আফ্রিকার দাসপ্রথা: ইতিহাস, প্রেক্ষাপট এবং অধ্যাপক প্লো লুমুম্বার বিশ্লেষণ

ভূমিকা

কেনিয়ার বিশিষ্ট অধ্যাপক প্লো লুমুম্বা সম্প্রতি আফ্রিকার দাসপ্রথার উৎস এবং এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিয়ে একটি গভীর আলোচনা করেছেন। এই আলোচনায় অধ্যাপক লুমুম্বা দাসপ্রথার বিভিন্ন পর্যায়, এর কারণ এবং প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বিশেষভাবে আরব এবং ইউরোপীয় বণিকদের দ্বারা সংঘটিত দাস ব্যবসার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেছেন এবং দেখিয়েছেন যে কীভাবে এই দুটি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে দাসপ্রথার রূপ এবং নৃশংসতা ভিন্ন ছিল। অধ্যাপক লুমুম্বার এই বিশ্লেষণ আমাদের দাসপ্রথার শিকড় এবং এর দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দেয়। এই নিবন্ধে, অধ্যাপক লুমুম্বার বক্তব্যের মূল বিষয়গুলির একটি বিস্তারিত বাংলা অনুবাদ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরা হলো।

দাসপ্রথার সুদীর্ঘ ইতিহাস

অধ্যাপক প্লো লুমুম্বা তাঁর বক্তব্যে মানব ইতিহাসে দাসপ্রথার দীর্ঘ এবং সুদূরপ্রসারী ইতিহাসের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, মানবজাতির ইতিহাসে যুদ্ধ এবং বিজয়ের হাত ধরেই মূলত দাসপ্রথার সূত্রপাত। প্রাচীনকালে যখন বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী একে অপরের সাথে যুদ্ধ করত, তখন পরাজিত সৈন্যদের এবং সাধারণ নাগরিকদের বন্দী করে দাস বানানো হতো। সুমেরীয় সভ্যতা থেকে শুরু করে এই প্রথা বিভিন্ন সংস্কৃতিতে প্রচলিত ছিল। অধ্যাপক লুমুম্বা বলেন, পশ্চিমা ঐতিহ্যের দিকে তাকালে সুমেরীয় সভ্যতায় সর্বপ্রথম দাসপ্রথার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

প্রাচীনকালে সংঘটিত বিভিন্ন যুদ্ধ এবং সংঘাতের ফলস্বরূপ বন্দীদের দাস বানানোর প্রথা বহু শতাব্দী ধরে চলে এসেছে। হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতে দাসপ্রথার উল্লেখ পাওয়া যায়, যা খ্রিস্টান বাইবেলের চেয়েও পুরনো। ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ তালমুদেও দাসত্বের উল্লেখ রয়েছে। শুধু তাই নয়, চীনের প্রাচীণ ইতিহাস এবং ইউরোপের বিভিন্ন সাম্রাজ্যের উত্থান-পতনের সময়ও দাসপ্রথার প্রচলন ছিল। রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তারকালে বিজিত অঞ্চলের বহু মানুষকে দাস বানানো হয়েছিল। এমনকি খ্রিস্টান বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্ট এবং ইসলামেও দাসপ্রথার উল্লেখ পাওয়া যায়। অধ্যাপক লুমুম্বা এই বিষয়টির ওপর আলোকপাত করে বলেন যে, ভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠীর মানুষকে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করার এই প্রবণতা মানব ইতিহাসের এক দুঃখজনক বাস্তবতা।

