ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, “Nice guys finish last”. অর্থাৎ ভাল লোকদের সময় সবার শেষে আসে। এই ধারণাটি অনেকটা এরকম, “হেটেরোসেক্সুয়াল বা বিষমকামী নারীরা এরকম বলতেই পারেন যে তাদের ভাল বা সুন্দর বৈশিষ্ট্যের সঙ্গীকে পছন্দ। কিন্তু বাস্তবে তারা “ব্যাড বয়”-দের থেকে আসা চ্যালেঞ্জকেই পছন্দ করে থাকেন।” এই ধারণাটি এতটাই বিস্তৃত যে এই ধারণাটিকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই অর্থও রোজগার করেন। এই বিষয়ে বিভিন্ন সেলফ হেল্প বই বিক্রি হয় যেখানে কিভাবে “মেয়েদের ইনসাল্ট করে তাদেরকে পটানো যায়” এই বিষয়ে শেখানো হয়। ইংরেজিতে মেয়েদেরকে এরকম “ইনসাল্ট করে পটানোর” চর্চাকে “ন্যাগিং” বলা হয়। ধারণাটি ইতিমধ্যেই একটি সোশ্যাল স্টেরিওটাইপে পরিণত হয়ে গেছে। অনেক পুরুষই এখন এটায় বিশ্বাস করে। এর ফলে মিসোজিনি বা নারীবিদ্বেষও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সম্প্রতি একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে যেখানে খুব জোড়েসোড়েই দাবী করা হয়েছে যে নারীরা “ব্যাড বয়”দের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়। গবেষণাটি এই বছরের প্রথম দিকে প্রকাশিত হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে কিছু মানুষ ধূমপান ও মদ্যপান করেন কারণ এটা তাদেরকে শর্টটার্ম পার্টনারদের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে।
অর্থাৎ এই গবেষণায় কেবলমাত্র ধূমপান ও মদ্যপানকেই “ব্যাড” বা খারাপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু নারীদের মতামত থেকে জানা যায় “ব্যাডনেস” বা খারাপ হবার মাত্রা কেবল ধুমপান বা মদ্যপান এর উপরেই নির্ভর করে না। তাহলে কি এটা জোড় দিয়ে বলা যায় যে নারীরা কেবলমাত্র ব্যাডবয়দেরকেই পছন্দ করে? চলুন, কিছু বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্যপ্রমাণের দিকে তাকানো যাক।
স্টেরিওটাইপটি অনুসারে, “যদিও নারী সবসময় কাইন্ড, সেন্সিটিভ বা সংবেদনশীল পুরুষদের সাথে ডেট করতে পছন্দ করে বলে দাবী করে, বাস্তবে একজন নারী অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য যেমন ফিজিকাল এট্রাকটিভনেস যুক্ত পুরুষের জন্য ‘নাইসনেস’ ত্যাগ করতে পারে”। এই স্টেরিওটাইপটির সত্যতা যাচাই করার জন্য দুটো গবেষণা করা হয়। প্রথম স্টাডিটিতে ৪৮ জন কলেজ ছাত্রীকে র্যান্ডমলি একটি এক্সপেরিমেন্টাল কন্ডিশনে ফেলা হয়। সেখানে তাদেরকে একটি স্ক্রিপ্ট পড়তে দেয়া হয় যেখানে দেখানো হয় দুজন পুরুষ একজন নারীর সাথে ডেট করার জন্য প্রতিযোগীতা করছে। বিভিন্ন অবস্থায় একজন পুরুষের “নাইসনেস” বা ভাল হবার মাত্রাকে পরিবর্তন করা হয়। ২য় গবেষণায় ১৯৪ জন কলেজ ছাত্রীকে র্যান্ডমলি এমন একটি কন্ডিশনে আনা হয় যেখানে পূর্বের গবেষণার দুজন পুরুষের রেসপন্স এবং ফিজিকাল এট্রাকটিভনেসকে পরিবর্তন করা হয়।
গবেষণাদুটি থেকে যা পাওয়া গেল তা হল, নারীর পছন্দ এবং পুরুষের ডিজায়ারেবিলিটি রেটিং এ নাইসনেস এবং ফিজিকাল এট্রাকটিভনেস উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে। সিরিয়াস রিলেশনশিপগুলোর বেলায় নাইসনেস সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে। আর যখন কেবল কজাল রিলেশন বা শর্ট টার্ম রিলেশনশিপের প্রশ্ন আসে, তখন ফিজিকাল এট্রাক্টিভনেস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
