Table of Contents
ভূমিকা
হিন্দু সম্প্রদায় (sampradaya), ঐতিহ্য (traditions), আন্দোলন (movements) ও সম্প্রদায়সমূহ (sects) হলো হিন্দুধর্মের অভ্যন্তরীণ ধারা ও উপ-ধারা, যেগুলো সাধারণত কোনো একটি বা একাধিক দেবতা যেমন বিষ্ণু (Vishnu), শিবা (Shiva), শক্তি (Shakti) ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে।[1] “সম্প্রদায় (sampradaya)” শব্দটি সাধারণত সেই শাখাগুলোর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেগুলোর একটি নির্দিষ্ট প্রবর্তক-গুরু ও দর্শন থাকে।[2]
হিন্দুধর্মের কোনো কেন্দ্রীয় মতবাদিক কর্তৃত্ব নেই এবং বহু অনুশীলনকারী হিন্দু নিজেদের কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায় বা ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি করেন না।[3] তথাপি, পণ্ডিতদের গবেষণায় চারটি প্রধান ঐতিহ্যকে চিহ্নিত করা হয়: বৈষ্ণব (Vaishnavism), শৈব (Shaivism), শাক্ত (Shaktism) ও স্মার্ত (Smartism)।[1][4][5][6] এসবকে কখনও হিন্দুধর্মের প্রধান সম্প্রদায় বা “ডিনমিনেশন” বলা হয়ে থাকে। এগুলো একে অন্যের থেকে মূলত পূজিত প্রধান দেবতার ভিত্তিতে আলাদা।[7]
হিন্দু সম্প্রদায়গুলোর একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো, তারা অন্য সম্প্রদায়ের ঈশ্বর ধারণাকে সাধারণত অস্বীকার করে না, বরং একে হেনোথিস্টিক (henotheistic) সমমানেরভাবে উদযাপন করে থাকে।[8] লাইপনারের (Lipner) মতে হিন্দু সম্প্রদায়সমূহ পৃথিবীর প্রধান ধর্মগুলোর সম্প্রদায় কাঠামোর মতো নয়, কারণ এখানে বেশ ফাজি বা অনির্দিষ্ট সীমানা রয়েছে; অনেক ব্যক্তিই একাধিক সম্প্রদায়ের ধর্মচর্চা করেন। তিনি এ ধারা ব্যাখ্যা করতে “Hindu polycentrism” বা “হিন্দু বহু-কেন্দ্রিকতা” শব্দটি প্রস্তাব করেছেন।[9]
যদিও হিন্দুধর্মে বিভিন্ন সম্প্রদায় ও দর্শন রয়েছে, তথাপি সেগুলো পারস্পরিক সম্পর্কিত কিছু ধারণা, সহজে চিনতে পারা যায় এমন আচার, বিশ্বতত্ত্ব (cosmology), শেয়ার করা গ্রন্থসমূহ, তীর্থযাত্রা ও কর্তৃত্বের প্রশ্ন উত্থাপন করার ক্ষমতা দিয়ে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত।[10]
শব্দের উৎসতত্ত্ব (Etymology)
“Hindu” শব্দটি এক্সোনিম (exonym)। এই শব্দটি ইন্দো-আর্য ও সংস্কৃত শব্দ “Sindhu” থেকে এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে বড় জলরাশি—নদী বা মহাসাগর উভয়কেই বোঝাতে পারে। মূলত এটি সিন্ধু নদ ও তার উপনদীগুলোকে নির্দেশ করতেই ব্যবহৃত হতো। গ্যাভিন ফ্লাড (Gavin Flood)-এর মতে, ‘হিন্দু’ শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয় পারস্যের একটি ভূগোলভিত্তিক শব্দ হিসেবে, যাদের কাছে সিন্ধু (Indus) নদ পেরিয়ে যে মানুষেরা বসবাস করত, তাদের বোঝাতে “হিন্দু” বলা হতো। হিন্দুরা নিজেদের সাংস্কৃতিক, জাতিগত বা ধর্মীয়ভাবে হিন্দুধর্মের বিভিন্ন দিক অনুসরণকারী হিসেবে গণ্য করেন। ঐতিহাসিকভাবে ‘হিন্দু’ শব্দটি ভারতীয় উপমহাদেশের অধিবাসী, তাদের সাংস্কৃতিক ও পরে ধর্মীয় পরিচয় বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। অষ্টাদশ শতকে ইউরোপীয় বণিক ও উপনিবেশবাদীরা ভারতীয় ধর্মগুলোর অনুসারীদের সম্মিলিতভাবে ‘হিন্দু’ বলতে শুরু করে, যা বিংশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত প্রচলিত ছিল। হিন্দুরা আধ্যাত্মিকতা ও ঐতিহ্য সম্পর্কে বহুবিধ ধারণা পোষণ করেন, কিন্তু কোনো ধর্মীয়-প্রতিষ্ঠানমূলক শাসনকাঠামো (ecclesiastical order) নেই, অটুট ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ নেই, কোনো কেন্দ্রীয় শাসন সংস্থা নেই, কোনো নবী নেই, কিংবা কোনো বাধ্যতামূলক পবিত্র গ্রন্থ নেই। হিন্দুরা পলিথিস্টিক (polytheistic), প্যানথিস্টিক (pantheistic), মনোথিস্টিক (monotheistic), মনিস্টিক (monistic), অজ্ঞেয়বাদী (agnostic), নাস্তিক (atheistic) বা মানবতাবাদী (humanist) হতে পারে।[11][12][13]
সম্প্রদায়সমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ (Overview of Denominations)
বর্তমানে পরিচিত হিন্দুধর্মকে বেশ কিছু প্রধান ধারায় ভাগ করা যায়। ঐতিহাসিকভাবে ছয়টি দার্শনিক ধারা বা দর্শন (দর্শন – darsana) ছিল: তাদের মধ্যে বেদান্ত (Vedanta) ও যোগ (Yoga) এখন সবচেয়ে সুপ্রভাবশালী।[14] প্রধান দেবতা বা দেবীদের ভিত্তিতে সমসাময়িক হিন্দুধর্মে চারটি প্রধান ধারা হচ্ছে: বৈষ্ণব (বিষ্ণুকে কেন্দ্র করে), শৈব (শিবকে কেন্দ্র করে), শাক্ত (শক্তিকে কেন্দ্র করে) ও স্মার্ত (Smartism, যেখানে পাঁচ দেবতাকে একই দৃষ্টিতে দেখা হয়)।[4][5][15] এই ঐতিহ্যগুলো বিভিন্ন দর্শন যেমন সাংখ্য (Samkhya), যোগ (Yoga), বেদান্ত (Vedanta) এবং মুক্তি (moksha), ধর্ম (dharma), কর্ম (karma), জন্ম-মৃত্যুর চক্র (samsara), অহিংসা (ahimsa) ইত্যাদি নৈতিক ধারণা, উপনিষদ, পুরাণ, মহাভারত, আগম (Agama) গ্রন্থ, নানা আচার ও সংস্কার প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে।[10][16]
McDaniel (২০০৭) প্রদত্ত ছয়টি সাধারণ হিন্দুধর্মের ধরন (Six generic types (McDaniel))
McDaniel (২০০৭) বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ মেলাতে ছয়টি সাধারণ হিন্দুধর্ম চিহ্নিত করেছেন:[17]
- লোকায়ত হিন্দুধর্ম (Folk Hinduism): স্থানীয় ঐতিহ্য ও স্থানীয় দেব-দেবীর উপাসনাভিত্তিক, যার শিকড় প্রাগৈতিহাসিক বা বৈদিক যুগের পূর্ববর্তী কালের মধ্যে বিস্তৃত।
- শ্রৌত বা “বৈদিক” হিন্দুধর্ম (Shrauta or “Vedic” Hinduism): ঐতিহ্যবাহী ব্রাহ্মণ (Shrautins) দ্বারা অনুশীলিত।
- বৈদান্তিক হিন্দুধর্ম (Vedantic Hinduism): যেমন অদ্বৈত বেদান্ত (Advaita Vedanta), স্মার্ত ঐতিহ্য (Smartism), যা উপনিষদের উপর ভিত্তি করে।
- যোগভিত্তিক হিন্দুধর্ম (Yogic Hinduism): বিশেষ করে পতঞ্জলির (Patanjali) যোগসূত্র (Yoga Sutras) ভিত্তিক উপদলের কথা এখানে প্রযোজ্য।
- “ধার্মিক” হিন্দুধর্ম (Dharmic Hinduism) বা “দৈনন্দিন নৈতিকতা”: যার ভিত্তি হলো কর্ম (Karma) ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান যেমন বিবাহ (Vivāha)।
- ভক্তিমার্গ বা ভক্তি নির্ভর ধর্মাচরণ (Bhakti or devotionalist practices)।
সংপ্রদায় (Sampradaya)
হিন্দুধর্মে একটি সম্প্রদায় (sampradaya) হলো একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় শাখা বা ডিনমিনেশন।[19] এসব হল স্বতন্ত্র ধর্মশিক্ষা ঐতিহ্য, যার নিজস্ব অনুশীলন পদ্ধতি, মঠসমূহ ও গুরু-পরম্পরা রয়েছে। প্রতিটি নতুন প্রজন্মের অনুসারীদের মাধ্যমে এই দর্শন গড়ে ওঠে, বিবর্তিত হয় ও পুনর্বিবেচিত হয়। কোনো একটি নির্দিষ্ট গুরু-পরম্পরাকে বলে পরম্পরা (parampara)। একজন জীবিত গুরু থেকে দীক্ষা (diksha) গ্রহণের মাধ্যমে শিষ্য ওই গুরু-পরম্পরার অন্তর্ভুক্ত হয়ে তার সঠিক সম্প্রদায়ভুক্ত হয়।
অনুসারীর সংখ্যা (Number of adherents)
হিন্দুধর্মের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ঐতিহ্যের জনসংখ্যাগত ইতিহাস বা প্রবণতা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট আদমশুমারি তথ্য নেই।[21]
ফলে শৈব ও শাক্ত ঐতিহ্যকে পুরোপুরি আলাদা করা কঠিন, কারণ অনেক শৈব হিন্দু নিয়মিতভাবে দেবী শক্তিকে পূজা করে।[22] জুলিয়াস জে. লিপনার (Julius J. Lipner) মতে, হিন্দু সম্প্রদায়গুলো মূলধারার অন্যান্য ধর্মের সম্প্রদায়ের মতো নয়, কারণ এখানে আনুগত্যের ক্ষেত্রে ঝাপসা সীমানা বিদ্যমান: বহু শৈব ও বৈষ্ণব অনুসারী শ্রী (লক্ষ্মী), পার্বতী, সরস্বতী ও অন্যান্য দেবী-রূপকে সম্মান করেন। তেমনি শাক্ত হিন্দুরাও শিব এবং পার্বতী (যেমন দুর্গা, রাধা, সীতা ইত্যাদি) ও সরস্বতীকে পূজা করেন, যারা শৈব ও বৈষ্ণব ঐতিহ্যে গুরুত্বপূর্ণ।[23]
