গবেষকগণ স্কিন সেলকে ব্রেইন সেল এবং হার্ট টিস্যুতে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছেন

02.05 skin cells reprogrammed.jpg

সঠিক ঘনত্ব এবং সঠিক নিয়মে কিছু ড্রাগের মিশ্রণ কোষে প্রয়োগ করে গবেষকগণ সম্প্রতি মানুষের স্কিন সেল বা চামড়ার কোষকে হার্টবিট দেয়া হৃদবেশি বা হার্ট টিস্যু তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এটার জন্য তারা স্কিন সেলে কোন অতিরিক্ত জিন  প্রয়োগ করেননি এবং স্টেম সেল থেকে যেকোন কোষ তৈরি করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপও বাদ দিয়ে গেছেন, যেটাকে টিস্যু রিজেনারেশনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে মনে করা হত। শুধু তাই নয়, অন্য একটি গবেষণায় গবেষকদের এই দলটিই ইঁদুরের স্কিন থেকে একই পদ্ধতিতে ব্রেইন সেল বা মস্তিষ্কের কোষ তৈরি করতেও সক্ষম হয়েছে।

সান ফ্রান্সিসকো এর গ্ল্যাডস্টোন ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ প্রতিষ্ঠানটিতে শেং ডিং এর নেতৃত্বে গবেষকরা কাজ করেন। তারা আশা করছেন, যারা কার্ডিয়াক এরেস্টে ভুগছেন তাদের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে টিস্যুর রিজেনারেশনের বা পুনরাবির্ভাবের জন্য এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করা যাবে। এই পদ্ধতিতে রোগীর থেকে নেয়া কোষের জেনেটিকালি ইঞ্জিনিয়ারিং করার প্রয়োজন হবে না, কেবল বিভিন্ন ড্রাগের মিশ্রণ প্রয়োগ করলেই হবে। এই পদ্ধতিটিই স্যালাম্যান্ডার নামক প্রাণী প্রাকৃতিকভাবে তাদের ক্ষতস্থান সাড়াতে ব্যবহার করে।

শেং ডিং জানান, এই পদ্ধতির দ্বারা একদিন ড্রাগ ব্যবহার করেই হার্ট ফেইলিয়র ও পারকিনসন ডিজিসের মত জটিল রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব হবে যেখানে হার্ট ও ব্রেইনের ক্ষতিগ্রস্থ স্থানে টিস্যুগুলো রিজেনারেট করবে বা নতুন করে তৈরি হবে। এই পদ্ধতিটি স্যালাম্যান্ডার ও নিউটদের নেচারাল রিজেনারেশন পদ্ধতির মতই যা আমাদের অনেক দিন থেকেই অবাক করে আসছে।

পূর্বের অনেক গবেষণাতেও স্কিন সেল ব্যবহার করে টিস্যু রিজেনারেশন করা হয়েছে। কিন্তু গবেষকগণ বলছেন এই নতুন টেকনিকটি আরও বেশি কার্যকরী এবং বিশ্বাসযোগ্য এবং এই টেকনিকে স্কিন সেলে নতুন জিন ব্যবহার করা এবং স্টেম সেলে পরিণত করা লাগে না।

প্রথম পেপারটি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে যেখানে হিউম্যান স্কিন সেলকে হৃদপেশির কোষে পরিণত করার ব্যাখ্যা দেয়া আছে। এক্ষেত্রে নয়টি রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণে স্কিন সেলগুলো রেখে এগুলোর জিনগুলোকে টার্ন অফ বা বন্ধ করা হয়। এরপর কিছু গ্রোথ হরমোনের মিশ্রণ প্রয়োগ করা হয় যেগুলো সেই কোষগুলোকে হার্ট এর মাসল সেলে পরিণত করে। এতে স্কিন সেলগুলোর ৯৭ শতাংশ কোষই সফলভাবে হৃদপেশির কোষে পরিণত হতে শুরু করে যেগুলো হার্ট বিট তৈরিতে সক্ষম। গবেষকগণ এই রূপান্তরিত কোষগুলো দিয়ে ইঁদুরের হার্টও তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

ব্রেইন সেলগুলোকেও একইভাবে তৈরি করা হয়েছে। এই রেজাল্টটি সেল স্টেম সেল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। দশ দিনের মধ্যেই গবেষকগণ ইঁদুরের স্কিনসেলগুলোর জিন অফ করে দিতে সক্ষম হন। এরপর এগুলোকে যখন ইঁদুরটির ব্রেইনে প্রতিস্থাপিত করা হয় তখন তারা তিনটি প্রধান ব্রেইন সেল টাইপ তৈরি করে। এই টাইপগুলো হল নিউরন, অলিগোডেন্ড্রোসাইট এবং এস্ট্রোসাইট। গবেষকগণ দাবী করছেন, একদিন হয়তো এই প্রক্রিয়াটির দ্বারাই ব্রেইন ইনজুরি এবং পারকিনসনস ডিজিসের মত নিউরোলজিকাল ডিজর্ডারগুলোর চিকিৎসা করা যাবে যেখনে এই রোগগুলোর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলো পুনরায় তৈরি হবে এবং রোগী সুস্থ হয়ে যাবেন।

http://science.sciencemag.org/content/early/2016/04/29/science.aaf1502

http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1934590916300091

– ভেলোসিটি হেড

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.