কেন কোম্পানিগুলো জেন-জি কর্মীদের ছাটাই করছে?

জেন-জি কর্মীদের ছাটাই পরিস্থিতি

সময় সকাল ৯টা ১৭ মিনিট, আর ব্র্যাড শুধু ৯টার মিটিংয়েই দেরি করেনি—সে আসলে অফিসে আসতেই দেরি করেছে। ব্র্যাডের পোশাকের ধরন “ব্যবসায়িক” (business) হওয়া তো দূরের কথা, এর পুরো বিপরীত। চিকন ফিট শার্ট বা স্ল্যাক্স (slacks) পরার বদলে, সে অফিসে ঢুকছে সুপ্রিম (Supreme) লেখা টি-শার্ট আর ছেঁড়া জিন্স পরে। আর যখন ভাবা যাচ্ছিল এর চেয়ে খারাপ আর কী হতে পারে, তখন দেখা গেল গত সপ্তাহান্তে পাহাড়ে হাইকিং (hiking) করতে গিয়ে ময়লা লাগা স্নিকারের (sneakers) দাগ এখনও তার জুতায় লেগে আছে।

মিটিংয়ে, ব্র্যাডের প্রেজেন্টেশন এত বোরিং যে সবাইকে তাকে থামাতে হচ্ছে, নাহলে ঘরে সবাই ঘুমিয়ে পড়ত। তার টেকনিক্যাল দক্ষতা (technical skills) সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। তার মাস্টার্স ডিগ্রি (master’s degree) আছে বটে, কিন্তু এক্সেলে (Excel) সে এতটাই অজ্ঞ যে সে কোন কাজ করতে গেলে দিশেহারা হয়ে পড়ে। টিকটকে (TikTok) স্ক্রল করা গেলেও আউটলুকে (Outlook) “রিপ্লাই অল” (reply all) খুঁজে পেতে সে হিমশিম খায়।

যখন আসল সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, ব্র্যাড সম্পূর্ণ গুবলেট পাকিয়ে ফেলে। ইউটিউব টিউটোরিয়াল (YouTube tutorial) ছাড়া তার সমস্যার সমাধান দক্ষতা হলো ভিডিও গেমে X বোতাম চেপে রিলোড করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু আসল চমক হলো, ব্র্যাড এতটাই “ক্যাজুয়াল” (casual) যে তা অন্যেরা ঠিকভাবে নিতে পারেনা। সে অফিসে হাঁটে যেন কফি শপে এসেছে, সহকর্মীদের সাথে হাই-ফাইভ করে এবং বসকে ‘ডুড’ (dude) বলে ডাকে।

ব্র্যাড হলো গড়পড়তা জেন জি (Gen Z) স্নাতক, এবং অনেকের মতো সেও সম্ভবত চাকরি হারাবে কিছু মাসের মধ্যেই। তো জানা যাক, কেন কোম্পানিগুলো জেন জি কর্মীদের চাকরি থেকে বের করে দিচ্ছে।

পর্যবেক্ষকরা দেখছেন সাম্প্রতিক স্নাতক নিয়োগে এক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি, আর এই খবর জেন জি-দের জন্য ভালো নয়। অফিসের বসরা ক্রমেই নতুন প্রজন্মের কর্মী নিয়োগ করতে অনাগ্রহী হয়ে উঠছেন। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে কলেজগুলো পর্যন্ত এই সংকট সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান এখন শিক্ষার্থীদেরকে পেশাগত পরিবেশের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করতে অতিরিক্ত কোর্স চালু করেছে।