বিভিন্ন সমীক্ষায় হিন্দুধর্মের ভিন্ন ঐতিহ্যগুলোর অনুসারীর সংখ্যার হিসাব আলাদা। জনসন ও গ্রিম (২০১০) অনুমান অনুযায়ী বৈষ্ণব ঐতিহ্যে আনুমানিক ৬৪১ মিলিয়ন বা ৬৭.৬% হিন্দু অন্তর্ভুক্ত, শৈব ঐতিহ্যে ২৫২ মিলিয়ন বা ২৬.৬%, শাক্ত ঐতিহ্যে ৩০ মিলিয়ন বা ৩.২%, এবং অন্যান্য (নিও-হিন্দু ও সংস্কারধর্মী হিন্দুধর্ম) ঐতিহ্যে ২৫ মিলিয়ন বা ২.৬% অনুসারী রয়েছে।[24] অন্যদিকে, জোন্স ও রায়ানের মতে শৈব ঐতিহ্য হিন্দুধর্মের সর্বাধিক বড় সম্প্রদায়।[25]
২০১০ বিশ্ব ধর্ম ডাটাবেজ অনুযায়ী প্রধান ঐতিহ্যসমূহের সংখ্যা:
- বৈষ্ণব: ৬৪০,৮০৬,৮৪৫ জন (৬৭.৬%)
- শৈব: ২৫২,২০০,০০০ জন (২৬.৬%)
- শাক্ত: ৩০,০০০,০০০ জন (৩.২%)
- নিও-হিন্দু: ২০,৩০০,০০০ জন (২.১%)
- রিফর্ম হিন্দু: ৫,২০০,০০০ জন (০.৫%)
প্রধান সম্প্রদায়সমূহ (Main denominations)
বৈষ্ণবধর্ম বা বৈষ্ণবধারা (Vaishnavism)
বৈষ্ণবধারা (Vaishnavism) হল হিন্দুধর্মের এক ভক্তিমূলক ধারা, যেখানে বিষ্ণুকে (Vishnu) বা তার অবতারদের (avatars) – যেমন কৃষ্ণ (Krishna) বা রাম (Rama) – সর্বোচ্চ ভগবান (Svayam Bhagavan) রূপে পূজা করা হয়। বিষ্ণুর নিজস্ব অবতারগণের মধ্যে সর্বাধিক পূজিত হলেন কৃষ্ণ (বিশেষত কৃষ্ণবাদ/Krishnaism-এর অন্তর্গত) ও রাম। কৃষ্ণকথা মহাভারতে এবং রামকথা রামায়ণে বর্ণিত হয়েছে। এ ধারার অনুসারীরা সাধারণত বৈরাগী (non-ascetic), সন্ন্যাসী (monastic) এবং ধ্যানমূলক চর্চা ও উচ্ছ্বাসময় নামগানের (ecstatic chanting) প্রতি অনুরাগী। বৈষ্ণবধারায় বহু সাধু-সন্ত, মন্দির ও গ্রন্থের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
ইতিহাসগতভাবে বিষ্ণুবাদের (Vishnuism) মধ্যে ভাগবতধারা (Bhagavatism), পাঞ্চরাত্র (Pancharatra) এবং ভৈখানস (Vaikhanasa) মতবাদ অন্তর্ভুক্ত।
বর্তমান সময়ে জীবিত প্রধান বৈষ্ণব সম্প্রদায়গুলো হল:[27][31]
- শ্রীবৈষ্ণবধারা (Sri Vaishnavism) বা শ্রী বৈষ্ণব সম্প্রদায় (Sri Vaishnava Sampradaya / Sri Sampradaya):
এই ধারা লক্ষ্মী-নারায়ণকে (Lakshmi-Narayana) ঐশ্বরিক দম্পতি হিসেবে পূজা করে। এরা বিশিষ্টাদ্বৈত (Vishishtadvaita) দর্শন মান্য করে। এ সম্প্রদায়ের প্রধান আচার্য হলেন রামানুজ (Ramanuja) ও বেদান্ত দেশিক (Vedanta Desika)।- বদকালাই (Vadakalai): “উত্তরের সম্প্রদায়”, বেদান্ত দেশিকের শিক্ষা ভিত্তিক।
- তেনকালাই (Tenkalai): “দক্ষিণের সম্প্রদায়”, মানভাল মামুনিগলের (Manavala Mamunigal) শিক্ষা ভিত্তিক। ভক্তি আন্দোলনের তামিল কবি-সন্ত আলবাররা (Alvars) এই ধারার অন্তর্গত ও সম্মানিত।
- রামানন্দী সম্প্রদায় (Ramanandi Sampradaya বা রামায়ত সম্প্রদায় বা রামাবত সম্প্রদায়):
এটি অদ্বৈত পণ্ডিত রামানন্দের (Ramananda) শিক্ষার অনুসারী। এরা হিন্দুধর্ম এবং সমগ্র এশিয়ার বৃহত্তম সন্ন্যাসী গোষ্ঠী। এই বৈষ্ণব সন্ন্যাসীরা রামানন্দী, বৈরাগী (Vairagi) বা বাইরাগী (Bairagi) নামে পরিচিত। - ব্রহ্ম সম্প্রদায় (Brahma Sampradaya):
দ্বৈত বেদান্ত (Dvaita Vedanta) দার্শনিক মাধবাচার্য (Madhvacharya)-র শিক্ষার অনুসারী। “ব্রহ্ম” শব্দটি এখানে ব্রহ্মা দেবতাকে বোঝায় না; বরং পর-ব্রহ্মান (Para-Brahman) বিষ্ণুকে বোঝায়। এর আধুনিক রূপ হল হরিদাস (Haridasa) ও সাধ বৈষ্ণবধারা (Sadh Vaishnavism)। - গৌড়ীয় বৈষ্ণবধারা (Gaudiya Vaishnavism বা চৈতন্য সম্প্রদায়):
চৈতন্য মহাপ্রভুর (Chaitanya Mahaprabhu) শিক্ষানুসারী। গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের মধ্যে বিভিন্ন ঐতিহ্যিক ও সংস্কারপন্থী ধারা রয়েছে, যেমন—- ব্রাহ্মণ্য ঐতিহ্যের (Brahmanic traditional lineages) মধ্যে: শ্রী চৈতন্য প্রেম সংস্থান (Sri Caitanya Prema Samsthana)
- গৌড়ীয় মঠ (Gaudiya Math) সংস্কার ধারা:
- গৌড়ীয় মিশন (Gaudiya Mission)
- গৌড়ীয় বেদান্ত সমীতি (Gaudiya Vedanta Samiti)
- আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (International Society for Krishna Consciousness – ISKCON)
- ISKCON রিভাইভাল মুভমেন্ট (ISKCON Revival Movement)
- সায়েন্স অফ আইডেন্টিটি ফাউন্ডেশন (Science of Identity Foundation)
- শ্রী চৈতন্য সংঘ (Sri Caitanya Sangha)
- শ্রী চৈতন্য সরস্বত মঠ (Sri Chaitanya Saraswat Math)
- শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দজি ট্রাস্ট (Sri Sri Radha Govindaji Trust)
- ওয়ার্ল্ড বৈষ্ণব অ্যাসোসিয়েশন (World Vaisnava Association)
এছাড়া মণিপুরী বৈষ্ণবধারা (Manipuri Vaishnavism) গৌড়ীয় বৈষ্ণবধারার একটি আঞ্চলিক রূপ।
- নিম্বার্ক সম্প্রদায় (Nimbarka Sampradaya বা কুমার সম্প্রদায় / Kumara Sampradaya):
নিম্বার্কাচার্য (Nimbarkacharya)-র শিক্ষার অনুসারী। এই ধারা চার কুমার (Four Kumaras)-এর সাথে যুক্ত। - রুদ্র সম্প্রদায় (Rudra Sampradaya):
এর প্রধান আচার্য হলেন বল্লভাচার্য (Vallabhacharya), যিনি পুষ্টিমার্গ (Pushtimarg) ঐতিহ্যের প্রবর্তক। - বারকারি সম্প্রদায় (Warkari Sampradaya):
মহারাষ্ট্রের খ্যাতনামা ভক্তি সন্ত যেমন নামদেব, জ্ঞানেশ্বর, একনাথ, তুকারাম এবং চাঙ্গাদেব, মুক্তাবাই, গোরা কুম্ভার, সাভতা মালি, নারহরি সোনার, জানাবাই, সেনা নাভি ও কনহোপাত্রার শিক্ষার অনুসারী। এই ধারা ভিঠোবা (Vithoba)-র পূজা প্রচার করে, যিনি কৃষ্ণের (Krishna) এক প্রকাশ। - স্বামিনারায়ণ সম্প্রদায় (Swaminarayan Sampradya):
সাহাজানন্দ স্বামীর (Sahajanand Swami), যিনি স্বামিনারায়ণ (Swaminarayan) নামে পরিচিত, শিক্ষার অনুসারী।- বোচাসনওয়াসী অক্ষর পুরুষোত্তম স্বামিনারায়ণ সনস্টা (Bochasanwasi Akshar Purushottam Swaminarayan Sanstha – BAPS)।
অন্যান্য ছোট ও আঞ্চলিক বৈষ্ণব মতবাদ এবং তাদের প্রধান আচার্যগণ বা ঐতিহ্যগুলো হল:[^31]
- বাল্মীকধারা (Balmikism): ঋষি বাল্মীকির (Valmiki) সাথে সংযুক্ত।
- একশরণ ধর্ম (Ekasarana Dharma বা আসামীয়া বৈষ্ণবধারা): শ্রীমন্ত শঙ্করদেব (Srimanta Sankaradeva)-এর শিক্ষার অনুসারী।
- কাপাদী সম্প্রদায় (Kapadi Sampradaya)
- মহানাম সম্প্রদায় (Mahanam Sampradaya): প্রভু জগদবন্দুর (Prabhu Jagadbandhu) শিক্ষানুসারী, যিনি চৈতন্য মহাপ্রভুর অবতার বলে বিবেচিত।
- মহানুভব পন্থ (Mahanubhava panth): সর্বজ্ঞ শ্রী চক্রধার (Sarvajna Shri Chakradhara)-এর শিক্ষানুসারী।
- ওড়িয়া বৈষ্ণবধারা (Odia Vaishnavism / Jagannathism): জগন্নাথ দেবের (Jagannath) পূজা, যিনি কৃষ্ণের একটি বিমূর্ত রূপ।
- প্রণামী সম্প্রদায় (Pranami Sampradaya): দেভচন্দ্র মহারাজ (Devachandra Maharaj)-এর শিক্ষানুসারী।
- রাধা বল্লভ সম্প্রদায় (Radha Vallabh Sampradaya): হিথ হরিবংশ মহাপ্রভুর (Hith Harivansh Mahaprabhu) শিক্ষানুসারী, রাধাকে (Radha) সর্বোচ্চ ব্রহ্মরূপে পূজা করে।
- রামস্নেহী সম্প্রদায় (Ramsnehi Sampradaya)
- বৈষ্ণব-সাহাজীয়া (Vaishnava-Sahajiya – Tantric)
- বিষ্ণোই পন্থ (Bishnoi Panth)
- বাউল (Baul)
শৈবধারা (Shaivism)
শৈব বা শৈবাচারীরা প্রধানত শিবকে (Shiva) সর্বোচ্চ ঈশ্বররূপে পূজা করে, যিনি সর্বব্যাপী ও সর্বোত্তীর্ণ। শৈবধারা একইসাথে অদ্বৈতবাদী ও দ্বৈতবাদী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে। শৈবদের কাছে শিব নির্বিশেষ (নিরাকার) ও সাকার – তিনি নটরাজ (Nataraja), চিরকালের নৃত্যশিল্পী; আবার তিনি লিঙ্গরূপে (linga) অনন্ত ও অনাদিও। কখনও কখনও শিবকে ভয়ঙ্কর ভৈরব (Bhairava) রূপে চিত্রিত করা হয়। শৈব ভক্তরা অন্য হিন্দু সম্প্রদায়ের তুলনায় তপস্যার প্রতি বেশি আকর্ষণ বোধ করেন এবং প্রায়ই সারা ভারত ঘুরে বেড়ান, ছাই মাখা দেহে আত্মশুদ্ধির অনুশীলন করেন। তাঁরা মন্দিরে পূজা করেন এবং যোগাভ্যাসের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণভাবে শিবের সাথে ঐক্য সাধন করেন।
