Table of Contents
ভূমিকা
ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, কিন্তু তখন তার “ক্রিপ্টো ব্রো (crypto bro)” ভাবমূর্তি ছিল না বললেই চলে। বরং ২০১৯ সালে তিনি টুইটারে লিখেছিলেন, “বিটকয়েন (bitcoin) ও অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সি (cryptocurrencies) টাকা নয়; এগুলোর মূল্য ব্যাপকভাবে অস্থিতিশীল এবং ‘thin air’ বা ভিত্তিহীন কোনো কিছুর ওপর দাঁড়িয়ে আছে।” ২০২১ সালে ফক্স বিজনেস (Fox Business)-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ক্রিপ্টোকে (crypto) “একটি আসন্ন বিপর্যয়” (a disaster waiting to happen) হিসেবে বর্ণনা করেন, এবং এসইসি (SEC: Securities and Exchange Commission)-কে “খুব, খুব কঠোর” নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
দুই ক্ষেত্রেই তিনি ক্রিপ্টোকে ডলারের (dollar) আধিপত্যের জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করেন—ফক্স বিজনেসের কথোপকথনে এটিকে “ডলারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র (scam against the dollar)” আখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, গত এক বছরে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি আমূল বদলে গেছে বলে মনে হচ্ছে; এখন তিনি বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে “বিশ্বের ক্রিপ্টো রাজধানী (crypto capital of the planet)” বানাতে চান, এবং বিটকয়েনকে (bitcoin) “চাঁদে পাঠাতে (to the moon)” চান! তিনি এমনকি ফেডারেল রিজার্ভ (Fed)-কে বিটকয়েন রিজার্ভ রাখার কথা বলেছেন, এসইসি চেয়ার গ্যারি গেন্সলার (Gary Gensler)-কে বরখাস্ত করার হুমকি দিয়েছেন, আর কোনোভাবে জাতীয় ঋণ (national debt) ক্রিপ্টো দিয়ে শোধ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এই নিবন্ধে আমরা ঠিক সেসব “উদ্ভট” (wild) ক্রিপ্টো নীতি (crypto policies) কী, কীভাবে সেগুলো বাস্তবায়িত হলে ডলারের ওপর প্রভাব পড়তে পারে—বিশেষত ডলারের রিজার্ভ কারেন্সি মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না—সেই বিষয়গুলো বিশদভাবে আলোচনা করব।
ট্রাম্পের তিনটি প্রধান ‘ক্রিপ্টো-ঘনিষ্ঠ’ (crypto-adjacent) নীতি
আমাদের পর্যবেক্ষণে, ট্রাম্পের ক্রিপ্টো-সম্পর্কিত প্রস্তাবসমূহকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়:
- এসইসি (SEC) চেয়ার গ্যারি গেন্সলারকে বরখাস্ত (replace Gensler): এসইসি হলো যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক সম্পদ (financial assets) নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা। গ্যারি গেন্সলার এর বর্তমান প্রধান, যিনি গত বছরখানেক ধরে ক্রিপ্টো সম্পদের ওপর ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করেছেন। ট্রাম্প ওই কঠোর নিয়ম শিথিল করতে চান, তাই হয়তো গেন্সলারকে বরখাস্ত করে “ক্রিপ্টো বান্ধব” (crypto-friendly) কাউকে বসাতে চান।
- নতুন বিটকয়েন রিজার্ভ (bitcoin reserve) গঠন: ট্রাম্প ফেডকে (Federal Reserve) সোনা (gold) রাখার মতোই বিটকয়েনকে এক ধরনের রিজার্ভ অ্যাসেট (reserve asset) হিসেবে সংরক্ষণ করতে বাধ্য করতে চান।
- সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (CBDC) বাস্তবায়ন বন্ধ করা: অর্থাৎ ট্রাম্প চান, মার্কিন ট্রেজারি (Treasury Department) যেন কোনও “ডিজিটাল ডলার” (digital dollar) তৈরি না করে। কারণ অনেক ক্রিপ্টো সমর্থক মনে করেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রা (central bank digital currency) আসলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিকেন্দ্রীভূত (decentralized) ক্রিপ্টোকারেন্সির বিকল্প হিসেবে কাজ করে এবং সেগুলোকে বাজার থেকে হটিয়ে দিতে পারে।
নিম্নে প্রতিটি নীতি-প্রস্তাবের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হলো।
১) এসইসির সংস্কার ও গ্যারি গেন্সলারকে বরখাস্ত করা
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ক্রিপ্টো-উৎসাহের (crypto enthusiasm) পেছনে বড় চালিকাশক্তি মনে করা হচ্ছে তার এসইসি-সংস্কার পরিকল্পনা। কিছু মাস আগে ২০২৪ সালের বিটকয়েন কনফারেন্সে (Bitcoin conference in Nashville) তিনি মঞ্চে এসে বলেন, “প্রথম দিনই গ্যারি গেন্সলারকে বরখাস্ত করতে চাই।” এতে শোনার সঙ্গে সঙ্গে শ্রোতারা দাঁড়িয়ে উল্লাস করে।
যদিও বাস্তবে “বরখাস্ত করা” কতটা সহজ হবে, সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ। এসইসি গঠনের পর থেকে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন হলে সাধারণত এসইসির প্রধানও স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাল্টে যান—যেমন, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতাও রদবদল হয়। ফলে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর তার নতুন প্রশাসন স্বাভাবিকভাবেই এসইসির নতুন প্রধান নিয়োগ করতে পারবে। তবে ট্রাম্পের অন্তত কথাবার্তা স্পষ্ট করছে—তিনি এমন কাউকে বসাবেন, যিনি ক্রিপ্টো-বান্ধব।
গ্যারি গেন্সলারের কঠোর অবস্থান: গ্যারি গেন্সলার দায়িত্বে আসার পর থেকে ক্রিপ্টো সম্পদের ওপর নজিরবিহীন কড়াকড়ি আরোপ করেছেন। মূল দ্বন্দ্বের বিষয় হচ্ছে এই যে, ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলো সিকিউরিটি (security) হিসেবে গণ্য হবে কি না। আইন অনুযায়ী সিকিউরিটি হল এমন কোনো আর্থিক সম্পদ, যার ওপর এসইসির নিয়ন্ত্রণ প্রযোজ্য। ১৯৪৬ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় (‘Howey test’) অনুসারে যদি কোনো বিনিয়োগের ফলে লাভ (profit) আসে মূলত অন্যের প্রচেষ্টার (efforts of others) ওপর নির্ভর করে, তবে সেটি সিকিউরিটি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। গেনসলারের এসইসি মনে করে, অন্তত কিছু ক্রিপ্টো অ্যাসেট সেই সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে। কিন্তু ক্রিপ্টো সম্প্রদায়ের (crypto bros) বক্তব্য, এগুলোকে স্টক বা বন্ডের মতো দেখা ঠিক নয়; বরং এগুলো নতুন প্রযুক্তি কিংবা ডিজিটাল পণ্য (digital commodity)। এই আইনগত ও দৃষ্টিভঙ্গিগত মতপার্থক্যের জেরে ক্রিপ্টোকারেন্সি কোম্পানিগুলো এসইসির বিধিনিষেধে বিব্রত।