প্রায় ১,০০০ ব্যবসা, প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান খাতের কর্পোরেট নেতাদের উপর করা এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতি ৬টি কোম্পানির ১টি এখন সাম্প্রতিক স্নাতক নিয়োগে অনিচ্ছুক। এই সমীক্ষায় নিয়োগ প্রক্রিয়া, জনমিতি (demographics), এবং সন্তোষজনক বা অসন্তোষজনক ফলাফলের কারণ সম্পর্কে নির্দিষ্ট প্রশ্ন করা হয়। ৯৪% কোম্পানি জানিয়েছে তারা সাম্প্রতিক স্নাতক নিয়োগ করেছে, কিন্তু মাত্র ২৫% বলেছে যে এই নিয়োগ সফল হয়েছে। বাকি অংশ ছিল অসন্তোষজনক বা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তিন-চতুর্থাংশ কোম্পানি সরাসরি বলেছে যে তারা জেন জি নিয়োগে অসন্তুষ্ট। আরও খারাপ খবর হলো—প্রায় তিন-পঞ্চমাংশ কোম্পানি তাদের জেন জি নিয়োগকে এক বছরের মধ্যেই বরখাস্ত করেছে। এর ফলে বিভিন্ন খাতের ব্যবসা নেতৃত্বের কাছে একটা তিক্ত অভিজ্ঞতা জন্ম নিয়েছে।

সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো যে কলেজ স্নাতকরা অপেশাদার (unprofessional) এবং কাজের জন্য পর্যাপ্তরূপে প্রস্তুত নয়—অনেকেই কর্মক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখে হিমশিম খাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, জেন জি কি এতটাই নাজুকভাবে লালিত (coddled) যে তারা আর নিয়োগযোগ্য নয়?

সোসাইটি ফর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (Society for Human Resource Management) অনুযায়ী, গড় নিয়োগ সফলতার হার প্রায় ৪৩%। অর্থাৎ ১০০ জন নিয়োগ পেলে, তাদের মধ্যে ৪৩ জন দীর্ঘমেয়াদে কোম্পানিতে কার্যকরভাবে টিকে থাকবে। কিন্তু ইন্টেলিজেন্ট (Intelligent) পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গেছে জেন জি-দের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও চিন্তাজনক। ৬০% কোম্পানি জানিয়েছে তারা জেন জি কর্মীকে বরখাস্ত করতে বাধ্য হয়েছে—যার ফলে জেন জি নিয়োগ সফলতার হার গড়ের চেয়েও অনেক কম।

অর্থাৎ, আমরা এক প্রজন্মগত সমস্যার মুখোমুখি—এটা এতটাই গুরুতর যে অনেক জেন জি কর্মীরই হয়তো চাকরি পাওয়া বা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

জেন জি কর্মীদের এত অযোগ্য বলে মনে করার কারণ

চলুন দেখা যাক, ঠিক কী কী সমস্যার কারণে জেন জি কর্মীদের এত অযোগ্য বলে মনে হচ্ছে।

প্রোটোকল বা আচরণবিধি (etiquette) প্রশিক্ষণ ও পোশাকআশাক সংক্রান্ত নিয়ম না জানার অভাব

সমীক্ষায় দেখা গেছে ৯০% কোম্পানি মনে করে জেন জি কর্মীদের জরুরিভাবে আরো প্রোটোকল বা আচরণবিধি (etiquette) প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। সামগ্রিকভাবে পর্যালোচনা করে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে: জেন জি পেশাগত পরিবেশে কীভাবে চলতে হয়, তা জানে না।

একটি সুশৃঙ্খল কর্মক্ষেত্রের জন্য ভালো আচরণবিধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি হলো পেশাগত সম্পর্ককে সঠিকভাবে পরিচালনা করা। এর মধ্যে রয়েছে যথাযথ শিরোনাম ব্যবহার, যৌন হয়রানি (sexual harassment) নীতিমালা সম্পর্কে সচেতন থাকা, এবং ফোন বা অনলাইন উভয় জায়গাতেই সঠিক যোগাযোগপদ্ধতি মেনে চলা। কিন্তু জেন জি কর্মস্থলের কথোপকথনকে যেন এক ডিসকর্ড চ্যাটরুম (discord chat room) বলে ভুল করে। মিম (meme) আর ইমোজি (emoji) রেডিট (Reddit) বা ইনস্টাগ্রামের (Instagram) জন্য ভালো হলেও আপনার ৯-টু-৫ (9-to-5) চাকরির জন্য ততটা উপযোগী নয়। ভাবুন তো, একটা হ্যান্ডসাম স্কুইডওয়ার্ড (Handsome Squidward) গিফ (gif) দিয়ে ইমেইলের জবাব দেয়ার কারণে চাকরি হারাতে হলো!

