পশ্চিমে ভারতীয়দের প্রতি জাতিবিদ্বেষ বা রেসিজমের উত্থান

Table of Contents

জাতিবিদ্বেষের সাম্প্রতিক বৃদ্ধি ও সমীক্ষার ফলাফল

সাম্প্রতিক কালে এমন কিছু খবর সামনে আসছে যা ইঙ্গিত দেয় যে বিদেশে ভারতীয়দের প্রতি বিদ্বেষ (Hate) বাড়ছে। এই বছর আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় হওয়া একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে হওয়া বিদ্বেষমূলক অপরাধের (Hate crimes) মধ্যে হিন্দুরা দ্বিতীয় স্থানে আছে, ইহুদিরা (Jews) প্রথম স্থানে এবং মুসলিমরা তৃতীয় স্থানে। আমেরিকা সহ কিছু পশ্চিমা দেশে ভারতীয়দের জাতিবিদ্বেষের (Racism) সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ইন্টারনেটে আপনি এমন অনেক ভিডিও খুঁজে পাবেন যেখানে কোনো পশ্চিমা ব্যক্তি প্রকাশ্যে কোনো ভারতীয়ের প্রতি জাতিবিদ্বেষমূলক মন্তব্য (Racist remark) ব্যবহার করছে এবং তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলছে। সোশ্যাল মিডিয়া সহ এমন অনেক পেজ (Pages) আপনি খুঁজে পাবেন যারা দিনরাত ভারতীয়দের ট্রল (Troll) করে এমন মিম (Meme) পোস্ট করতে থাকে, যেখানে ভারতীয়দের উপহাস করার জন্য তাদের পশ্চাৎপদ, অস্বাস্থ্যকর, কারি-র মতো গন্ধযুক্ত, স্ক্যামার (Scammer) এবং স্ট্রিট শ্যাটার (Street shitter) হিসাবে বর্ণনা করা হয়। কিছু মিমের মধ্যে তাদের ইংরেজি উচ্চারণের (Accent) উপহাস করা হয় এবং তাদেরকে হীন দেখানোর জন্য তাদের প্রতিটি বক্তব্যের সাথে ‘স্যার’ শব্দটি যোগ করা হয়, যেন ভারতীয়রা সবাইকে ‘স্যার স্যার’ করতে থাকে। এই মিমগুলিতে ভারতীয়দের ‘পাজিত’ নামে ডাকা হয়, যা একটি জাতিবিদ্বেষমূলক অপশব্দ (Racist slur)। ‘পাজিত’ শব্দটি আসলে ভারতীয় নামের একটি বিকৃত রূপ। ভারত থেকে যে অভিবাসন (Migration) হয়, তাতে বেশিরভাগ লোক পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে যায়, যাদের বেশিরভাগ লোকের নামের শেষে ‘জিৎ’ থাকে। তাই এই ‘পাজিত’ শব্দটি সেখান থেকে আসে।

বিদ্বেষ বৃদ্ধির কারণ: চাকরির বাজার ও অর্থনৈতিক ঈর্ষা

তাহলে ভারতীয়দের বিরুদ্ধে এই ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষের কারণ কী? কারণ অতীতের কথা যদি ধরা হয়, তাহলে পশ্চিমা দেশগুলিতে ভারতীয়দের সাথে এই ধরনের জাতিবিদ্বেষ হওয়ার খবর খুব কমই শোনা যেত। ভারতীয় সম্প্রদায়কে (Community) পরিশ্রমী এবং অপ্রতিরোধী (Unassuming) হিসাবে মনে করা হত। এখন পরিবর্তন কেন হল? গত কয়েক বছরে এমন কী হল যে ভারতীয়দের বিরুদ্ধে এই জাতিবিদ্বেষ এত বাড়তে শুরু করল?

