কোরীয় উপদ্বীপ কি একটি নতুন যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে?

গত সপ্তাহে আন্তঃকোরীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। পিয়ংইয়ং একটি গুপ্তচর উপগ্রহ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে এটি শুরু হয়েছিল, যার ফলে দক্ষিণ কোরিয়া ২০১৮ সালের একটি চুক্তি স্থগিত করেছিল, যে চুক্তিটি ছিল তাদের অভিন্ন সীমান্তে একটি নো-ফ্লাই জোন প্রতিষ্ঠা করা নিয়ে। এই সিদ্ধান্ত দক্ষিণ কোরিয়াকে সীমান্তের কাছে সার্ভেইলেন্স ফ্লাইট পুনরায় চালু করার দিকে নিয়ে যায়। জবাবে, উত্তর কোরিয়া এখন চুক্তিটি পুরোপুরি পরিত্যাগ করার হুমকি দিচ্ছে এবং ডিমিলিটারাইজেশন লাইনে লাইভ ফায়ার মহড়া চালানোর কথা বিবেচনা করছে। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক সক্ষমতার কারণে এই উত্তেজনা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। এই লেখাটিতে নো-ফ্লাই জোন চুক্তি স্থগিত করার প্রভাবগুলি পরীক্ষা করা হবে, এর তাৎপর্য মূল্যায়ন করা হবে, এবং উত্তর কোরিয়ার বর্তমান শাসনের অধীনে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে আগ্রাসী পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা অন্বেষণ করা হবে।

আন্তঃকোরীয় সম্পর্কের একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস একটি অভিন্ন ভাষা এবং ঐতিহ্যমণ্ডিত, তবুও এটি একটি দ্বন্দ্ব এবং বিভাজনে ভরা সম্পর্ক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে, কোরিয়া দুটি অঞ্চলে বিভক্ত ছিল: সোভিয়েত প্রভাবের অধীনে উত্তর এবং মার্কিন প্রভাবের অধীনে দক্ষিণ। ১৯৪৮ সালের মধ্যে তারা পৃথক দেশ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল। কোরীয় যুদ্ধ শুরু হয় ১৯৫০ সালে যখন স্ট্যালিন ও মাও সমর্থিত উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করে। তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধটি ১৯৫৩ সালে একটি যুদ্ধবিরতি মাধ্যমে শেষ হয়েছিল, তবে কোনও আনুষ্ঠানিক শান্তি চুক্তি হয়নি বলে দেশ দুটি এখনও টেকনিক্যালি যুদ্ধেই রয়েছে।

যুদ্ধবিরতির ফলে ডিমিলিটারাইজড জোন (ডিএমজেড) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এটি একটি ১৬০ মাইল দীর্ঘ ও ২.৫ মাইল প্রশস্ত সীমান্ত যা কোরীয় উপদ্বীপকে বিভক্ত করেছে। উত্তর কোরিয়া, চীন এবং ইউএন দ্বারা নির্মিত, ডিএমজেড বিশ্বের সবচেয়ে ভারী সুরক্ষিত সীমান্ত, যা আরও সামরিক সংঘর্ষ প্রতিরোধের জন্য বাফার হিসাবে কাজ করে। ১৯৫৩ সাল থেকে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা এবং কখনো কখনো কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যে ওঠানামা করেছে, যা মূলত দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক পরিবেশ দ্বারাই প্রভাবিত হয়। সাম্প্রতিক ঘটনাবলী কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ও সংঘাতের সূক্ষ্ম ভারসাম্যের সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। নো-ফ্লাই জোন চুক্তি স্থগিতকরণ এবং পরবর্তীতে উত্তর কোরিয়ার হুমকি এই অঞ্চলে চলমান অস্থিতিশীলতাকে তুলে ধরে। দুই কোরিয়ার মধ্যে ভবিষ্যতের মিথস্ক্রিয়া অনুমান এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য বিস্তৃত প্রভাবগুলি মূল্যায়নের জন্য এই ব্যাপারগুলো বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টাগুলিতে বছরের পর বছর ধরে অগ্রগতি এবং ব্যর্থতা উভয়ই দেখা যায়। ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ২০-এর দশকের গোড়ার দিকে কিম দাই-জুংয়ের অধীনে দক্ষিণ কোরিয়ার সানশাইন নীতির মতো উদ্যোগগুলি এক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছিল, যার ফলে একাধিক আন্তঃকোরীয় শীর্ষ সম্মেলন সংঘটিত হয়েছিল। তবে উত্তেজনা সর্বদাই বৃদ্ধি পেয়েছে ও তা উপদ্বীপের ভঙ্গুর শান্তিকে প্রভাবিত করেছে।

