ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের গবেষকগণ একটি নতুন ধরণের লাইট প্রোপাগেশন বা আলোর প্রসারণ আবিষ্কার করেছেন যা পূর্বে কোনদিনও দেখা যায় নি।
আলো কেবল শক্তি বহন করে না, লিনিয়ার মোমেন্টাম বা ভরবেগও বহন করে যা কোন সোলার সেলকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে ব্যবহার করা যায়। এটি এংগুলার মোমেন্টাম বা কৌণিক ভরবেগও বহন করে যার অর্থ হল আলোক রশ্মি তার নিজের অক্ষের চারদিকে ঘুর্ণন করতে সক্ষম।
খালি চোখে এই ঘুর্ণনকে দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু কিভাবে রোটেটিং বা ঘুর্ণনরত আলো কোন বস্তুর সাথে ইন্টারেক্ট করলে তার থেকে এই ঘুর্ণনকে ডিটেক্ট করা সম্ভব। ত্রিমাতৃক স্থানে এই কৌণিক ভরবেগের মান সবসময়ই মহাবিশ্বের একটি ফান্ডামেন্টাল কনস্ট্যান্ট বা মৌলিক ধ্রুবকের গুণিতক হয়। এই ফান্ডামেন্টাল কনস্ট্যান্টের নাম হল প্লাংক্স কনস্ট্যান্ট বা প্লাংকের ধ্রুবক। কিন্তু অন্যান্য মাত্রা বা ডাইমেনশনগুলোতে বিষয়টি ভিন্ন।
সম্প্রতি সায়েন্স জার্নলে প্রকাশিত হওয়া একটি গবেষণাপত্রে গবেষকদের দলটি দেখায় দ্বিমাত্রিক স্থানে বা টু ডাইমেনশনে, আলোর কৌণিক ভরবেগের কম্পোনেন্ট বা উপাংশগুলো প্লাংকের ধ্রুবকের ফ্র্যাকশনাল ভেল্যু বা ভগ্নাংশ মানের হয়। এগুলো প্লাংকের ধ্রুবকের অর্ধেকের গুণিতক হয়। ফোটনের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটিকে এইবারই প্রথমবারের মত দেখানো হল। যদিও ইলেক্ট্রনের ক্ষেত্রে এটা অনেক আগেই দেখানো হয়েছিল যে, ইলেক্ট্রনকে রিডিউসড ডাইমেনশনে নিয়ে গেলে (তিন মাত্রার চেয়ে কম মাত্রা) একটি নতুন ধরণের কোয়ান্টাম স্টেট তৈরি হয়।
এসিস্টেন্ট প্রফেসর ও গবেষণাটির সিনিয়র অথর পল ইস্টহাম তার একটি বিবৃতিতে বলেন, “আমি যে জিনিসটি ভেবে আনন্দিত তা হল, আজ পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞানীগণ যাকে আলোর ফান্ডামেন্টাল প্রোপার্টি বা মৌলিক বৈশিষ্ট্য বলে ভেবে আসছিল তা পরিবর্তিত হতে পারে”।
পদার্থবিজ্ঞানীগণ একটি আলোকরশ্মিকে একটি নির্দিষ্ট ক্রিস্টালের মধ্য দিয়ে চালিত করেছেন যাতে তার ফোটনগুলো একটি সিলিন্ডারের সারফেস বা তলে সীমাবদ্ধ থাকে। আর এভাবে আলোকে দ্বিমাতৃক স্থানে আবদ্ধ করে বিজ্ঞানীগণ একটি নতুন কোয়ান্টাম স্টেট আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। এরপর বিজ্ঞানীগণ এর কৌণিক ভরবেগ নির্ণয় করেন এবং এই কৌণিক ভরবেগের উপাংশ বা কম্পোনেন্ট এর ফ্লাকচুয়েশন বা ওঠানামাকে ডিটেক্ট করেন। এর থেকে তারা দেখতে পান যে এই কৌণিক ভরবেগের মান প্লাংকের ধ্রুবকের ভগ্নাংশ।
এই আবিষ্কারটিকে বিভিন্ন অপটিকাল কমিউনিকেশনে ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল এই আবিষ্কারটির মাধ্যমে আমরা বুঝতে পেরেছি যে, আলো অনেক রহস্যময় এবং এখনও এর সম্পর্কে অনেক কিছু জানার আছে।
http://advances.sciencemag.org/content/2/4/e1501748.full
http://www.rte.ie/news/2016/0510/787493-light-trinity/
– ভেলোসিটি হেড
Leave a Reply