প্রধান শৈব সম্প্রদায়গুলো হল:[5]
- আঘোরী (Aghori)
- কালামুখ (Kalamukha)
- কাপালিক (Kapalika)
- কাশ্মীর শৈবধারা (Kashmir Shaivism): বাসুগুপ্ত (Vasugupta) ও তাঁর অনুশিষ্য বংশানুক্রমের, যার মধ্যে অভিনবগুপ্ত (Abhinavagupta) অন্যতম।
- মন্ত্র মার্গ (Mantra marga)
- নাথ (Nath)
- আদিনাথ সম্প্রদায় (Adinath Sampradaya বা সিদ্ধ সিদ্ধান্ত / Siddha Siddhanta): গোরক্ষনাথ (Gorakhnatha) ও মত্স্যেন্দ্রনাথের (Matsyendranatha) শিক্ষানুসারী।
- ইঞ্চেগেরী সম্প্রদায় (Inchegeri Sampradaya)
- পাশুপত শৈবধারা (Pashupata Shaivism): লাকুলীস (Lakulisa)-এর শিক্ষানুসারী।
- শৈব সিদ্ধান্ত (Shaiva Siddhanta): তিরুমূলার/সুন্দরনাথ (Tirumular/Sundaranatha) দ্বারা প্রচলিত (নন্দিনাথ সম্প্রদায়/Nandinatha Sampradaya, অদ্বৈতবাদী ধারা) অথবা মেইকান্দদেভ (Meykandadeva)-এর প্রচারিত (Meykandar Sampradaya, দ্বৈতবাদী ধারা)।
- শিবা অদ্বৈত (Shiva Advaita): নীলকন্ঠ (শ্রীকণ্ঠ / Srikantha) ও আপ্পাইয়া দীক্ষিতার (Appayya Dikshitar)-এর শিক্ষানুসারী।
- বীরশৈব (Veerashaiva)
অন্যান্য শৈব শাখা:
- লিঙ্গায়ত (Lingayatism বা Veerashaivism): ১২শ শতকে বাসবন্না (Basavanna) প্রবর্তিত এক আলাদা শৈবচর্চা। মূলধারার হিন্দুধর্ম থেকে কিছু বিচ্যুতি রয়েছে, বেদ ও জাতিভেদ ব্যবস্থার কর্তৃত্ব অস্বীকার করে, এবং শিবলিঙ্গ বা ইষ্টলিঙ্গের (Ishtalinga) পূজা কেন্দ্রিক একত্ববাদ প্রচার করে।
- আইয়্যানবাদ (Aaiyyanism): একটি মতবাদ, যা নিজেকে খাঁটি দ্রাবিড় হিন্দুধর্মের রূপ বলে দাবি করে এবং শৈবধারার একটি শাখা হিসেবে পরিচিত।
শক্তিধারা (Shaktism)
শাক্তধারা (Shaktism) হল দেবীমূলক এক হিন্দু ধারা, যেখানে মহাদেবী বা শক্তিকে (Shakti) সর্বোচ্চ ঈশ্বরী রূপে পূজা করা হয়। এই শক্তির বিভিন্ন রূপ পার্বতী/দুর্গা (Parvati/Durga), কালী (Kali), লক্ষ্মী (Lakshmi) ও সরস্বতী (Saraswati)। শাক্তরা শক্তিকে বিশ্বচরাচরের মূল শক্তি হিসেবে মানে। দেবীকে কখনও পার্বতী (শিবের সহধর্মিণী), কখনও লক্ষ্মী (বিষ্ণুর সহধর্মিণী), আবার কখনও দুর্গা বা কালী রূপে চিত্রিত করা হয়। শাক্তধারা তান্ত্রিক হিন্দুধর্মের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত, যা মন-দেহ পরিশোধনের জন্য নানা আচার ও অনুশীলন শেখায়।
শাক্তধারায় কোথাও কোথাও মন্দিরে মুরগি, ছাগল এবং খুব সামান্য ক্ষেত্রে মহিষ বলিদান করা হয়, বিশেষত ভবানী (Bhavani) বা কালী মন্দিরে।[^39][^40]
প্রধান শাক্ত ধারাসমূহ হল:
- কালীকুল (Kalikula)
- শ্রীকুল (Srikula)
ক্যারিবিয়ান শাক্তধারা (Caribbean Shaktism): ক্যারিবিয়ানের দেবীমুখী হিন্দু ঐতিহ্য।
কাশ্মীর শৈবধারার অন্তর্গত দেবীমূলক ধারা হল ত্রিকা (Trika) ও কুব্জিকা (Kubjika)।
স্মার্তধারা (Smartism)
স্মার্তধারা (Smartism) এমন একটি ঐতিহ্য যেখানে সব দেবতাকেই সমান বলে গণ্য করা হয়। এই ধারা মন্দিরে পঞ্চদেবতার (Panchadevata / Pancopasana) পূজা করে – গণেশ (Ganesha), শিব (Shiva), শক্তি (Shakti), বিষ্ণু (Vishnu), সূর্য (Surya) – এদেরকে সগুণ ব্রহ্ম (saguna Brahman) রূপে একইসাথে উপাসনা করা হয়, যা নির্গুণ ব্রহ্মের (nirguna Brahman) একটি প্রতীকী প্রকাশ। স্মার্তরা নন-সেক্টারিয়ান (nonsectarian), অর্থাৎ তারা যেকোন ব্যক্তিগত ঈশ্বরকে (istadevata) বেছে নিতে পারে, কারণ সকল ঈশ্বর একই পরমসত্য ব্রহ্মের বিভিন্ন প্রকাশ।
স্মার্তধারা দু’ধরনের ব্রহ্ম ধারণা মেনে চলে: সগুণ ব্রহ্ম এবং নির্গুণ ব্রহ্ম। নির্গুণ ব্রহ্ম হল অপরিবর্তনীয় বাস্তবতা, আর সগুণ ব্রহ্ম হল সেই নির্গুণ ব্রহ্ম উপলব্ধির একটি ধাপমাত্রা। একবার জ্ঞাতব্য ব্যক্তি নিজের আত্মা ও নির্গুণ ব্রহ্মের ঐক্য উপলব্ধি করলে, সগুণ ব্রহ্মের ধারণা পরিত্যাজ্য হয়ে যায়।
স্মার্তরা সাধারণত শঙ্করাচার্য (Shankara)-কে তাদের সর্বোচ্চ শিক্ষক ও সংস্কারক হিসেবে মান্য করে। শঙ্করাচার্য উপনিষদগুলোর অদ্বৈত ব্যাখ্যাকে স্মার্ত ঐতিহ্যের প্রাঞ্জল মানদণ্ডে পরিণত করেন। কর্ণাটকের শৃঙ্গেরী শারদা পীঠম (Sringeri Sharada Peetham), যাকে স্মার্তরা শঙ্করাচার্যের প্রতিষ্ঠিত মনে করেন, এখনও স্মার্তদের কেন্দ্রীয় পীঠ। এছাড়াও কাঞ্চী কামকোটি পীঠম (Kanchi Kamakoti Peetham), পুরী গোবর্ধন মঠ (Puri Govardan Math), দ্বারকা শারদা পীঠম (Dwaraka Sharada Peetham) এবং জ্যোতির মঠ (Jyotir Muth) – এই চারটি মঠ, যা সকলই শঙ্করাচার্যের শিক্ষায় পরিচালিত, স্মার্ত সম্প্রদায়ের প্রধান আশ্রম।
স্মার্ত ঐতিহ্যের মাধ্যম:
- ষণ্মত (Shanmata): ছয়টি প্রধান দেবতার উপাসনা প্রথা।
- পঞ্চায়তন পূজা (Panchayatana puja), যা পঞ্চ দেবী-দেবতার (Pancha Devi Deva) পূজাপ্রণালী স্মার্ত সমাজে প্রচলিত।
সহাবস্থান (Overlap)
হাল্ফবাস (Halbfass) নির্দেশ করেছেন যে শৈবধারা ও বৈষ্ণবধারা নিজে সম্পূর্ণ ও স্বতন্ত্র ধর্মীয় গুচ্ছ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, তবে উভয় ধারার পণ্ডিত ও সাহিত্যিকদের মধ্যে পারস্পরিক উল্লেখ ও বিনিময় ঘটে। এটি একটি বিস্তৃত পরিচয় ও সামগ্রিক অন্তর্ভুক্তির অনুভূতি প্রকাশ করে, যেখানে হিন্দুধর্মের বিভিন্ন ধারা একটি অভিন্ন কাঠামো ও দিগন্তের অংশ।
সাধারণত হিন্দুরা শিব, বিষ্ণু ও শক্তিকে শ্রদ্ধা করে, এবং বিভিন্ন সময়ে তাদের উৎসব উদ্যাপন করে। অনেক মন্দিরে একাধিক দেবতার মূর্তি থাকে। হিন্দুধর্মকে এককেন্দ্রিক না বলে বহুকেন্দ্রিক তত্ত্ববিশ্বাস (polycentric theosophy) বলা ভালো, যেখানে উপাসক নিজের ইচ্ছামতো ইষ্টদেবতা ও সংশ্লিষ্ট দর্শন বেছে নিতে পারেন।
চারটি প্রধান হিন্দু সম্প্রদায়ের মূল ধারণা ও অনুশীলন তুলনামূলকভাবে নিচের টেবিলে উপস্থাপন করা হলো:
তুলনামূলক দিক | শৈব ধারা (Shaiva Traditions) | বৈষ্ণব ধারা (Vaishnava Traditions) | শাক্ত ধারা (Shakti Traditions) | স্মার্ত ধারা (Smarta Traditions) | শ্রৌত ধারা (Srauta Traditions) | সূত্র/তথ্য |
---|---|---|---|---|---|---|
ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ (Scriptural authority) | বেদ (Vedas), উপনিষদ (Upanishads) ও আগম (Agamas) | বেদ, উপনিষদ ও আগম | বেদ ও উপনিষদ | বেদ ও উপনিষদ | বেদ | [^25][^50] |
সর্বোচ্চ ঈশ্বর (Supreme deity) | শিব (Shiva) | বিষ্ণু (Vishnu) | দেবী (Devi) | কোনো নির্দিষ্ট নয় | কোনো নির্দিষ্ট নয় | [^51][^52] |
সৃষ্টিকর্তা (Creator) | শিব | বিষ্ণু | দেবী | ব্রহ্মত্ব (Brahman principle) | ব্রহ্মত্ব | [^51][^53] |
অবতার (Avatar) | প্রধান (Major) | মূল ধারণা (Key concept) | গুরুত্বপূর্ণ (Significant) | নগন্য (Minor) | নগন্য (Minor) | [^25][^54][^55] |
সন্ন্যাস জীবন (Monastic life) | প্রস্তাবিত (Recommends) | গ্রহণযোগ্য (Accepts) | গ্রহণযোগ্য | প্রস্তাবিত | গ্রহণযোগ্য (কিছু ব্যতিক্রম সহ) | [^25][^56][^57] |
আচার ও ভক্তি (Rituals, Bhakti) | সমর্থন করে (Affirms) | সমর্থন করে | সমর্থন করে | ইচ্ছেমতো (Optional) | সমর্থন করে | [^58][^59][^60][^61][^62] |
অহিংসা ও নিরামিষাশিতা (Ahimsa and Vegetarianism) | প্রস্তাবিত, ঐচ্ছিক | সমর্থন করে | ঐচ্ছিক | সাধারণত আহ্বান করা হয়, তবে বলিপ্রথা আছে | সাধারণত আহ্বান করা হয়, তবে বলিপ্রথা আছে | [^63][^64] |
স্বাধীন ইচ্ছা, মায়া, কর্ম (Free will, Maya, Karma) | সমর্থন করে | সমর্থন করে | সমর্থন করে | সমর্থন করে | সমর্থন করে | [^51] |
মেটাফিজিকস (Metaphysics) | ব্রহ্ম (শিবরূপে), আত্মা (Atman) | ব্রহ্ম (বিষ্ণুরূপে), আত্মা | ব্রহ্ম (দেবীরূপে), আত্মা | ব্রহ্ম, আত্মা | ব্রহ্ম, আত্মা, কর্ম, ধর্ম | [^51] |