দুই দেশের মধ্যকার বিতর্কের মূল উৎসের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া নিয়ে উত্তর কোরিয়ার অসন্তুষ্টি এবং উত্তর কোরিয়ার ঘন ঘন পারমাণবিক পরীক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্বেগ। ২০১০ সালে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল উত্তর কোরিয়ার জলসীমার কাছে দক্ষিণ কোরিয়ার জাহাজ আরকেএস চিওনান ডুবে যাওয়া, যার ফলে ৪৬ জন নাবিক মারা যান। জয়েন্ট সিভিল-মিলিটারি ইনভেস্টিগেশন গ্রুপ এই হামলার জন্য উত্তর কোরিয়ার একটি সাবমেরিনকে দায়ী করেছে, যা উত্তর কোরিয়া ধারাবাহিকভাবে অস্বীকার করে আসছে। একই বছরের শেষের দিকে, উত্তর কোরিয়ার ইয়োনপিয়ং দ্বীপে গোলাবর্ষণে দুই জন মেরিন এবং দুজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়, যা ১৯৫৩ সালে কোরিয়ান যুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকে শত্রুতার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি চিহ্নিত করে।

২০১৮ সালে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন এবং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ঐতিহাসিক শীর্ষ বৈঠকের মাধ্যমে একটি কূটনৈতিক অগ্রগতি ঘটে। ২০১৭ সালে দায়িত্ব গ্রহণ করা মুন সংলাপ এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করে শান্তিপূর্ণ সমৃদ্ধি নীতির পক্ষে ছিলেন। ২০১৮ সালের নো-ফ্লাই জোন চুক্তিটি একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন ছিল, যা কোরীয় উপদ্বীপে যুদ্ধের অবসান এবং শান্তির একটি নতুন যুগের সূচনা ঘোষণা করে। এই অঙ্গীকারকে দৃঢ় করতে উভয় কোরিয়া সীমান্তের কাছে সামরিক মহড়া বন্ধ করতে, নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় লাইভ ফায়ার অনুশীলন থেকে বিরত থাকতে, নো-ফ্লাই জোন স্থাপন করতে, কিছু সীমান্ত রক্ষী পোস্ট অপসারণ করতে এবং হটলাইনের মাধ্যমে যোগাযোগ বাড়াতে সম্মত হয়।

এই প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, উত্তেজনা পুনরায় দেখা দিয়েছে এবং ২০২৩ সালের শুরু থেকে আরও খারাপ হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে এবং অক্টোবরের শুরুতে একটি নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এর সন্ধান পায়। এই চলমান অস্থিরতা কোরীয় উপদ্বীপে সম্পর্কের জটিল এবং গতিশীল প্রকৃতিকে প্রতিফলিত করে, যেখানে কূটনৈতিক লাভগুলি প্রায়শই নতুন সামরিক উস্কানি দ্বারা চ্যালেঞ্জ এর মুখে পড়ে।

বৈশ্বিক উত্তেজনা বাড়ার সাথে সাথে উত্তর-পূর্ব এশীয় অঞ্চলটি রাশিয়া ও চীনের সাথে স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী জোটের দিকে ঝুঁকছে। এই ভূ-রাজনৈতিক পুনর্বিন্যাস আন্তঃকোরীয় উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে, বিশেষত উত্তর কোরিয়া তার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে রাশিয়ার সহায়তার বিনিময়ে মিউনিশন সরবরাহ করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সংঘাতে রাশিয়াকে সহায়তা করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সোক-ইয়োল ইউএন-এ এই ইস্যুতে বক্তব্য রাখার সময় বৈশ্বিক শান্তি রক্ষণাবেক্ষণ এর ম্যান্ডেট গ্রহণ করা ইউএন এর নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরাষ্ট্র রাশিয়ার মতো একটি দেশের ইউএন ডিরেক্টিভসমূহকে বারবার লঙ্ঘন করা দেশ উত্তর কোরিয়াকে সহযোগিতা করার ব্যাপারটিকে প্যারাডক্স বলে আখ্যায়িত করে এর সমালোচনা করেন।

