Table of Contents
ভূমিকা
মিথলজি বা পুরাণ (mythology) আসলে জটিল বিষয়। এটি সাহিত্য (literature), ইতিহাস (history), নৃবিজ্ঞান (anthropology), সমাজবিজ্ঞান (sociology), মনোবিজ্ঞান (psychology), ধর্ম (religion), এমনকি বিজ্ঞানের (science) সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানে একসাথে সব কিছুই চলে আসে।
মিথলজি কেন জটিল?
মিথলজি অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে কঠিন, তার একটা কারণ হলো—অনেক মিথই বহু পুরোনো এবং বিভিন্ন সংস্করণে (versions) বিদ্যমান। কাজেই আমরা যখন কোনো মিথ নিয়ে কথা বলব, আর আপনি যদি সেটার অন্য কোনো রূপ শুনে থাকেন, সেটি ভুল নয়, বরং এখানে হয়তো অন্য সংস্করণটিকে ব্যবহার করা হয়েছে। কোথায় কোন রেফারেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে, তা তথ্যসূত্রে উল্লেখ করার চেষ্টা করা হবে। কখনো একই মিথের ভিন্ন ভিন্ন ভার্সন একত্রিত করেও বলব।
আরেকটি কারণ হলো, মিথের ব্যাখ্যা (interpretation) অনেক ধরনের হতে পারে। মিথ কি তবে ঐতিহাসিক তথ্যের রেকর্ড? নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে বানানো কাহিনি? নাকি বাস্তবে যখন কোনো ঘটনাকে ব্যাখ্যা করা যাচ্ছিল না, তখন তাকে একটা গল্পের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা? আমরা এসবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারব না। কারণ এগুলো এমনসব বিষয়, যেগুলো নিয়ে পণ্ডিতেরা সারাজীবন তর্ক-বিতর্ক করে গেছেন। আমি এক্ষেত্রে সম্ভাব্য ব্যাখ্যাগুলো রাখব, তবে সেগুলোকে ‘তথ্যগত সত্য’ বলে চালাব না। মিথ নিয়ে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে তত্ত্ব (theory) হাজির করা হচ্ছে, আর অনেক মিথ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা যায়।
যখন ব্যাখ্যা দেব, তখন বলে নেব যে এগুলো ব্যাখ্যা মাত্র। যেন আবার কেউ এটা মনে না করে বসেন যে আমি সবটা চূড়ান্ত সত্য বলে দিচ্ছি।
মিথ বনাম ধর্ম (Myth vs. Religion)
অনেক ক্ষেত্রে মিথ আর ধর্মের (religion) মধ্যের রেখাটি খুবই অস্পষ্ট। আমি “মিথ”-কে গল্প (story) হিসেবেই দেখছি, সত্য (truth) হিসেবে নয়। যখন কোনো মিথকে সাহিত্যের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হয়, তখন সেটিকে তার ধর্মীয় মূল্য বিচার ছাড়াও উপভোগ করা যায়। কাজেই বাইবেলে (Bible) যে গল্প পাই, সেগুলোকে মিথ হিসেবে উল্লেখ করলেও তা সত্য না মিথ্যা সেই প্রশ্নে যাবার প্রয়োজন হচ্ছেনা। শুধু বলতে চাই—এই গল্পগুলো মানুষ নানা সময়ে নানা কাজে লাগিয়েছে।