এর একটি কারণ হল পশ্চিমা দেশগুলিতে এখন চাকরির বাজার (Job market) পরিপূর্ণ (Saturated) হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার লোকেরা বাইরে থেকে আসা লোকেদের তাদের চাকরির জন্য একটি বিপদ হিসাবে দেখছে। কারণ ভারতীয়রা যারা এখান থেকে যায়, তারা বেশ পরিশ্রমীও হয়, কারণ তারা কোনোমতে একটি সুযোগ পেয়েছে যা তারা হারাতে চায় না। পশ্চিমা দেশগুলিতে নিম্ন স্তরের চাকরি থেকে শুরু করে উচ্চ স্তরের চাকরি পর্যন্ত সবখানেই ভারতীয়দের উপস্থিতি রয়েছে। এমনকি ২০২৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া একটি সমীক্ষায় এই তথ্যও উঠে এসেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয়রা সর্বোচ্চ উপার্জনকারী জাতিগত গোষ্ঠী (Highest earning ethnic group)। এর পাশাপাশি বিশ্বের অনেক বড় বহুজাতিক কোম্পানির (Multinational companies) সিইও (CEO) ভারতীয় বংশোদ্ভূত। যখন কোনো অন্য দেশের লোকেরা এসে আমাদের দেশে আমাদের থেকে ভালো করতে শুরু করে, আমাদের সাথেই প্রতিযোগিতা করতে শুরু করে, আমাদের চাকরি দখল করতে শুরু করে, নিজেদের গোষ্ঠী (Diaspora) বাড়িয়ে আমাদের দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে, তাহলে আমাদের কেমন লাগবে? অবশ্যই আমাদের বেশিরভাগেরই এটা ভালো লাগবে না।

অভিবাসনের চাপ ও অবৈধ অনুপ্রবেশ

দ্বিতীয়ত, ভারতীয়দের পশ্চিমে অভিবাসন ক্রমাগত চলছে এবং গত কয়েক বছরে এটি দ্রুত বেড়েছে। পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা-র মতো রাজ্যে তো এটা এতটাই বেশি যে লোকেরা যেকোনো মূল্যে পশ্চিমে বসবাস করতে চায়। আর এটাই কারণ যে বৈধ অভিবাসনের পাশাপাশি অবৈধ অভিবাসনও (Illegal migration), যাকে ‘ডাঙ্কি মারা’ও বলা হয়, তা দ্রুত বাড়ছে। প্রতি বছর ভারত থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ ‘ডাঙ্কি মেরে’ যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় বসবাস করার চেষ্টা করছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার লোকেদের নিরাপত্তাহীন (Insecure) বোধ করা স্বাভাবিক।

ভারতীয়দের আচরণ ও অসচেতনতা

তবে এটি আসলে এই সমস্যার একটি মাত্র কারণ। এর আরও একটি কারণ কোথাও না কোথাও ভারতীয়দের আচরণও, কেননা মানুষ যেখানেই যায় সেখানে তাদের অভ্যাসগুলোও নিয়ে যায়। আর এই অভ্যাসগুলো হল ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির (Personal hygiene) প্রতি খেয়াল না রাখা, ডিওডোরেন্ট (Deodorant) না লাগিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়া, সর্বজনীন স্থানে (Public place) পরিচ্ছন্নতার খেয়াল না রাখা, সর্বজনীন স্থানে জোরে জোরে কথা বলা, নিজেদের কারণে অন্যদের যে অসুবিধা হচ্ছে সে ব্যাপারে পরোয়া না করা, নিয়মকানুনকে (Rules and regulation) উপেক্ষা করা ইত্যাদি ইত্যাদি। বাস্তবে এই সব জিনিস ভারতীয়রা ভারতে রোজ করে এবং এটি তাদের স্বাভাবিক জীবনের অংশ এবং লোকেরা এতে অভ্যস্তও। এতে তেমন সমস্যাও হয়না। কেউ যেখানে খুশি থুতু ফেলুক, যেখানে খুশি আবর্জনা ফেলুক, যে কাউকে উত্ত্যক্ত করুক, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাক বা মদ্যপান করে গাড়ি চালাক অথবা কাঁচ নামিয়ে জোরে জোরে গান বাজাতে বাজাতে গাড়ি চালাক, সবই চলে। তবে বাইরে এই সব চলে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ইনফ্লুয়েন্সার যারা বাইরে বসবাস করেন, তারা জানান যে সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের মধ্যে এই ধরনের বেপরোয়া আচরণ প্রায়শই দেখতে পাওয়া যায় এবং এটি সম্প্রতি বেশ বেশি দেখা যাচ্ছে, যার প্রধানত দুটি কারণ। একটি কারণ হল, যেহেতু তাদের সম্প্রদায় সেখানে বড় হচ্ছে, লোকেরা এখন খোলাখুলিভাবে সেই জিনিসগুলি করতে শুরু করেছে যা করতে আগে তারা দ্বিধা করত। যেমন আগে যেখানে উৎসবগুলি বেশি হইচই না করে পালিত হত, সেগুলি এখন অন্যদের বিরক্ত না করে হয় না। দিওয়ালিতে (Diwali) গভীর রাত পর্যন্ত বাজি ফাটানো বা গভীর রাত পর্যন্ত ডিজে (DJ) বাজিয়ে নাচতে থাকা, এমনকি সর্বজনীন স্থানেও অনেক সময় এই ধরনের জিনিস করা হয়, যার কারণে বাকি লোকেদের অসুবিধা হয়।