ঠিক তেমনি, পোশাকআশাক সংক্রান্ত নিয়ম জানাও গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্রেই বিজনেস ক্যাজুয়াল (business casual) ড্রেসকোড প্রচলিত—যা ফর্মাল পোশাকের হালকা সংস্করণ। ব্যবসায়িক নৈমিত্তিক পোশাক কখনও কখনও জিন্স পরার অনুমতি দেয়, কিন্তু তার সাথে ভালো, পরিপাটি বোতাম লাগানো শার্ট এবং পরিষ্কার জুতো থাকা চাই। গ্রাফিক টি-শার্ট এবং নোংরা স্নিকার একেবারেই চলবে না। যদি আপনি জেন জি প্রজন্মের কেউ হন, কর্মক্ষেত্রকে এমনভাবে নিন যেন আপনি একটি ডেটে যাচ্ছেন—ভালো ছাপ ফেলতে হবে, আবার পুরো স্যুট পরে অদ্ভুতও লাগবে না।

অপেশাদারিত্ব ও অনুপ্রেরণা বা উদ্যোগের অভাব ও তার পেছনে দায়ী সামাজিক অসঙ্গতি

অপেশাদারিত্বের কারণে (lack of professionalism) ৪৬% ক্ষেত্রে জেন জি কর্মীদের চাকরি ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। অন্যান্য সমস্যার মধ্যে ছিল অনুপ্রেরণা বা উদ্যোগের অভাব। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী অর্ধেক কোম্পানি—প্রায় ৫০০টি—বলেছে যে জেন জি কর্মীদের ঘনিষ্ঠ তদারকি প্রয়োজন এবং তারা নিজে থেকে কোনও উদ্যোগ নেয় না।

এটা হতে পারে অনলাইনে বেড়ে ওঠা জেন জি-দের পেশাগত পরিবেশে গিয়ে কালচার শক (culture shock) খাওয়ার ফল। আবার হতে পারে জেন জি সবচেয়ে সরবভাবে শিল্পক্ষেত্রের শোষণকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। অনলাইন জগতে বিচরণ জেন জি-দের হয়তো পেশাদার দুনিয়ার প্রস্তুতি কমিয়েছে, কিন্তু একই সাথে তাদের সচেতনতা বাড়িয়েছে যে কেন এখনো কভার লেটার (cover letter) প্রয়োজন, কেন বেতন তথ্য গোপন রাখা হয়, বা কেন ১৯৭০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত জীবনযাত্রার ব্যয় কিংবা শিল্পমূল্যের সাথে মোটেও বেতন বৃদ্ধি সংগতি রাখেনি।

নিয়োগ ব্যবস্থাপকরা হয়তো জেন জি-দের আরও অনুপ্রাণিত দেখতে পেতেন যদি আমেরিকান ড্রিম (American Dream) তাদের নাগালের মধ্যে থাকত। কিন্তু বুমার (Boomers)-রা এটা বহু আগেই নিঃশেষ করে একটা জঞ্জালের স্তূপ রেখে গেছে।

খারাপ যোগাযোগ দক্ষতা ও সমস্যা সমাধানে অক্ষমতা

তবে জেন জি-দের সমালোচনা করার মতো যথেষ্ট যুক্তিও আছে। ৩৯% কোম্পানি বলছে জেন জি কর্মীদের যোগাযোগ দক্ষতা (communication skills) খারাপ, যা বেশ আশ্চর্যের ব্যাপার—কারণ তারা তো ঘণ্টার পর ঘণ্টা কল অব ডিউটি (Call of Duty)-তে হেডসেট পরেই চিৎকার করে কাটায়। যখন বেশিরভাগ অনলাইন লবি পরিণত হয় দোষারোপ আর বর্ণবাদী ও সমকামবিদ্বেষী গালি-গালাজের আখড়ায়, তখন বুঝতে অসুবিধা হয় না কেন জেন জি-দের যোগাযোগ দক্ষতা ঝাঁপসা হতে পারে।