জ্ঞানতত্ত্ব (Epistemology / Pramana) | ১. প্রত্যক্ষ (Perception) ২. অনুমান (Inference) ৩. বিশ্বস্ত উক্তি (Reliable testimony) ৪. স্বয়ংপ্রমাণ (Self-evident) | ১. প্রত্যক্ষ ২. অনুমান ৩. বিশ্বস্ত উক্তি | ১. প্রত্যক্ষ ২. অনুমান ৩. বিশ্বস্ত উক্তি | ১. প্রত্যক্ষ ২. অনুমান ৩. তুলনা ও উপমা (Comparison and analogy) ৪. অনুমিত প্রমাণ (Postulation) ৫. নেতিবাচক/বৈকল্যজনিত প্রমাণ (Negative/cognitive proof) ৬. বিশ্বস্ত উক্তি | ১. প্রত্যক্ষ ২. অনুমান ৩. তুলনা ও উপমা ৪. অনুমিত প্রমাণ ৫. নেতিবাচক/বৈকল্যজনিত প্রমাণ ৬. বিশ্বস্ত উক্তি | [^65][^66][^67][^68] |
দর্শন (Philosophy) | দ্বৈত, সীমিত অদ্বৈত, অদ্বৈত | দ্বৈত, সীমিত অদ্বৈত, অদ্বৈত | শক্তি-অদ্বৈত | অদ্বৈত | পূর্ব মীমাংসা (Purva Mimamsa) | [^69][^70] |
মোক্ষ / মুক্তি (Salvation / Soteriology) | জীবন্মুক্তি (Jivanmukta), চার্য-ক্রিয়া-যোগ-জ্ঞান পথ | দেহহীন মুক্তি (Videhamukti), যোগ, গার্হস্থ্যজীবনকে সমর্থন | ভক্তি, তন্ত্র, যোগ | জীবন্মুক্তি, অদ্বৈত, যোগ, সন্ন্যাস জীবন সমর্থন | দেহহীন মুক্তি, যোগ, ধর্মময় কর্ম, গার্হস্থ্যজীবন সমর্থন | [^71][^72][^73] |
শৈব, বৈষ্ণব, শাক্ত ও স্মার্ত ঐতিহ্যের মূল ধারণা, আচার ও বিশ্বাসের মধ্যে তুলনামূলক চার্টে দেখানো হয়েছে কেনো দেবতা কাকে সর্বোচ্চ মানা হয়, কী দর্শন অনুসরণ করা হয় ইত্যাদি।
(চার্ট অনুবাদ সংক্ষেপে: শৈবরা শিবকে, বৈষ্ণবরা বিষ্ণুকে, শাক্তরা দেবীকে সর্বোচ্চ মনে করেন। স্মার্তরা ব্রহ্মকে নিরাকার চেতনা হিসেবে গ্রহণ করে। সবারই বেদ-উপনিষদভিত্তিক গ্রন্থমূল রয়েছে। আচার, ভক্তি, মোক্ষসাধন ইত্যাদিতে কিছু পার্থক্য রয়েছে।)[51][53][54][55][56][57][58][59][60][61][62][63][64][65][66][67][68][69][70][71][72][73]
অন্যান্য সম্প্রদায় (Other denominations)
সূর্য উপাসনা (Suryaism / Saurism)
সৌর (Sauras) মতাবলম্বীরা হিন্দু ধর্মের একটি সম্প্রদায়, যা বৈদিক পরম্পরা থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এরা সগুণ ব্রহ্ম (Saguna Brahman) এর দৃশ্যমান মূর্তিরূপ হিসেবে সূর্য (Surya) দেবতাকে প্রধান উপাস্য রূপে পূজা করে। সৌর মতবাদ দক্ষিণ এশিয়ায় (South Asia) বিশেষ করে পশ্চিম, উত্তর ও অন্যান্য অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করেছিল, এবং ৮০০ থেকে ১০০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে অসংখ্য সূর্য মূর্তি ও মন্দির নির্মিত হয়েছিল।[74][75] ১৩শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে নির্মিত কোণার্ক সূর্য মন্দির (Konark Sun Temple) এই ঐতিহ্যের একটি স্বনামধন্য নিদর্শন।[76] ইসলামী আক্রমণ ও হিন্দু–মুসলিম যুদ্ধের সময় মূর্তি ভাঙচুর ও সূর্য মন্দির ধ্বংস করা হয়, সেইসঙ্গে সৌর সম্প্রদায়ের পুরোহিতদের হত্যা করা হয় বলে আন্দ্রে উইঙ্ক (André Wink) উল্লেখ করেছেন।[77][78] দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতাব্দী নাগাদ সূর্য উপাসনা-ভিত্তিক এই হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রভাব কমতে থাকে এবং বর্তমানে এটি খুবই ক্ষুদ্র আকারে টিকে আছে, তবে বিহার/ঝাড়খণ্ড ও পূর্ব উত্তরপ্রদেশে (Eastern Uttar Pradesh) সৌর উপাসনার ধারা আজও শক্তিশালী। সূর্য উপাসনার প্রথা ওইসব অঞ্চলে ছট পূজার (Chhath Puja) মাধ্যমে বহুলভাবে প্রচলিত, যা ওই এলাকার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ উৎসব।
গণপত্য সম্প্রদায় (Ganapatism)
গণপত্য সম্প্রদায় (Ganapatism) হিন্দু ধর্মের একটি শাখা, যেখানে সগুণ ব্রহ্মের প্রধান রূপ হিসেবে গণেশ (Ganesha) পূজিত হন। অতীতে এই মতবাদ ব্যাপকভাবে বিস্তৃত ও প্রভাবশালী ছিল এবং মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) আজও এর গুরুত্ব বিদ্যমান।
ইন্দোনেশীয় হিন্দুধর্ম (Indonesian Hinduism)
১৬শ শতাব্দীর শেষ ভাগ পর্যন্ত জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপদ্বয়ে হিন্দু ধর্ম আধিপত্য করছিল। পরে এসব অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। কেবলমাত্র বালি দ্বীপের (Bali) জনসাধারণ, যারা ওই দ্বীপে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল, ইন্দোনেশীয় হিন্দু ধর্মকে (Indonesian Hinduism) শতাব্দীর পর শতাব্দী টিকিয়ে রেখেছে। ধর্মতত্ত্বের দিক থেকে বালিনীয় বা ইন্দোনেশীয় হিন্দুধর্ম শৈব মতবাদের (Shaivism) সঙ্গে বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী অচিন্ত্য (Acintya) হলেন সর্বোচ্চ ঈশ্বর এবং অন্য সব দেবতা তাঁরই বহিঃপ্রকাশ।
“আগম হিন্দু ধর্ম” (Agama Hindu Dharma) হল ইন্দোনেশীয় হিন্দু ধর্মের স্থানীয় নাম, যা কালীমান্তান (Kalimantan), সুমাত্রা (Sumatra), সুলাওয়েসি (Sulawesi) এবং ইন্দোনেশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী চর্চাকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এখানে মানুষ তাদের নিজস্ব আচারকে হিন্দু ধর্মের অংশ হিসেবে শনাক্ত করতে শুরু করেছে বা হিন্দু উপাসনা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ায় হিন্দু ধর্মের পুনর্জাগরণ “পারিসাদা হিন্দু ধর্ম” (Parisada Hindu Dharma) নামক একটি জাতীয় সংগঠনের উদ্ভব ঘটিয়েছে।
শ্রৌতবাদ (Shrautism)
শ্রৌত সম্প্রদায় (Shrauta) ভারতবর্ষে অতি বিরল। এর মধ্যে কেরালার (Kerala) অতিদক্ষ ও কঠোর নিয়মে জীবনযাপনকারী নম্বূদিরি ব্রাহ্মণরা (Nambudiri Brahmins) বিশেষভাবে পরিচিত। তারা “পুর্ব-মীমাংসা” (Purva-Mimamsa) বা বৈদিক বেদান্তের আগের অংশ অনুসরণ করে, যেখানে অন্যান্য ব্রাহ্মণরা সাধারণত বেদান্ত (Vedanta) ভাবধারা অনুসরণ করে। শ্রৌত সম্প্রদায় বৈদিক যজ্ঞ (Yajna) বা বৈদিক হোম-অনুষ্ঠানের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। নম্বূদিরি ব্রাহ্মণরা প্রাচীন সোমযাগম (Somayaagam) ও অগ্নিচয়ন (Agnicayana) আচার অনুষ্ঠান সতেজভাবে পালন করে আসছে, যা ভারতের অন্যত্র বিলুপ্তপ্রায়।[citation needed]
কৌমার সম্প্রদায় (Kaumaram)
কৌমার হল হিন্দুদের একটি সম্প্রদায়, বিশেষ করে দক্ষিণ ভারত ও শ্রীলঙ্কায় পাওয়া যায়, যেখানে কার্তিকেয় (Kartikeya) দেবকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর হিসেবে পূজা করা হয়। কার্তিকেয়ভক্তদের কৌমার (Kaumaras) বলা হয়।
দত্তাত্রেয় সম্প্রদায় (Dattatreya Sampradaya)
দত্তাত্রেয় সম্প্রদায় (Dattatreya Sampradaya) হল সেই হিন্দু সম্প্রদায় যারা দত্তাত্রেয় (Dattatreya) দেবকে সর্বোচ্চ ঈশ্বর বলে মানে। এই সম্প্রদায় মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, গোয়া, তেলেঙ্গানা, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও উত্তরাখণ্ডে পাওয়া যায়। দত্তাত্রেয়কে প্রায়শই ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবের (সম্মিলিতভাবে ত্রিমূর্তি (Trimurti)) অবতার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দত্তাত্রেয় সম্প্রদায়ের প্রধান কিছু ধারা হল:
- গুরুচরিত্র সম্প্রদায় (Gurucharitra tradition): এই ধারার নামকরণ মারাঠি গ্রন্থ ‘গুরুচরিত্র’ (Gurucharitra)-এর নামে, যা নৃসিংহ সরস্বতী (Nrusinha Saraswati) ও শ্রীপাদ শ্রীবল্লভ (Shripada Shrivallabha)-এর শিক্ষার উপর প্রতিষ্ঠিত। এই ধারা দাক্ষিণাত্য (Deccan) অঞ্চলে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত।
- অবধূত ধারা (Avadhuta Tradition): এই ধারায় অবধূত (Avadhuta) জীবনাচারের উপর জোর দেওয়া হয়।
সন্ত মত (Sant Mat)
সন্ত মত (Sant Mat) ছিল ১৪ থেকে ১৭শ শতাব্দীতে হিন্দু ধর্মের অন্তর্গত সংস্কারক কবি-সন্ত ও তাদের অনুসারীদের দ্বারা গঠিত একটি ধারা। এদের আকাঙ্ক্ষা ছিল ধর্মীয় বহুত্ববাদ ও অনানুষ্ঠানিক আধ্যাত্মবাদ।[80] কবীর (Kabir) বৈষ্ণব রামানন্দী সম্প্রদায় (Vaishnavite Ramanandi Sampradaya) ও সন্ত মতের ধারাকে যুক্ত করে দেওয়ায়, মাঝে মাঝে সন্ত মতকে বৈষ্ণবধারার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[27] বর্তমানে সন্ত মতের জীবন্ত কিছু ধারা হল:
- দাদুপন্থ (Dadupanth)
- কবীর পন্থ (Kabir panth)
- রবিদাসিয়া ধর্ম (Ravidassia religion)
- সাধ (Sadh)
- উদাসী সম্প্রদায় (Udasi Sampradaya)[81][82]
- নির্মলা (Nirmala)
- নানক পন্থ (Nanak Panth)
নবীন আন্দোলন
১৯শ থেকে ২০শ শতাব্দীতে উদ্ভূত নতুন হিন্দু ধর্মীয় আন্দোলনসমূহের মধ্যে রয়েছে:[83]
আন্দোলনের নাম | সংক্ষিপ্ত পরিচিতি |
---|---|
American Meditation Institute (আমেরিকান মেডিটেশন ইনস্টিটিউট) | আমেরিকায় ধ্যান-চর্চার প্রসারক |
Ananda (Ananda Yoga) (আনন্দ বা আনন্দ যোগ) | আনন্দমূলক যোগ চর্চা |
Ananda Ashrama (আনন্দ আশ্রম) | আধ্যাত্মিক সাধনার কেন্দ্র |
Ananda Marga (আনন্দ মার্গ) | আধ্যাত্মিক ও সামাজিক আন্দোলন |
Art of Living Foundation (আর্ট অফ লিভিং ফাউন্ডেশন) | মানব কল্যাণমূলক ও আত্মোন্নয়নমূলক আন্দোলন |
Arya Samaj (আর্য সমাজ) | বৈদিক দর্শন-ভিত্তিক সংস্কার আন্দোলন |
Ayyavazhi (আইয়াভাজি) | দক্ষিণ ভারতে উদ্ভূত এক ধর্মীয় সম্প্রদায় |
Brahma Kumaris (ব্রহ্মকুমারী) | আধ্যাত্মিক শিক্ষাকেন্দ্র, ধ্যান ও নৈতিক শিক্ষা প্রচারক |
Brahmoism (Brahmo Samaj) (ব্রাহ্মধর্ম/ব্রাহ্ম সমাজ) | ১৮শ শতাব্দীর বঙ্গ জাগরণ ও হিন্দু সংস্কার আন্দোলন |
Adi Dharm (আদি ধর্ম) | ব্রাহ্ম সমাজের একটি শাখা |
Sadharan Brahmo Samaj (সাধারণ ব্রাহ্ম সমাজ) | ব্রাহ্ম সাম্প্রদায়িকতার আরেক রূপ |
Chinmaya Mission (চিন্ময় মিশন) | বেদান্ত দর্শন প্রচারক |
Datta Yoga (দত্ত যোগ) | দত্তাত্রেয় উপাসনা-ভিত্তিক যোগ চর্চা |
Divine Life Society (ডিভাইন লাইফ সোসাইটি) | যোগ ও আধ্যাত্মিক চর্চার কেন্দ্র |
Hanuman Foundation (হনুমান ফাউন্ডেশন) | হনুমান ভক্তি ও আত্মোন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান |
Himalayan Institute of Yoga Science and Philosophy (হিমালয়ান ইনস্টিটিউট) | যোগ ও আধ্যাত্মিক দর্শন প্রচারক |
Hindutva (হিন্দুত্ব) | হিন্দু জাতীয়তাবাদী মতবাদ |
Akhil Bharat Hindu Mahasabha (অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা) | হিন্দুত্ববাদী সংগঠন |
Hindu Janajagruti Samiti (হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি) | হিন্দু সংস্কৃতি প্রচারক |
Sanatan Sanstha (সনাতন সংস্থা) | হিন্দু ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা প্রচারক |
Hindu Munnani (হিন্দু মুনানি) | দক্ষিণ ভারতে হিন্দু আন্দোলন |
Hindu Sena (হিন্দু সেনা) | হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক/সামাজিক সংগঠন |
Hindu Yuva Vahini (হিন্দু যুব বাহিনী) | যুব সম্প্রদায়ভিত্তিক হিন্দু সংগঠন |
Rashtriya Swayamsevak Sangh (RSS, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ) (Sangh Parivar) | বৃহত্তর হিন্দুত্ববাদী সংঘ |
Hindu Jagran Manch (হিন্দু জাগরণ মঞ্চ) | হিন্দু সমাজ জাগরণমূলক সংগঠন |
Vishva Hindu Parishad (VHP, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ) | হিন্দু ধর্ম ও সংস্কৃতি প্রচারক সংগঠন |
International Vedanta Society (আন্তর্জাতিক বেদান্ত সোসাইটি) | বেদান্ত দর্শন প্রচারক |
Isha Foundation (ঈশা ফাউন্ডেশন) | যোগ ও ধ্যানকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান |
Kriya Yoga Centers (ক্রিয়া যোগ সেন্টার) | ক্রিয়া যোগ শিক্ষাকেন্দ্র |
Mahima Dharma (মহিমা ধর্ম) | ওড়িশাভিত্তিক ধর্মীয় আন্দোলন |
Mata Amritanandamayi Math (মাতা অমৃতানন্দময়ী মঠ) | অমৃতানন্দময়ী মাতার নেতৃত্বে আধ্যাত্মিক আন্দোলন |
Matua Mahasangha (মতুয়া মহাসংঘ) | সমাজসংস্কারমূলক আন্দোলন, প্রধানত বঙ্গ অঞ্চলে |
Meivazhi (মেইবাঝি) | তামিলনাড়ু ভিত্তিক আধ্যাত্মিক সম্প্রদায় |
Narayana Dharma (নারায়ণা ধর্ম) | আধ্যাত্মিক ও সামাজিক আন্দোলন |
Nilachala Saraswata Sangha (নীলাচল সরস্বত সংঘ) | আধ্যাত্মিক গবেষণা ও সাধনালয় |
Oneness Movement (ওনেস মুভমেন্ট) | বিশ্বের একতা ও আধ্যাত্মিক উন্নয়ন প্রচারক |
Prarthana Samaj (প্রার্থনা সমাজ) | হিন্দু সংস্কার ও একত্ববাদী আন্দোলন |
Ramakrishna Mission / Ramakrishna Math (রামকৃষ্ণ মিশন / রামকৃষ্ণ মঠ, Vedanta Society) | শ্রী রামকৃষ্ণের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে তৈরি আধ্যাত্মিক ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান |
Sahaja Yoga (সহজ যোগ) | সহজভাবে আত্মসচেতনতা বৃদ্ধির যোগ পদ্ধতি |
Sathya Sai Baba movement (সত্য সাই বাবা আন্দোলন) | সত্য সাই বাবার শিক্ষার উপর ভিত্তি করে পরিচালিত আধ্যাত্মিক সম্প্রদায় |
Satsang (সৎসঙ্গ) | সত্য ও আধ্যাত্মিক চর্চার সম্প্রদায় |
Satya Dharma (সত্য ধর্ম) | আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষাভিত্তিক সম্প্রদায় |
School of Philosophy and Economic Science (দর্শন ও অর্থনীতিবিজ্ঞান বিদ্যালয়) | আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক চর্চাসমূহ |
Self-Realization Fellowship/Yogoda Satsanga (সেল্ফ-রিয়ালাইজেশন ফেলোশিপ/যোগদা সৎসঙ্গ) | পরমহংস যোগানন্দ প্রবর্তিত আধ্যাত্মিক আন্দোলন |
Shirdi Sai Baba movement (শির্ডি সাই বাবা আন্দোলন) | শির্ডি সাই বাবার শিক্ষাভিত্তিক চর্চা |
Shri Ram Chandra Mission (শ্রী রামচন্দ্র মিশন) | হৃদয়কেন্দ্রিক ধ্যান ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রচারক |
Shree Shree Anandamayee Sangha (শ্রী শ্রী আনন্দময়ী সংঘ) | আনন্দময়ী মায়ের শিক্ষার উপর প্রতিষ্ঠিত |
Siddha Yoga (সিদ্ধ যোগ) | সিদ্ধগুরু-প্রবর্তিত যোগ ও ধ্যান |
Sivananda Yoga Vedanta Centres (শিবানন্দ যোগ বেদান্ত সেন্টার) | শিবানন্দ স্বামীর শিক্ষা প্রচারক যোগ কেন্দ্র |
Sri Aurobindo Ashram (শ্রী অরবিন্দ আশ্রম) | শ্রী অরবিন্দের আধ্যাত্মিক চিন্তাধারা প্রচারক |
Sri Chinmoy Centres (শ্রী চিন্ময় সেন্টার) | শ্রী চিন্ময়ের আধ্যাত্মিক শিক্ষার প্রচারক |
Sri Ramana Ashram (শ্রী রমণ আশ্রম) | শ্রী রমণ মহর্ষির আত্মজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা প্রচারক |
Neo-Advaita (নিও-অদ্বৈত) | নতুন আদলে অদ্বৈত ভাবাদর্শ প্রচারক |
Society of Abidance in Truth (সোসাইটি অফ আবাইডেন্স ইন ট্রুথ) | সত্য অনুসন্ধানের সম্প্রদায় |
Swadhyay Parivar (স্বধ্যায় পরিবার) | আধ্যাত্মিক আত্মজিজ্ঞাসা ও সামাজিক কল্যাণমূলক আন্দোলন |
Transcendental Meditation (ট্রান্সসেন্ডেন্টাল মেডিটেশন) | ধ্যানের মাধ্যমে চেতনানুভূতি উন্নীতকরণ পদ্ধতি |
Virat Hindustan Sangam (বিরাট হিন্দুস্তান সংঘ) | হিন্দুত্ববাদী সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠন |
সারনা ধারা (Sarnaism)
সারনা (Sarna) হল ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলের (Chota Nagpur Plateau) পবিত্র কানন বা বনভূমি, যা ঝাড়খণ্ড, বিহার, আসাম ও ছত্তিশগড় রাজ্যে পাওয়া যায়।[111] মূলত মুন্ডা, ভূমিজ, খড়িয়া, বাইগা, হো, কুরুখ ও সাঁওতাল জাতির মানুষ এই আচার পালন করে। স্থানীয় বিশ্বাস অনুযায়ী সারনায় গ্রামের অধিষ্ঠাত্রী দেবী (Gram Deoti) বিরাজ করেন, যেখানে প্রতিবছর দুবার পুজো ও পশুবলি দেওয়া হয়। তাদের বিশ্বাস ব্যবস্থা “সারনা ধারা” (Sarnaism), “সারনা ধর্ম” (Sarna Dharma) বা “পবিত্র অরণ্যের ধর্ম” (Religion of the Holy Woods) নামেও পরিচিত।[112]
কিরাতিজম (Kiratism)