আরেকটি গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদেরকে ডেটিং এড বা ডেটিং নিয়ে বিজ্ঞাপনগুলো পড়তে দেয়া হয়। দেখা যায় যেসব পুরুষেরা নিজেদেকে অলট্রুইস্ট বা অন্যদের উপকারে নিয়জিত বলে নিজেদের বর্ণনা করেছেন (যেমন আমি ফুডব্যাংকে স্বেচ্ছাসেবক ছিলাম) তারা এটা যারা মেনশন করেননি তাদের চেয়ে শর্ট টার্ম ডেট এবং লং টার্ম পার্টনার হিসেবে অধিক এট্রাকটিভ বলে বিবেচিত হয়েছেন।
আরেকটি গবেষণা করা হয়েছিল নারীরা ডিমান্ডিং, এগ্রেসিভ এবং ডোমিনেন্ট পুরুষদের সঙ্গী হিসেবে পছন্দ করেন কিনা এটা দেখার জন্য। দেখা যায় পুরুষ ডোমিনেন্ট হলে আর একেবারে নন ডোমিনেন্ট হলে ডিজায়ারেবিলিটি কমে যায়। এই গবেষণাটি থেকেও দেখা যায় ‘নাইস গাই’ হওয়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আবার গবেষণায় দেখা যায়, “নাইসনেস” এর পাওয়ারকে আন্ডারএস্টিমেট করা উচিৎ নয়। ইভোল্যুশনারি পারস্পেক্টিভ অনুসারে, সৌন্দর্য ফিটনেস ভেল্যু বিচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কোন সোশ্যাল পার্টনারের ফিটনেস ভেল্যু একই সাথে ফিজিকাল ও ননফিজিকাল বৈশিষ্ট্যগুলো দ্বারা প্রভাবিত হয়। গবেষণায় দেখা যায় সোশ্যাল পার্টনারের সৌন্দর্য সম্পর্কে ধারণা যৌবন, ওয়েস টু হিপ রেশিও, বাইল্যাটারাল সিমেট্রির মত ফিজিকাল ট্রেইটের সাথে সাথে ননফিজিকাল ট্রেইট যেমন রুচিবোধ, শ্রদ্ধাবোধ, কারও সাথে ঘনিষ্ঠ হবার ক্ষমতা ইত্যাদির উপরেও নির্ভর করে। তিনটি ভিন্ন স্টাডি থেকে পাওয়া যায়, নারীরা নন ফিজিকাল ট্রেইটগুলো দ্বারা পুরুষের চাইতে অনেক বেশি প্রভাবিত হয়। ডিজায়ারেবিলিটির উপর নারী ও পুরুষের মধ্যে ব্যাবধান অনেক বেশি। আর তাই বিবর্তনের ক্ষেত্রে ফিজিকাল এট্রাক্টিভনেস এর গবেষণাগুলো যদি কেবল ফিজিকাল ট্রেইতগুলো নিয়েই করা হয় তাহলে অনেক বড় ভুল হয়ে যাবে। কারণ কারো মধ্যে থাকা নন ফিজিকাল গুণগুলোই অপরের চোখে তার ফিজিকাল এট্রাক্টিভনেস অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। আর নারীদের বেলায় পুরুষের এই নন ফিজিকাল ট্রেইটের প্রভাব অনেক বেশি।
নারসিসিস্টদের এট্রাকটিভ পাওয়ার
অবশ্যই কখনও আমরা “ব্যাড পিপল” কে আকর্ষণীয় বলে মনে হয়। নারসিসিস্টরা, যারা খুব উচ্চ মাত্রার সেলফ ইম্পর্টেন্স, সুপেরিয়রিটি, এনটাইটেলমেন্ট, দাম্ভিকতা এবং অন্যকে ব্যবহার করার ইচ্ছা দেখায়, প্রায় সময়ই তাদের প্রথম দিকে খুব এট্রাক্টিভ বলে মনে হয়। এর কারণ হতে পারে, নারসিসিস্টরা তাদের এপিয়ারেন্স এর জন্য অনেক পরিশ্রম করে (গবেষণা তাই বলছে)। গবেষণায় দেখা যায়, নারী নারসিসিস্টরা অধিক মেক আপ করে এবং অন্য নারীদের তুলনায় অধিক ক্লিভেজ দেখায়। অন্যদিকে পুরুষ নারসিসিস্টরা তাদের মাসল মাস বৃদ্ধিতে (বডিবিল্ডিং) এ অনেক বেশি সময় দেয়।
গবেষণায় দেখা যায়, খুব কম সময়ের জন্য নারসিসিস্টদেরকে অনেক বেশি ওয়েল এডজাস্টেড (খাপ খাইয়ে নিতে পারার ক্ষমতা বেশি থাকা), এন্টারটেইনিং, এবং মোটের উপর অনেক ভাল বলে মনে হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে নারসিসিস্টদের কাছে তার এই ফেভরিট ইমপ্রেশনটিকে মেইনটেইন করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। তাদেককে অনেক কম এডজাস্টেড, অনেক কম ওয়ার্ম বলে মনে হতে শুরু করে এবং অনেক বেশি শত্রুভাবাপন্ন ও অনেক বেশি দাম্ভিক বলে মনে হয়। গবেষণা বলছে নারসিসিস্টদের জন্য লং টার্ম ও কমিটেড রিলেশনশিপ ভাল কাজ করে না।
