গত এক মাস বা তারও বেশি সময় ধরে, রাশিয়ান সেনাবাহিনীর জন্য পরিস্থিতি সত্যিই খারাপের দিকে গেছে। ইউক্রেনীয় বাহিনী হাজার হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে, যেগুলোর বেশিরভাগই খারকিভের কাছাকাছি উত্তরে। এই হিসেবে রাশিয়ার মনোবল দৃশ্যত সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। তবে, যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি, এবং রাশিয়ান সেনাবাহিনী এখনও ডনবাস এবং ইউক্রেনের দক্ষিণ উপকূলের বেশিরভাগ অংশ দখল করে রেখেছে। যুদ্ধের ময়দানে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক সাফল্যের প্রতি পুতিন কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবেন তা জানার জন্য বিশ্বের নিউজ এজেন্সিগুলো এরপর অবিরাম জল্পনা-কল্পনা নিয়েই পুতিনের দিকে ফোকাস করে আসছিল। এরপর অনেক বিলম্বের পর ২১ সেপ্টেম্বর, বুধবার সকালে পুতিন অবশেষে সমস্ত প্রধান রাশিয়ান নিউজ নেটওয়ার্কে সম্প্রচারিত একটি পূর্বে রেকর্ড করা বক্তৃতায় তার প্রতিক্রিয়া ঘোষণা করেন। ভাষণে পুতিন আসলে যা বলেছেন এবং যে পদক্ষেপগুলো ঘোষণা করা হয়েছে তা নিয়ে, এবং এগুলো আসলেই রুশ সেনাবাহিনীকে সাহায্য করবে কি না তা নিয়েই এই আলোচনা।
এই আলোচনায় প্রবেশ করার আগে, যুদ্ধক্ষেত্রের সবচেয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলি একটু রিভিশন করে নেয়া যাক। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনীয় বাহিনী খারকিভে দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করেছে। খারকিভের ওস্কিল (Oskil) নদীতে এবং লিউহাক্সের (Lieuhux) সিভারস্কি দোনেটস (Siverskyi Donets) নদীর তীরে নতুন ফ্রন্ট লাইনগুলি স্থিতিশীল হয়েছে। তবে এরপরও ইউক্রেনীয় বাহিনী সেভেরোডোনেটস্ক (Severodonetsk) বরাবর আরও অগ্রগতি অর্জন করেছে ও লাইম্যানের (Lyman) উভয় পাশে অঞ্চল গ্রহণ করেছে, সেই সাথে এখন এরা মূলত এই অঞ্চলগুলোকে ঘিরে রয়েছে। এখান থেকে, ইউক্রেনীয়দের মূলত দুটি বিকল্প রয়েছে। একটি হলো, তারা নদীর তীর বরাবর পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে, যা পূর্বে রাশিয়ান অভিযানের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এই অভিযানের উদ্দেশ্য হলো মূলত জুনের শেষের দিকে রাশিয়ান বাহিনী যে দুটি শহর লাইসিচানস্ক (Lysychansk) এবং সেভেরোডোনেটস্কের (Severodonetsk) দখল করেছিল, সেগুলো পুনর্দখল করা। অন্য অপশন হচ্ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী উত্তর লুহানস্কের (northern Luhansk) আরও গভীরে চলে যেতে পারে, যেখানে রাশিয়ান বাহিনী কম সংখ্যায় আছে, সেক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় বাহিনী ভালুইকি (Valuyki) থেকে লুহানস্ক শহরে আসা রেলপথটি কব্জা করার লক্ষ্য গ্রহণ করবে। আর এই অপশনটিই বেশি প্রলুব্ধকর হতে পারে। কেন সেটা ব্যাখ্যা করা যাক। ইউক্রেনীয়রা