আপনার নাকটি বাটন নোজ হোক, হুক নোজ হোক আর রোমান নোজই হোক, একটি সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে আপনি আপনার নাকটির আকৃতির জন্য এখন নির্দিষ্ট পাঁচটি জিনের একটি গ্রুপকে দায়ী করতে পারেন। সম্প্রতি নেচার কমিউনিকেশন জার্নালে এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।
যদি এপিয়ারেন্সের বা চেহারার কথা বলা হয় তবে আকার ও আকৃতির দিক দিয়ে মানুষ এই গ্রহের সবচাইতে বৈচিত্র্যময় প্রাণী। আর এই বৈচিত্র্যটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায় আমাদের ফেস বা মুখমণ্ডলে। আর অবশ্যই আমাদের ফেসিয়াল ল্যান্ডস্কেপ বা চেহারার সবচেয়ে লক্ষণীয় অংশগুলোর মধ্যে একটি হল নাক।
মানুষের এই নাকের বৈচিত্র্যে বেশ কিছু ইভোল্যুশনারি এডাপ্টেশন বা বিবর্তনগত অভিযোজনের হাত রয়েছে। যেমন শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য গৃহীত বায়ুর আয়তন ও তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দিষ্ট আকারর নস্ট্রিল বা নাকের ছিদ্রের প্রয়োজন। আসলে মানুষ একে অপরকে চিনতে ঘ্রাণের বদলে দৃষ্টিকে ব্যবহার করে। আর এটাও মানুষের চেহারার বৈচিত্র্যময়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
অদ্ভূতভাবে নাকের গঠন ও আকারে এই ভিন্নতাগুলো নিয়ন্ত্রিত হয় সামান্য কিছু জিনের দ্বারা। এই গবেষণা অনুসারে এই জিনগুলো নাকের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য যেমন নস্ট্রিল বা নাকের ছিদ্রের প্রস্থ, নাকের পয়েন্টিনেস (নাকের চোখা হবার পরিমাপ), নাকের ব্রিজের ইনক্লিনেশন (নাকের ব্রিজ যা নাকের দুই গহ্বরকে আলাদা করে রেখেছে তার ঢাল) ইত্যাদির জন্য দায়ী থাকে।
এই আবিষ্কারটি করার জন্য গবেষকগণ লাতিন আমেরিকার ৬,২৭৫ জন লোকের ফটোগ্রাফ এনালাইসিস করেছেন, এই ফটোগ্রাফগুলোকে সেই লোকগুলোর ডিএনএ স্যাম্পল থেকে প্রাপ্ত জিনোমের সাথে ক্রস রেফারেন্সিং করেছেন বা মিলিয়ে দেখেছেন। গবেষকগণ এই গবেষণায় ১৪টি ভিন্ন ফেসিয়াল ট্রেইট বা মুখমণ্ডলগত বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করেছেন এবং দেখতে চেয়েছেন একই রকমের ফেসিয়াল ট্রেইটের লোকদের মাঝে কোন জেনেটিক সিমিলারিটি বা জিনগত সাদৃশ্য আছে কিনা।
আশ্চর্যজনকভাবে গবেষকগণ ৫টি জিন খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছেন না নাকের বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো বা নেজাল ট্রেইটগুলোর জন্য দায়ী থাকে। যেমন DCHS2 নামে একটি জিন নাকের কার্টিলেজ বা তরুণাস্থির গঠনকে নিয়ন্ত্রণ করে। PAX1 নামে আরেকটি জিন আছে যা নস্ট্রিল বা নাকের ছিদ্রের প্রস্থ কত হবে তা ঠিক করে দেয়। RUNX2 নামের জিনটি নাকের হাড়ের বৃদ্ধির সাথে জড়িত যা নাকের ব্রিজের প্রস্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এই গবেষণাটি ফেসিয়াল ডিফরমেশন বা মুখমণ্ডলের বিকৃতির চিকিৎসায় প্রয়োগ করা যাবে। যেমন ক্যামপোমেলিক ডিসপ্লেসিয়া কন্ডিশনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাত্রার ক্রেনিওফেসিয়াল ডিফেক্ট দেখা যায়। ধারণা করা হয় এই সমস্যার কারণ হল মুখের কার্টিলেজের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় জিনের মিউটেশন। এই গবেষণাটির ফলাফল গবেষকদেরকে এধরণের রোগের চিকিৎসা বের করতে আশার আলো দেখাচ্ছে।
http://www.nature.com/ncomms/2016/160519/ncomms11616/full/ncomms11616.html#discussion
– বুনোস্টেগস
Leave a Reply