স্পাইডার বা মাকড়সা হল প্রকৃতির সর্বোত্তম ডিজাইনার এবং সবচেয়ে দক্ষ আর্কিটেক্ট। আর তাই এতে অবাক হবার কিছু নেই যে থ্রিডি প্রিন্টিং এর সর্বাধুনিক টেকনোলজিটি যদি এই মাকড়সা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় তাহলে অবাক হবার কিছু নেই। সিমেন্স এর গবেষকগণ তাদের নিউজার্সির প্রিন্সটন ল্যাবে SiSpis বা সিমেন্স স্পাইডার (Siemens Spiders) নামের এই রোবটগুলো ডিজাইন করেছেন। এই রোবটগুলোতে আশেপাশের পরিবেশকে বোঝার জন্য ক্যামেরা এবং লেজার স্ক্যানার যুক্ত থাকে। এরা প্রয়োজন মত জায়গা পরিবর্তন করে এবং কর্ন স্টার্চ ও ইক্ষু দিয়ে তৈরি প্লাস্টিকের মত পদার্থ দিয়ে প্রিন্টিং লেয়ার তৈরি করে। এদের মেকানিজম অনেকটাই প্রচলিত থ্রিডি প্রিন্টারগুলোর মতই কিন্তু এদের ফ্লেক্সিবিলিটি এবং নির্ভুলতা সেগুলোর চাইতেও আরও অনেক বেশি।
মাকড়সারা একত্রে দলবদ্ধ হয়েও কাজ করতে পারে। প্রত্যেকটি মাকড়সা আলাদা আলাদা ছোট ছোট কাজ করতে সক্ষম। এলগরিদম এবং কম্পিউটার টেকনোলজি ব্যাবহার করে তারা পরিকল্পনা করতে এবং একে অপরের সহায়তায় কাজ করতে পারে।
শুধু তাই নয়, তারা বিভিন্ন শিফটেও কাজ করতে পারে। সিমেন্স তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, “যখন দুই ঘণ্টা পর এদের ব্যাটারি লো হয়ে যায়, তখন একটি সিমেন্স স্পাইডার চার্জিং স্টেশনে চলে যায়। কিন্তু যাবার আগে সে আরেকটি সিমেন্স স্পাইডারকে তার উপর আরোপিত হওয়া কাজটির ডেটা ট্রান্সফার করে। আর এতে পরের স্পাইডারটি পূর্বের স্পাইডারটির ফেলে যাওয়া কাজটিকে আবার সেখান থেকে ধরতে পারে”।
এই মুহূর্তে এই স্পাইডার রোবটগুলো কেবলই সরল আকৃতির বস্তু তৈরিতে সক্ষম। কিন্তু দলটি বলেছে, এটা কেবলই সূচনা। ধীরেধীরে মেশিনের লার্নিং টেকনোলজির আরও উন্নতি ঘটলে, এই রোবটগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাবে এবং মানুষের কোনরূপ সহায়তা ছাড়াই কাজ করতে সক্ষম হবে।
এটা নিয়ে আরও অনেক গবেষণা করা দরকার। কিন্তু ভবিষ্যতে নির্মান এবং মেনুফ্যাকচারিং এর কাজ এই চলমান এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ রোবটের উপরেই নির্ভর করবে। গবেষকগণ বলছেন, এই রোবটগুলো হবে শিল্প কারখানার কর্মীদের একটি নতুন প্রজাতি যারা উড়োজাহাজ, গাড়ি, জাহাজের মত বৃহৎ ও জটিল পন্যও তৈরি করতে পারবে।
প্রোজেক্ট লিডার হাসান সিনান ব্যাংক্স বলে, “এই টেকনোলজিটি একবার উন্নত হয়ে গেলে, একে প্রায় সবকিছুতেই প্রয়োগ করা সম্ভব হবে”।
http://www.siemens.com/innovation/en/home/pictures-of-the-future/digitalization-and-software/autonomous-systems-siemens-research-usa.html
– ভেলোসিটি হেড
Leave a Reply