প্রাচীন আফ্রিকায় দাসপ্রথা

অধ্যাপক লুমুম্বা বিশেষভাবে আফ্রিকার উত্তরাঞ্চলে এবং ইসলামী সাম্রাজ্যে দাসপ্রথার অস্তিত্বের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে আরব বণিকরা আফ্রিকার পূর্ব উপকূল, (যা বর্তমানে কেনিয়া ও তানজানিয়া নামে পরিচিত) থেকে স্থানীয় আফ্রিকানদের ধরে নিয়ে গিয়ে দাস হিসেবে বিক্রি করত। ঐতিহাসিকদের অনুমান অনুযায়ী, এই সময়কালে প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ আফ্রিকানকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেককে বর্তমান মালাউইয়ের মতো দূরবর্তী অঞ্চল থেকেও আনা হয়েছিল। আরব বিশ্বে এই দাসদের পরিণতি ছিল অত্যন্ত মর্মান্তিক। পুরুষ দাসদের প্রায়শই খোজা করে দেওয়া হতো, যাতে তারা সন্তান উৎপাদন করতে না পারে। এর ফলে আরব সমাজে কালো দাসদের বংশবৃদ্ধি তেমন একটা দেখা যায়নি। অধ্যাপক লুমুম্বা এই বিষয়টিকে ট্রান্সআটলান্টিক দাস ব্যবসার চেয়েও বেশি নিষ্ঠুর বলে অভিহিত করেছেন, যেখানে দাসদের বংশবৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হতো।

ইউরোপীয় দাস ব্যবসার বিস্তার

অন্যদিকে, ইউরোপীয় দাস ব্যবসার সূচনা হয় পঞ্চদশ শতাব্দীতে, পর্তুগিজদের হাত ধরে। অধ্যাপক লুমুম্বা বলেন, ১৪০০ সালের দিকে পর্তুগিজরা প্রথম আফ্রিকায় আসে এবং প্রাথমিকভাবে তাদের উদ্দেশ্য ছিল সোনা ও মশলার বাণিজ্য করা। কিন্তু শীঘ্রই তারা বুঝতে পারে যে, আফ্রিকার মানুষদের ধরে নিয়ে গিয়ে দাস হিসেবে বিক্রি করা একটি লাভজনক ব্যবসা হতে পারে। এরপর একে একে অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তি যেমন ডেনমার্ক, সুইডেন, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, গ্রেট ব্রিটেন, ফ্রান্স, স্পেন এবং জার্মানি এই দাস ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। মজার ব্যাপার হলো, একসময় ইউরোপীয়রাও নিজেদের মধ্যে দাস ব্যবসার শিকার হয়েছিল।

অধ্যাপক লুমুম্বা কেপ কোস্ট ক্যাসেলের উদাহরণ দেন, যা বর্তমানে ঘানায় অবস্থিত এবং ডেনমার্কের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। এটি ট্রান্সআটলান্টিক দাস ব্যবসার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। ইউরোপীয় বণিকরা আফ্রিকা থেকে দাসদের ধরে নিয়ে গিয়ে প্রথমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিয়ে যেত। পরবর্তীতে, যখন ভাস্কো দা গামা এবং ক্রিস্টোফার কলম্বাসের মতো অভিযাত্রীরা নতুন বিশ্ব আবিষ্কার করেন, তখন এই দাসদের আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়।

ট্রান্সআটলান্টিক দাস ব্যবসা

অধ্যাপক লুমুম্বা ট্রান্সআটলান্টিক দাস ব্যবসাকে আধুনিক দাসপ্রথার সবচেয়ে কুখ্যাত উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে শুরু করে উনিশ শতক পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ আফ্রিকানকে জোরপূর্বক তাদের নিজ ভূমি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। নাইজেরিয়া, গাম্বিয়া, সেনেগাল, অ্যাঙ্গোলা এবং অন্যান্য উপকূলীয় অঞ্চল থেকে আফ্রিকানদের জাহাজে বোঝাই করে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে আমেরিকা, ব্রাজিল, কলম্বিয়া এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে নিয়ে যাওয়া হতো। জাহাজের ভেতরের পরিস্থিতি ছিল অকল্পনীয় রকমের ভয়াবহ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গাদাগাদি করে রাখা হতো, খাবার ও পানির অভাব ছিল প্রকট, যার ফলে বহু দাস পথেই মারা যেত।

