কেন আপনি পাঁচজনের বেশি ঘনিষ্ট বন্ধু রাখতে পারবেন না

five friends_0

সোশ্যাল ব্রেইন হাইপোথিসিজ নামে একটি হাইপোথিসিজ আছে যেটা বলে একজন ব্যক্তি পাঁচজনের বেশি মানুষের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রাখতে পারে না। সম্প্রতি arXiv জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাও সেই কথাই বলছে।

সত্তরের দশকে সোশ্যাল ব্রেইন হাইপোথিসিজটিকে প্রস্তাব করা হয়। এই হাইপোথিসিজটির মৌলিক প্রতিজ্ঞাটি ছিল প্রাইমেটদের মস্তিষ্ক একটি নির্দিষ্ট আকার পর্যন্ত ডেভেলপ করেছে যাতে এটি একটি বড় সোশ্যাল গ্রুপে থাকার স্ট্রেস বা চাপ গ্রহণ করতে পারে। এই সোশ্যাল গ্রুপে অনেকগুলো ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরির প্রয়োজন। কিন্তু এই সম্পর্কগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্কগুলো সাধারণত বেশ কিছু ইমোশনাল ব্যাগেজ বা আবেগজনিত বোঝা তৈরি করে থাকে। আর তাই মাত্র কিছু সংখ্যক সত্যিকারের ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরি করাই সম্ভব হয়ে ওঠে যেখানে অন্যান্য বন্ধুদেরকে চলে যেতে হয় পেছনের সারিতে।

এই কনসেপ্টের উপর ভিত্তি করে সাম্প্রতিক বছরগুলোর ফেসবুক ও টুইটারের ডেটা এনালাইসিস করে গবেষকগণ হিউম্যান সোশ্যাল নেটওয়ার্কের একটি মডেল প্রস্তুত করেছে। এই মডেলটি চারটি ডানবার লেয়ার বা ডানবারের স্তর (“Dunbar layers”) নিয়ে গঠিত। এই স্তর চারটির সবচেয়ে ভেতরের স্তরটি ব্যক্তির সবচাইতে কাছের বন্ধুদেরকে রিপ্রেজেন্ট করে। এই সবচাইতে কাছের বা ঘনিষ্ট বন্ধুর সংখ্যা গড়ে পাঁচ জন। অন্যান্য স্তরগুলোতে বন্ধুর সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকে। কিন্তু স্তর বাড়ার সাথে সাথে ইমোশনাল ক্লোজনেস বা আবেগজনিত ঘনিষ্টতাও কমতে থাকে। চারটি স্তরে মোট বন্ধু সংখ্যা ১৫০ পর্যন্ত হয়ে যায়।

ধারণাটির সত্যতা যাচাই এর জন্য রবিন ডানবার সহ গবেষকদের একটি দল গবেষণা শুরু করেন। তারা ২০০৭ সাল থেকে ইউরোপের আনডিসক্লোজড দেশগুলোর প্রত্যেকটি ফোনকল এনালাইজ করেছেন। এক্ষেত্রে তারা ফোনকলের সংখ্যাকে ঘনিষ্টতার সমানুপাতিক ধরে নিয়েছেন। এর দ্বারা তারা সেই ডানবারের লেয়ারটি পর্যবেক্ষণ করা উপাত্তের সাথে মেলে কিনা দেখতে চেয়েছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, এই টেলিফোনিক ইন্টারেকশন বা ফোনে যোগাযোগ দ্বারা কেবল লেয়ারগুলো সনাক্তই করা যায় নি, সেই সাথে সেই লেয়ারগুলোর মানুষের সংখ্যাও পূর্বের ডানবারের লেয়ারের প্রস্তাবের সাথে অনেকটাই মিলে গেছে। যেমন এখানে খুবই ঘনিষ্ট বন্ধুর সংখ্যা পাওয়া গেছে ৪.১ জন যারা সাধারণ বন্ধুদের চেয়ে অনেক বেশি ঘনিষ্ট। আর চারটি লেয়ারে মোট বন্ধু সংখ্যা পাওয়া গেছে ১২৮.৯ জন।

এই গবেষণাটি দেখে গবেষকগণ বলেন, ডানবারের মডেলটি হিউম্যান সোশ্যাল রিলেশনশিপকে সঠিকভাবে প্রতিনিধিত্ব করে। যদিও তারা বলেছেন, “আমাদের এখনও কোন ব্যাখ্যা নেই কেন ডানবারের এই স্ট্রাকচারাল লেয়ারগুলো এরকম প্যাটার্ন অনুসারে চলে”।

Click to access 1604.02400v1.pdf

http://rspb.royalsocietypublishing.org/content/274/1624/2429.short

– ভেলোসিটি হেড

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.




This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.