Table of Contents
ভূমিকা
অটোফোবিয়া (Autophobia), মনোফোবিয়া (monophobia), আইসোলোফোবিয়া (isolophobia) বা এরেমোফোবিয়া (eremophobia) হল একটি বিশেষ ফোবিয়া (specific phobia) যেখানে একাকী, বিচ্ছিন্ন, পরিত্যক্ত এবং উপেক্ষিত হবার আতঙ্ক কাজ করে। এই বিশেষ ফোবিয়া (specific phobia) একা থাকার ধারণার সাথে জড়িত, যা প্রায়শই মারাত্মক উদ্বেগের কারণ হয়। অবশ্যই অটোফোবিয়া (Autophobia) শব্দটি “নিজের ভয়” বা বা অটোমোবাইলের (automobile) ভয়ও নির্দেশ করেনা (বিভিন্ন সংস্কৃতিতে অটোমোবাইলকে “অটো” হিসাবে সংক্ষিপ্ত করা হয় যেহেতু)।
অটোফোবিয়া (Autophobia) প্রধান মানসিক স্বাস্থ্য ডায়াগনস্টিক প্রকাশনাগুলিতে নিজস্ব স্বতন্ত্র ফোবিক ডিসঅর্ডার (phobic disorder) হিসাবে স্বীকৃত নয়। তবুও এটি এমন একটি ব্যাধি যা ওষুধ এবং থেরাপির ব্যবহারের মাধ্যমে অন্য যেকোনো উদ্বেগ-ভিত্তিক ব্যাধির মতো চিকিৎসা করা যেতে পারে। তবে একে ICD-11 অনুযায়ী 6B03 “স্পেসিফিক ফোবিয়া (specific phobia)” এবং DSM-5 অনুযায়ী একটি পরিস্থিতিগত ধরণের স্পেসিফিক ফোবিয়া (situational type specific phobia) [300.29 (F40.248)] হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ এবং নির্ণয় করা যেতে পারে।
এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা একাকিত্ব এবং অন্যদের সঙ্গ উভয় ক্ষেত্রেই বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ভোগেন। বিচ্ছিন্ন অবস্থায়, অটোফোবিয়ায় (Autophobia) আক্রান্ত ব্যক্তিরা একা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে না পারার ভয়ে লড়াই করেন। অন্যদিকে, এই অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের সাথে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তিরা শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকলেও পরিত্যাগ এবং সম্পর্ক বজায় রাখার ভয়ের সাথে স্ট্রাগল করতে পারেন। এটি সাধারণত ব্যক্তিগত আঘাত, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা বা অন্যান্য ব্যাধি থেকে বিকাশ লাভ করে এবং এগুলোর সাথে সম্পর্কিত।
অটোফোবিয়া (Autophobia) অ্যাগোরাফোবিয়ার (agoraphobia) (জনসাধারণের মধ্যে থাকা বা ভিড়ের মধ্যে ধরা পড়ার ভয়) মতো অন্যান্য ফোবিয়ার (phobias) সাথে যুক্ত থাকতে পারে বা একই সাথে ব্যক্তির মধ্যে কাজ করতে পারে। আর এটি সাধারণত অ্যাগোরাফোবিক ক্লাস্টারের (agoraphobic cluster) অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়, যার অর্থ হল এটির কিছু উদ্বেগজনিত ব্যাধি এবং হাইপারভেন্টিলেশন ডিসঅর্ডারের (hyperventilation disorders) মতো একই বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি এই ব্যাধিগুলির সাথে কমরবিড (comorbid) অবস্থায় উপস্থিত থাকতে পারে, অর্থাৎ সহাবস্থান করতে পারে। তবে কারও মধ্যে অটোফোবিয়া একাই কাজ করতে পারে। অ্যাগোরাফোবিক ক্লাস্টারে (agoraphobic cluster) ফোবিয়ায় (phobias) আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রধান উদ্বেগ হল জরুরি অবস্থায় সাহায্য না পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ। এটি প্রায়শই তাদের জনসাধারণের মধ্যে যাওয়া, ভিড়ের মধ্যে ধরা পড়া, একা থাকা বা আটকে থাকার ভয় তৈরি করে।