কয়েক সপ্তাহ আগে কুপ’ইয়ানস্ক (Kup’yans’k) দখল করেছিল, যার ফলে ডনবাস এবং রাশিয়ার বেলগোরোদ শহরে রাশিয়ান বাহিনীর মধ্যে কোনও রকম রেল ট্রানজিট এতে বাধাগ্রুস্ত হয়। এর ফলে এখন এই আলোচ্য রেলপথটিই ডনবাসে রাশিয়ান বাহিনীর প্রাথমিক সাপ্লাই রুট হয়ে উঠেছে। যদি ইউক্রেনীয়রা এটিতে পৌঁছাতে পারে, তবে শেষ দুটি ইউক্রেনীয় হোল্ডআউট, ক্রেমাটোরস্ক (Kramatorsk) এবং স্লোভিয়ানস্কের (Slovyansk) দিকে ধেয়ে আসা রাশিয়ান বাহিনীর সাপ্লাই লাইনগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। তবে মনে হচ্ছে, ইউক্রেইন এই অপশনটা না নিয়ে প্রথম অপশনটাই নিচ্ছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত দেখা যায় ইউক্রেনীয় বাহিনী ইয়াম্পিল (Yampil) এবং বিলোহরোভকা (Bilohorovka) শহরগুলোর রাশিয়ান ডিফেন্সের ওপর আক্রমণ করেছে। দখল করে নিয়েছে, এদের মধ্যে শেষেরটি লাইসিচানস্ক (Lysychansk) থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে। বুধবারে রাশিয়ান মিলব্লগার বা যুদ্ধলেখকরা উল্লেখ করেছে যে ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনও ইয়াম্পিলে যুদ্ধ করছে, সেই সাথে লাইমেনের উত্তর পশ্চিমে দ্রোভিশেভেতেও (Drobysheve) যুদ্ধ চলছে। এই খবরটাকে এখনও ভেরিফাই করা না গেলেও সোমবারে জানা ঘটনাগুলোর সাথে এটা কনসিস্টেন্ট।
দক্ষিণেও রাশিয়ান বাহিনীর অবস্থা ভাল না। মঙ্গল ও বুধবারের জিওলোকেটেড ফুটেজ দেখাচ্ছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী খেরসন শহরে একটি ফ্যাক্টরি, সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট, একটি রাশিয়ান বেইস, একটি ফেরিতে আক্রমণ করেছে। সেই সাথে ইউক্রেইনের সাউদার্ন অপারেশন কমান্ড বলছে, এরা খেরসন শহরে রাশিয়ান ইকুইপমেন্ট ও ম্যানপাওয়ার কনসেন্ট্রেশনে স্ট্রাইক করেছে। মঙ্গলবারের সোশ্যাল মিডিয়া ফুটেজ দেখাচ্ছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী খেরসন শহরের ৬০ কিমি পূর্বে নোভা কাখোভকায় রাশিয়ান পোজিশনে স্ট্রাইক করেছে। সাউদার্ন অপারেশনাল কমান্ডের মতে এরা বেরিস্লাভ অঞ্চলেও রাশিয়ান পোস্টে আঘাত করেছে। এদিকে বুধবারে রাশিয়ান বাহিনী খেরসন শহরের ৩০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে প্রাভদিনে ইউক্রেনীয় বাহিনীর মিলিটারি ইকুইপমেন্টে আঘাত করেছে। এদিকে জিওলকেটেড ফুটেজ দেখাচ্ছে সেদিন ইউক্রেইন ডাভিডিভ ব্রিডে রাশিয়ান মিলিটারি ইকুইপমেন্টে আঘাত হেনেছে। সেই সাথে ইউক্রেইন রাশিয়ার কিছু ড্রোনকে ভূপতিত করেছে বলে উল্লেখ করেছে। এই ড্রোনগুলো রাশিয়া এরিয়াল রেকনেইসেন্সে ব্যবহার করছিল, তবে এখান থেকে এটাও অনুমান করা যায় যে, এই ফ্রন্ট থেকে রাশিয়া পিছু হটছে। সব মিলে দক্ষিণেও ইউক্রেইন এগিয়ে আছে। তবে রাশিয়া ভাল করে এটাক করছে দোনেৎস্ক ও জ্যাপোরিশিয়াতে, যেখানে ইউক্রেনীয়রা ডিফেন্ড করছে, রুশদের মূল লক্ষ্য ইউক্রেইনের