এটা ৩৮% কোম্পানির অভিযোগের সাথে মিলে যায় যারা বলে জেন জি খুব বেশি সংবেদনশীল (overly sensitive) এবং পেশাগত মতামত নিতে হিমশিম খায়। অনলাইন দুনিয়া প্রতিটি মতভেদকে এক জিরো-সাম যুদ্ধের (যেখানে এক পক্ষের ক্ষতির মধ্য দিয়ে আরেক পক্ষের সমান লাভ হয়, ফলে মোট লাভ-লোকশান জিরো) রূপ দিয়েছে, যেখানে আত্মসম্মান রক্ষা করাই মূল—এবং এখন জেন জি কোন প্রতিক্রিয়া পেলে সেটাকে যেন বস তাকে আত্মসম্মানকে আঘাত করেছে ধরে নেয়।

আরও উদ্বেগজনক হলো, ৩৪% নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত জেন জি কর্মীরা সমস্যা সমাধানে অক্ষম (poor problem-solving skills)। ভিডিও গেম (video games) তে দক্ষতা সমস্যা সমাধানে সাহায্য করার কথা—কিন্তু বাস্তব জগতে সমস্যা সমাধান স্কাইরিমের (Skyrim) কোয়েস্ট মার্কার (quest marker) অনুসরণ করার মতো সহজ নয়, বিশেষ করে যখন আপনি ঠিকমতো যোগাযোগও করতে জানেন না।

মৌলিক প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব

আরও হতাশাজনক হলো যে ৩০% নিয়োগকর্তা জানাচ্ছে জেন জি মৌলিক প্রযুক্তিগত দক্ষতাতেই (basic technical skills) পিছিয়ে আছে, এক্সেল (Excel) আর ওয়ার্ড (Word)-এর মতো পুরোনো প্রোগ্রামগুলো ব্যবহার করতেও তারা হিমশিম খায়। ধারণা করা হচ্ছে, মুঠোফোনে নির্ভরতা এবং গুগল ডক্স (Google Docs)-এর মতো ক্লাউড-ভিত্তিক এডিটরের ব্যবহার জেন জি-দের ঐতিহ্যবাহী ওয়ার্ড প্রসেসিং প্রোগ্রামের মেনু নেভিগেট করা বা সাধারণ ফরম্যাটিং কাজ করতে নিরুৎসাহিত করেছে।

বিদ্রূপের বিষয়, প্রথম সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রজন্ম হওয়া সত্ত্বেও জেন জি-দের টাইপিং দক্ষতা (typing skills) হ্রাস পাচ্ছে। কারণ তারা অটো-কারেক্টের (auto-correct) উপর এতটাই নির্ভরশীল যে বানান কেবল ধারেকাছেই রাখলেই চলছে।

রেডিট (Reddit)-এ এরকম প্রচুর পোস্ট আছে, যেখানে মানুষ জেন জি কর্মীদের কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা এমনকি কম্পিউটার ব্যবহার নিয়ে অজ্ঞতার কথা বলছে। এই অভিযোগ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে, কেবল আমেরিকা বা পশ্চিমা দেশেই সীমিত নয়।

কিন্তু পুরো দোষ জেন জি-দের উপরে দেয়াও ঠিক নয়। কলেজ আর হাইস্কুলগুলোও শিক্ষার্থীদের আধুনিক কর্মক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আগের প্রজন্মরা বাধ্যতামূলক টাইপিং (typing) এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষণ পেত, যা তাদের মজবুত ভিত্তি গড়ে দিত। কিন্তু আজ, অনেক স্কুল ধরে নিয়েছে জেন জি প্রযুক্তিতে এমনিতেই দক্ষ, তাই আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ দরকার নেই। ফলত জেন জি তাদের জ্ঞান অনেকটা অনানুষ্ঠানিক এবং স্বশিক্ষিতভাবে অর্জন করছে, যা কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগছে না। সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়া (California) পাবলিক শিক্ষার্থীদের জন্য টাইপিং ক্লাস আবার বাধ্যতামূলক করেছে, যেমন তাদের বাবা-মায়েরা করত।