অবৈধ অভিবাসন ও সামাজিক সংবেদনশীলতার অভাব

দ্বিতীয় কারণ হলো অবৈধ অভিবাসন। তাদের বক্তব্য হল যে অবৈধ অভিবাসনের কারণে অনেক এমন লোকও যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় পৌঁছোচ্ছে যারা বৈধ উপায়ে আসা লোকেদের তুলনায় কম শিক্ষিত। এই লোকেদের নাগরিক চেতনাও (Civic sense) খুব বেশি ভালো নয় এবং যার কারণে তারা প্রায়শই এমন ভুল করে থাকে যার কারণে পুরো ভারতীয় সম্প্রদায়কে একটি গতানুগতিক (Stereotype) ধারণার সম্মুখীন হতে হয়। পাঞ্জাব থেকে এত লোক তাদের জমি বিক্রি করে সেখানে যাচ্ছে এই ভেবে যে সেখানে জীবন ভালো হবে এবং সেখানে গিয়ে তাদের অনেক জিনিসের ধারণা থাকে না। তখন তাদের ভালো লাগে না, তারপর তারা নিজেদের সম্প্রদায়ে মিশে যায়। যেমন কিছু ভারতীয় ছাত্রছাত্রীকে শুধু সেখানকার ফুড ব্যাংক (Food bank) থেকে শুধু বিনামূল্যে মুদি সামগ্রী (Grocery) নিতে দেখাই যায়নি, বরং তারা এর ভিডিও বানিয়েও নিজেদের ব্লগে (Blog) আপলোড করছে যে কিভাবে আপনি ফুড ব্যাংক থেকে বিনামূল্যে গ্রসারি নিয়ে টাকা বাঁচাতে পারেন, যেখানে ফুড ব্যাংক আসলে সেখানে গৃহহীন (Homeless) লোকেদের জন্য চলে, যেখানে কিছু সংস্থা তাদের খাবার ও পানীয়ের জিনিস বিনামূল্যে উপলব্ধ করায়। স্বাভাবিকভাবেই এই সব করার ফলে পুরো দেশের ভাবমূর্তি খারাপ হয়।

স্ক্যাম কল ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি

এর পাশাপাশি ভারত থেকে আসা ভুয়ো স্ক্যাম কলও (Fake scam call) আন্তর্জাতিকভাবে ভারতীয়দের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এই সব স্ক্যাম কল গত কয়েক বছরে দ্রুত বেড়েছে। ইউটিউবে (YouTube) অনেক পশ্চিমা ব্যক্তি এখন এই সব স্ক্যামারদের মুখোশ খুলে দিচ্ছে। এমনকি তারা এদের আইপি অ্যাড্রেস (IP address) ট্র্যাক (Track) করে এদের একেবারে সঠিক অবস্থানও (Pin point location) বলে দিচ্ছে। তাদের বক্তব্য হল যে এই স্ক্যাম কলগুলির মধ্যে ৯৫ শতাংশ ভারত থেকেই আসে। হ্যাঁ, এই ধরনের ভুয়ো কল সেন্টারের (Call center) ব্যবসা ভারতে খুব ফুলেফেঁপে উঠছে। কলকাতা এবং দিল্লি এনসিআর (Delhi NCR) এর দুটি বড় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সরকার এদের থামাতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে এবং এখন এই কল সেন্টার পুরো বিশ্বে ভারতের সম্মানের বারোটা বাজাচ্ছে। এই ধরনের স্ক্যাম কল সেন্টারের লক্ষ্য পশ্চিমা দেশগুলির বৃদ্ধ লোকেরা হন যাদের প্রযুক্তিগত জ্ঞান খুব বেশি থাকে না এবং এই স্ক্যামাররা সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে তাদের ঠকায়। একবার ভাবুন, আপনার বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সাথে যদি কেউ এমন করে তাহলে আপনার কেমন লাগবে? সেই দেশের লোকেদের সম্পর্কে আপনার মনে কেমন ধারণা তৈরি হবে?