অটোফোবিয়া (Autophobia)-কে অ্যাগোরাফোবিয়া (agoraphobia) (জনসমক্ষে থাকার বা ভিড়ের মধ্যে আটকা পড়ার ভয়) আত্ম-ঘৃণা বা সামাজিক উদ্বেগের সাথে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়, যদিও এটি তাদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত হতে পারে। এটি একটি স্বতন্ত্র ফোবিয়া (distinct phobia) যা অন্যান্য উদ্বেগজনিত ব্যাধি, ট্রমা সিন্ড্রোম (trauma syndromes), মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা বা ফোবিয়ার (phobias) সাথে যুক্ত থাকতে বা একই সাথে থাকতে পারে।
লক্ষণ ও উপসর্গ
অটোফোবিয়ার লক্ষণ ও উপসর্গ একেক জনের একেক রকম হতে পারে। তবে, এই সমস্যায় ভোগা অনেক ব্যক্তিই বিভিন্ন সাধারণ উপসর্গ প্রদর্শন করে। অটোফোবিয়ার অন্যতম পরিচিত লক্ষণ হল একা থাকলে বা একা থাকার মত পরিস্থিতির কথা ভাবলে (যেখানে বিশ্বস্তদের থেকে বিচ্ছিন্নতা কল্পনা করা হয়) তীব্র পরিমাণে আশঙ্কা ও উদ্বেগ অনুভব করা। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত বিশ্বাস করে যে যখনই তারা একা থাকে তখনই কোনো আসন্ন দুর্যোগ ঘটার অপেক্ষায় থাকে। এই কারণে, অটোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা বিচ্ছিন্নতা এড়াতে চরম পদক্ষেপ নেয়। তবে, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যে কেবল শারীরিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকলেই পরিত্যক্ত বোধ করে এমন না। অটোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই একটি জনাকীর্ণ এলাকা বা মানুষের দলে থাকে এবং এমন অনুভব করে যেন তারা সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন।
কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে যাদের বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার (Borderline Personality Disorder) আছে তাদের মধ্যেও অটোফোবিয়া ধরা পরেছে।
নীচে অন্যান্য কিছু লক্ষণের তালিকা দেওয়া হল যেগুলোকে কখনও কখনও অটোফোবিয়ার (Autophobia) সাথে যুক্ত করা হয়:
মানসিক লক্ষণ (Mental symptoms):
- বেহুঁশ হওয়ার ভয় (Fear of fainting)
- রোগ ছাড়া অন্য কিছুতে মনোযোগ দিতে অক্ষমতা (A disability to concentrate on anything other than the disease)
- পাগল হয়ে যাওয়ার ভয় (Fear of losing your mind)
- স্পষ্টভাবে চিন্তা করতে ব্যর্থতা (Failure to think clearly)
আবেগিক লক্ষণ (Emotional symptoms):
- ভবিষ্যতে এমন সময় এবং জায়গার জন্য চাপ যেখানে আপনি একা থাকতে পারেন (Stress over up-coming times and places where you may be alone)
- বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয় (Fear of being secluded)
শারীরিক লক্ষণ (Physical symptoms):
- মাথা ঘোরা, ঝিমঝিম করা (Lightheadedness, dizziness)
- ঘাম (Sweating)
- কাঁপুনি (Shaking)
- বমি বমি ভাব (Nausea)
- ঠান্ডা ও গরম ঝলক (Cold and hot flashes)
- অসারতা বা ঝিঁঝিঁ অনুভূতি (Numbness or tingling feelings)
- মুখ শুকিয়ে যাওয়া (Dry mouth)
- হার্টের গতি বৃদ্ধি (Increased heart rate)