বিবর্তনবাদ বলে নারসিসিজমের বিবর্তন ঘটেছে শর্ট টার্ম মেটিং এর সিলেকশন প্রেশারের কারণে। নারসিসিস্টদের অবস্থা বুঝে আচরণ পরিবর্তনকে বোঝার জন্য একটি ডাইনামিক সেলফ রেগুলেটরি মডেল প্রস্তুত করা হয়। সেখানে দেখা যায় নারসিসিস্টদের সেলফ বা ব্যক্তিসত্তা কগনিটিভ এন্ড এফেক্টিভ ইন্টারপারসোনাল প্রোসেস এর বিভিন্ন ডাইনামিক ইন্টারেকশন দ্বারা পরিবর্তিত হয়। তাদের মধ্যে বিভিন্ন সেলফ একটি রেগুলেটরি বা নিজেকে পরিবর্তন করার স্ট্র্যাটেজি কাজ করে। তারা অবিরাম বাহ্যিক সেলফ এফারমেশন তৈরির জন্য ছুটতে থাকে। মোটের উপর, একজন নারসিসিস্ট পুরুষ বিবর্তন দ্বারা প্রাপ্ত সেলফ রেগুলেটরি ক্যাপাবিলিটির কারণে নিজেকে, নারীদের মন্ত্রমুগ্ধ করার একটি যন্ত্রে পরিণত করে ফেলতে পারে। আর তার ভেতরের এই বৈশিষ্ট্যটিই তার লং টার্ম রিলেশনশিপ রক্ষার ক্ষেত্রে কাল হয়েদ দাঁড়ায়। একই কারণে তাদেরকে বারবার সম্পর্ক ছেদ ও বারবার নতুন সম্পর্ক তৈরি করতে দেখা যায়।
যাই হোক, নারসিসিস্ট পুরুষদের প্রভাব ছাড়াও কিছু কিছু একজন নারীকে “ব্যাড গাই” এর সাথে ডেট করতে দেখা যেতে পারে। কোন নারীর যদি অতীতে অনেকবার প্রেমের অভিজ্ঞতা থাকে আর তিনি যদি প্রেমজনিত হরমোন প্রভাবিত বিহ্যাভিয়র চেঞ্জিং প্যাটার্নে অভ্যস্ত হয়ে যান তবে তিনি কোন “ব্যাড গাই” এর সাথে প্রেম করার চ্যালেঞ্জ নেয়াটা প্রয়োজনীয় বলে মনে করতে পারেন। আবার হতে পারে তিনি “মেয়েরা ব্যাডবয়দের সাথে প্রেম করতে বেশি পছন্দ করে” এই মিথটিকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন বলেই “ব্যাডবয়”দের সাথে ডেট করতে চান। আরেকটি কারণও থাকতে পারে। প্রেমে পড়লে অনেক হরমোনাল চেঞ্জ হয়, এতে আমাদের মাঝে অনেক বিহ্যাভিওরাল চেঞ্জিং ও আসে। এসব আমরা জানি। কিন্তু একটি বিষয় অনেকের কাছে একটি বিষয় অজানা হতে পারে। সেটা হল, প্রেমে পড়লে যে অনেকগুলো হরমোনের সেক্রেশন শুরু হয় তার মধ্যে দুটি হল করটিসল এবং FSH (ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন)। এই দুইটি হরমোনের প্রভাবে একজন নারীর কাছে কোন পুরুষের সাথে ডেটিং বা কন্টাক্ট ভীষণ স্ট্রেসফুল হয়ে যায় অর্থাৎ এই হরমোনগুলো নারীর মধ্যে এক ধরণের মানষিক চাপ তৈরি করে যার কারণে তিনি একজন ব্যাড বয়কে পার্টনার হিসেবে পছন্দ করার ব্যাড ডিসিশন নিয়ে ফেলতে পারেন। উপরে উল্লিখিত কারণগুলোই নারীর সঙ্গী হিসেবে একজন ব্যাড গাইকে পছন্দ করার মূল কারণ। তবে এগুলোর পরেও গবেষণা ও সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো বলছে নারী ও পুরুষ উভয়েই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নাইস পার্টনারকেই পছন্দ করে এবং ব্যাড পিপলদের থেকে দূরে থাকে।