ক্রিপ্টো-বান্ধব এসইসি চেয়ার ও সম্ভাব্য প্রভাব: যদি এসইসির নতুন চেয়ার ক্রিপ্টোর প্রতি সহনশীল হন, তবে হয়তো অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আর “সিকিউরিটি” বলে গণ্য করা হবে না। ফলে সেগুলো কেনা-বেচা (trading) সহজ হবে, মূল্যও (value) বাড়তে পারে। ট্রাম্প নিজেও এর থেকে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতে পারেন, কারণ তার সংশ্লিষ্ট “ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফিনানশিয়াল (World Liberty Financial)” নামের একটি ক্রিপ্টো কোম্পানির সাথে তার ও তার পরিবারের নাম জড়িত আছে।
ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফিনানশিয়াল (World Liberty Financial) প্রসঙ্গ: ট্রাম্প সরাসরি এই কোম্পানির মালিক নন, বরং এটি নিবন্ধিত দুই ব্যক্তির মালিকানাধীন। তারা এর আগে ‘Doe Finance’ নামক একটি ব্লকচেইন অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যেটি সম্প্রতি হ্যাকিং-এর শিকার হয়েছিল। এছাড়া তাদের একজন আগে ইউটিউবে “পিকআপ আর্টিস্ট (pickup artist)” ছিলেন, যার নাম জ্যাক ফোকম্যান (Zack Folkman) ও তিনি একসময় ‘Date Hotter Girls LLC’ নামের প্রতিষ্ঠান চালাতেন। ওয়ার্ল্ড লিবার্টির পরিকল্পনা হলো ক্রিপ্টো টোকেন (crypto tokens) ছাড়া, যার ৭০% সংরক্ষণ থাকবে “ইনসাইডারদের” কাছে—এদের মধ্যে ট্রাম্প ও তার ছেলেরা আছেন। টোকেনগুলো নন-ট্রান্সফারেবল (non-transferable), যাতে এসইসি সিকিউরিটি আখ্যা না দেয়। কিন্তু যদি এসইসির নিয়ন্ত্রণ শিথিল হয়, ট্রাম্প পরিবার হয়তো সহজেই সেগুলো বাজারে বেচে বিপুল অর্থ লাভ করতে পারবেন।
২) ফেডের “স্ট্র্যাটেজিক বিটকয়েন রিজার্ভ” (Strategic Bitcoin Reserve)
ট্রাম্পের দ্বিতীয় প্রস্তাব হলো, যুক্তরাষ্ট্র সরকার যেন বিটকয়েনকে সোনার মতোই (gold-like reserve asset) সংরক্ষণ করে। প্রো-ক্রিপ্টো সিনেটর সিনথিয়া লুমিস (Cynthia Loomis) তার “বিটকয়েন অ্যাক্ট” (Bitcoin Act) নামে একটি বিলের খসড়া উত্থাপন করেছেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে ৫ বছরের মধ্যে ১০ লাখ বা এক মিলিয়ন বিটকয়েন কিনে রিজার্ভে রাখার কথা বলা হয়েছে, এবং অন্তত ২০ বছর তা ধরে রাখার প্রস্তাব রয়েছে।
বর্তমানে ট্রেজারির (Treasury) কাছে আনুমানিক ২ লাখ বিটকয়েন আছে—যেগুলো অবৈধ কার্যক্রম থেকে জব্দ করা হয়েছে। অতিরিক্ত ৮ লাখ বিটকয়েন কিনতে এখনকার বাজারমূল্য অনুযায়ী প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার লাগতে পারে। তবে সরকারের এমন ঘোষণায় বিটকয়েনের দামই হয়তো আকাশচুম্বী হয়ে যাবে, ফলে প্রকৃত ব্যয় আরও বেড়ে যেতে পারে।
রিজার্ভ অ্যাসেট হিসেবে বিটকয়েন: বিটকয়েনকে সাধারণত রিজার্ভ অ্যাসেট হিসেবে দেখা হয় না—মূলত এর দামের অস্থিতিশীলতার (price volatility) কারণে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকার এভাবে যদি বিটকয়েনের বিশাল ভাণ্ডার কিনতে শুরু করে, তাহলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিশ্বের অন্য অনেক দেশ হয়তো এটিকে গুরুত্বপূর্ণ রিজার্ভ ধরে নেবে; কারণ তাদের ধারণা হবে, “আমেরিকা নিজে যখন বিশাল বিটকয়েন কিনছে, তখন বাজারে এটিকে সমর্থন দেবে।” এর ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিটকয়েনের গ্রহণযোগ্যতা (acceptance) বাড়বে, দামও বাড়তে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এত বিশাল ক্রেতা (buyer) হয়ে দাঁড়ালে অন্যরাও আশা করবে যে বিটকয়েনের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।