ক্রিটিকাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারগুলো। এরা একটা থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টকে ধ্বংস করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে বলে ইউক্রেইন জানিয়েছে। অবশ্য জ্যাপোরিশিয়াতে ইউক্রেইনও শেলিং করছে। এদিকে ইউক্রেইন দাবি করছে, রাশিয়ার ফেডারেল সাবজেক্টগুলো নাকি পুতিনের পারশাল মোবিলাইজেশনের ডেক্লারেশন ছাড়াই ক্রিপ্টো-মোবিলাইজেশন শুরু করেছে, নতুন করে সেনা পাঠাচ্ছে, যেটা জ্যাপোরিশিয়ায় লক্ষ্য করা গেছে। পুতিনের ঘোষণাটা নিয়েই বলা যাক তাহলে…
যুদ্ধের সাম্প্রতিক খবর থেকে বোঝা যাচ্ছে, রাশিয়ানদের জন্য এই পরিস্থিতি খুব একটা ভালনা। আর এজন্যই পুতিনের দেয়া নতুন ঘোষণাটি আসছে। এখন, পুতিনের স্পিচটি সম্পর্কে প্রথম যে কথাটি বলা দরকার তা হল এই স্পিচটা দেবার কথা ছিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। এর কারণ হল মঙ্গলবার সকালে, দোনেৎস্কস এবং লুহানস্কস পিপলস রিপাবলিক রাশিয়ান ফেডারেশনের একটি অধিবেশনে ২৩শে সেপ্টেম্বর থেকে ২৭শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গণভোট অনুষ্ঠিত করার পরিকল্পনা প্রকাশ করে। খেরসন এবং জ্যাপোরিশিয়ার দখল করা রাশিয়ান বাহিনীও ঘোষণা করেছে যে তারা শীঘ্রই কোনও এক সময় গণভোট অনুষ্ঠিত করবে, যদিও তারা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা দেয়নি। এরপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাৎক্ষণিকভাবে এটি স্পষ্ট করে দেয় যে, তারা এই গণভোটগুলোকে অবৈধ বলে মনে করে। যাই হোক, গণভোটের পরিকল্পনা প্রকাশের মাত্র কয়েক ঘন্টা পরে, রাশিয়াও তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে শুরু করে। ইতিমধ্যেই রাশিয়ান ডুমায় মোবিলাইজেশন, মারশাল ল এবং যুদ্ধকালীন সময়ের ক্ষেত্রে নতুন ক্রিমিনাল কোড পাশ করে। নতুন এই আইনে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ, আত্মসমর্পণ এবং লুণ্ঠনের জন্য কঠোর শাস্তি নির্ধারণ করা হয়। যাই হোক, কয়েক ঘন্টা পরে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ঘোষণা করে যে, দেশের উদ্দেশ্যে পুতিনের একটি ‘ভাষণ’ দেওয়ার কথা রয়েছে। উল্লেখ্য যে, শেষ তিনি এরকম ভাষণ দিয়েছিলেন ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে যখন তিনি ইউক্রেইনের ওপর স্পেশাল মিলিটারি অপারেশনের ঘোষণা করেন। স্পষ্ট হয়ে যায়, এবার ক্রেমলিন কিছু করতে যাচ্ছে, এবারে এরা গণভোট, আইনের পরিবর্তন ইত্যাদি নিয়ে কিছু বলতে যাচ্ছে। তবে রাত ৮ টায়, সেই বক্তৃতাটি পিছিয়ে ৯ টায় নিয়ে যাওয়া হয়, এরপর ৯ টায় এটি ১০ টায় নিয়ে যাওয়া হয়। আর অবশেষে সাড়ে ১০টায় রাশিয়ার সম্পাদক ঘোষণা করেন যে, ভাষণটি বুধবার সকালে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। অবশেষে মস্কো সময় সকাল ৮টায় এটি পুনরায় সম্প্রচার করে।