সামাজিক দক্ষতার সংকট

জেন জি মানসিকভাবে এক সামাজিক দক্ষতার সংকটে ভুগছে। তাদের অনলাইন জীবনে মুখোমুখি মিথস্ক্রিয়া খুবই কম। এ কারণেই দেখা যাচ্ছে “ডেটিং সংকট” (dating crisis) নামে পরিচিত একটি অবস্থা, যেখানে জেন জি প্রকৃত রোমান্টিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যর্থ। অনলাইন কালচার আপনাকে বিশ্বব্যাপী মানুষের সাথে খেলতে দেয় বটে, কিন্তু বাস্তব যোগাযোগ এখনও গুরুত্বপূর্ণ। মনোবিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু থমাসের (Andrew Thomas) এক জরিপ বলছে, ২০১৮ সালে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে “বিচ্ছিন্ন অনুভব” করার হার ছিল ১৩%, যা ২০২২ সালে বেড়ে ৩০% হয়েছে।

জেন জি মুখোমুখি সামাজিক সাক্ষাৎ এড়িয়ে চলছে। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (Center for Disease Control)-এর জরিপ বলছে কিশোররা এখন আগের চেয়ে বেশি সতর্ক—তারা ধূমপান, মাদক সেবন, মদ্যপান, শারীরিক সংঘর্ষ এমনকি যৌন সম্পর্কেও কম আগ্রহী, এবং এই প্রবণতা ১৯৯০ সাল থেকে ক্রমাগত কমছে। প্রথমে শুনতে ভালো লাগলেও, এর খারাপ দিক হলো কিশোররা এখন হাউস পার্টির মতো ব্যক্তিগত জমায়েতে আগের চেয়ে কম যাচ্ছে। এবং বিশাল এক শতাংশ—৫৯%—জেন জি পুরুষ বলেছে তারা গত এক বছরে সামনাসামনি কোনো সম্ভাব্য সঙ্গীর সাথে আলাপও শুরু করেনি।

পরিস্থিতি স্পষ্ট: জেন জি আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে কম সামাজিক, যদিও তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় (social media) সবসময় সক্রিয়। আর এই বিষয়টা তাদের পেশাগত জীবনে ক্ষতি করছে। তারা আগের চেয়ে বেশি ভিডিও গেম খেললেও—যা সমস্যার সমাধান ও সমালোচনামূলক চিন্তার দক্ষতা বাড়ায় বলে মনে করা হয়—বাস্তব জীবনের পরিস্থিতিতে এসব দক্ষতা প্রয়োগ করতে পারছে না। ভিডিও গেমের জন্য উপযুক্ত দক্ষতা বেশিরভাগ পেশার জন্য মোটেও মানানসই নয়। যদিও এমন কিছু খাত আছে যেখানে জেন জি উজ্জ্বল করে, যা তাদের অনন্য পরিচয়ের প্রতিফলন।

প্রত্যেক নিয়োগ পরিচালকের মনে এখন প্রশ্ন—কী করা যায়? বিশ্ব যতো ডিজিটাল হচ্ছে, এই নিয়োগ সংকট তত বাড়বে। স্কুলে টাইপিং আর কম্পিউটার পরিচিতি ক্লাস আবার চালু করা ভালো উদ্যোগ, কিন্তু এটা জেন জি-দের সামাজিক দক্ষতা, সমস্যার সমাধানের সামর্থ্য, এবং স্বপ্রণোদিত আগ্রহের অভাব মেটাবে না।

শিল্পের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত অনিশ্চিত, আর এই বিষয়টা সবার জন্যই দুশ্চিন্তার কারণ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.