মিথের লেখক ও এর জটিলতা (Authorship and Complexity)
এখন, বেশিরভাগ মিথেরই কোনো নির্দিষ্ট লেখক নেই। আর থাকলেও যেমন হোমার (Homer) বা ভার্জিল (Virgil)—তারাও অনেক সময় আগের গল্পকে নতুন ভাষায় লিখেছেন। বেশিরভাগ সময় আমরা জানি না, কে কোথায়, কীভাবে, কেন এই মিথের সূচনা করেছে। এই আলোচনায় অবশ্য এই ব্যাপারটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।
কিন্তু অন্য একটি সমস্যা হলো “মিথ” শব্দের সুস্পষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া। এখনকার ইংরেজিতে “myth” মানে অনেক সময়ই “অবিশ্বাস্য” বা “মিথ্যা” বলে ধরে নেওয়া হয়—যেমন “ঘুমানোর সময় আমরা প্রতি বছর আটটা মাকড়সা গিলে ফেলি”—এটা একটা ‘মিথ’। সত্যি না। কিন্তু সত্যি না বলেই যে গল্পটা ‘মিথ’, ব্যাপারটা এমন নয়।
মিথ (myth) গ্রীক শব্দ “mythos” থেকে এসেছে, যার মানে হলো “শব্দ” বা “গল্প”। এখানে এটা বলছি না যে, সব মিথই গ্রীক। তবে আমাদের বেশিরভাগ দর্শকদের কাছে গ্রীক মিথ পরিচিত।
সবার আগে এটাই বলব যে, মিথ মানে হলো “গল্প”—কিন্তু সেটা বিশেষ ধরনের গল্প। এই সিরিজে এমন গল্প নিয়ে কথা বলব, যেখানে দুটো গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে: ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু (significance)’ আর ‘টিকে থাকার ক্ষমতা (staying power)’। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু বলতে বুঝি—পৃথিবী (world) কীভাবে কাজ করে, কীভাবে সৃষ্ট হয়েছিল, কীভাবে কোনো ঘটনা ঘটল—এই ধরনের মৌলিক প্রশ্নের উত্তর। আর টিকে থাকার ক্ষমতা মানে হলো—গল্পগুলো শতাব্দীর পর শতাব্দী, কোনোটি হাজার বছর ধরে টিকে আছে। এটি প্রমাণ করে যে ঐ গল্পগুলো মানুষকে গভীর অর্থ বা মিনিং প্রদান করে কিংবা কোনোভাবে কার্যকর ছিল।
এই সিরিজে কি “ফোকটেল (folktale) আর সম্ভবত ফেয়ারি টেল (fairy tale) অন্তর্ভূক্ত থাকবে?” হয়তো কোনো ফোকটেল ফস করে ঢুকে যেতে পারে, তবে ফেয়ারি টেল এখানে এড়িয়ে চলা হবে। কারও কারও মতে, প্রকৃত মিথ কেবলই মহাবিশ্বের (universe) সৃষ্টিকথা নিয়ে কাজ করে, ফলে সব মিথই ধর্মীয় বা ক্ষীণভাবে ধর্মীয়। আবার ধর্মতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা গবেষকরা বলেন, মিথের কেন্দ্রীয় চরিত্র অবশ্যই কোনো দেবতা (god) হতে হবে। কিন্তু তাই যদি হয়, বীর (hero) আর দানবের (sea monster) গল্পগুলোর স্থান কোথায়? সেগুলো তো মিথের বড় অংশ; আর সেখানেই তো সমুদ্রদানব (sea monsters) থাকে! সেগুলোর আলোচনাও এই সিরিজে করা হবে।