- বিচ্ছিন্ন অবস্থায় নড়াচড়া না করা (Not moving when isolated)
- হাত ও পা কাঁপা (shaking hands and legs)
পটভূমি (Background)
অটোফোবিয়া (Autophobia) সামাজিক উদ্বেগ (social anxiety) থেকে উদ্ভূত হতে পারে। এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা যখন একা থাকে, তখন তারা প্রায়শই প্যানিক অ্যাটাক (panic attacks) অনুভব করে, যা সামাজিক উদ্বেগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একটি সাধারণ প্রতিক্রিয়া। এই রোগ বিষণ্ণতা (depression) থেকেও সৃষ্টি হতে পারে, কারণ যখন মানুষ গুরুতরভাবে অটোফোবিক হয়ে ওঠে, তখন তারা কিছু কাজ এবং কার্যকলাপ প্রায় অসম্ভব মনে করে। এটি সাধারণত ঘটে যখন অটোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা এমন কোনো পাবলিক প্লেসে (public place) যাওয়ার সম্ভাবনা সম্মুখীন হয় যেখানে অনেক লোক থাকে বা কেবল এমন কোনো জায়গায় যা তাদের কাছে অস্বস্তিকর বা অপরিচিত। এই ফোবিয়া অ্যাগোরাফোবিয়ার (agoraphobia) সাথেও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত হতে পারে, যা আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং একা সম্পন্ন করতে হবে এমন কিছু কার্যকলাপ শেষ করার ব্যাপারে তাদের ক্ষমতার অনিশ্চয়তার দিকে পরিচালিত করে। এই ফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি কল্পনা করে। উদাহরণস্বরূপ, তাদের প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে এবং তারপর ভাবতে পারে যে তারা এই ঘটনার কারণে মারা যাবে।
চিকিৎসকরা বিশ্বাস করেন যে আরেকটি অভিজ্ঞতা যা ব্যক্তিদের এই ফোবিয়া বিকাশের দিকে পরিচালিত করে তা হলো শৈশবে শিশুদের পরিত্যাগ করা, সাধারণত তাদের বাবা-মা দ্বারা, যখন তারা খুব ছোট থাকে। এটি প্রথমে শৈশবের ট্রমা (childhood trauma) সৃষ্টি করে যা তাদের বড় হওয়ার সাথে সাথে তাদের প্রভাবিত করে। এটি অটোফোবিয়ায় পরিণত হয় কারণ তারা এখন ভয় পায় যে তাদের জীবনের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মানুষ তাদের ছেড়ে চলে যাবে বা পরিত্যাগ করবে। অতএব, এই বিশেষ ফোবিয়া এমন আচরণ এবং অভিজ্ঞতা থেকে আসতে পারে যা এই ব্যক্তিদের বড় হওয়ার সময় হয়েছে। তবে, পরিত্যাগ (abandonment) মানে এই নয় যে শারীরিকভাবে একা থাকা, এর মধ্যে আর্থিকভাবে বা আবেগগতভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়াও এখানে অন্তর্ভুক্ত। নাটকীয়, জীবন পরিবর্তনকারী অভিজ্ঞতা অনেক সময় অনেক বেশি ট্রমা সৃষ্টি করতে পারে এদের জন্য। আর সেক্ষেত্রে এই ফোবিয়াকে আরও খারাপ করে তোলে। যাদের খুব বেশি উদ্বেগ রয়েছে এবং এসব ক্ষেত্রে উচ্চ-চাপ বা স্ট্রেস অনুভব করে, তারা এই ফোবিয়ার জন্য বেশি সংবেদনশীল।
যদিও এই ফোবিয়া প্রায়শই অল্প বয়সে বিকশিত হয়, এটি জীবনের পরবর্তী সময়েও বিকাশ লাভ করতে পারে। অনেকে কখনও কখনও কোনো প্রিয়জনের মৃত্যু বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সমাপ্তি হবার পর এই ফোবিয়া লাভ করে। অটোফোবিয়াকে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া থাকার ভয় হিসেবেও বর্ণনা করা যেতে পারে। কোনো ব্যক্তির জীবনের মর্মান্তিক ঘটনা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া থাকার এই ভয় তৈরি করতে পারে, তবে এটি প্রায়শই শেষ পর্যন্ত সাধারণভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয়ে পরিণত হয়।