মধ্যপ্রাচ্য সংকট কোরীয় উপদ্বীপের নিরাপত্তা উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে উত্তর কোরিয়ার সাথে ভবিষ্যতে সম্ভাব্য সংঘাত সীমান্ত টপকে হামাসের স্টাইলের আক্রমণের অনুরূপ হতে পারে। এই ক্রমবর্ধমান হুমকির প্রতিক্রিয়ায়, দক্ষিণ কোরিয়ার নবনিযুক্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েলের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, বিশেষত ৭ অক্টোবরের ঘটনার পরে উত্তর কোরিয়ার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য সার্ভেইলেন্স ড্রোন ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন। পরবর্তীতে, সিউল তার প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ইসরায়েলের আয়রন ডোমের অনুরূপ একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করছে বলে ঘোষণা করেছে। এদিকে, উত্তর কোরিয়া ডিমিলিটারাইজড জোন (ডিএমজেড) বরাবর তার গার্ড পোস্ট জোরদার করে তার সামরিক অবস্থান জোরদার করেছে।

এই সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং সাম্প্রতিক ঘটনাবলী কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করে : আরও উত্তেজনা বৃদ্ধির সম্ভাবনা কেমন?প্রস্তাবিত নো-ফ্লাই জোন বাস্তবায়ন ব্যর্থ হলে পরিস্থিতি কোন দিকে মোর নিতে পারে? উত্তর কোরিয়া কি দক্ষিণে হামলা চালাতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরগুলোর উল্লেখযোগ্যভাবে নির্ভর করে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতৃত্বের ওপর। বর্তমান দক্ষিণ কোরিয়ার প্রশাসন তার পূর্বসূরিদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, সামরিক শক্তি এবং প্রতিরোধকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার আগ্রাসন মোকাবেলার লক্ষ্যে এই কৌশলটি সম্ভাব্য সামরিক সম্পৃক্ততার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। উদ্ভূত পরিস্থিতি আঞ্চলিক জোট, অভ্যন্তরীণ নীতি এবং নিরাপত্তা কৌশলগুলির মধ্যে জটিল পারস্পরিক ক্রিয়াকে তুলে ধরে, আন্তঃকোরীয় সম্পর্কের ভবিষ্যত এবং এই অঞ্চলের বৃহত্তর স্থিতিশীলতাকে নির্ধারিত করে।

দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি সাবেক প্রেসিডেন্ট মুনের আরও নিষ্ক্রিয় অবস্থানের বিপরীতে উত্তর কোরিয়ার সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে ইঙ্গিত করে, যা ২০১০ সালের দ্বীপে গোলাবর্ষণ এবং আরকেএস চেওনান ডুবে যাওয়ার মতো অতীতের ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এই উদ্বেগ সত্ত্বেও, সহিংস সংঘাত বা একটি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধের সম্ভাবনা কমই। ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি ইঙ্গিত দেয় যে উভয় কোরিয়ার চলমান সামরিক অবস্থান আক্রমণের তুলনায় বেশি প্রতিরোধমূলক।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়া কয়েক দশক ধরে যুদ্ধের ঝুঁকি হ্রাস করতে এবং উত্তর কোরিয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলি পরিচালনা করতে সহযোগিতা করেছে, ও তারা জোর দিয়ে বলেছে যে দক্ষিণের বিরুদ্ধে যে কোনও আগ্রাসন কিম জং উনের শাসনের অবসান ঘটাবে। এই প্রতিরোধ কৌশল বা ডেটারেন্স স্ট্র্যাটেজিটি এই দুই রাষ্ট্রের দ্বারা আক্রমণের বদলে আত্ম-সংরক্ষণের অগ্রাধিকারকে ইঙ্গিত করে। যাইহোক, নো-ফ্লাই জোনের অনুপস্থিতি দুর্ঘটনাজনিত যুদ্ধ-পরিস্থিতি সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়ায়। উপরন্তু, রাশিয়া, চীন এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে উদীয়মান জোট কোরীয় উপদ্বীপের ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যকে অস্থিতিশীল করতে পারে, যা ১৯৫০ এর দশকের কোরিয়ান যুদ্ধের গতিশীলতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

তদুপরি, তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনা এবং দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধের মতো আরও বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক ইস্যু সম্ভাব্য ফ্ল্যাশপয়েন্ট উপস্থাপন করে যা দ্রুত বৃহত্তর ভূ-রাজনৈতিক সংকটে বিকশিত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, উত্তর কোরিয়া, চীনের মিত্র হিসাবে, আঞ্চলিক জোটের অংশ হিসেবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।

সংক্ষেপে বলতে গেলে, নো-ফ্লাই জোনের স্থগিতাদেশ অনিচ্ছাকৃত সামরিক সংঘর্ষের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে, তবে সরাসরি যুদ্ধ বা আঞ্চলিক সংযুক্তির সম্ভাবনা এখানে কমই। কোরীয় যুদ্ধের সমাপ্তির পর আন্তঃকোরীয় সম্পর্ক তখনকার অবস্থা থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূলত অপরিবর্তিতই।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.