আবার এমন কিছু গল্প আছে যেখানে অতিপ্রাকৃতের উপস্থিতি নেই বললেই চলে—রবার্ট সেগাল (Robert Segal) যাকে বলে থাকেন “beliefs” বা “credos”। আমেরিকায় প্রচলিত “র্যাগস টু রিচেস (rags to riches)”, অর্থাৎ চরম দারিদ্র্য থেকে বড়লোক বনে যাওয়ার গল্পগুলোকেও অনেকে ‘মিথ’ বলেন। কারণ মানুষ এগুলো সত্যি বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, এগুলোর সামাজিক প্রভাব প্রচণ্ড। তাই সেগুলো যথেষ্ট ‘গুরুত্বপূর্ণ’ এবং ঐতিহাসিকভাবেও টিকে আছে। যদিও কেউ কেউ সত্যিকার অর্থেই দরিদ্র অবস্থা থেকে কঠোর পরিশ্রম আর দৃঢ়তায় বড় সফল হন—এটা বাস্তবে ঘটতেও পারে। কিন্তু এই গল্পকে ‘মিথ’ বলার কারণ তার ব্যাপক প্রচলন ও সহজে বিলুপ্ত না হওয়া। পরে আমরা এ নিয়ে আরো আলোচনা করব।
মিথের উদাহরণ: পারসেফোনের গল্প (Example: The Story of Persephone)
এখন একটা উদাহরণ দিই। এক্ষেত্রে আমি গ্রীসে (Greece) যেতে পছন্দ করব! গ্রীস মানেই ওয়াইন, সুস্বাদু জলপাই, মনোমুগ্ধকর ধ্বংসাবশেষ, বিক্ষোভ—এবং পারসেফোন (Persephone) নামের গল্পের পটভূমি।
পারসেফোন ছিল ফসলের দেবী ডিমিটারের (Demeter) এবং সর্বোচ্চ দেবতা জিউসের (Zeus) মেয়ে; তবে ডিমিটার ও জিউস ছিল ভাইবোন (এই অদ্ভুত অজাচারের (incest) বিষয় পরে আলোচনা করব)। পারসেফোনের আসল নাম ছিল কোরে (Kore), যার অর্থ “মেয়ে”। একদিন কোরে ফুল তুলতে গিয়েছিল, আর তখনই জিউসের ভাই হেডিসের (Hades) নজরে পড়ে। হেডিস আন্ডারওয়ার্ল্ড বা পাতাললোক (Underworld) থেকে (যাকে আবার হেডিস-ও বলা হয়) উঠে এসে কোরেকে অপহরণ করে স্ত্রী বানায়… এবং সম্ভবত তাকে ধর্ষণও (rape) করে। এই অস্বস্তিকর যৌন সহিংসতার বিষয় পরে আরেক পর্বে বিস্তারিত আলোচনা করব।
কোরে ছিল বিষণ্ন, আর ডিমিটার ছিল প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ। সে মানবজাতিকে অভুক্ত রাখার হুমকি দেয়, যাতে জিউস বাধ্য হয় তার ভাইকে কোরেকে ফিরিয়ে দিতে বলতে। কিছু সংস্করণে বলা হয়, জিউস আগেই কোরেকে বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল হেডিসকে, ডিমিটারকে না জানিয়েই। হেডিস বোকা ছিল না। কোরেকে ছাড়ার আগে সে একটি খাবার অফার করে—সাথে ছিল মধুর মতো স্বাদযুক্ত ছয়টি ডালিমের (pomegranate) বীজ। কোরেকে সাবধান করা হয়েছিল যে আন্ডারওয়ার্ল্ডে কিছু খাওয়া যাবে না, কিন্তু সে হয়তো খুব ক্ষুধার্ত ছিল। হয়তো ভাবল, ছয়টা বীজে আর কী-ই বা ক্ষতি!