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, “নাইস গাই ফিনিশ লাস্ট” স্টেরিওটাইপটি একটি সোশ্যাল মিথ। এই স্টেরিওটাইপটি সায়েন্টিফিক এভিডেন্সগুলোর একেবারে বিরুদ্ধে যায়। এই স্টেরিওটাইপটি সমাজে ব্যাড গাইদের মাঝে একটি এক্সপেক্টেশন তৈরি করে যেকারণে অনেক পুরুষই মনে করে খারাপ হওয়াটা লাভজনক। অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের মাঝে এই ধারণাটি ইভটিজিং এর বৈধতা দেয়। এধরণের স্টেরিওটাইপ নারীদের সম্পর্কেও পুরুষের মাঝে একটি ভুল ধারণা তৈরি করে, অনেক ক্ষেত্রেই পুরুষকে মিসোজিনিস্ট বা নারীবিদ্বেষী করে তুলতে এই ধরণের স্টেরিওটাইপ সাহায্য করে। দুই একজন নারীকে ব্যাডবয় এর প্রতি আকৃষ্ট হতে দেখে অনেক পুরুষই হতাশায় ভুগতে শুরু করে। আর এরপর তারা দায়ী করে সমগ্র নারীজাতিকে। সুতরাং এই স্টেরিওটাইপটি একজন পুরুষকে নারীবিদ্বেষী করে তুলতে যথেষ্ট।
বেশিরভাগ স্টেরিওটাইপই সমাজের জন্য অনেক ক্ষতিকর হয়ে যায়। একটি ভিন্ন উদাহরণ দেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ বা ব্ল্যাক ম্যাসকুলিনিটির বিরুদ্ধে একটি স্টেরিওটাইপ তৈরি হয়েছে যার ফলে তাদেরকে সোশ্যালি থাগ, ব্যাড, প্লেয়ার ইত্যাদি বলে রিপ্রেজেন্ট করা হয়েছে। এর ফলাফল খুব খারাপ যার প্রভাব পড়েছে গোটা সমাজে। কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদেরকে কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাঁধার সম্মুখীন তো হতে হয়েছেই সেই সাথে প্রভাবিত হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের রিলেশনশিপেও। একটি গবেষণায় উঠে এসেছে ব্ল্যাক ম্যাসকুলিনিটির বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া স্টেরিওটাইপের জন্য কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা ইন্টাররেশিয়াল রিলেশনশিপের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়েছে। অর্থাৎ কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা পূর্বের চেয়ে বেশি শেতাঙ্গ পুরুষের সাথে রিলেশনশিপে জড়াচ্ছে। আমি ইন্টাররেশিয়াল রিলেশনশিপের বিরুদ্ধে বলছি না, এমনকি এটাও বলছিনা যে এই কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের অধিক ইন্টাররেশিয়াল রিলেশনশিপে জড়ানোয় কৃষ্ণাঙ্গ জিনপুলে ঘাটতি দেখা যাবে। কিন্তু এটা বলব যে, এই স্টেরিওটাইপটি একধরণের রেসিজম তৈরি করছে। আরেকটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। যদি নারীরা ব্যাডবয় এর প্রতিই আকৃষ্ট হত তাহলে ব্ল্যাক ম্যাসকুলিনিটির বিরুদ্ধে এই স্টেরিওটাইপটির জন্য কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের ইন্টাররেশিয়াল রিলেশনশিপ তো আরও কমে যাওয়ার কথা। তাই না? যাই হোক, নারীদের এই ব্যাডবয় এর প্রতি আকর্ষণ সম্পর্কিত স্টেরিওটাইপটি সমাজে একধরণের নতুন মিসোজিনি বা নারীবিদ্বেষ তৈরি করছে। স্টেরিওটাইপটি নারীদেরকে বেপরোয়া, চ্যালেঞ্জ প্রিয়, উত্তেজনা প্রিয় ও সেক্স ক্রেজ বলে রিপ্রেজেন্ট করছে। বিভিন্ন এন্টারটেইনিং মিডিয়াতেও নায়কদেরকে তুলনামূলক “ব্যাড” চরিত্রে দেখানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই টিজিং বা ন্যাগিং এর মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হতে দেখা যায়, নারীদেরকেও এরকম চরিত্রকে পছন্দ করতে দেখানো হয়। এগুলো পুরুষদের মনে নারী সম্পর্কে একটি খারাপ দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করছে। সমাজে নারীবিদ্বেষ বৃদ্ধি পেলে নারীর প্রতি অপ্রেশন বা দমনও বৃদ্ধি পাবে। নারীর প্রতি বিদ্বেষ নারীর প্রতি নির্যাতনেরও একট বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এটা অনেক সময় তাই পুরুষদের ইভটিজিং, এমনকি ধর্ষণেও প্রভাবিত করে। বিদ্বেষের ফলে স্বামী-স্ত্রী, প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যবর্তী সম্পর্কেও প্রভাব পড়ে, স্ত্রী ও প্রেমিকার উপর অপ্রেশন বৃদ্ধি পায়।