ইন্টারনেট ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

এই গতানুগতিক ধারণার আরেকটি কারণ হল ইন্টারনেট। হ্যাঁ, ইন্টারনেটের কারণে এখন ভারতের সেই জিনিসগুলিও বিশ্বে পৌঁছাচ্ছে যা আগে এখানেই সীমাবদ্ধ ছিল। যেমন ভারতের রাস্তার খাবার (Street food)। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক পেজে ভারতীয় রাস্তার খাবারের অস্বাস্থ্যকর প্রস্তুতি নিয়েও তাদেরকে ট্রল করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ফুড ব্লগার (Food blogger) এই ধরনের ভিডিও ভিউজ (Views) পাওয়ার জন্য পোস্ট করতে থাকে যেখানে খাবার এত নোংরা উপায়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে যে দেখলেই মন খারাপ হয়ে যায়। তবে সেই ভিডিওতেই লোকেরা বেশ আগ্রহ নিয়ে সেই খাবার খাচ্ছেও। এখন ভাবুন, এই ভিডিওগুলি যখন বাইরের দেশে পৌঁছবে তখন তারা ভারতীয়দের সম্পর্কে কী ভাববে? এটা ঠিক যে সব রাস্তার খাবার একই ভাবে তৈরি করা হয় না, তবে যদি কিছু জায়গাতেও এই ভাবে অস্বাস্থ্যকর উপায়ে তৈরি করা হয় এবং লোকেরা তা খায়ও, তাহলে এটি বিশ্বের চোখে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট।

দুর্বল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ দূষণ

ইন্টারনেটের দৌলতেই আজ ভারতের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার (Waste management) ছবিও বিশ্বের সামনে পৌঁছে যাচ্ছে। সর্বজনীন স্থানগুলিতে রাস্তার আশেপাশে যেভাবে খোলা আবর্জনা পড়ে থাকে তা এখানে একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। অনেক জায়গায় তো এত খারাপ গন্ধ বের হচ্ছে, তবে তবুও লোকেরা আরামসে তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে এবং কারও কোনো পরোয়া নেই। অনেক জায়গায় তো রাস্তার ধারে নালা বয়ে যাচ্ছে এবং সেখানেই খাবারের দোকানও (Food stall) লেগে আছে যেখানে লোকেরা সেই নালা থেকে ওঠা দুর্গন্ধের পরোয়া না করেই বেশ আরামে তাদের খাবার উপভোগ করছে। রাস্তায় চলতে চলতে যেখানে খুশি আবর্জনা ফেলে দেওয়া, যেখানে খুশি গুটখা থুতু ফেলা, এই সব আমাদের জন্য স্বাভাবিক ব্যাপার। আজও সরকারের এত চেষ্টার পরেও ভারতের প্রায় ১১ শতাংশ মানুষ খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে। এটা সত্যিই আমাদের জন্য লজ্জার ব্যাপার। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আজো ভারতে কোনো নীতি নেই। আজও সর্বত্র আবর্জনা খোলা জায়গায় ফেলা হচ্ছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির শহরগুলির তো কথাই নেই, দেশের রাজধানীতেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এই হাল যে দিল্লির চারদিকে আবর্জনার বড় বড় পাহাড় তৈরি হয়েছে যেগুলোর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধে দম বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়। তাহলে যারা এর আশেপাশে থাকে তাদের কী অবস্থা হয় ভাবুন। মানে পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে আপনি যেকোনো জিনিস ধরুন, সর্বত্র খারাপ অবস্থা।