প্রায় ১০ মিনিটের এই ভাষণে পুতিন ঘোষণা করেন যে, রাশিয়া একটি পারশাল মোবিলাইজেশন বা আংশিক সেনাসমাবেশ ঘোষণা করতে যাচ্ছে। এই নতুন সেনাবাহিনীতে মূলত রিজার্ভিস্ট সৈন্য, এবং প্রাক্তন সৈন্যরা থাকবে। উল্লেখ্য, রিজার্ভিস্ট বলতে সেনাবাহিনীর সংরক্ষিত সদস্যদের বোঝায়, যারা শান্তিপূর্ণ সময়ে অন্যান্য পেশা গ্রহণ করে, কিন্তু যুদ্ধের সময় হাতে অস্ত্র তুলে নেয়, আর প্রাক্তন সেনাকর্মীরা হলো যারা পূর্বে মিলিটারির সাথে জড়িত ছিল, কিন্তু এখন রিটায়ার করেছে। সব মিলিয়ে এই সেনাবাহিনীর পরিমাণ হবে প্রায় ২৫ লাখ, যাদের মধ্যে রিজারভিস্ট হবে ২০ লাখ, আর প্রাক্তন সেনাকর্মী হবে ৫ লাখ। এর কয়েক মিনিট পর পুতিন ন্যাটোকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, রাশিয়া তার আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য উপলব্ধ সব ধরনের উপায় ব্যবহার করবে। এটিও বেশ উদ্বেগজনক, কারণ এক্ষেত্রে রাশিয়া এই গণভোটগুলোকে অনুমোদন দিচ্ছেন এবং লুহানস্ক ও দোনেৎস্ককে রাশিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করছে। সেক্ষেত্রে এই অঞ্চলগুলোতে যে ইউক্রেইনিয়ান রেজিস্টেন্স রয়েছে তাকে রাশিয়ার টেরিটোরিয়াল ইন্টিগ্রিটি বা আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে ধরা হচ্ছে। আর সেক্ষেত্রে রাশিয়ার নিজস্ব নিউক্লিয়ার ডক্ট্রিন অনুসারে ইউক্রেইনের ওপর নিউক্লিয়ার উইপনের ব্যবহারও বৈধ হয়ে যায়, অন্তত পুতিনের চোখে বৈধ হয়ে যায়।
এই ঘোষণাটি কি কোন বিশাল পার্থক্য তৈরি করবে? এটা বোঝা যাচ্ছে যে, রাশিয়ান আর্মির উইপন বা অস্ত্র ও সেনাসদস্য শেষ হয়ে আসছে। অস্ত্রের ক্ষেত্রে বলা যায়, রাশিয়ানদেরকে তাদের ফুরিয়ে যাওয়া স্টকপাইলকে পূর্ণ করতে পুরনো ইরানিয়ান ড্রোন ও নর্থ কোরিয়ান আর্টিলারি কিনতে হয়েছে। অন্যদিকে সেনাসদস্যের ক্ষেত্রে বলা যায়, রাশিয়াকে ইউক্রেইনের সাথে যুদ্ধ করার জন্য ভলান্টিয়ার ব্যাটেলিয়নকে নিয়োগ করতে হয়েছে। কয়েক দিন আগে একটা ভিডিও প্রকাশিত হয়, যেখানে দেখা যায়, রাশিয়ান মারসেনারি ওয়াগনার গ্রুপের লিডার প্রিজনার বা জেলবন্দিদের কলোনি থেকে পদাতিক সৈন্যদের রিক্রুট করার চেষ্টা করছে। যাই হোক, এই পারশাল মোবিলাইজেশনের ব্যাপারটি একই সাথে রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ এবং সম্ভবত অকার্যকর। এটি রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ কারণ মস্কো গত কয়েক মাস ধরে এটাই বারবার জোড় গলায় বলে আসছে যে ইউক্রেইনে আক্রমণ কেবলই একটি স্পেশাল অপারেশন। কিন্তু যখনই পুতিন পারশাল মোবিলাইজেশনের ঘোষণা দিচ্ছেন তখনই মস্কোকে স্বীকার করতে হচ্ছে যে তারা আসলেই একটি ফুল-অন ওয়ারে রয়েছে। এটাও উল্লেখ করা দরকার যে, পুতিন যখন ক্ষমতায় আসেন তখন তার বড় বড় পলিসিগুলোর একটি ছিল এই যে, তিনি দেশের মিলিটারি সার্ভিসকে বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগ বা কনস্ক্রিপশন থেকে চুক্তিমূলক সামরিক