ডলারের রিজার্ভ স্ট্যাটাসে প্রভাব: তবে অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করছেন, এটি ডলারের রিজার্ভ কারেন্সি মর্যাদাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। যদি যুক্তরাষ্ট্র সরকার বিটকয়েনকে “সরকারি স্তরে” অনুমোদন দেয়, তাহলে কি ডলারের পরিবর্তে বিটকয়েনের আধিপত্য বাড়বে? কেউ কেউ মনে করেন, ডলার আপাতত নিরাপদ—কারণ বিটকয়েনের বদলে ডলারই ব্যাপক ব্যবহৃত হয়; আবার কেউ মনে করেন, “ডলারের রিজার্ভ স্ট্যাটাস” চিরস্থায়ী কিছু নয়, এবং বিটকয়েনের মাধ্যমেই একদিন তা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। সরাসরি বলতে গেলে, বিশ্ব রিজার্ভ কারেন্সি ধরে রাখার মতো বিশাল দেশে (যুক্তরাষ্ট্র) আবার একই সঙ্গে বিটকয়েনকে (যা মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থার বিপরীতে তৈরি) স্বীকৃতি দেওয়া—এ এক অদ্ভুত দ্বৈরথ বা বৈপরীত্য।
৩) সিবিডিসি (CBDC) চালু করাটাকে বন্ধ করা
ট্রাম্পের তৃতীয় পরিকল্পনা হলো: যুক্তরাষ্ট্র যেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রা (Central Bank Digital Currency, সংক্ষেপে CBDC) তৈরি না করে। ফেডারেল রিজার্ভ বর্তমানে “ডিজিটাল ডলার (digital dollar)” নিয়ে গবেষণা করছে।
কেন CBDC?: সিবিডিসি কাগুজে অর্থের ডিজিটাল সংস্করণ, যেখানে রাষ্ট্র প্রয়োজনে লেনদেনের সব রেকর্ড সহজে ট্র্যাক করতে পারে। ফলে কর ফাঁকি (tax evasion), মানি লন্ডারিং (money laundering), সন্ত্রাসী অর্থায়ন (terrorist financing) মোকাবেলায় রাষ্ট্র কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে। অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়েও নীতিনির্ধারকেরা বিশদ ডেটা পাবেন।
ক্রিপ্টো সম্প্রদায়ের আপত্তি: বিকেন্দ্রীকৃত ক্রিপ্টো-সমর্থকেরা (decentralized crypto advocates) বিশ্বাস করে, সরকারি ডিজিটাল মুদ্রা এলে স্বাধীন, ব্যক্তি-নিয়ন্ত্রিত ক্রিপ্টোকারেন্সি বাধার মুখে পড়বে। কারণ মানুষ সরকারি ডিজিটাল ডলারের দিকে ঝুঁকতে পারে, যেখানে ঝুঁকিও কম, আইনগত স্বীকৃতিও বেশি। ক্রিপ্টোদের উদ্বেগ হলো, এতে বিটকয়েন বা অন্যান্য বিকেন্দ্রীকৃত টোকেনের বিস্তার আটকে যাবে।
ট্রাম্পের বক্তব্য, তিনি CBDC চালুতে বাধা দিতে চান। একদিকে নিজে বিটকয়েনকে রাষ্ট্রীয় রিজার্ভে যুক্ত করার কথা বলছেন, অন্যদিকে সিবিডিসির সম্ভাবনা খারিজ করে দিচ্ছেন—এতে ক্রিপ্টো সম্প্রদায় খুশি হবে, কারণ তারা প্রতিযোগী রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত ডিজিটাল মুদ্রা চায় না।
সম্ভাব্য ফলাফল: ডলারের ওপর প্রভাব ও বাস্তবতা
ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর তার এই সব “অস্বাভাবিক” (wild) ক্রিপ্টো পরিকল্পনা বাস্তবে বিটকয়েনের দরকে আক্ষরিক অর্থেই “চাঁদে” (to the moon) পাঠাতে পারে এবং তিনি এই ব্যাপারে কংগ্রেসনাল রিপাবলিকানদেরও রাজি করাতে পারেন। তবে মনে রাখা দরকার, ঐতিহ্যগতভাবে রিপাবলিকান পার্টি (Republicans) আর্থিক নীতিতে অনেক বেশি রক্ষণশীল (orthodox) অবস্থান পছন্দ করে, তাই পার্টির ভেতরে সবাই যে ট্রাম্পের এই ক্রিপ্টো নীতিতে একমত হবেন, তা অনিশ্চিত।