নদীগুলোকেই ধরুন, দেশের যত প্রধান নদী আছে, সেগুলি সব নর্দমায় পরিণত হচ্ছে এবং কিছু তো সম্পূর্ণরূপে নর্দমায় পরিণত হয়েছে। মুখে তো অনেক ভারতীয়কে “নদীকে মায়ের মতো পুজো করি” বলতে শোনা যায়, তবে এই নদীগুলিতেই খোলাখুলি পুরো শহরের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এবং কারও কোনো পরোয়া নেই। এই হল অবস্থা যখন এই নদীগুলিতেই লোকেরা উৎসবের সময় ডুব দেয়, তাদের পুজো করে। এমনিতে দেখা যায় কেউ কোনো ধর্মীয় প্রতীকের (Religious symbol) কিছু বললে এই অঞ্চলের লোকেদের সহ্য হয় না। কোনো ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের (Religious figure) যদি কোনো ছবিও কোনো পণ্যের ওপর ছাপানো হয় তাহলেও তারা রেগে যায়। তবে এই নদীগুলিতে, যাদের ভারতীয়দের অনেকেই পুজো করে, সেখানেই পুরো শহরের আবর্জনা ফেলা হয়, যাতে মানুষের মলও থাকে, তবুও তাদের তা নিয়ে তেমন কোন পরোয়া নেই। দুর্ভাগ্যবশত এই বিষয়ে তারা বেশ ধর্মনিরপেক্ষ।

দেশের বেশিরভাগ অংশে বায়ু দূষণের খারাপ অবস্থা। বায়ু দূষণের কথা উঠলেই লোকেদের মনে দিল্লি এনসিআর-এর নাম আসে, তবে এই দূষণ কেবল দিল্লি এনসিআর-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং হিমালয় অঞ্চলকে বাদ দিয়ে দেশের পুরো উত্তরাঞ্চলের অবস্থা খুবই খারাপ। অবস্থা এমন যে এই পুরো অঞ্চলে বছরে খুব কম দিনই এমন থাকে যখন বাতাসের গুণমান স্বাভাবিক সীমার মধ্যে থাকে। বেশিরভাগ সময় এটি নিরাপদ সীমা থেকে উপরেই থাকে এবং অনেক সময় তো বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছে যায়। পরিষ্কার বাতাস এবং পরিষ্কার জল, এই দুটি বড় মৌলিক চাহিদা, তবে দুঃখের বিষয় এটিও আমাদের দেশে সহজলভ্য নয়। এই জিনিসগুলি আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের ভাবমূর্তিকে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত করে, যেখানে পশ্চিমে সাধারণ জনগণের মধ্যে পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্নতা এখন তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

বিদেশি পর্যটকদের অভিজ্ঞতা ও প্রতারণা

আজকাল অনেক ভ্রমণ ব্লগার (Travel blogger) যারা সারা বিশ্বে ঘুরে বেড়ায় এবং তাদের অভিজ্ঞতা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। এমনই বিদেশি ভ্রমণ ব্লগাররা যখন আমাদের দেশে আসেন, তখন তারা এখান থেকে যে অভিজ্ঞতা নিয়ে যান তা কেবল তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং তা এখন পুরো বিশ্ব দেখে। তারা শুধু এখানকার অবস্থার কথাই বলে না, তাদের সাথে হওয়া প্রতারণা (Fraud) এবং অভদ্রতা (Badtameezi) নিয়েও বিশ্বকে জানায়। বেশিরভাগ পর্যটন কেন্দ্রে (Tourist place) ফর্সা চামড়ার বিদেশিদের চলতে ফিরতে টাকার থলির মতো দেখা হয় এবং তাদের বিভিন্ন উপায়ে ঠকানোর চেষ্টা করা হয়। অনেক সময় কোনো মহিলা পর্যটকদের ঘিরে ধরে লোকেরা তার সাথে সেলফি তুলতে শুরু করে। অনেক ক্ষেত্রে এমনও দেখা গেছে যে লোকেরা কোনো অজুহাতে তাদের স্পর্শ করার চেষ্টা করে, যা একেবারে অভদ্রতা। এই সব জিনিস যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় পড়ে, তখন ভাবুন তো বিশ্ব আমাদের সম্পর্কে কী ভাববে?

অভ্যন্তরীণ জাতিবিদ্বেষ ও বর্ণবৈষম্য

বাইরের লোকেদের তো ছেড়েই দিন, ভারতের মধ্যেই ভারতীয়দের একে অন্যের প্রতি আচরণ ভালো না। ভারতীয়রা তাদের নিজেদের সাথে হওয়া জাতিবিদ্বেষের অভিযোগ করে, যা নিঃসন্দেহে ভুল, হওয়া উচিত নয়। তবে এও দেখা যায় যে, ভারতীয়দের মধ্যে নিজেদের দেশের লোকেদের নিয়েই জাতিবিদ্বেষ রয়েছে। তারা তাদের নিজেদের দেশের লোকেদের তাদের গায়ের রঙের জন্য, তাদের মুখের গড়নের জন্য বা তারা যে জায়গা থেকে আসে, তার জন্য তাদের উপহাস করি। যেমন ‘বিহারী’ শব্দটি এক প্রকার গালিতে পরিণত হয়েছে যা বিহার থেকে আসা অভিবাসীদের উপহাস করার জন্য ব্যবহার করা হয়। একইভাবে উত্তর-পূর্বের লোকেদের ‘চাইনিজ’ বা ‘নেপালী’ বলা হয়। এমনকি তারা নিজেদের মতো দেখতে লোকেদেরও ছাড় দিই না, তাদের সাথেও জাতের (Cast) নামে প্রচুর বৈষম্য করা হয়। আজও প্রতিদিন সারা দেশে শত শত দলিত নিপীড়নের (Dalit oppression) ঘটনা রিপোর্ট করা হয় এবং যেগুলো রিপোর্ট করা হয় না, সেগুলো কত হবে তার তো আপনি আন্দাজও করতে পারবেন না। যদি কোন দলিতকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করলেই সে বলে দিতে পারবে যে সে তার জীবনে কতবার সে এই নিপীড়ন সহ্য করেছে, তবে কখনও রিপোর্ট করেনি। আপনি যদি মনে করেন যে এখানে হওয়া জাতিভিত্তিক বৈষম্যের (Cast based discrimination) কথা বিশ্ব জানতে পারে না, তাহলে আপনি বিরাট ভুল ধারণার মধ্যে আছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এখন এই জিনিসগুলি পুরো বিশ্বে পৌঁছাচ্ছে।

পশ্চিমে বর্ণবাদের প্রসার ও আইনি পদক্ষেপ

শুধু তাই নয়, ভারতীয়রা নিজেরাই এই প্রথাগুলি পশ্চিমা দেশগুলিতে নিয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ, যখন তারা তাদের দেশ থেকে বাইরে যায়, তখন সাথে তাদের সংস্কৃতিও নিয়ে যায় এবং এই সব নিয়ে যাওয়া সংস্কৃতির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে জাতিভেদপ্রথা (Casteism)। ভারতীয়রা সেখানে গিয়েও তাদের লোকেদের সাথে জাতিভেদ করে। আমেরিকায় হওয়া একটি সমীক্ষায় জানা গেছে যে সেখানে বসবাসকারী তথাকথিত দলিত সম্প্রদায়ের (Dalit community) লোকেদের মধ্যে ৬৭ শতাংশ লোক এটি স্বীকার করেছে যে তারা কর্মক্ষেত্রে (Workplace) জাতিভিত্তিক হয়রানির (Cast based harassment) সম্মুখীন হয়েছে এবং ২৭ শতাংশ লোক শারীরিক ও মৌখিক আক্রমণেরও (Physical and verbal assault) রিপোর্ট করেছে। এই সমীক্ষায় লোকেরা এটিও জানিয়েছে যে কিভাবে তাদের নিজেদের ভারতীয় সম্প্রদায় তাদের সাথে মিশতে চায় না। এই সব জিনিস দেখেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে প্রথমে সিয়াটল (Seattle) এবং তারপর ক্যালিফোর্নিয়া (California) অ্যান্টি ডিসক্রিমিনেশন ল (Anti-discrimination law)-তে কাস্টকেও অন্তর্ভুক্ত করেছে।

