ব্যাঙ , কিছু উদ্ভিদ, কিছু পোকা, সাপ, বেজি থেকে শুরু করে অনেক জীবেরই টক্সিন বা বিষের প্রতি প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাধীনভাবে বিবর্তনের দ্বারা ডেভেলপ করেছে একটি অভিন্ন মোলিক্যুলার মেকানিজমের ফলে। এই গবেষণাটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সে। আর এই গবেষণাটি একটা ব্যাপারে সাজেস্ট করছে। আর সেটা হল বিবর্তনের কিছুটা প্রেডিক্টিবিলিটি আছে, অর্থাৎ বিবর্তন সম্পর্কে কিছুটা ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব।
কনভারজেন্ট ইভোল্যুশনের উদাহরণ পাখি, বাদুড়, টেরোসর এর পাখা, ডলফিন ও মাছের দেহের গঠন সহ অনেক জায়গায়ই দেখা যায়। কিন্তু মলিকুলার বা আণবিক লেভেলে কনভারজেন্স এর ডকুমেন্টেড উদাহরণ অনেক কম এবং কিছু নির্দিষ্ট গ্রুপেই তা সীমাবদ্ধ। নতুন এক গবেষণায় লিভারপুল স্কুল অব ট্রপিকাল মেডিসিন এর নিকোলাস কেসওয়েল ও তার সহকর্মীরা প্রাণীজগতের এক বিস্তৃত অংশে কনভারজেন্ট মলিকুলার ইভোল্যুশন খুঁজে পেয়েছেন।
ট্রু টোড, মিল্কউইড, ফক্সগ্লাভ এবং ওলিয়েন্ডার প্ল্যান্টস কার্ডিয়াক গ্লাইকোসাইড টক্সিন প্রস্তুত করে থাকে। এই টক্সিনগুলো মলিকুলার কর্ক হিসেবে কাজ করে যা স্নায়ুর কোষ ঝিল্লীর সোডিয়াম পটাশিয়াম পাম্পকে বন্ধ করে দিতে পারে যার ফলে হার্ট ফেইল করে। যেসকল সরীসৃপ এইসব টোড বা ব্যাঙ খেয়ে বেচে থাকে তারা এই টক্সিনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ডেভলপ করতে পারে যা তারা মিউটেশনের দ্বারা বিবর্তনের ফলে পেয়েছে। আর এই মিউটেশনটি হয়েছে চারটি ভিন্ন লিনিয়েজের সরীসৃপের মধ্যে। যার মধ্যে ৩টি সাপ ও ১টি গিরগিটি। টক্সিন এদের নার্ভ এর ঝিল্লীর সোডিয়াম পটাশিয়াম পাম্প বন্ধ করতে পারে না।
এই কার্ডিয়াক গ্লাইকোসাইড টক্সিনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যাবস্থা একই মোলিকুলার মেকানিজমের মাধ্যমে অনেক পোকা, ব্যাঙ, টোড ইটিং টোড, রোডেন্ট এবং ইউরোপিয়ান হেজহগদের মধ্যেও ডেভলপ করেছে। গবেষকদের দলটি এদের সবার মধ্যে একই রকম পরিবর্তন দেখতে পান। কেসওয়েল বলেন, ‘কোন ইমপেয়ারিং ফাংশন ছাড়া জিনের এরকম রেজিস্টেন্স ডেভেলপ করার চান্স অনেক অল্প যা আমাদের সাজেস্ট করে যে, বিবর্তন হাইলি প্রেডিক্টেবল হতে পারে। যখন সাম্ভাব্য সমাধানের রেঞ্জ যথেষ্ট পরিমাণে লিমিটেড হয়ে যায় তখন বিবর্তন একটি এক্সপেক্টেড পথেই ধাবিত হয়।’
বিএমসি ইভোল্যুশনারি বায়োলজিতে আরেকটি পেপার প্রকাশিত হয়েছে। এখানেও ইভোল্যুশনের প্রেডিক্টেবিলিটি বা ভবিষৎবাণী করার ক্ষমতা সম্পর্কে বলা হয়েছে। এখানে দেখানো হয়েছে যে, ক্লাইমেট চেঞ্জ হলে মরুভূমির আইসোলেটেড এন্ট বা পিঁপড়াদের কলোনীতে বিভিন্ন পপুলেশনের সব রাণীরা তাদের পাখা হারিয়ে ফেলে। এর কারণ হল সেসময় ওড়া খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয় কারণ এতে তাদের মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তথ্যসূত্র:
http://www.iflscience.com/plants-and-animals/toxin-resistance-suggests-evolution-can-be-predictable
Leave a Reply