এর বাইরে, ডলারের রিজার্ভ স্ট্যাটাস রক্ষা করা যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের বড় অংশ। আবার, ট্রাম্প নিজেই আগে বলেছিলেন, “ক্রিপ্টো ডলারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র”—এখন উল্টো ক্রিপ্টোকে রাষ্ট্র সমর্থন দিতে গেলে কীভাবে ডলারের মর্যাদাকে অক্ষুণ্ণ রাখা যাবে, সেটি বড় প্রশ্ন।
উপসংহার
সর্বোপরি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্রিপ্টো পরিকল্পনাগুলো যথেষ্ট চমকপ্রদ ও রদবদল ঘটাতে পারে। গ্যারি গেন্সলারকে বরখাস্ত করে এসইসির নিয়ম শিথিল করা, ফেডের রিজার্ভে বিপুল পরিমাণ বিটকয়েন যুক্ত করা, সিবিডিসি জন্ম নেবার পথে বাধা সৃষ্টি করা—এই সবকিছুই মার্কিন আর্থিক নীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। বিটকয়েন সহ অন্যান্য ক্রিপ্টোর মূল্য স্ফীত হতে পারে, ট্রাম্প ও তার পরিবারের ব্যক্তি স্বার্থও রক্ষা পেতে পারে।
কিন্তু এর বিরুদ্ধ দিক হলো, ডলারের দীর্ঘকালীন আধিপত্যে ফাটল ধরতে পারে, যা বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার কেন্দ্রে মার্কিন প্রভাবকে ক্ষুণ্ণ করবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলবেন অনেকেই—এবং এটা নিয়ে রিপাবলিকান পার্টির মূলধারার মধ্যে বিতর্ক হওয়াও স্বাভাবিক। সত্যি বলতে, কংগ্রেস ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সমর্থন পেতে হবে, যা সহজ পথ নয়। তবু আপাতদৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পের এই “ক্রিপ্টো-উচ্ছ্বাস” বেশ উচ্চাভিলাষী, এবং বাস্তবায়ন সম্ভব হলে বৈশ্বিক অর্থনীতির চালচিত্র অনেকাংশে বদলে দিতে পারে।
তথ্যসূত্র
1 – https://twitter.com/realDonaldTrump/status/1149472282584072192
2 – https://www.nytimes.com/2024/10/02/opinion/donald-trump-crypto-bro.html
3 – https://www.bbc.co.uk/news/business-57392734
4 – https://adamtooze.substack.com/p/chartbook-302-kamala-v-crypto-is
5 – https://www.economist.com/finance-and-economics/2024/08/01/gary-gensler-is-the-most-controversial-man-in-american-finance
6 – https://blogs.law.ox.ac.uk/oblb/blog-post/2024/06/future-cryptocurrency-regulation-lessons-sec-v-coinbase
7 – https://www.ft.com/content/d3c26478-4e51-4c21-9dce-a82ac795048a
8 – https://www.ft.com/content/a80005e6-07a7-4dae-ac34-5c1d98f6d4a4
9 – https://twitter.com/realDonaldTrump/status/1840772362209251611
10 – https://www.coindesk.com/business/2024/09/03/inside-the-trump-crypto-project-linked-to-a-2m-defi-hack-and-former-pick-up-artist/
11 – https://www.youtube.com/watch?v=aEhRSm9aXpo
12 – https://popular.info/p/trump-teams-up-with-pickup-artist
13 – https://www.lummis.senate.gov/press-releases/lummis-introduces-strategic-bitcoin-reserve-legislation/
14 – https://www.lummis.senate.gov/wp-content/uploads/BITCOIN-Act-FINAL.pdf
Leave a Reply