এই প্রথাটি কিরাত বেদ (Kirat Veda), কিরাত-কো বেদ (Kirat-Ko Veda) বা কিরাত কো বেদ (Kirat Ko Ved) নামেও পরিচিত। কিছু গবেষক, যেমন টম উডহ্যাচ (Tom Woodhatch), এটিকে শামানবাদ (Shamanism), প্রাণবাদী ধর্ম (Animistic Religion) বা শামানবাদ, প্রাণবাদ (যেমন, ইউমা সাম্মাং/তাগেরা নিনগোফুমাং (Yuma Sammang/Tagera Ningwaphumang) এবং পারুহাং/সুম্নিমা (Paruhang/Sumnima)-এর পূর্বপুরুষ পূজা) এবং শৈববাদের (Shaivism) একটি মিশ্রণ বলে অভিহিত করেছেন।
সম্পর্কিত সম্প্রদায়
কালাশ ও নুরিস্তানি ধর্ম (Kalash and Nuristani religion)
পাকিস্তানের ইন্দো-আর্য জাতিগোষ্ঠীভুক্ত কালাশ (Kalash) জনগণ ঐতিহ্যগতভাবে এমন এক ধর্ম পালন করে যা কিছু গবেষক প্রাচীন ইন্দো-আর্য ধর্মের আদি রূপ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।[119][120][121] আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের নুরিস্তানি (Nuristani) জাতিগোষ্ঠী ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগ পর্যন্ত এমন একটি ধর্ম পালন করত, যা প্রাচীন হিন্দু ধর্মের একটি রূপ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে।[122][123][124]
সমসাময়িক সন্ত মত (Contemporary Sant Mat)
এটি ঐতিহাসিক সন্ত মত (Sant Mat) এর সাথে বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়। সমসাময়িক সন্ত মত উনবিংশ শতকে উদ্ভূত একটি আন্দোলন।[125] পণ্ডিতরা একমত নন যে রাধাস্বামী (Radha Soami) আন্দোলনকে শিখ ধর্ম (Sikhism) থেকে উদ্ভূত, হিন্দু-শিখ সংকর, না কি মধ্যযুগীয় সন্ত মতের স্বাধীন একটি নতুন সার্বজনীন ধর্মীয় রূপ হিসাবে বিবেচনা করবেন।[126] এগুলো হচ্ছে –
- Advait Mat (অদ্বৈত মত)
- Radha Soami (রাধা সোয়ামি)
- Radha Soami Satsang Beas (রাধা সোয়ামি সৎসং বিয়াস)
- Radha Soami Satsang Dayalbagh (রাধা সোয়ামি সৎসং দয়ালবাগ)
- Radha Swami Satsang Dinod (রাধা সোয়ামি সৎসং দিনোড)
- Ruhani Satsang (রুহানী সৎসং)
- Radha Soami-influenced (রাধা সোয়ামি প্রভাবিত) [126]
- Ancient Teachings of the Masters (প্রাচীন আচার্যদের শিক্ষামালা)
- Dera Sacha Sauda (ডেরা সাচা সৌদা)
- Eckankar (একাঙ্কার)
- Elan Vital, formerly Divine Light Mission (এলান ভাইটাল, পূর্ব নাম ডিভাইন লাইট মিশন)
- Manavta Mandir (মানবতা মন্দির)
- Movement of Spiritual Inner Awareness (আত্মিক অভ্যন্তরীণ সচেতনতার আন্দোলন)
- Science of Spirituality (আধ্যাত্মিকতার বিজ্ঞান)
- Sawan Kirpal Ruhani Mission (সাওয়ান কিরপাল রুহানী মিশন)
স্লাভিক বেদ ধারা (Slavic Vedism)
স্লাভিক, রাশিয়ান, পিটার্সবার্গীয় বেদিজম বা শুধু বেদিজম (Vedism) হল স্লাভিক নেটিভ ফেইথ (Rodnovery) এর প্রাথমিক শাখাগুলির একটি রূপ, যা মূলত রাশিয়া, সেন্ট পিটার্সবার্গসহ স্লাভ অঞ্চলে এবং সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রগুলিতে প্রচলিত। “Vedism” শব্দটি “জানা” অর্থবাহী ক্রিয়া “vedat’” থেকে এসেছে, যা স্লাভিক ও সংস্কৃত ভাষায় মিল খুঁজে পাওয়া যায়।[129]
স্লাভিক বেদিজমে বৈদিক দেবতাদের পূজা করা হয়, কিন্তু এখানে স্থানীয় স্লাভিক আচার-অনুষ্ঠান ও দেবনাম ব্যবহৃত হয়, যা খাঁটি হিন্দু ধর্মাচারের সঙ্গে কিছু পার্থক্য সৃষ্টি করে। কিছু স্লাভিক নেটিভ ফেইথ সম্প্রদায় আবার নিজেদেরকে “বেদিক” বলে থাকে।[130]
আন্তঃসম্প্রদায়িক প্রভাব
আত্মান জ্ঞান (Atman Jnana)
জ্ঞান (Jñāna) একটি সংস্কৃত শব্দ, যার অর্থ “জ্ঞান” বা “পরিচিতি”। বেদে (Vedas) এটি সত্য জ্ঞানকে বোঝায়, যেখানে আত্মা (Atman) ও ব্রহ্ম (Brahman) অভিন্ন। একে আত্মজ্ঞান (Atma Jnana) বলা হয়, যা প্রায়শই আত্মসাক্ষাৎকার বা নিজের প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধির সঙ্গে তুলনীয়।
ভক্তি আন্দোলন (Bhakti movement)
ভক্তি আন্দোলন (Bhakti movement) ছিল একটি ঐশ্বরিক ভক্তিমূলক প্রবণতা, যা সপ্তম শতাব্দীতে তামিল দক্ষিণ ভারতে (Tamil South India) শুরু হয়েছিল এবং উত্তর ও পূর্ব ভারতে ছড়িয়ে পড়ে।[131] এটি পঞ্চদশ থেকে সপ্তদশ শতাব্দীতে উত্তর ও পূর্ব ভারতে চরম শিখরে পৌঁছে। ভক্তি আন্দোলন বিভিন্ন দেবদেবীর কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল, যেমন বৈষ্ণবধর্ম (Vishnu), শৈবধর্ম (Shiva), শক্তি উপাসনা (Shakti) ও স্মার্ত (Smartism) মতবাদ।[1][7][133] অনেক কবি-সন্তের অনুপ্রেরণায় এই আন্দোলন গড়ে ওঠে, যাঁরা দ্বৈতবাদ থেকে অদ্বৈত বেদান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত দার্শনিক মতবাদ প্রচার করেছেন।[131][134] ভক্তি আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ভগবদ্গীতা (Bhagavad Gita), ভাগবত পুরাণ (Bhagavata Purana) ও পদ্ম পুরাণ (Padma Purana)।[135][136]
আলভারদের (Alvars) ঐতিহ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীকালে পাঁচটি বৈষ্ণব দার্শনিক সম্প্রদায় (Sampradaya) বিকশিত হয়েছিল।[137]
দার্শনিক সম্প্রদায় (Philosophical schools)
হিন্দু দর্শন ঐতিহ্যগতভাবে ছয়টি আস্তিক (astika, “অর্থডক্স”) দার্শনিক বিদ্যালয়ে বিভক্ত, যেগুলি বেদকে (Vedas) শীর্ষতম প্রামাণ্য শাস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করে। এই ছয়টি বিদ্যালয় হল:
ধারার নাম | সংক্ষিপ্ত পরিচিতি |
---|---|
সাঙ্খ্য (Samkhya) | অধিবিদ্যক দ্বৈতবাদী তত্ত্ব, চেতন ও পদার্থের আলাদা সত্ত্বায় বিশ্বাসী এবং সাধারণত নিরীশ্বরবাদী |
যোগ (Yoga) | ধ্যান, মনঃসংযম ও মুক্তির (Moksha) উপর গুরুত্বারোপ |
ন্যায় (Nyaya) | যুক্তি (Logic) ও জ্ঞানতত্ত্বের চর্চা |
বৈশেষিক (Vaisheshika) | পরমাণুবাদ ও বাস্তববাদী মতবাদ |
মীমাংসা (Mīmāṃsā) | অনুষ্ঠানপালন ও বৈদিক ঐতিহ্যের যথার্থতা জোর দেয়, আচারকেন্দ্রিকতা |
বেদান্ত (Vedanta) | বেদের অন্তিম জ্ঞানকাণ্ড, অদ্বৈত থেকে দ্বৈত নানা মতবাদ অন্তর্ভুক্ত |
নাস্তিক/বেদবিরোধী (nāstika/heterodox) বিদ্যালয়গুলো হল:
- চার্বাক (Cārvāka)
- জৈনধর্ম (Jainism)
- আজীবিক (Ājīvika)
- বৌদ্ধধর্ম (Buddhism)
- অজ্ঞান (Ajñana)
মধ্যযুগের পন্ডিত বিদ্যারণ্য (Vidyāraṇya) ষোলোটি দর্শন নিয়ে আলোচনা করেছেন, যেখানে শৈব, পাণিনি ও রসেশ্বর মতবাদ যুক্ত হয়েছে এবং বেদান্তের মধ্যে অদ্বৈত, বিশিষ্টাদ্বৈত ও দ্বৈতVedanta ভিন্ন ভিন্ন স্কুল হিসাবে গণ্য হয়েছে।[139]
গুপ্ত যুগে এই ছয় অস্থিক ধারা প্রচলিত ছিল। মধ্যযুগের শেষে বৈশেষিক ও মীমাংসার প্রভাব কমে গেলে বেদান্তের বিভিন্ন উপ-শাখাগুলির উদয় হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- অদ্বৈত বেদান্ত (Advaita Vedanta)
- অক্ষর-পুরুষোত্তম দর্শন (Akshar-Purushottam Darshan)
- ভেদাভেদ (Bhedabheda)
- অচিন্ত্য ভেদ আবেদ (Achintya Bheda Abheda)
- দ্বৈতাদ্বৈত (Dvaitadvaita)
- দ্বৈত বেদান্ত (Dvaita Vedanta)
- ইন্টিগ্রাল যোগ (Integral yoga)
- প্রত্যাভিজ্ঞান (Pratyabhijna)
- শৈব সিদ্ধান্ত (Shaiva Siddhanta)
- শিব অদ্বৈত (Shiva Advaita)
- শুদ্ধাদ্বৈত (Shuddhadvaita)
- বিশিষ্টাদ্বৈত (Vishishtadvaita)
ন্যায় দর্শন ১৭শ শতক পর্যন্ত নব্য ন্যায় (Navya Nyaya) নামে টিকে ছিল, অন্যদিকে সাঙ্খ্য ধীরে ধীরে যোগ ও বেদান্তের মধ্যে বিলীন হয়ে যায়।
যোগের বিভিন্ন ধারা (Yoga varieties)
হিন্দু ও অন্যান্য আধ্যাত্মিক প্রেক্ষিতে বিভিন্ন যোগ পদ্ধতি প্রচলিত। এর মধ্যে রয়েছে:
- আনন্দ যোগ (Ananda Yoga)
- ভক্তি যোগ (Bhakti yoga)
- হঠ যোগ (Hatha yoga)
- বিহার স্কুল অব যোগ (Bihar School of Yoga)
- ইন্টিগ্রাল যোগ (Integral Yoga)
- জীবমুক্তি যোগ (Jivamukti Yoga)
- জ্ঞান যোগ (Jnana yoga)
- কর্ম যোগ (Karma yoga)
- কৃপালু যোগ (Kripalu Yoga)
- ক্রিয়া যোগ (Kriya Yoga)
- কুণ্ডলিনী যোগ (Kundalini yoga)
- রাজ যোগ (Raja yoga)
- সহজ যোগ (Sahaja Yoga)
- সিদ্ধ যোগ (Siddha Yoga)