সংখ্যালঘুদের প্রতি আচরণ ও ভণ্ডামি

অন্য দেশে যেখানে ভারতীয়রা ধর্মীয় সংখ্যালঘু (Minority), সেখানে যদি তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয় তাহলে তাদের খুব খারাপ লাগে এবং লাগাও উচিত এবং এটি বন্ধ করার জন্য যা কিছু করা সম্ভব, তা করাও উচিত। তবে ভারতীয়রা নিজেরা তাদের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সাথে কেমন আচরণ করছে সেটাও এখানে আলোচ্য।

মুসলিমরা (Muslims) ভারতের সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু। আজ এই দেশে তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্বেষ ছড়ানো একটি ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূল ধারার মিডিয়া (Main stream media) সহ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে। এমনকি অন্য কাউকে তো ছেড়েই দিন, খোদ আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রীও (Prime minister) নির্বাচনে প্রকাশ্যে এই ঘৃণাকে উস্কে দিতে দেখা যায়। ২০২৪ সালে দ্য হিন্দুতে (The Hindu) প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৩ সালে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের (Hate speech) ৬৬৮টি নথিভুক্ত ঘটনা (Documented event) ঘটেছে। এদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ মামলা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সরাসরি সহিংসতার আহ্বানের (Call of violence), ২৫ শতাংশ বক্তব্যে মুসলিমদের উপাসনাস্থলকে (Place of worship) নিশানা করার কথা বলা হচ্ছে এবং ৬৩ শতাংশ বক্তব্যে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব (Conspiracy theory) ছড়ানো হচ্ছে, যেমন লাভ জিহাদ (Love Jihad), ল্যান্ড জিহাদ (Land Jihad), জনসংখ্যা জিহাদ (Population Jihad) ইত্যাদি। এর সাথে মুসলিমদের অর্থনৈতিক বয়কট (Economical boycott) করার ব্যাপারেও এই বক্তব্যগুলোতে প্রকাশ্যে বলা হচ্ছে এবং কিছু স্থানীয় নেতা তো তাদের এলাকায় রাস্তায় নেমে এটিকে বাস্তবায়ন করতেও দেখা যাচ্ছে এবং তারা প্রকাশ্যে দোকানদার ও রাস্তার বিক্রেতাদের তাদের দোকানে তাদের আসল নাম লিখতে বলছে যাতে চেনা যায় কার বয়কট করতে হবে। শুধু তাই নয়, কিছুদিন আগে উত্তর প্রদেশের (UP) মোরাদাবাদ (Moradabad) থেকে খবর এসেছিল যেখানে একটি সোসাইটিতে একটি মুসলিম দম্পতিকে লোকেদের বিরোধিতার কারণে তাদের কেনা বাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য হতে হয়েছিল। সেখানকার বাসিন্দাদের বক্তব্য ছিল যে তারা এটা সহ্য করতে পারবে না যে অন্য কোনো সম্প্রদায়ের ব্যক্তি তাদের আশেপাশে থাকুক এবং এটা কোনো প্রথম ঘটনা নয়। মুসলিমদের হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় (Hindu neighborhood) বাড়ি কিনতে বা ভাড়া নিতে প্রায়শই এই ধরনের জিনিসের সম্মুখীন হতে হয়। একইভাবে প্রতি বছর এমন অনেক ঘটনা সামনে আসে যেখানে কোনো মুসলিমকে উত্ত্যক্ত করা হয় বা মারধর করা হয়। এমন অনেক ভিডিওই আছে যেখানে কোনো মুসলিমকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হচ্ছে এবং না বললে তাকে উত্ত্যক্ত করা হচ্ছে বা মারধর করা হচ্ছে।

এখানে এর প্রতিবাদে অনেকেই বলবেন যে, পাকিস্তান (Pakistan) এবং বাংলাদেশে (Bangladesh) সংখ্যালঘুদের অবস্থাও খারাপ। কিন্তু পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে যা ভুল হচ্ছে তা ভারতের ভুলের জাস্টিফিকেশন দেয়না। আর যদি এটা বলা হয় যে, এই দেশগুলোর তুলনায় ভারতীয়রা সংখ্যালঘুদের ভালোভাবে আচরণ করে এবং যদি অল্প কিছু এমন ঘটনা ঘটছে তাহলে সেগুলো আমাদের উপেক্ষা করে যাওয়া উচিত, তাহলে এই যুক্তিতে তো আমাদের পশ্চিমা দেশগুলিতে হওয়া জাতিবিদ্বেষকেও উপেক্ষা করে দেওয়া উচিত, কারণ তারা তো তাদের সংখ্যালঘুদের, মানে ভারতীয়দেরকে ভারতের থেকেও ভালোভাবে ট্রিট করেছে, তাদের সব ধরনের সুযোগ দিয়েছে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত লোকেরা সেখানকার বড় বড় কোম্পানি চালাচ্ছে, এমনকি দেশও চালাচ্ছে। হ্যাঁ, ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক (Rishi Sunak) যুক্তরাজ্যের (UK) প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস (Kamala Harris) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট (Vice president) হয়েছে।