কিন্তু শেষমেশ ছয়টা বীজই অনেক ক্ষতি করল। কোনো কোনো সংস্করণে কোরে নিজেই সেগুলো খায়, কারণ সে তার স্বামীকে পছন্দ করে ফেলেছিল; অন্য সংস্করণে তাকে ফাঁকি দিয়ে খাওয়ানো হয়। যেভাবেই হোক, একবার খাওয়া হয়ে গেলে, তাকে প্রতি বছর ছয় মাস (প্রতি বীজের জন্য এক মাস) আন্ডারওয়ার্ল্ডে থাকতে হবে, আর বাকি ছয় মাস ওলিম্পাসে (Olympus) বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতে পারবে। এই ছয় মাস ওলিম্পাসে থাকতে থাকলে ডিমিটার ফসল ফলতে দেয়, আর পৃথিবী শস্যে ভরে ওঠে। আর বাকি ছয় মাস ডিমিটার কোরের জন্য শোক করে, তখন পৃথিবী জমে যায়, কিছুই জন্মায় না—এটাই শীতকাল (winter)। কোরে তখন নতুন নাম নেয়—পারসেফোন (Persephone)।
মিথোলজি বা পুরাণের স্টাডিতে এরকম মিথকে বলে “এটিওলোজিকাল ন্যারেটিভ” (Etiological Narrative), যা দিয়ে কোনো ঘটনার উৎপত্তি ব্যাখ্যা করা হয়। এখানে পারসেফোনের গল্পের মাধ্যমে ঋতুচক্রের (seasons) ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। ব্যাখ্যা করা হয়, কেমন করে দেবতাদের (immortals) কর্মকাণ্ডের সঙ্গে প্রকৃতির এই পরিবর্তনগুলো সম্পর্কিত।
ই.বি. টাইলরের (E.B. Tylor) মতো কিছু মিথ বিশ্লেষক মনে করতেন, এটি আদিম মানুষের (primitive people) বৈজ্ঞানিক চর্চা বা “প্রিমিটিভ সায়েন্স (primitive science)”—যেমন, তখন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার বদলে মানুষ গল্প বানাত। টাইলর মনে করতেন, মিথ আর বিজ্ঞানের মীমাংসা একসঙ্গে হয় না; বিজ্ঞানের আবির্ভাবে মিথের প্রয়োজন ফুরিয়েছে। এটা একদমই ‘হার্ডকোর থিওরি (hard core theory)’, যা আমি সাধারণভাবে গ্রহণ করি না। আমি কোন একক কোনো তত্ত্বের (theory) পক্ষ নেব না। তবুও এসব থিওরি এই সিরিজে তুলে ধরা হবে, যাতে এগুলো পড়ে আপনারা নিজেরাই রায় দিতে পারেন।
পরিকল্পনা
এখনই আমি বিস্তারিত তত্ত্বে যাচ্ছি না, কারণ আমি চাই প্রথমে বলি এই সিরিজে কোন দিকে এগোনো হবে। তাছাড়া তত্ত্ব বহু রকম, আর আলোচনা বিশদ হলে সেগুলোর ঝোপঝাড়ে হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।
এই সিরিজে সবকিছুই কভার করা সম্ভব নয়। হাজার বছরের পুরোনো গল্পের সবকিছু অল্প কথায় লেখাও সম্ভব নয়, তা যত বড় সিরিজ লেখাই হোক না কেন। তবে চেষ্টা করা হবে এমন কিছু মিথ শোনাতে, যেগুলো হয়তো তোমাদের অজানা বা অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত কোনো অঞ্চল থেকে এসেছে। এখানে ভৌগোলিকভাবে না গিয়ে তুলনামূলক (comparative) আর বিষয়ভিত্তিক (thematic) ভাবে এগোনো হবে।
১. সৃষ্টিতত্ত্ব (Creation Myths): প্রথমে সৃষ্টির পুরাণ বা ক্রিয়েশন মিথ নিয়ে আলোচনা করা হবে। প্রায় সব সভ্যতারই কোনো না কোনো সৃষ্টিকাহিনি আছে—কিভাবে পৃথিবী সৃষ্টি হলো, মানুষ এলো ইত্যাদি। শুরুর কয়েকটা পর্বে এগুলো নিয়ে লেখা হবে। কিন্তু এগুলো সাধারণত বেশ রহস্যময় আর ভাষা অদ্ভুত হতে পারে, তাই একটু ব্যাখ্যার দরকার হবে। যেমন, কিছু সংস্করণে পৃথিবীর নিচে অগণিত কচ্ছপ (turtles) আছে।