- শিবানন্দ যোগ (Sivananda yoga)
- সুরৎ শব্দ যোগ (Surat Shabd Yoga)
- তান্ত্রিক যোগ (Tantric Yoga) [142][143]
তথ্যসূত্র
- Nelson, L. (2007). In O. O. Espín & J. B. Nickoloff (Eds.), An introductory dictionary of theology and religious studies (pp. 562–563). Liturgical Press. ISBN 978-0814658567
- Lipner, J. J. (2009). Hindus: Their religious beliefs and practices (2nd ed.). Routledge. ISBN 978-0-415-45677-7 (Referencing pp. 377, 398)
- Werner, K. (1994). A popular dictionary of Hinduism (1997 rev. ed.). Curzon Press. ISBN 0-7007-1049-3 (Referencing p. 73)
- Bhandarkar, R. G. (1913). Vaiṣṇavism, Śaivism and minor religious systems. Strassburg: Trübner.
- Tattwananda, S. (n.d.). Vaisnava sects, Saiva sects, Mother worship. Calcutta: Nirmalendra Bikash Sen Gupta.
- Flood, G. (1996). An introduction to Hinduism. Cambridge: Cambridge University Press. ISBN 978-0-521-43878-0 (Referencing pp. 113, 134, 155–161, 167–168)
- Kumar, S. S. (2010). Bhakti — the yoga of love. LIT Verlag Münster. ISBN 978-3643501301 (Referencing pp. 35–36)
- Lundskow, G. (2008). The sociology of religion: A substantive and transdisciplinary approach. SAGE Publications. ISBN 978-1-4522-4518-8 (Referencing pp. 252–253)
- Lipner, J. J. (2009). Hindus: Their religious beliefs and practices. (2nd ed.). Routledge. (Referencing pp. 371–375)
- Frazier, J. (2011). The continuum companion to Hindu studies. Continuum. ISBN 978-0-8264-9966-0 (Referencing pp. 1–15)
- Lipner, J. J. (2009). Hindus: Their religious beliefs and practices. (2nd ed.). Routledge. (Referencing p. 8, includes quote)
- Kurtz, L. (Ed.). (2008). Encyclopedia of violence, peace and conflict. Academic Press. ISBN 978-0123695031
- Gandhi, M. K. (n.d.). The essence of Hinduism. (Ed. V. B. Kher). Navajivan Publishing. (Refer to p. 3)
- Clarke, M. (2011). Development and religion: Theology and practice. Edward Elgar. ISBN 9780857930736 (Referencing p. 28)
- Flood, G. (1996). An introduction to Hinduism. Cambridge University Press. (Referencing pp. 113, 154)
- Lipner, J. J. (2009). Hindus: Their religious beliefs and practices. (2nd ed.). Routledge. (Referencing pp. 17–18, 81–82, 183–201, 206–215, 330–331, 371–375)
- McDaniel, J. (2007). Hinduism. In J. Corrigan (Ed.), The Oxford handbook of religion and emotion (pp. 52–53). Oxford University Press. ISBN 0-19-517021-0
- Apte, V. S. (1965). The student’s English-Sanskrit dictionary. Delhi: Motilal Banarsidass. ISBN 81-208-0300-0
- Lipner, J. J. (2009). Hindus: Their religious beliefs and practices. (2nd ed.). Routledge. (Referencing p. 398)
- Lipner, J. J. (2009). Hindus: Their religious beliefs and practices. (2nd ed.). Routledge. (Referencing pp. 375–377, 397–398)
- Pew Research Center. (2012). The global religious landscape: Hindus. [Archived 9 February 2020 at the Wayback Machine]
- Flood, G. (Ed.). (2008). The Blackwell companion to Hinduism. John Wiley & Sons. ISBN 978-0-470-99868-7 (Referencing p. 200, includes quote)
- Lipner, J. J. (2009). Hindus: Their religious beliefs and practices. (2nd ed.). Routledge. (Referencing pp. 40–41, 302–315, 371–375)
- Johnson, T. M., & Grim, B. J. (2013). The world’s religions in figures: An introduction to international religious demography. Wiley-Blackwell. ISBN 978-1-118-32303-8 (Referencing p. 400)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. Facts On File. ISBN 978-0-8160-5458-9 (Referencing p. 474)
- [Chapter 1 Global Religious Populations] (January 2012). [Archived from the original (PDF) on 20 October 2013]
- Dandekar, R. N. (1987/2005). “Vaiṣṇavism: An Overview.” In M. Eliade (Ed.), The Encyclopedia of Religion: 16 Volume Set (Vol. 14). New York: MacMillan.
- Hardy, F. E. (1987). “Kṛṣṇaism.” In M. Eliade (Ed.), The Encyclopedia of Religion: 16 Volume Set (Vol. 8, pp. 387–392). New York: MacMillan.
- Dubois, A. J. A. (2007, April 1). Hindu manners, customs and ceremonies. Cosimo. ISBN 9781602063365 (Referencing p. 111)
- HimalayanAcademy. (n.d.). Retrieved 7 February 2014.
- Tattwananda, S. (n.d.). Vaisnava sects, Saiva sects, Mother worship. (Referencing pp. 13–68) Calcutta: Nirmalendra Bikash Sen Gupta.
- Chopra, O. K. (2020). History of ancient India revisited, a Vedic-Puranic view. BlueRose Publishers. (Referencing p. 454)
- Eraly, A. (2011). The first spring: The golden age of India. Penguin Books India. (Referencing p. 853) ISBN 978-0-670-08478-4
- Raj, S., & Harman, W. (2007). Dealing with deities: The ritual vow in South Asia. State University of New York Press. ISBN 978-0791467084 (Referencing pp. 165–166)
- Lochtefeld, J. G. (2002). The illustrated encyclopedia of Hinduism: N–Z. Rosen Publishing. ISBN 978-0823931804 (Referencing pp. 553–554)
- Lamb, R. (2008). In K. A. Jacobsen (Ed.), Theory and practice of yoga. Delhi: Motilal Banarsidass. (Referencing pp. 317–330)
- Ramanujan, A. K. (Ed.). (1973). Speaking of Śiva. Penguin Classics (UNESCO Indian translation series). ISBN 978-0-14-044270-0 (Referencing p. 175)
- Lingayat. (2010). Encyclopædia Britannica. Encyclopædia Britannica Online. Retrieved 09 July 2010.
- Fuller, C. J. (2004). The camphor flame: Popular Hinduism and society in India (Revised & expanded ed.). Princeton University Press. p. 83. ISBN 978-0-691-12048-5
- Fuller, C. J. (2004). “4 Sacrifice.” In The camphor flame: Popular Hinduism and society in India (Revised ed.). Princeton University Press. p. 83. ISBN 0-691-12048-X
- Rambachan, A. (2001). Hierarchies in the nature of God? Questioning the “Saguna-Nirguna” distinction in Advaita Vedanta. Journal of Hindu-Christian Studies, 14. doi:10.7825/2164-6279.1250
- Wainwright, W. (2012). Concepts of God. In E. N. Zalta (Ed.), The Stanford Encyclopedia of Philosophy. Stanford University.
- Hiltebeitel, A. (2002) [1987]. “Hinduism.” In J. M. Kitagawa (Ed.), The religious traditions of Asia: Religion, history, and culture (pp. 3–40). London: RoutledgeCurzon. (Referencing pp. 29–30)
- Doniger, W., et al. (Eds.). (1999). Merriam-Webster’s encyclopedia of world religions. Merriam-Webster. ISBN 9780877790440 (Referencing p. 1017)
- Popular Prakashan. (2000). Students’ Britannica India, Volumes 1–5. Popular Prakashan. (Referencing p. 52) ISBN 978-0-85229-760-5
- Rosen, S. (2006). Essential Hinduism. Praeger. (Referencing p. 166)
- Hiltebeitel, A. (2002) [1987]. In J. M. Kitagawa (Ed.), The religious traditions of Asia: Religion, history, and culture. RoutledgeCurzon.