যা ভুল, তা সে যার সাথেই হোক, তাকে কোনো রকম ভেদাভেদ ছাড়াই নিন্দা (Condemn) করা উচিত। অন্যথায় ভণ্ডামি বা হিপোক্রিসি হয়। আর যদি ভণ্ড না হতে হয়, তাহলে পশ্চিমে ভারতীয়দের সাথে হওয়া জাতিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার পাশাপাশি তাদেরকে নিজেদের দেশে হওয়া জাতিবিদ্বেষের বিরুদ্ধেও আওয়াজ তুলতে হবে, কারণ আজ ইন্টারনেটের কারণে এই জিনিসগুলি পুরো বিশ্বে পৌঁছোচ্ছে এবং না কেবল এটি ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে, বরং অন্যদেরও তাদের ওপর আঙুল তোলার সুযোগ দিচ্ছে।

মিথ্যা আত্মগর্ব পরিহারের প্রয়োজনীয়তা

এর সাথে ভারতীয়দের মিথ্যা আত্মগর্ব (Self pride) এবং বাগাড়ম্বরতা (Boastfulness) থেকেও বেরিয়ে আসার খুব দরকার। ‘আমরা বিশ্বগুরু’, ‘আমাদের দেশ সবচেয়ে মহান’, ‘আমাদের ধর্ম সবচেয়ে মহান’, ‘আমাদের সংস্কৃতির মতো সংস্কৃতি এই বিশ্বে নেই’, ‘আমাদের ধর্মে বিজ্ঞান আছে’ – এই ধরনের বড় বড় কথা বলার কোনো লাভ নেই। এই সব করে নিজেকে ধোঁকা দেয়া যায়, তবে বিশ্ব বোকা নয়। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে ভারতের ধর্ম ও সংস্কৃতিতে কিছু ভালো কথা আছেই, তবে শুধু তার ঢাক পিটিয়ে সেই সব জিনিস থেকে পিছু ছাড়ানো সম্ভব নয় যা বিশ্বব্যাপী ভারতের ভাবমূর্তি খারাপ করছে। কারণ লোকেরা আপনার কথা শোনার আগে আপনাকে দেখেই যাচাই করে নেয় যে আপনি কেমন। উঁচু উঁচু আদর্শবাদী কথা বললে সত্য চাপা থাকে না, আপনার ব্যবহার আপনার সম্পর্কে সবকিছু বলে দেয়।

জাতিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও আত্ম-সংশোধন

তো ভারতীয়দের সাথে হওয়া জাতিবিদ্বেষ ভুল, নিন্দনীয় এবং এটিকে প্রতিহত (Counter) করার জন্য, এটিকে বন্ধ করার জন্য যা কিছু করা সম্ভব তা করা উচিত। অনেক লোক সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন পোস্টের বিরোধিতা করছে এবং এমন পেজ রিপোর্টও করছে। পাশাপাশি পশ্চিমা দেশে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ও সেখানকার কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে যাতে এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করা যায়। তবে এর সাথে সাথে ভারতীয়দেরকে নিজেদের নিয়েও কাজ করতে হবে, নিজেদের অভ্যাসও শোধরাতে হবে, এমন লোকেদের থামাতে হবে যাদের কারণে বিশ্বে তাদের ভাবমূর্তি খারাপ হয়। একটা কথা মনে রাখতে হবে, ভাবমূর্তি খারাপ হতে সময় লাগে না, তবে সেই ভাবমূর্তিকে পুনরায় তৈরি করতে বহু শতাব্দী লেগে যায়।

তথ্যসূত্র

California sees rise in Hinduphobia and Anti-Hindu violence

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.