রোগ নির্ণয় (Diagnosis)
সংজ্ঞা (Definitions)
অটোফোবিয়া মনোফোবিয়া (monophobia), আইসোলোফোবিয়া (isolophobia), এবং এরেমোফোবিয়ার (eremophobia) সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, তবে এগুলোর সংজ্ঞায় সামান্য ভিন্নতা রয়েছে। মেরিয়াম-ওয়েবস্টার মেডিকেল ডিকশনারি (Merriam-Webster Medical Dictionary) অনুসারে, এরেমোফোবিয়া (eremophobia) হলো বিচ্ছিন্ন হওয়ার একটি রোগতত্ত্বীয় ভয়। বিপরীতে, দ্য প্র্যাকটিশনার্স মেডিকেল ডিকশনারি (The Practitioner’s Medical Dictionary) অটোফোবিয়াকে একাকিত্ব বা নিজের প্রতি নিজের ভীতি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে।
যে ব্যক্তিদের এই ভীতি-ভিত্তিক অবস্থা আছে বলে সন্দেহ করা হয় তারা একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন (psychological assessment) গ্রহণ করে। রোগের কোনো শারীরবৃত্তীয় কারণ বাতিল করার জন্য, চিকিৎসার ইতিহাস সংগ্রহ করা হয়। অটোফোবিয়া একটি পরিস্থিতিগত ফোবিয়া (situational phobia)। কাজেই ব্যক্তির কন্ডিশন যদি অটোফোবিয়া হয় তবে অবশ্যই এটিকে ব্যক্তির দৈনন্দিন কাজ বা রুটিনে হস্তক্ষেপ করতে হবে (উদ্বেগের মতো সমস্যার সিম্পটমগুলোর কারণে)।
চিকিৎসা (Treatments)
অটোফোবিয়া (Autophobia) এক ধরনের উদ্বেগ যা একা থাকলে সামান্য থেকে চরম বিপদ বা ভয়ের অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। অটোফোবিয়ার কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই কারণ এটি প্রতিটি ব্যক্তিকে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। এই সমস্যায় আক্রান্ত বেশিরভাগ লোকের সাইকোথেরাপিগুলোর (psychotherapy) মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়, যেগুলোর মধ্যে কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (Cognitive Behavioral Therapy/CBT) এবং এক্সপোজার থেরাপি (exposure therapy) অন্তর্ভুক্ত, যেখানে একা থাকার সময় ধীরে ধীরে বাড়ানো হয়। রোগীর উদ্বেগকে স্থিতিশীল করার জন্য ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে (তবে এতেই সীমাবদ্ধ নয়) বেটা ব্লকার (beta blockers), অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি (anti-anxiety) এবং সিলেক্টিভ সেরোটোনিন রিআপটেক ইনহিবিটরস (Selective Serotonin Reuptake Inhibitors/SSRIs) নামক বিষণ্ণতা-বিরোধী ওষুধ এবং বেনজোডিয়াজেপিন সিডেটিভ (benzodiazepine sedatives)।
আক্রান্ত ব্যক্তিদের পক্ষে এই রোগ আছে তা না জানা এবং সাহায্য চাওয়ার ধারণা বাতিল করা অস্বাভাবিক নয়। অনেক ক্ষেত্রে, রোগীরা অ্যালকোহল (alcohol) এবং/অথবা ড্রাগ (drug) এবং অন্যান্য ওষুধের মাধ্যমে নিজেরাই চিকিৎসা করে। প্রায়শই, এটা শেষ পর্যন্ত একজন ব্যক্তির উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তোলে এবং সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। যে রোগীরা চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা চান তারা এই রোগের উদ্বেগের প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
