Table of Contents
ইউরোপে রাশিয়ান গ্যাস ট্রাঞ্জিট বন্ধ করল ইউক্রেইন
রাশিয়া একসময় ইউরোপে (Europe) ব্যাপক গ্যাস সরবরাহ করত—দশকের পর দশক ইউক্রেইনের (Ukraine) মধ্য দিয়ে সেই গ্যাস যেত। কিন্তু ১ জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি বন্ধ হয়ে গেছে, কারণ ইউক্রেইন পাঁচ বছরের গ্যাস ট্রানজিট চুক্তি (gas transit agreement) নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঐ চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) মোট গ্যাস আমদানির ৫% সরবরাহ করত।
চুক্তিটি ২০১৯ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যাতে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস জায়ান্ট গ্যাজপ্রম (Gazprom) রাশিয়ার প্রাচীনতম গ্যাসরুট “ব্রাদারহুড পাইপলাইন (Brotherhood pipeline)” দিয়ে ইউরোপে গ্যাস পরিবহনের সুযোগ পেত। পাইপলাইনটি ইউক্রেইনের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত (সুধিয়া, Sudya) অতিক্রম করে দক্ষিণ-পশ্চিমে ডিনিপ্রো নদী (Dnipro river) পেরিয়ে শেষমেশ পশ্চিম দিকে উঝগোরড (Usgorod)-এর কাছে সীমান্ত পেরোত।
ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy) বলেছেন, “যখন ইউক্রেইনবাসী রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের জীবন দিচ্ছে তখন দেশগুলোর জ্বালানির সামান্য মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দুশ্চিন্তা করা উচিত নয়।” প্রসঙ্গত, ইইউ-র (EU) পক্ষ থেকে রাশিয়ান গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর (end reliance on Moscow) যে অঙ্গীকার করা হয়েছিল, সত্ত্বেও স্লোভাকিয়া (Slovakia), হাঙ্গেরি (Hungary) ও অস্ট্রিয়া (Austria) এই রুটে গ্যাস কিনে যাচ্ছিল। ২০২৩ সালে তাদের প্রায় ৬৫% গ্যাস এই রুটের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
এখন ইউরোপে গ্যাসের দাম (gas prices) সাম্প্রতিক দিনে বেড়েছে, আর যারা এখনও রাশিয়ান গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল, তাদের মধ্যে এক পূর্ণমাত্রার জ্বালানি সংকটের (energy crisis) আশঙ্কা। ১ জানুয়ারিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রো-রাশিয়ান অঞ্চল ট্রান্সনিসট্রিয়ায় (Transnistria) কেন্দ্রীয় হিটিং ও গরম পানির সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। তারা ৩০ দিনের অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা (economic emergency) ঘোষণা করেছিল আগেই। মল্দোভাও (Moldova) নিজেরাই জরুরি অবস্থা জারি করেছে সম্ভাব্য মানবিক বিপর্যয় এড়াতে।
ইউক্রেইনের জ্বালানিমন্ত্রী এই বন্ধকে “ঐতিহাসিক ঘটনা (historic event)” বলে উল্লেখ করেছেন, বলেছেন রাশিয়া তাদের বাজার হারাচ্ছে এবং আর্থিক ক্ষতির (financial losses) মুখে পড়বে। ইউক্রেইনীয় পাইপলাইন ব্যবহার করে গ্যাস বিক্রি করে রাশিয়া বছরে বিলিয়ন ডলার আয় করে, আর ইউক্রেইনও ট্রানজিট ফি হিসেবে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার পেয়ে থাকে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) তবু যুক্তি দিয়েছেন, “গ্যাজপ্রম ঠিকই টিকে যাবে,” আর স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, “ইইউ (EU)-ই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে,” রাশিয়া নয়। তিনি আগে বলেছিলেন, এই চুক্তি শেষ হওয়ার পর ইইউ-র খরচ বাড়বে, প্রতিযোগিতা কমবে (competitiveness), স্লোভাকিয়ায় (Slovakia) জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি পাবে। তিনি পাল্টা ব্যবস্থা (reciprocal measures) নেওয়ার কথাও বলেছেন, যেমন ইউক্রেইনে বিদ্যুৎ রপ্তানি বন্ধ করা। তবে ইউক্রেইনের জ্বালানিমন্ত্রী এই হুমকিকে “ব্লাফ” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন—যদি সত্যিই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধও করে, কিইভ (Kyiv) রোমানিয়া ও পোল্যান্ড (Romania and Poland) থেকে আমদানি করে সমাধান করতে পারবে। বাস্তবে, ওয়ারশ (Warsaw) ইতিমধ্যেই সহায়তার প্রস্তাব রেখেছে।
শীতে তীব্র জ্বালানি সংকটে ইউরোপ
রাশিয়া (Russia) ২০২২ সালের শুরুর দিকে ইউক্রেইন (Ukraine) আক্রমণ করার পর, ইউরোপ প্রত্যাশার চেয়েও ভালোভাবে প্রাথমিক জ্বালানি-ধাক্কা (energy shock) সামাল দিয়েছিল। যদিও জ্বালানি মূল্য (energy prices) বেড়ে গিয়েছিল, মজুদ (reserves) শেষ হয়ে যায়নি, আর বেশিরভাগ দেশ সস্তা রাশিয়ান গ্যাসের বিকল্প জোগাড় করতে পেরেছিল। কিন্তু এই শীতে দাম আবার চড়া গতিতে বাড়ছে, আর গ্যাসের মজুদও অনেকের আশা অপেক্ষা দ্রুতগতিতে কমে যাচ্ছে। এই লেখায় আমরা বুঝতে চেষ্টা করব:
- দাম কেন আবার বাড়ছে,
- ইউরোপের জন্য বিষয়টি কেন উদ্বেগজনক,
- এবং কীভাবে ইউরোপ মূল্য কমানোর চেষ্টা করতে পারে।
সাম্প্রতিক পটভূমি: দাম আবার বাড়ছে কেন?
রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের পর থেকে দাম কিছুটা নিম্নমুখী হলেও, এখনো ২০২২-এর আগের স্তরের (pre-2022 levels) চেয়ে বেশি। উদাহরণস্বরূপ, জার্মানিতে (Germany) পাইকারি বিদ্যুৎ (wholesale electricity) মার্চ থেকে গড়ে ~১৩৮ ইউরো/মেগাওয়াট-আওয়ার (€138 per megawatt hour) চলছে, যা ২০১৭-২০১৯ সালের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। ফলে জার্মান ভোক্তাদের (German consumers) বিদ্যুৎবিল আগের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেড়েছে। একই সময়ে ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস (France, Italy, Netherlands)-এ দাম ২০০%-এরও বেশি বাড়ে, পোল্যান্ডে ১৮০%, স্পেনে ১০৩%।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তা আরও উর্ধ্বমুখী। নভেম্বরে (২০২৪) এইসব দেশে পাইকারি বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য (wholesale base power prices) ২০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। ডিসেম্বরে (২০২৪)-র শুরুতে জার্মানিতে বিদ্যুতের দাম ১,০০০ ইউরো/মেগাওয়াট-আওয়ার (€1,000/MWh)-এ পৌঁছায়—যা গত ১৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। যদিও ২০২২-এ যুদ্ধের গোড়ায় যে রেকর্ড উচ্চতার কথা শোনা গিয়েছিল, তার নিচে আছে, তবুও এটি ইউরোপের জ্বালানি পরিস্থিতিতে (Europe’s energy landscape) অশনিসংকেত দিচ্ছে। দাম বাড়ার কারণসমূহ –
- জার্মানির (Germany) দায়?: অনেক ইউরোপীয় দেশ ও সংবাদমাধ্যম (European media) জার্মানিকে আঙুল তুলছে, কারণ জার্মানি হল ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি (largest economy) ও শীর্ষ প্রস্তুতকারক (top manufacturer)। তারা এ শরতে ও শীতে (autumn and winter) দীর্ঘ মেঘাছন্ন, বাতাসহীন (cloudy, windless) আবহাওয়া পেয়েছে, ফলে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ (renewable power)—বাতাস (wind) ও সৌরশক্তি (solar) উৎপাদন কমে গেছে। তখন অন্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ সংগ্রহ করতে হচ্ছে, কিন্তু জার্মানির জন্য সেটি কঠিন, কারণ তারা আগেই রাশিয়ান সস্তা গ্যাসের ওপর ভর করে ছিল। ক্যানসেলর ওলাফ শলৎসের (Olaf Scholz) নেতৃত্বে জার্মানি পরমাণু শক্তি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় (শেষ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয় ২০২৩ সালে)। তাছাড়া, ইউরোপের পরিবেশবান্ধব (green energy transition) লক্ষ্য পূরণে কয়লা পুড়িয়েও বিদ্যুৎ বানানো কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে জার্মানি নিজের বিদ্যুৎ উৎপাদন তুলনায় কমিয়ে অন্য ইউরোপীয় দেশ থেকে আমদানি করতে বাধ্য হচ্ছে। ২০২৩ সালে ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো জার্মানি বিদ্যুৎ রপ্তানির (export) চেয়ে আমদানি (import) বেশি করেছে। এতে জার্মানি বিশেষভাবে নরওয়ের গ্যাসের ওপর নির্ভর করছে—যা গত বছর তাদের ৪৩% গ্যাস আমদানির উৎস। ফলে জার্মানির উচ্চ চাহিদায় (high German demand) নরওয়েতেও দাম বেড়েছে—২০০৯ সালের পর সর্বোচ্চ। এখন নরওয়ের মূল্য ইউরোপীয় গড় দামের ছয়গুণ। অন্য নর্ডিক (Nordic) দেশ, যেমন সুইডেন (Sweden), একই ঝামেলায় পড়েছে। সুইডিশ জ্বালানিমন্ত্রী সরাসরি বলছেন, জার্মানির পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধই মূল সমস্যার একটি; এগুলো চালু থাকলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ত, আর দামও কমে থাকত।
- অত্যন্ত ঠান্ডা শীত (cold winter): গত দুই শীতের তুলনায় এই শীত (২০২৪-২৫) অনেক ঠান্ডা, ফলে ইউরোপীয় পরিবারগুলো আগের চেয়ে বেশি সময় হিটিং (heating) চালাচ্ছে। এতে ইউরোপের প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ (European natural gas supplies) দ্রুত শেষ হচ্ছে। সারাবছর গড়ে মজুদ বিগত পাঁচ বছরের গড়ের চেয়ে বেশি ছিল, কিন্তু শেষ কয়েক সপ্তাহে ১৫% নামিয়েছে, এখন প্রায় ৮০%-এ এসে ঠেকেছে। এক কনসালটেন্সি বলছে, মার্চের শেষে এটা হয়তো ৩৩%-এ নেমে যেতে পারে, পরের শীতে আবার পূরণ করাটা কঠিন হবে।
- ইউক্রেইন ও রাশিয়ার গ্যাস ট্রানজিট চুক্তির (gas transit agreement) মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া: ২০১৯ সালে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি ৫ বছর ধরে গ্যাজপ্রম (Gazprom) ইউক্রেইনের বিশাল পাইপলাইন নেটওয়ার্ক দিয়ে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ করতে দিত। যদিও ইইউ (EU) ২০২৭ সালের মধ্যে রাশিয়ান গ্যাসের নির্ভরশীলতা বন্ধের কথা বলছে, তবু স্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া এখনো এই পাইপের ওপর নির্ভরশীল ছিল (মোট চাহিদার ~৬৫%)। এখন তাদের সেই উৎস হারাচ্ছে বলে ইউরোপজুড়ে (across Europe) গ্যাসের দাম বাড়বে। স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিৎসো (Robert Fico) ইতিমধ্যে বলছেন, তারা বড় গ্যাস সংকটে (major gas crisis) পড়বে, মল্দোভা (Moldova) জরুরি অবস্থা (state of emergency) ঘোষণা করেছে। এভাবে সংযোগ হারানো, দ্রুত শেষ হওয়া মজুদ, রাশিয়ার সরবরাহ হ্রাস, আর জার্মানির পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের অভাব—সব মিলিয়ে দাম কেন বাড়ছে, তা পরিষ্কার।
ইউরোপের জন্য এর ফলাফল
নির্ঘাত এই খবর ইউরোপের জন্য আনন্দের নয়। অর্থনৈতিকভাবে, মূল উদ্বেগ হলো মুদ্রাস্ফীতি (inflation)। জ্বালানি প্রায় সব জায়গায় লাগে; যদি জ্বালানির দাম বাড়ে, তাহলে প্রায় সব পণ্যের দাম বাড়ে, এতে মানুষ কম পণ্য কিনতে পারে, গৃহস্থের ব্যয় কমে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা (domestic demand) কমে গিয়ে সামগ্রিক অর্থনীতির মন্দা হতে পারে।