২. দেবতাদের দল (Pantheons): এরপর প্যানথিয়ন বা দেবতাদের দল নিয়ে আলোচনা করা হবে। ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি কীভাবে তাদের দেবতা-দেবীদের দল সাজিয়েছে, সেগুলো ওই সংস্কৃতিতে কীভাবে কাজ করে এসব দেখা হবে।
৩. ধ্বংসের গল্প (Destruction Myths): তারপর দেখা হবে কীভাবে মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়, অর্থাৎ বন্যা (flood) আর অ্যাপোক্যালিপস (apocalypse) সম্পর্কিত গল্প। এতে অবশ্যই ধর্মের প্রসঙ্গ আসবে, কারণ পৃথিবীর শেষ নিয়ে নানা বিশ্বাস রয়েছে। তবে এই সিরিজে গল্পের (story) দিকটিতেই জোর দেয়া হবে, সত্য-মিথ্যার (truth-belief) বিচার ছেড়ে দেয়া হবে পাঠকের ওপর।
এখানেই শেষ না। এরপর আমরা দেবতাদের স্থান, অর্থাৎ ওলিম্পাস (Olympus) কিংবা ভালহাল্লা (Valhalla) – এসব দেবস্থান থেকে নিচে নেমে আসব। এখানে আমরা দেখব বিভিন্ন বীরের (heroes) গল্প। এরপর আমরা পৌরাণিক স্থান (mythical places), জীব (creatures), এবং বস্তু (objects) নিয়ে আলোচনা করা হবে—যেমন ডানা-ওয়ালা স্যান্ডাল (winged sandals) ইত্যাদি। আর শেষ দিকে আধুনিক জগতে মিথের ভূমিকা নিয়ে কথা হবে, যেগুলো সাইকোলজি বা মনস্তত্ত্ব, এবং সাহিত্যের সাথে সম্পর্কিত।
এটাই আমাদের সার্বিক পরিকল্পনা। আমরা সত্যি উচ্ছ্বসিত এসব নিয়ে আলোচনা করতে আর আশা করছি তোমরাও উপভোগ করবে। এই আলোচনা হয়ে উঠতে পারে কিংবদন্তির (legend) মতোই—কেমন, সেটা বলবে বালডার (Balder), যিনি নর্সের (Norse) সুখের দেবতা (god of joy)।
উপসংহার
মিথোলজি শিক্ষার এই সিরিজটা মূলত মানুষের সৃষ্টিকথা, বিশ্বব্যাপী রকমফের আর সেটির অন্তর্নিহিত ব্যাখ্যা বোঝার একটি বিশাল ক্ষেত্র। আমরা দেখলাম কীভাবে পারসেফোনের (Persephone) গল্পের মধ্য দিয়ে ঋতুচক্রকে বোঝার চেষ্টা করা হয়, কীভাবে সৃষ্টিতত্ত্ব ও ধ্বংসতত্ত্বের মাধ্যমে মানুষ তাদের অস্তিত্বকে ব্যাখ্যা করতে চায়, আর ভিন্ন ভিন্ন সভ্যতার দেবদেবীদের গোষ্ঠী বা প্যানথিয়নের (pantheons) মাধ্যমে সেই সংস্কৃতির মূল্যবোধের ছাপ স্পষ্ট হয়।
মিথলজির বৈচিত্র্য ও ব্যাখ্যার পরিসর অবিরাম। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট—মানুষ যুগে যুগে “কেন” ও “কিভাবে” প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে, আর সেইসঙ্গে বহু চিত্তাকর্ষক গল্পের জন্ম দিয়েছে, যেগুলো বছরের পর বছর, শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে টিকে আছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানের অগ্রগতি হলেও, মিথ আমাদের কাছে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, এবং মনস্তাত্ত্বিক একটি গুরুত্বপূর্ণ দরজা খুলে দেয়।
তাই তৈরি থাকুন, আমরা একসঙ্গে বেরিয়ে পড়ব বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও চমকপ্রদ গল্পগুলোর সন্ধানে।
Leave a Reply