- Bühnemann, G. (2003). Mandalas and yantras in the Hindu traditions. BRILL. (Referencing p. 60) ISBN 978-9004129023
- Halbfass, W. (1991). Tradition and reflection. SUNY Press. (Referencing p. 15) ISBN 9780791403617
- Dhavamony, M. (1999). Hindu spirituality. Gregorian Press. (Referencing pp. 32–34) ISBN 978-88-7652-818-7
- Gonda, J. (1970). Visnuism and Sivaism: A comparison. Bloomsbury Academic. ISBN 978-1-4742-8080-8
- Partridge, C. (2013). Introduction to world religions. Fortress Press. (Referencing p. 182) ISBN 978-0-8006-9970-3
- Gupta, S. (2013). Advaita Vedanta and Vaisnavism: The philosophy of Madhusudana Sarasvati. Routledge. (Referencing pp. 65–71) ISBN 978-1-134-15774-7
- Lai, A. E. (2008). Religious diversity in Singapore. Institute of Southeast Asian Studies. (Referencing p. 221) ISBN 978-981-230-754-5
- Dhavamony, M. (2002). Hindu-Christian dialogue: Theological soundings and perspectives. Rodopi. (Referencing p. 63) ISBN 90-420-1510-1
- Phillips, S. H. (1995). Classical Indian metaphysics. Columbia University Press. (Referencing p. 332 with note 68) ISBN 978-0812692983
- Olivelle, P. (1992). The Samnyasa Upanisads. Oxford University Press. (Referencing pp. 4–18) ISBN 978-0195070453
- Flood, G. (1996). An introduction to Hinduism. Cambridge University Press. (Referencing pp. 162–167)
- Shaivas. (n.d.). Overview of World Religions. Philtar. Retrieved 13 December 2017.
- Munavalli, S. (2007). Lingayat Dharma (Veerashaiva Religion) (PDF). Veerashaiva Samaja of North America. (Referencing p. 83) Archived from the original (PDF) on 26 June 2013.
- Prakash, P. (1998). The yoga of spiritual devotion: A modern translation of the Narada Bhakti Sutras. Inner Traditions. (Referencing pp. 56–57) ISBN 978-0-89281-664-4
- Frazier, J. (2013). “Bhakti in Hindu Cultures.” The Journal of Hindu Studies, 6(2), 101–113. Oxford University Press. doi:10.1093/jhs/hit028
- Kemmerer, L., & Nocella, A. J. (Eds.). (2011). Call to compassion: Reflections on animal advocacy from the world’s religions. Lantern. (Referencing pp. 27–36) ISBN 978-1-59056-281-9
- Simoons, F. J. (1998). Plants of life, plants of death. University of Wisconsin Press. (Referencing pp. 182–183) ISBN 978-0-299-15904-7
- Sivaraman, K. (1973). Śaivism in philosophical perspective. Motilal Banarsidass. (Referencing pp. 336–340) ISBN 978-81-208-1771-5
- Grimes, J. A. (1996). A concise dictionary of Indian philosophy: Sanskrit terms defined in English. State University of New York Press. (Referencing p. 238) ISBN 978-0791430675
- Flood, G. (1996). An introduction to Hinduism. Cambridge University Press. (Referencing p. 225)
- Deutsche, E. (2000). In R. Perrett (Ed.), Philosophy of religion: Indian philosophy vol. 4. Routledge. ISBN 978-0815336112 (Referencing pp. 245–248)
- McDaniel, J. (2004). Offering flowers, feeding skulls. Oxford University Press. (Referencing pp. 89–91) ISBN 978-0-19-534713-5
- Clark, M. J. (2006). The Daśanāmī-saṃnyāsīs: The integration of ascetic lineages into an order. Brill. (Referencing pp. 177–225) ISBN 978-90-04-15211-3
- Hurley, L., & Hurley, P. (2012). Tantra, yoga of ecstasy: The sadhaka’s guide to kundalini and the left-hand path. Maithuna Publications. (Referencing p. 5) ISBN 9780983784722
- Skoog, K. (1996). In A. O. Fort & P. Y. Mumme (Eds.), Living liberation in Hindu thought. SUNY Press. (Referencing pp. 63–84, 236–239) ISBN 978-0-7914-2706-4
- Prasad, R. (2008). A conceptual-analytic study of classical Indian philosophy of morals. Concept. (Referencing p. 375) ISBN 978-81-8069-544-5
- Wink, A. (2002). Al-Hind, the making of the Indo-Islamic world: Early medieval India and the expansion of Islam 7th–11th centuries. BRILL. (Referencing pp. 292–293) ISBN 0-391-04173-8
- Kalia, A. (1982). Art of Osian temples: Socio-economic and religious life in India, 8th-12th centuries A.D. Abhinav Publications. (Referencing pp. 1–7) ISBN 978-0-391-02558-5
- Flood, F. B. (2009). Objects of translation: Material culture and medieval “Hindu-Muslim” encounter. Princeton University Press. (Referencing p. 218) ISBN 978-0-691-12594-7
- Wink, A. (1997). Al-Hind the making of the Indo-Islamic world: The slave kings and the Islamic conquest: 11th–13th centuries. BRILL Academic. (Referencing pp. 327–329) ISBN 90-04-10236-1
- Flood, F. B. (2009). Objects of translation: Material culture and medieval “Hindu–Muslim” encounter. Princeton University Press. (Referencing pp. 123–124, 154–156) ISBN 978-0-691-12594-7
- Larson, G. J., & Jacobsen, K. A. (Eds.). (2005). Theory and practice of yoga: Essays in honour of Gerald James Larson. BRILL. ISBN 978-90-04-14757-7
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. Facts On File. (Referencing p. 383)
- Lochtefeld, J. G. (2002). The illustrated encyclopedia of Hinduism. Vol. A–M. The Rosen Publishing Group. (Referencing p. 61) ISBN 978-0-8239-3179-8
- Singh, P., & Fenech, L. E. (Eds.). (2014). The Oxford handbook of Sikh studies. Oxford University Press. (Referencing p. 376) ISBN 978-0-19-969930-8
- Farquhar, J. N. (1915). Modern religious movements in India. New York: MacMillan.
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 33–34)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 29–30)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 30–31)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 45–46)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 47–48)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 89–91)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 92–93)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 109–110)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing p. 121)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 200–201)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing p. 178)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 183–184)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 185–188)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 361–362)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 492–493)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 248–249)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 26–27)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 483–484)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 389–390)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 392–394)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 31–33)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 108, 431)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing p. 408)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 52–54)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 110–11)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 351)
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 451–452)
- Religious Complexity in Northeastern South Asia. (2015, October 29). GeoCurrents. Retrieved 21 October 2021.
- Minahan, J. (2012). Ethnic groups of South Asia and the Pacific: An encyclopedia. ABC-CLIO. ISBN 978-1-59884-659-1
- Tandukar, G. M. (n.d.). Kiratese at a Glance. (Referencing p. 56)
- van Driem, G. (n.d.). A grammar of Limbu. (Referencing p. xxv)
- Problems of Modern Indian Literature. (n.d.). Statistical Pub. Society: distributor, K. P. Bagchi.
- Singh, G. P., Kalita, D., Sudarsen, V., & Kalam, M. A. (n.d.). Kiratas in Ancient India. (Referencing p. 323)
- Chemjong, I. S. (n.d.). History and Culture of the Kirat.
- Woodhatch, T. (n.d.). Nepal. (Referencing p. 535)
- Witzel, M. (2004). “Kalash Religion (extract from ‘The Ṛgvedic Religious System and its Central Asian and Hindukush Antecedents’).” In A. Griffiths & J. E. M. Houben (Eds.), The Vedas: Texts, language and ritual (pp. 581–636). Groningen: Forsten.
- West, B. A. (2010). Encyclopedia of the peoples of Asia and Oceania. Infobase Publishing. (Referencing p. 357) ISBN 9781438119137
- The Indian Express. (2017, April 4). “Peshawar HC orders government to include Kalash religion in census.” Retrieved 12 July 2017.
- Minahan, J. B. (2014, February 10). Ethnic groups of North, East, and Central Asia: An encyclopedia. ABC-CLIO. (Referencing p. 205)
- Barrington, N., Kendrick, J. T., & Schlagintweit, R. (2006). A passage to Nuristan: Exploring the mysterious Afghan hinterland. I.B. Tauris. (Referencing p. 111) ISBN 9781845111755
- Weiss, M., & Maurer, K. (2012, December 31). No way out: A story of valor in the mountains of Afghanistan. Berkley Caliber. (Referencing p. 299) ISBN 9780425253403
- Jones, C. A., & Ryan, J. D. (2007). Encyclopedia of Hinduism. (Referencing pp. 383–384)
- Zoccarelli, P. (2006). “Radhasoami movements.” In P. B. Clarke (Ed.), Encyclopedia of new religious movements (pp. 507–509). Routledge. ISBN 9-78-0-415-26707-6
- Strmiska, M. F. (2005). In M. F. Strmiska (Ed.), Modern paganism in world cultures. ABC-CLIO. (Referencing p. 222)
- Portal “Religion and Law”. (2013). “Монастырь «Собрание тайн» или «Дивья лока»: второе пришествие индуизма в России?” Archived 2 June 2013.
- Aitamurto, K. (2016). Paganism, traditionalism, nationalism: Narratives of Russian Rodnoverie. Routledge. (Referencing p. 35) ISBN 9781472460271
- Saunders, R. A., & Strukov, V. (2010). Historical dictionary of the Russian Federation. Rowman & Littlefield. (Referencing p. 412)
- Schomer, K., & McLeod, W. H. (1987). The Sants: Studies in a devotional tradition of India. Motilal Banarsidass. ISBN 978-8120802773 (Referencing pp. 1–2)
- Lorenzen, D. N. (1995). Bhakti religion in North India: Community identity and political action. SUNY Press. ISBN 978-0-7914-2025-6
- Doniger, W. (2009). Bhakti. Encyclopædia Britannica. Also see Himalayan Academy (2013), The Four Denominations of Hinduism.
- Novetzke, C. (2007). Bhakti and its public. International Journal of Hindu Studies, 11(3), 255–272.
- Robinson, C. (2005). Interpretations of the Bhagavad-Gita and images of the Hindu tradition. Routledge. ISBN 978-0415346719 (Referencing pp. 28–30)
- Prentiss, K. P. (2014). The embodiment of Bhakti. Oxford University Press. ISBN 978-0195351903 (Referencing pp. 26–32, 217–218)
- Mittal, S., & Thursby, G. R. (2006). Religions of South Asia: An introduction. Routledge.
- Mādhava Āchārya (1882). The Sarva-Darśana-Saṃgraha. (Trans. E. B. Cowell & A. E. Gough). Trübner & Co. (Referencing p. xii)
- Dasgupta, S. (1922–1955). A history of Indian philosophy (Vols. 1–5). Cambridge University Press.
- Radhakrishnan, S. (1927). Indian philosophy (Vol. 2). Oxford University Press.
- Lamb, R. (2008). In K. A. Jacobsen (Ed.), Theory and practice of yoga. Delhi: Motilal Banarsidass.
- Singleton, M., & Goldberg, E. (Eds.). (2014). Gurus of modern yoga. Oxford University Press. ISBN 978-0-19-993871-1
- Knott, K. (1998). Hinduism: A very short introduction. Oxford University Press. ISBN 9780191606458
Leave a Reply