মানুষের মস্তিষ্ক এবং এর সাথে সম্পর্কিত সাইকোলজিকাল ট্রেইটগুলোর ডেভেলপমেন্টের জন্য কোন জিনিসটি সবচেয়ে বেশি ভূমকা রেখেছে? মানুষের জেনেটিক্স নাকি এনভায়রনমেন্ট কন্ডিশনগুলো যেখানে সে বড় হয়েছিল। ইন্টেলিজেন্স এর বেশিরভাগই কি জন্মগত বৈশিষ্ট্য নাকি এটা জীবনের প্রথম দিকে অর্জিত হয়? Proceedings of the National Academy of Sciences জার্নালে প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণায় শিম্পাঞ্জি ও মানুষের মস্তিষ্কের তুলনা করার মাধ্যমে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। গবেষণাটি বলছে আমাদের মস্তিষ্ক অন্যান্য প্রাইমেট কাজিনের তুলনায় এনভায়রনমেন্ট বা পরিবেশের প্রতি বেশি রেসপন্সিভ হিসেবে বিবর্তিত হয়েছে।
সাইন্টিফিক কমিউনিটিতে নেচার ভার্সেস নার্চার ডিবেট নিয়ে ডিবেট খুব জোড়েসোড়েই চলছে এবং বর্তমানে এখনও এর কোন পরিষ্কার উত্তর নেই। কারণ প্রাথমিক ভাবে, জন্মগত জেনেটিক ক্যারেক্টারিস্টিকগুলোর সাথে সময়ের সাথে মস্তিষ্কের ডেভেলপমেন্ট জনিত বিষয়গুলোর তুলনা করা খুবই কঠিন কাজ। এমন কোন হিউম্যান গ্রুপ নেই যারা কোন না কোন ভাবে মাতা পিতা বা অন্যকোন ভাবে ছোট বেলা থেকে পালিত হয় নি। যদি এরকম কিছু থাকত তবে তার নিঃসঙ্গতার ফলে তার সব জন্মগত ট্রেইট দেখা যেত। আর তারপর এগুলোর সাথে অন্যান্য বাচ্চা যাদেরকে বিভিন্ন পরিবেশে পালন করা হয়েছে তাদের সাথে তুলনা করা যেত।
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার জন্য George Washington University এর গবেষকগণ অর্গানাইজেশন এবং সাইজ এর উপর ভিত্তি করে ২১৮টি মানব মস্তিষ্কের সাথে ২০৬টি শিম্পাঞ্জির মস্তিষ্কের তুলনা করেছেন। এটা করা হয়েছে magnetic resonance imaging (MRI) scanner এর সাহায্যে যা ব্রেইনের রক্তপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করে।
হিউম্যান ব্রেইনগুলো জমজ বা অন্তত আত্মীয়দের মধ্যকার অন্যদিকে শিম্পাঞ্জিদের ব্রেইনগুলো বিভিন্ন ধরণের কিনশিপ যেমন মা, সন্তান-সন্ততি, হাফ সিবলিং ইত্যাদি। এই জিনিসটা গবেষকদের গবেষনার ক্ষেত্রে উভয় ক্ষেত্রেই প্রচুর ভেরিয়েবিলিটি দান্ন করে। প্রায় ৭ মিলিয়ন বছর পূর্বে শিম্পাঞ্জি এবং মানুষের একই পূর্বপুরুষ ছিল। এধরণের গবেষণায় খুব কম সময়ে (ইভোল্যুশনারি টাইম এর কথা চিন্তা করলে) বিচ্ছিন্ন হওয়া এই ইন্টেলিজেন্ট প্রাণীগুলো তুলনা হিসেবে খুব ভাল।
শিম্পাঞ্জি ও মানুষ উভয়ের ব্রেইনই যথেষ্ট “প্লাস্টিক” অর্থাৎ উভয় ব্রেইনই নতুন স্টিমুলি এবং এনভায়রনমেন্টাল কন্ডিশনগুলোতে এডাপ্ট করতে পারে বা অভ্যস্ত হতে পারে এবং কোন পূর্বের জ্ঞান ছাড়াই নতুন জিনিস শিখে নিতে পারে। ধরে নেয়া হয় এই উচ্চ মাত্রার প্লাস্টিসিটি ব্রেইনের sulci (ব্রেইনের ভাঁজগুলো) এর ডেভলপমেন্ট এর সাথে শক্তিশালীভাবে সম্পর্কিত। এই ভাঁজগুলো জন্মের অনেক পরে বৃদ্ধি পায় এবং অর্গানাইজড হয়।
যদিও এই দুই স্পিসিজের ফ্যামিলি মেম্বারদের ওভারল ব্রেইন সাইজের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য ছিল না, মানুষের নিকট আত্মীয়দের মধ্যকার ব্রেইনগুলোর sulci এর ভেরিয়েশন, শিম্পাঞ্জিদের নিকট আত্মীয়দের ব্রেইন এর sulci এর ভেরিয়েশনের চাইতে অনেক বেশি ছিল। এটা নির্দেশ করে যে, শিম্পাঞ্জিদের নতুন স্কিল শেখা এবং নতুন সিচুয়েশনে নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষমতা মানুষের চেয়ে কম।
পেপারটির লিড অথর এবং GW Center for the Advanced Study of Human Paleobiology এর পোস্ট ডক্টরাল সাইন্টিস্ট Aida Gómez-Robles বলেন “আমরা আবিষ্কার করেছি, শিম্পাঞ্জিদের ব্রেইনের এনাটমি মানুষের ব্রেইনের এনাটমির চেয়ে জিন দ্বারা অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত হয়। এটা সাজেস্ট করে, হিউম্যান ব্রেইনের জেনেটিক্স যাই হোক না কেন, পরিবেশ দ্বারা আমাদের ব্রেইন অনেক বেশি পরিমাণেই শেপড হয়।”
হয়তো আমাদের ইভোল্যুশনারি অতীতের ব্রেইনের প্লাস্টিসিটির উন্নয়নই আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে অন্যান্য প্রাইমেট কাজিনদের তুলনায় বেশি পরিমাণে এডাপ্টেবল ইন্টেলিজেন্স দিয়েছে।
Leave a Reply