এখনও তাদের পিতামাতার সাথে বাড়িতে থাকেন। যুক্তিসঙ্গতভাবে ধরে নেওয়া যায় যে, কোভিড এবং রেকর্ড সংখ্যক বাড়ির দাম বৃদ্ধির দুই বছর পর এই সংখ্যা আরও বেশি। সেই তরুণ প্রাপ্তবয়স্করা আর্থিকভাবে তাদের পিতামাতার বসবাসের জায়গার সাথে আবদ্ধ। যদি তারা অন্য শহরে সত্যিই একটি ভালো চাকরির প্রস্তাব পায় তবে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে বেতন বৃদ্ধি তাদের নিজেদের খরচে থাকার অতিরিক্ত খরচের তুলনায় মূল্যবান কিনা। যদি তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে তা নয় তবে তারা একটি ভালো চাকরি এবং একটি ব্যবসা একজন উৎপাদনশীল কর্মীকে হারাবে। একটি নির্দিষ্ট প্রজন্মের মধ্যে সম্পদের কেন্দ্রীভূত হওয়া এমন একটি বিষয় যা পুরো অর্থনীতির জন্য খুব বাস্তব পরিণতি ডেকে আনতে পারে এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই প্রভাবগুলি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। জাপানের (Japan) মতো স্থানগুলি এর একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ এবং পশ্চিমের মতো তাদের আবাসন সমস্যা নেই। তবে দীর্ঘমেয়াদে, এতে কি কিছু যায় আসে?
আন্তঃপ্রজন্মগত সম্পদ
আমি এখানে খুব বেশি হতাশাবাদী হতে চাই না, তবে মানুষ শেষ পর্যন্ত মারা যায় এবং তাদের সম্পদ তাদের সন্তানদের বা অন্য কোনো সুবিধাভোগীর কাছে হস্তান্তরিত হয়। তাই একটি একক প্রজন্মের মধ্যে সম্পদের কেন্দ্রীভূত হওয়া বড়জোর একটি ক্ষণস্থায়ী সমস্যা। হস্তান্তরিত হওয়া বেশিরভাগ সম্পদই ব্যক্তিগত পারিবারিক ব্যবসার (private family businesses) আকারে আসছে। সংক্ষেপে এর সমস্যা হলো প্রায়শই এই ছোট ব্যবসাগুলির পরিচালনার জন্য মালিকের প্রয়োজন হয় এবং যারা এই ব্যবসাগুলির উত্তরাধিকারী হতে চলেছেন তারা হয় অনিচ্ছুক বা অক্ষম। ছোট ব্যবসা অর্থনীতি একটি বিশাল অংশ এবং সেগুলি হারালে অনেক ক্ষতি হবে। এখন এখানে আশার আলো হলো এই যে, এই ব্যবসাগুলি তাদের উত্তরাধিকারীরা সেই লোকদের কাছে বিক্রি করতে পারে যাদের সেগুলি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। সম্ভবত তারা সেই লোকদের কাছে বিক্রি করবে যাদের নিজেদের উত্তরাধিকার থেকে ব্যবসা কেনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ রয়েছে।
বিস্তারিত জানতে এখানে যান – বেবি বুমারদের সম্পদের উত্তরাধিকারসূত্রে স্থানান্তর হবে ইতিহাসের বৃহত্তম সম্পদ স্থানান্তর: এর প্রভাব ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ
এখন সমস্যা হলো যারা আসলে এই অর্থ পাবেন তারা আসলে কোন ধরণের লোক সেখানেই। বেশিরভাগ লোক তাদের পিতামাতার মৃত্যুর পরে অর্থ পান না যতক্ষণ না তারা নিজেরাই বেশ বয়স্ক হন, প্রায়শই তাদের কর্মজীবনের শেষের দিকে বা অবসর জীবন শুরু করার কাছাকাছি সময়ে। যদি অর্থ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় তবে তারা সম্ভবত তাদের নিজস্ব অবসর জীবন নির্বাহের জন্য এটি ব্যবহার করবে এবং তারপরে তাদের বয়স্ক সন্তানদের হাতে তুলে দেবে। বয়স্ক লোকেদের হাতে অর্থ জমা হওয়ার অর্থ হলো তরুণ প্রজন্মের অর্থনীতিকে সচল করতে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি করার সুযোগ কম থাকবে। তরুণদের জন্য দরকার একটি বাড়ি কেনা, একটি ভালো চাকরি পাওয়া এবং একটি পরিবার শুরু করা যাতে অর্থনীতি চালানোর জন্য কর্মীদের অবিরাম সরবরাহ থাকে। আপনারা এমন লোকদের উপর নির্ভর করে অর্থনীতি চালাতে পারেন না যারা তাদের জীবন দিয়ে অবশেষে কিছু করার জন্য যথেষ্ট বয়স্ক হওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। অর্থনীতিবিদরা এটিকে আন্তঃপ্রজন্মগত সম্পদ সমস্যা (intergenerational wealth problem) বলেন। অনেকে মজা করে এটাকে প্রিন্স চার্লস প্যারাডক্সও (Prince Charles Paradox) বলতে পছন্দ করেন। তবে এটি এমন একটি বিষয় যেটাকে উন্নত দেশগুলোকে, বিশেষ করে আমেরিকাকে মোকাবেলা করতে হবে। এস্টেট ট্যাক্সের (estate taxes) মতো বিষয়গুলি সাধারণত প্রস্তাবিত সমাধান, তবে সেগুলি কাজ করলেও, এগুলো আবার বুমারদের জন্য বা বর্তমান তরুণদের পূর্ববর্তী প্রজন্মগুলোর জন্য খুব কুখ্যাত হবে, যেহেতু পরের প্রজন্মগুলোতে উত্তরাধিকার সূত্রে যাওয়া সম্পত্তির একটা বড় অংশে রাষ্ট্র ভাগ বসাবে। শেষ যে বিষয়টি আমাদের নিজেদেরকে জিজ্ঞাসা করতে হবে তা হলো, এর জন্য কি বুমাররাই দায়ী?