শিল্পক্ষেত্রেও ক্ষতি হচ্ছে—অনেক দেশে প্রকৃত চাহিদা কমেছে, ফলে রাসায়নিক (chemicals), ইস্পাত (steel) মতো উচ্চ-জ্বালানি ব্যবহারকারী খাতগুলোতে উৎপাদন রেকর্ড-নিম্নে। অনেক কারখানা বন্ধ হচ্ছে, ব্যয় চালাতে না পেরে শ্রমিক ছাঁটাই (mass layoffs) করছে।
নতুন এই জ্বালানি সংকট (energy crisis) ইউরোপে জ্বালানি সহযোগিতাও (energy cooperation) দুর্বল করতে পারে। ইইউর (EU) অভিন্ন জ্বালানি বাজার (Common Energy Market) আছে, যা সারা মহাদেশের দাম হারমোনাইজ করে, মানে দেশগুলোকে মূলত তাদের জ্বালানির সম্পদ ভাগাভাগি করতে হয়। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলে সবাই খুশি, কিন্তু সরবরাহ কমলে (যেমন এখন), রাষ্ট্রগুলো একে অন্যকে সরবরাহ করতে অনাগ্রহী হতে পারে।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে জার্মানির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা গ্যাস মজুত করছে। চেকিয়া (Czechia) এমনটা বলেছিল। নরওয়েও (Norway) ডেনমার্কের (Denmark) সঙ্গে শেয়ারকৃত জ্বালানি সংযোগ (energy links) কাটতে, এবং জার্মানির সঙ্গে বিদ্যমান সংযোগ পুনরায় আলোচনা করতে পারে বলে বিবেচনা করছে।
যদি পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায়, অন্য ইইউ রাষ্ট্রগুলোও নিজেদের বিদ্যুৎ ভাগ করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফিৎসো (Fico) ইতিমধ্যেই ইউক্রেইনের বিদ্যুৎ সরবরাহ কেটে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন, কারণ কিইভ (Kyiv) রাশিয়ার গ্যাস চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
সম্ভাব্য সমাধান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
এখনো পর্যন্ত ইউরোপ পুরোপুরি বড় মাপের সংকটে না গিয়ে বেঁচে আছে, বেশিরভাগই তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) আমদানি বাড়ানোর মাধ্যমে—মুখ্যত যুক্তরাষ্ট্র (US) ও কিছুটা রাশিয়া (রাশিয়া ২০২৪-এ এলএনজি রেকর্ড হারে ইউরোপে পাঠায়)। কিন্তু এলএনজির সরবরাহ (supply) স্থিতিশীল নয়, কারণ এটি বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারের (global energy market) সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট, যেকোনো সময় দাম/সরবরাহ বদলাতে পারে।
ফলে ইউরোপকে হয়ত নবায়নযোগ্য বা পরমাণু শক্তিতে (nuclear capabilities) আরও বিনিয়োগ করতে হবে—যা খরচসাপেক্ষ (costly) এবং রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত (contentious)। অথবা আজারবাইজান (Azerbaijan)-এর মতো দেশের সঙ্গে গ্যাস চুক্তিতে যেতে পারে, যারা আরও বেশি গ্যাস সরবরাহ করতে পারবে।
এ ধরনের পদক্ষেপ ইউরোপীয় নেতাদের (European leaders) জন্য কঠিন হবে—একদিকে তারা মুদ্রাস্ফীতি (inflation) ও শিল্পের (industry) চাপে ভুগছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা দেশের সঙ্গে সম্পর্ক সুরক্ষার প্রশ্ন।
সবমিলিয়ে, এই শীত মৌসুমে (২০২৪-২৫) ইউরোপ কি আবার বড় কোনো সংকটে পড়বে নাকি কোনোমতে পার হবে, সেটাই দেখার। দাম কমাতে গেলে হয় শক্ত আইনত পরিবর্তন আনতে হবে, নয়ত অন্য উৎস বা জ্বালানি গ্যারান্টি পেতে হবে।
উপসংহার
রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের পর প্রথম দিকে ইউরোপ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছিল, কিন্তু এখন সামনে নতুন এক কঠোর শীত, নবায়নযোগ্য শক্তির ঘাটতি, জার্মানির পারমাণবিক বিদ্যুৎ বন্ধ, ইউক্রেইন-রাশিয়া গ্যাস ট্রানজিট চুক্তির সমাপ্তি—এসবের সংমিশ্রণে জ্বালানি বাজারে (energy market) আবারও উত্তেজনা। দাম বেড়েছে, মজুদ কমছে, শিল্পে মন্দা ভাব। ইইউর অভ্যন্তরীণ ঐক্যও (cooperation) ঝুঁকিতে।
এখনও পর্যন্ত এলএনজি (LNG) আমদানি বাড়িয়ে কোনো রকমে রক্ষা করা হচ্ছে, কিন্তু সেই সরবরাহ অনিশ্চিত। হয় ইউরোপকে পরমাণু বা নবায়নযোগ্য শক্তির পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, নয়তো আজারবাইজান বা অন্য দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। এগুলোর সবই ব্যয়বহুল ও রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল।
ইইউ সংক্রান্ত আরও সংবাদ ও বিশ্লেষণ জানতে দেখুন – ইইউ ও ইউরোপ সংবাদ
রাশিয়া ও ইউক্রেইন সংক্রান্ত আরও সংবাদ ও বিশ্লেষণ জানতে দেখুন – রাশিয়া ও ইউক্রেইন সংবাদ
জার্মানি সংক্রান্ত আরও সংবাদ ও বিশ্লেষণ জানতে দেখুন – জার্মানি সংবাদ
তথ্যসূত্র
Europe’s gas prices peak
https://www.ft.com/content/909271cd-7b5c-4f50-80bd-80869b565578
https://www.reuters.com/business/energy/europes-economic-woes-may-worsen-key-power-prices-rise-maguire-2024-11-20/
Germany’s ‘Dunkelflaute’
https://www.cleanenergywire.org/news/short-term-power-prices-spike-amid-new-dunkelflaute-germany-most-customers-unaffected
https://www.nytimes.com/2024/12/30/business/energy-environment/europe-energy-solar-wind.html
https://unherd.com/newsroom/germanys-dunkelflaute-is-causing-an-energy-crisis-in-europe/ https://english.elpais.com/international/2024-12-12/cold-without-wind-german-dunkelflaute-brings-electricity-prices-to-crisis-levels-and-depletes-gas-reserves.html
Germany’s electricity imports and exports
https://www.statista.com/statistics/1331853/electricity-imports-exports-germany/#:~:text=In%202023%2C%20Germany%20imported%2069.3,opposite%20was%20true%20for%20exports.
Global natural gas market
https://www.eia.gov/todayinenergy/detail.php?id=63804
Europe’s gas supplies
https://www.bloomberg.com/news/articles/2024-11-23/europe-is-already-facing-its-next-energy-crisis?embedded-checkout=true
https://www.ft.com/content/1bf29f6e-fcdf-462a-b257-d1690ff53825
Russia-Ukraine gas transit deal ends
https://www.bruegel.org/analysis/end-russian-gas-transit-ukraine-and-options-eu
Slovakia-Ukraine gas dispute
https://kyivindependent.com/fico-criticizes-zelensky-over-refusal-to-extend-russian-gas-transit-warns-of-crisis/
https://www.politico.eu/article/ukraine-slovakia-russia-gas-deal-power-robert-fico/
Germany-Czechia gas dispute https://www.bloomberg.com/news/articles/2024-07-18/germany-accused-of-hoarding-gas-meant-to-supply-czech-republic?embedded-checkout=true
Europe’s Russian Gas Era Comes to an End
https://www.themoscowtimes.com/2025/01/01/russian-gas-halt-leaves-transnistria-without-heating-amid-winter-freeze-a87499
https://www.politico.eu/article/robert-fico-vladimir-putin-cutting-off-russia-gas-to-the-eu/
https://www.politico.eu/article/no-new-russian-gas-deal-for-eu-vladimir-putin-viktor-orban-robert-fico-plead-for-renewal/
Leave a Reply