যারা বেঁচে থাকত, তাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে কৃষিকাজ ও অন্যান্য শ্রমে বাধ্য করা হতো। অধ্যাপক লুমুম্বা জোর দিয়ে বলেন যে, উত্তর আমেরিকা এবং লাতিন আমেরিকার অর্থনীতি মূলত এই আফ্রিকান দাসদের শ্রমের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছিল। তিনি বলেন, প্রায় ১২ মিলিয়ন আফ্রিকানকে নতুন বিশ্বে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং এটি একটি রক্ষণশীল হিসাব। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। এই দাসদের অমানবিক জীবনযাপন, তাদের সংস্কৃতি ও ভাষার বিলুপ্তি—সব মিলিয়ে ট্রান্সআটলান্টিক দাস ব্যবসা মানব ইতিহাসের এক গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে।

আরব ও ইউরোপীয় দাস ব্যবসার তুলনামূলক চিত্র

অধ্যাপক লুমুম্বা আরব এবং ইউরোপীয় দাস ব্যবসার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য তুলে ধরেন। আরব বণিকরা মূলত আফ্রিকার পূর্ব উপকূল থেকে দাস সংগ্রহ করত এবং তাদের গন্তব্য ছিল মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার বিভিন্ন অংশ। অন্যদিকে, ইউরোপীয় বণিকদের প্রধান লক্ষ্য ছিল আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল। আরব বিশ্বে পুরুষ দাসদের খোজা করে দেওয়ার একটি ব্যাপক প্রথা চালু ছিল, যার ফলে দাসদের বংশবৃদ্ধি কার্যত বন্ধ হয়ে যেত। এর বিপরীতে, ট্রান্সআটলান্টিক দাস ব্যবসায় দাসদের বংশবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা হতো, যাতে ভবিষ্যতে আরও বেশি দাস পাওয়া যায়। তবে, উভয় প্রকার দাস ব্যবসাতেই মানুষকে পণ্য হিসেবে গণ্য করা হতো এবং তাদের মৌলিক মানবাধিকার কেড়ে নেওয়া হতো।

অধ্যাপক লুমুম্বা আরও বলেন যে, আরব বণিকরা স্থানীয় সংস্কৃতিতে কিছুটা হলেও মিশে গিয়েছিল। তারা স্থানীয় নারীদের বিয়ে করত এবং এর মাধ্যমে স্থানীয় ভাষায় আরবি ভাষার প্রভাব পড়েছিল। সোয়াহিলি ভাষার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, এটি মূলত একটি বান্টু ভাষা হলেও এতে প্রচুর আরবি শব্দ পাওয়া যায়। কিন্তু ট্রান্সআটলান্টিক দাস ব্যবসায় ভাষার সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটেছিল। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর আফ্রিকানদের এক সাথে রাখার ফলে তারা নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল।

খ্রিস্টধর্ম ও দাসপ্রথার ন্যায্যতা

অধ্যাপক লুমুম্বা খ্রিস্টধর্মের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, খ্রিস্টধর্ম দাসপ্রথাকে বৈধতা দিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। যখন আফ্রিকায় খ্রিস্টধর্ম আসে, তখন এর এমন একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল যেখানে দাসদের প্রভুদের বাধ্য থাকার কথা বলা হয়েছিল। রোমানদের প্রতি পলের চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছিল, “দাসেরা, তোমরা যেমন প্রভুর বাধ্য, তেমনি তোমাদের পার্থিব প্রভুদের বাধ্য থাকো।” এর মাধ্যমে দাসপ্রথাকে ঈশ্বরের অভিপ্রায় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। অধ্যাপক লুমুম্বা উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে ক্যাথলিক, অ্যাংলিকান এবং প্রেসবিটেরিয়ান চার্চগুলো দাসপ্রথায় তাদের অবদানকে স্বীকার করে ক্ষমা চাইছে।

ইসলামের ক্ষেত্রেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা যায়। ইসলামে অবিশ্বাসী বা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দাস বানানোর ধারণা প্রচলিত ছিল। অধ্যাপক লুমুম্বা মনে করেন, ধর্মগুলো মানুষের দাসত্বের ক্ষেত্রে সমানভাবে দায়ী। শুধু আফ্রিকান নয়, লাতিন আমেরিকার আরাওয়াক জাতিসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বহু মানুষকে ধর্মের নামে নির্যাতন ও দাসত্বের শিকার হতে হয়েছে।