সেবাদান বা কন্ট্রাক্টেড মিলিটারি সার্ভিসে নিয়ে যাবেন। কিন্তু এরকম পারশাল মোবিলাইজেশন সহ যেকোন রকম মোবিলাইজেশন বা সেনাসমাবেশ আসলে পুতিনের এই পলিসির একেবারে বিপরীতে চলে যায়। এছাড়া, এমন কোন নিশ্চয়তা নেই যে, এই পারশাল মোবিলাইজেশন সেরকম সাফল্য আনবে। ২৫ লাখ সৈন্যের মোবিলাইজেশন বা সেনাসমাবেশকে অর্গানাইজ করতেই অন্ততপক্ষে কয়েক মাস সময় চলে যাবে। এছাড়া এও পরিষ্কার নয় যে, একটি কার্যকরী মোবিলাইজেশন করার মত অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ক্যাপাসিটি রাশিয়ার আছে কিনা। এটা উল্লেখ করা দরকার যে, ইউক্রেইনে যুদ্ধের জন্য রাশিয়া যে ভলান্টিয়ার বা স্বেচ্ছাসেবকদেরকে নিয়োগ করেছে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে খুব একটা ভাল পারফর্ম করেনি। যেমন ফোর্বস বলছে, ফেব্রুয়ারিতে তৈরি হওয়া ভলান্টিয়ার থার্ড আর্মি ইউক্রেইনে মাত্র কয়েক দিন টিকেছিল। এই ভলান্টিয়ার গ্রুপগুলো প্রচুর পরিমাণে মাদকাসক্তি ও বিশৃঙ্খলার জন্য কুখ্যাত হয়ে আছে। সব মিলে বলা যায়, এই পারশাল মোবিলাইজেশন ও নিউক্লিয়ার উইপনের হুমকি প্রদানের ঘোষণাটি একই সাথে পলিটিকাল ও স্ট্র্যাটেজিক, যেখানে পুতিন রুশ জাতীয়তাবাদীদের সন্তুষ্ট বা তোষণ করছেন এবং যুদ্ধের মাত্রাকে আরও বৃদ্ধি করছেন, সেই সাথে পাশ্চাত্যকে ইউক্রেইনকে আরও সমর্থন দেয়া থেকে প্রতিহত করতে চাচ্ছেন। দুর্ভাগ্যবশত, ২৫ লাখ রুশদের মোবিলাইজেশনের এই পরিকল্পনাটি কার্যকরী হবার সম্ভাবনা খুব কম বলেই মনে হচ্ছে, যার অর্থ হচ্ছে এই সিদ্ধান্তের প্রকৃত ফল হবে এই যে, যুদ্ধটা আরও দীর্ঘকাল ধরে চলবে আর এটি আরও অনেক প্রাণ কেড়ে নেবে।
তথ্যসূত্র
1 – https://en.wikipedia.org/wiki/Battle_of_Lysychansk
2 – https://twitter.com/warnerta/status/1571318703173541889/photo/1
3 – https://english.alarabiya.net/News/world/2022/09/20/Russian-backed-separatists-in-Kherson-say-they-will-hold-referendum-on-joining-Russia
4 – https://twitter.com/OlgaNYC1211/status/1572227779801878530
5 – https://twitter.com/DimitriASimes/status/1572195335212257282
6 – https://www.wsj.com/articles/russias-use-of-iranian-kamikaze-drones-creates-new-dangers-for-ukrainian-troops-11663415140
7 – https://www.nytimes.com/2022/09/05/us/politics/russia-north-korea-artillery.html
8 – https://warsawinstitute.org/putin-announces-end-compulsory-military-service-russia/
9 – https://twitter.com/KyivIndependent/status/1571504086528233477
10 – https://twitter.com/SamRamani2/status/1571558898519228423
11 – https://www.understandingwar.org/backgrounder/russian-offensive-campaign-assessment-september-21
(শেষের লিংকটার ভেতরে গেলে আরও অনেক রেফারেন্স পাওয়া যাবে যেগুলো আর উল্লেখ করা হচ্ছেনা)।
Leave a Reply