বুমাররাই দায়ী?
এই পরিস্থিতিতে আন্তঃপ্রজন্মগত দ্বন্দ্ব যে অনেক বেড়ে যায়, তরুণদের মধ্যে বুমারদের প্রতি বিদ্বেষও তৈরি হয়। কিন্তু আমাদের বর্তমান অর্থনৈতিক সমস্যাগুলির জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রজন্মকে দোষ দেওয়া খুব একটা ফলপ্রসূ হবে না। নিজের সেরা স্বার্থে ভোট দেওয়া এবং সংখ্যাগরিষ্ঠের সেরা স্বার্থে আইন প্রণয়ন করাই গণতন্ত্রের ভিত্তি এবং এবং তাই যৌক্তিকভাবে দেখতে গেলে এটাকে খারাপ বলা যায়ও না। আমার মনে হয় এমন অর্থনীতির উদাহরণ দেখাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ যেখানে এমনটা ঘটেনি। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন (China) একটি চমৎকার বিপরীত উদাহরণ। তাদের প্রজন্মের বেবি বুমাররা স্থানীয়ভাবে ‘হারানো প্রজন্ম’ (lost generation) নামে পরিচিত কারণ তারা তাদের কর্মজীবনের বেশিরভাগ সময় একটি অকার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় কাটিয়েছেন। অর্থনীতি উন্মুক্ত হওয়ার পরে দশকগুলিতে যে দ্রুত অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ ঘটেছিল, তা থেকে সত্যিকারের সুবিধা পাওয়ার মতো বয়সও তাদের ছিল না। এর মানে হলো জনসংখ্যার একটি বড় অংশ হওয়া সত্ত্বেও তারা তাদের পশ্চিমা সমবয়সীদের মতো অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি উপভোগ করতে পারেনি। পশ্চিমে বুমাররা যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি উপভোগ করেছেন সেটাও যে তাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিল এমন না। ঐতিহাসিক মানদণ্ডে বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধ খুব শান্তিপূর্ণ ছিল, বিশ্ব আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং জীবাশ্ম জ্বালানীর (fossil fuels) আকারে প্রচুর সস্তা শক্তির দ্বারা চালিত প্রবৃদ্ধির জন্য উন্মুক্ত হয়েছিল। ভাগ্য গড়ার জন্য এটি একটি দারুণ সময় ছিল এবং লোকেরা তা করেছে। সম্ভবত এটাই এই ধাঁধার শেষ অংশ। বলা হয়, একবার লোকেরা অত্যন্ত ধনী হয়ে গেলে (এখানে কয়েক মিলিয়ন বা বিলিয়নের অধিকারীদের কথা বলছি) তারা সাধারণত আর দরিদ্র হন না। কিন্তু বেবি বুমারদের প্রজন্মের বিলিয়নিয়ারদের স্তূপ এই কথাটাকে হয়তো ভুল প্রমাণ করে। মনে রাখবেন, একজন বিলিয়নিয়ার এবং ৯৯৯ জন সম্পূর্ণ নিঃস্ব লোকের একটি দলে, দলের গড় সদস্য একজন মিলিয়নিয়ার। বেশিরভাগ বিলিয়নিয়ারই বেশ বয়স্ক এবং তাদের এত অর্থের পরিমাণ তাদের জেনারেশনের লোকেদের গড় সম্পদের পরিমাণের পরিসংখ্যানটা অনেক বাড়িয়ে দেয়।
আবাসন খাত ছাড়া অন্যান্য খাতে প্রজন্মগত বৈষম্য সম্পর্কে জানতে দেখুন – উন্নত দেশগুলোতে প্রজন্মগত সম্পদের ব্যবধান বৃদ্ধি, বৈষম্য ও সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সংকট: বেবি বুমার বনাম মিলেনিয়াল – বিবর্তনপথ
Leave a Reply