আফ্রিকার অভ্যন্তরে দাসপ্রথা

অধ্যাপক লুমুম্বা স্বীকার করেন যে, ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকদের আগমনের পূর্বেও আফ্রিকার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধ এবং এর ফলস্বরূপ দাসপ্রথা বিদ্যমান ছিল। তবে, এই অভ্যন্তরীণ দাসপ্রথা ট্রান্সআটলান্টিক বাণিজ্যের মতো ব্যাপক বাণিজ্যিক রূপ নেয়নি। ইউরোপীয় বণিকরা যখন আফ্রিকায় আসে, তখন তারা স্থানীয় সর্দারদের সাথে জোট বেঁধে নিজেদের স্বার্থে দাস সংগ্রহ করতে শুরু করে। অধ্যাপক লুমুম্বা বলেন, অভ্যন্তরীণ দাসপ্রথাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে ইউরোপীয়রা তাদের দায় এড়াতে পারে না। ট্রান্সআটলান্টিক দাস ব্যবসার ব্যাপকতা এবং নৃশংসতা অভ্যন্তরীণ দাসপ্রথার চেয়ে অনেক বেশি ছিল।

দাস ব্যবসার অর্থনৈতিক ভিত্তি

অধ্যাপক লুমুম্বা দাস ব্যবসাকে একটি অত্যন্ত লাভজনক বাণিজ্য হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অনেক পশ্চিমা ব্যাংক, বীমা সংস্থা এবং জাহাজ কোম্পানি সরাসরি এই দাস ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল এবং এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছিল। এই প্রতিষ্ঠানগুলো দাস ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল এবং এর সুবিধাভোগী ছিল।

দাসপ্রথার বিলুপ্তি

অধ্যাপক লুমুম্বা দাসপ্রথার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের কথাও উল্লেখ করেন। দাসত্বের শিকার হওয়া মানুষজন বিভিন্ন সময়ে বিদ্রোহ করেছে এবং পালানোর চেষ্টা করেছে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে দাসপ্রথা বিলোপের জন্য একটি সংগঠিত আন্দোলন শুরু হয়, যেখানে নৈতিক, ধর্মীয় এবং অর্থনৈতিক যুক্তির মাধ্যমে দাসপ্রথার বিরোধিতা করা হয়। ডেনমার্ক ১৮০৩ সালে সর্বপ্রথম দাস ব্যবসা নিষিদ্ধ করে। এরপর ১৮০৭ সালে গ্রেট ব্রিটেন এবং ১৮০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র দাস ব্যবসা নিষিদ্ধ করে। তবে, দাসপ্রথার সম্পূর্ণ বিলুপ্তি হতে আরও সময় লেগেছিল। ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোতে এবং ১৮৬৫ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে দাসপ্রথা সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়।

দাসপ্রথার লেগেসি

অধ্যাপক লুমুম্বা বলেন, দাসপ্রথার অবসান হলেও এর লেগেসি আজও রয়ে গেছে। জাতিগত বিদ্বেষ, অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং সামাজিক অবিচার—এগুলো সবই দাসপ্রথার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব। তিনি বলেন, দাসপ্রথার ইতিহাস মানবজাতির শোষণ এবং সহনশীলতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে স্বাধীনতা, সমতা এবং মানব মর্যাদার গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা করা জরুরি।

উপসংহার

অধ্যাপক প্লো লুমুম্বার এই আলোচনা দাসপ্রথার অন্ধকার দিক এবং এর স্থায়ী প্রভাব সম্পর্কে আমাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে মানব মর্যাদা এবং সমতা প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব অনুধাবন করা অপরিহার্য। অধ্যাপক লুমুম্বা তার বক্তব্যের মাধ্যমে দাসপ্রথার শিকড় এবং এর দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দিয়েছেন, যা আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে সাহায্য করতে পারে। এই আলোচনার মাধ্যমে তিনি আমাদের মনে করিয়ে দেন যে, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি ন্যায় ও সমতাপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তোলা আমাদের দায়িত্ব।

তথ্যসূত্র

THE ARABS WERE WORSE THAN THE EUROPEANS. PROF. PLO LUMUMBA LECTURES ON ORIGIN OF SLAVERY IN AFRICA.

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.