যাইহোক, গবেষণাগুলো থেকে দেখা যায় পুরুষদের ডিজায়ারেবিলটি রেটিং বাড়াতে হলে “ভাল বা নাইস গাই” হওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফিজিকাল এট্রাক্টিভনেস একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে, কিন্তু সেটাও অনেক ক্ষেত্রেই নারীর কাছে পুরুষের ভাল গুণগুলোর উপর নির্ভর করে। লং টার্ম রিলেশনশিপেরজন্য পুরুষের ভাল হওয়া, ফিজিকাল এট্রাকটিভনেসের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ফিজিকাল এট্রাকটিভনেস ডিজায়ারেবিলিটি রেটিং এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কিন্তু এটা মনে করার কারণ নেই যে ফিজিকালি এট্রাকটিভ পুরুষ ব্যাডবয় হলেও নারীরা তাকে পছন্দ করবে। সুতরাং পুরুষদের উচিৎ “নাইস গাই ফিনিশ লাস্ট” বা “নাইস গাই” স্টেরিওটাইপ থেকে সরে আসা। আর নারীরও উচিৎ ভেবেচিন্তে নারসিসিস্ট পুরুষদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া কারণ প্রথমে তাদেরকে ভাল লাগলেও পরে তা দুঃখের কারণ হতে পারে। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় মনে রাখবেন নারসিসিস্টরাও মানুষ। কেউ এন্টিনারসিসিস্ট হোক এটা আশাব্যাঞ্জক নয়।
গবেষণাপত্র ও সহায়ক প্রবন্ধগুলোর ওয়েবসাইট লিংক:
- http://www.newstatesman.com/blogs/voices/2012/05/negging-latest-dating-trend
- https://broadly.vice.com/en_us/article/why-women-want-to-fuck-bad-boys
- http://evp.sagepub.com/content/14/1/1474704916631615.full#sec-27
- https://www.theguardian.com/science/brain-flapping/2016/may/12/science-hasnt-proved-that-women-go-for-bad-boys
- http://link.springer.com/article/10.1023/A:1025894203368
- http://onlinelibrary.wiley.com/doi/10.1348/000712609X435733/full
- http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0092656699922523
- http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1090513804000066
- http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0092656608000901
- http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0092656609002177
- http://www.tandfonline.com/doi/abs/10.1207/S15327965PLI1204_1
- http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0306453003001616
- https://www.routledge.com/Attraction-Explained-The-science-of-how-we-form-relationships/Swami/p/book/9781138937031
- https://www.theguardian.com/science/brain-flapping/2016/may/12/science-hasnt-proved-that-women-go-for-bad-boys?INTCMP=sfl
- http://muse.jhu.edu/article/474965
- https://theconversation.com/do-women-really-go-for-bad-boys-heres-the-science-that-settles-the-question-59409
-বুনোস্টেগস
Leave a Reply