হালকা অটোফোবিয়ার ক্ষেত্রে, চিকিৎসা কখনও কখনও খুব সহজ হতে পারে। থেরাপিস্টরা রোগীদের এমন অনেক প্রতিকার সুপারিশ করেন যাতে তারা একা না থাকলেও একা না বোধ করেন, যেমন একা কাজ করার সময় গান শোনা বা বাড়িতে থাকলে ব্যাকগ্রাউন্ডের শব্দ হিসেবে টেলিভিশন চালু রাখা। বিচ্ছিন্ন পরিস্থিতির নীরবতা দূর করার জন্য শব্দ ব্যবহার করা প্রায়শই অটোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য অনেক সহায়ক হতে পারে।
এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, মাঝে মাঝে একা থাকার সময় ব্যক্তি উদ্বিগ্ন অনুভব করলেই তার অটোফোবিয়া আছে এমন নয়। বেশিরভাগ মানুষ সময়ে সময়ে একা এবং বিচ্ছিন্ন বোধ করে; এটি কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। শুধুমাত্র যখন একা থাকার ভয় একজন ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করতে শুরু করে তখনই অটোফোবিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ধারণা সম্ভব হয়।
গবেষণা (Research)
১৯৬৯ সালে, অটোফোবিয়া বা মনোফোবিয়াকে (monophobia) মৃত্যু উদ্বেগ (death anxiety), বা আসন্ন বিপদের অনুভূতির সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অটোফোবিয়ায় আক্রান্ত একজন রোগী এই মৃত্যু উদ্বেগ বা একাকিত্বের ভয়ের সাথে সম্পর্কিত উদ্বেগের কারণে তীব্র মাত্রায় হাইপারভেন্টিলেশন (hyperventilation) অনুভব করতে পারে, যার ফলে রোগী অনুভব করতে পারে যে তারা এই হাইপারভেন্টিলেশন পর্বের কারণে শ্বাসরোধ বা মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে।
এও উল্লেখ করা হয়েছে যে মৃত্যু উদ্বেগে আক্রান্ত রোগীরা অটোফোবিয়ার একটি কোমরবিড (comorbid) রোগ বা সহ-অবস্থান করা রোগ নির্ণয়ের দিকে তাদের প্রবণতা বাড়াতে পারে কারণ এই রোগীরা গুরুতরভাবে আহত হওয়া, নিজেদেরকে ভয়ানক বা আপোষজনক পরিস্থিতিতে খুঁজে পাওয়া এবং মৃত্যু নিয়ে এতটাই উদ্বিগ্ন থাকে যে তারা একাকিত্বকে ভয় পায়। অটোফোবিয়া-প্ররোচিত উদ্বেগ অ্যাগোরাফোবিক (agoraphobic) ক্লাস্টারে অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য উদ্বেগ বা ফোবিয়ার সাথেও ঘটতে পারে। এটা হতে পারে প্রায়শই এমন সময়ে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয়ের কারণে যখন তাদের সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।
সাংস্কৃতিক উল্লেখ (Cultural references)
টাপাস্টিকে (Tapastic) অটোফোবিয়া (Autophobia) নামে একটি কমিক লেখা হয়েছিল যেখানে একটি কঠিন পারিবারিক জীবনের একটি ছেলে হাই স্কুল পার করে।
জুলাই ২০১৮ সালে, কানাডিয়ান সঙ্গীতশিল্পী ডেডমাউ৫ (deadmau5) রব সোয়াইরের (Rob Swire) কণ্ঠ সমন্বিত মনোফোবিয়া (Monophobia) নামে একটি গান প্রকাশ করেন, যার কথাগুলি অস্পষ্টভাবে এই অবস্থার কথা উল্লেখ করে।
এই ধারণার উপর ভিত্তি করে আতিথি দেব ভব (Atithidevo Bhavah) নামে একটি তেলেগু চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে।
তথ্যসূত্র –
Leave a Reply